জন স্পার্লিং

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার

জন ট্রেভর স্পার্লিং (ইংরেজি: John Sparling; জন্ম: ২৪ জুলাই, ১৯৩৮) অকল্যান্ডের মাউন্ট এডেন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের শেষদিক থেকে শুরু করে ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কাল নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

জন স্পার্লিং
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন ট্রেভর স্পার্লিং
জন্ম (1938-07-24) ২৪ জুলাই ১৯৩৮ (বয়স ৮৫)
মাউন্ট এডেন, অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৮৪)
৩ জুলাই ১৯৫৮ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১ ১২৭
রানের সংখ্যা ২২৯ ৪৬০৬
ব্যাটিং গড় ১২.৭২ ২৪.৩৭
১০০/৫০ ০/১ ২/২৭
সর্বোচ্চ রান ৫০ ১০৫
বল করেছে ৭০৮ ১৮৮২৪
উইকেট ৩১৮
বোলিং গড় ৬৫.৪০ ২২.৭১
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৭
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৯ ৭/৪৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/- ৮৬/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জন স্পার্লিং

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৫৬-৫৭ মৌসুম থেকে ১৯৭০-৭১ মৌসুম পর্যন্ত জন স্পার্লিংয়ের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। খাঁটিমানের ডানহাতি ব্যাটসম্যান, দক্ষ অফ স্পিনার ও চমৎকার ফিল্ডার হিসেবে স্বীকৃতি পান। লাজুক প্রকৃতির, খোলামেলা চুলের অধিকারী অফ স্পিনিং অল-রাউন্ডার জন স্পার্লিং অকল্যান্ড গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেন। অকল্যান্ডে জিম লেকারের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৮ বছর বয়সে অকল্যান্ড দলে প্রথম খেলেন। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে পর্যন্ত ঐ দলে তার খেলা চলমান ছিল।

১৯৫৯-৬০ মৌসুমে ব্যাট হাতে তিনি তার খেলোয়াড়ী জীবনের স্বর্ণালী মৌসুম অতিবাহিত করেন। ৩৭.১০ গড়ে ৭০৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।[১] ঐ একই মৌসুমের প্লাঙ্কেট শীল্ডের খেলায় ক্যান্টারবারির বিপক্ষে ব্যাট হাতে নিয়ে ১০৫ ও ৫১ রান এবং বল হাতে নিয়ে ৭/৯৮ ও ২/১৩ লাভ করেন।[২]

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে বল হাতে নিয়ে সর্বাধিক সফলতম সময় অতিবাহিত করেন। ১৫.৫০ গড়ে ৩৮ উইকেট পান তিনি।[৩] ঐ পর্যায়ে স্পার্লিংয়ের বয়স ছিল ২৬ বছর। তবে, দল নির্বাচকমণ্ডলী তাকে পাশ কাটিয়ে ব্রায়ান ইল, ভিক পোলার্ডরস মরগ্যানের ন্যায় তরুণ স্পিন বোলিং অল-রাউন্ডারকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করে। ঐ বছরেই তিনি নিজস্ব ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ওতাগোর বিপক্ষে ৭/৪৯ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে অকল্যান্ডকে স্বল্প ব্যবধানের জয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন।[৪] ১৯৬০-এর দশকের অধিকাংশ সময়ই অকল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। এ পর্যায়ে তার দল দুইবার প্লাঙ্কেট শীল্ডের শিরোপা জয় করেছিল।[৫]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে এগারোটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জন স্পার্লিং। ৩ জুলাই, ১৯৫৮ তারিখে লিডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪ তারিখে ডুনেডিনে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫৮ সালে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন তিনি। এ পর্যায়ে দলের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু, এ সফরটি দলের সবচেয়ে মন্দ সময় হিসেবে অতিক্রম করে। দলটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন অবস্থায় গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে নাজুক অবস্থায় পড়ে। স্বল্প কয়েকজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে তিনি প্রতিপক্ষের সমীহ কুড়ান। উইজডেনে তার ক্রীড়াশৈলী সম্পর্কে মন্তব্য করে যে, নিঃসন্দেহে তিনি সর্বাধিক প্রতিশ্রুতিশীল ও উল্লেখ করে যে, সহজাত ক্রিকেটার হিসেবে তিনি নিজেকে সময়ের চেয়ে এগিয়ে রেখেছেন।[৬] তবে, এ সফরে জন স্পার্লিংয়ের বোলিং পরিসংখ্যান সাধারণমানের ছিল। ইনিংস প্রতি ১৮ রানের কম গড়ে ৫১৩ রান সংগ্রহ করেন ও বল হাতে নিয়ে ২০-এর অধিক গড়ে ৩৮ উইকেট পান।

পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের শেষ তিন টেস্টে তার অংশগ্রহণ ছিল। নিজস্ব ২০তম জন্মদিনে ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ৫০ রান তুলেন। এরফলে, পুরো গ্রীষ্মে টেস্ট দলের সংগৃহীত তিনটি অর্ধ-শতরানের এটি একটি ছিল। এ পর্যায়ে এরিক পেট্রি’র সাথে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৬১ রান সংগ্রহ করেন। পুরো সিরিজে নিউজিল্যান্ডের এটিই সর্বোচ্চ জুটির মর্যাদা পায়।[৭]

এছাড়াও ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে দুইটি, ১৯৬১-৬২ মৌসুমে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিনটি, ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে একটি ও ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজদেশে দুইটি টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, কোন খেলাতেই ব্যাটসম্যান হিসেবে আর কোন অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলতে পারেননি। এছাড়াও, কোন ইনিংসেই একের অধিক উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখাননি। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড সফররত অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে চার খেলার সবকটিতেই অংশ নেন। দুই অর্ধ-শতক ও ছয় উইকেট পান তিনি। তবে, কোন খেলাই টেস্ট ছিল না।[৮] তন্মধ্যে, ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৩ সালে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্টে স্পার্লিংকে ১১টি বল নিয়ে গড়া ওভার সম্পন্ন করতে হয়। আম্পায়ার ডিক শর্ট স্পার্লিং কতটি বল করেছেন তা গুণতে ভুলে যান।[৯]

২৫ বছর বয়সেই তার আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হলেও ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতে থাকেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "First-class Batting and Fielding in Each Season by John Sparling"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  2. "Canterbury v Auckland 1959-60"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  3. Bowling by season
  4. Auckland v Otago, 1964–65
  5. "History"Auckland Cricket। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২০ 
  6. Wisden 1959, p. 227.
  7. Wisden 1959, pp. 229–67.
  8. Wisden 1961, pp. 848–53.
  9. The XI worst overs Retrieved 4 November 2012

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা