জনি ব্রিগস

ইংরেজ ক্রিকেটার

জনি ব্রিগস (ইংরেজি: Johnny Briggs; জন্ম: ৩ অক্টোবর, ১৮৬২ - মৃত্যু: ১১ জানুয়ারি, ১৯০২) নটিংহ্যামশায়ারের সাটন-ইন-অ্যাশফিল্ডে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

জনি ব্রিগস
আনুমানিক ১৮৯৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জনি ব্রিগস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজনি ব্রিগস
জন্ম(১৮৬২-১০-০৩)৩ অক্টোবর ১৮৬২
সাটন-ইন-অ্যাশফিল্ড, নটিংহ্যামশায়ার
মৃত্যু১১ জানুয়ারি ১৯০২(1902-01-11) (বয়স ৩৯)
উচ্চতা৫ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৬৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কযোসেফ ব্রিগস (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৭)
১২ ডিসেম্বর ১৮৮৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১ জুলাই ১৮৯৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৩ ৫৩৫
রানের সংখ্যা ৮১৫ ১৪,০৯২
ব্যাটিং গড় ১৮.১১ ১৮.২৭
১০০/৫০ ১/২ ১০/৫৮
সর্বোচ্চ রান ১২১ ১৮৬
বল করেছে ৫,৩৩২ ১০০,১১৯
উইকেট ১১৮ ২,২২১
বোলিং গড় ১৭.৭৫ ১৫.৯৫
ইনিংসে ৫ উইকেট ২০০
ম্যাচে ১০ উইকেট ৫২
সেরা বোলিং ৮/১১ ১০/৫৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১২/০ ২৫৮/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৪ আগস্ট ২০১৫

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলে প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি স্পিন বোলার ছিলেন। এছাড়াও ডানহাতি ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

শৈশবকাল সম্পাদনা

পেশাদার ক্লাব ক্রিকেটারের সন্তান ছিলেন তিনি। ইয়র্কশায়ারের হর্নসীতে অনুষ্ঠিত খেলায় মাত্র ১৩ বছর বয়সে অর্ধ-পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম খেলতে নামেন। বাবা জেমস বিভিন্ন দলের পক্ষে ক্রিকেট ও রাগবি খেলতেন। উইডনেসের কাছে সরকারীভাবে ভূ-সম্পত্তির মালিক হবার পূর্ব-পর্যন্ত স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ডের উত্তরাংশে ঘুরতে থাকেন। ১৮৮১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী জেমস অ্যাপলটন গ্রামের ক্রস কিজ এলাকায় বসবাস করতেন। জেমস ও পরবর্তীতে জনি শৌখিন পর্যায়ের রাগবি খেলায় অংশ নিতেন। তবে তারা পেশাদার ক্রিকেটেই নিজেদেরকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। ১৮৭৭ সালে উইডনেসে জেমস পেশাদার ক্রিকেটার ছিলেন।

১৮৭৭ মৌসুমের শেষ পর্যন্ত হর্নসীতে অবস্থান করেন। এরপর ল্যাঙ্কাশায়ারে চলে যান। পরবর্তীতে নর্দার্ন ক্রিকেট ক্লাবে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে যোগ দেন।[১]

কাউন্টি ক্রিকেট সম্পাদনা

১৮৭৯ সালে নর্দার্নের পক্ষে খেলেন। মে মাসের শেষদিকে ল্যাঙ্কাশায়ার তাদের কাউন্টি ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো খেলে যাতে তিনি নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৭৯ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেন ব্রিগস। এ সময়ে ঐ কাউন্টির ইতিহাসে ব্রায়ান স্ট্যাদামের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট লাভকারী খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০,০০০ রান ও ১,০০০ উইকেট পেয়েছেন। ১৮৭৯ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে পাঁচ খেলায় অংশ নেন। ১৮৮২ সাল পর্যন্ত নিয়মিত খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান। বোলিংয়ে সফলতা পেলেও ব্যাট হাতে খুব কমই সফলতা পেয়েছেন। তবে, ফিল্ডার হিসেবে কভার অঞ্চলে দক্ষতা দেখান। ১৮৮৩ ও ১৮৮৪ সালে তার ব্যাটিংয়ের চমকপ্রদ উত্তরণ ঘটে।

বিতর্কিত স্পিডস্টার আর্থার মোল্ডের সাথে ১৮৮৯ সাল থেকে ল্যাঙ্কাশায়ারের স্মরণীয় বোলিং জুটি গড়েন। ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত এ দুজন বোলার প্রত্যেক বছরই শতাধিক উইকেট লাভ করেছেন। প্রায়শঃই তারা ইনিংসে একাধারে বোলিং করে যেতেনে। অন্য বোলারদের কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা ছাড়াই দলকে চ্যাম্পিয়নশীপের প্রায় কাছে নিয়ে যেতে সক্ষমতা দেখান। ১৮৯৩ মৌসুম শেষে টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি অত্যন্ত উঁচুমানের বোলার। তিনি ও আর্থার মোল্ডই কেবলমাত্র ল্যাঙ্কাশায়ারের দুই কার্যকরী বোলার হিসেবে দলে খেলেছেন।[২] এ দুজন সর্বমোট ২২৫ উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। অন্যান্য বোলার সবমিলিয়ে ৪৬ উইকেট পেয়েছেন।[৩] ১৮৯৪ মৌসুমে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে অনেকগুলো খেলায় অংশ নিয়ে খেলে আর্থার মোল্ড ও জনি ব্রিগস অতিরিক্ত বোলিংয়ের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন। উভয়ে মিলে ৩২৪ উইকেট দখল করলেও পরবর্তী সফলতম বোলারের সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৩ উইকেট। [৪]

১৮৯৪ সাল পর্যন্ত তার ব্যাটিংয়ের কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যায়। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে পিচের উত্তরণ ঘটায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দেন জনি ব্রিগস। পোতানো উইকেটেও বেশকিছু উইকেট লাভের ফসল হিসেবে ১৮৯৭ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রথম কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করে। তবে, পরবর্তী শীতে অস্ট্রেলিয়া সফরে নিরাশ করেন তিনি। এরপরের বছর তার বোলিংয়ের ধার বেশ কম ছিল।

১৮৯৯ সালে হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলা চলাকালে টম হেওয়ার্ডের বলে বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ আঘাত তেমন মারাত্মক না হলেও মাঠে পড়ে যান ও মৌসুমের বাদ-বাকী সময় কোন খেলায় অংশ নিতে পারেননি। এক্স-রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী রোগীদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন। দেখা যায় যে, বুকের পাঁজর ভেঙ্গে তার হৃদপিণ্ডের ক্ষতি হয়েছে।

১৯০০ সালে তার স্মরণীয় প্রত্যাবর্তন ঘটে। ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৫৫ রানে দশ উইকেটের সবগুলোই করায়ত্ত্ব করেন ও আট শতাধিক রান সংগ্রহ করেন। কিন্তু এরপর স্পষ্টতঃই তার মানসিক অসুস্থতা লক্ষ্য করা যায়। তিনি আর সুস্থ হয়ে খেলার জগতে ফিরে আসেননি।

টেস্ট ক্রিকেট সম্পাদনা

কাউন্টি ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ে বেশ সফলতা পাবার প্রেক্ষিতে তাকে আলফ্রেড শয়ের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঐ সফরে তিনি সবগুলো টেস্টেই অংশ নেন। তন্মধ্যে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত টেস্টে ১২১ রানের চমকপ্রদ সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি।

১৮৮৫ সালে বিষ্ময়করভাবে বোলিংয়ের দিকে ধাবিত হন। পূর্ববর্তী মৌসুমগুলোয় গড়পড়তা বোলিং করলেও ১৩.৭৪ গড়ে ৬৭ উইকেট দখল করেন।[৫] ১৮৮৬ সালে তার বোলিংয়ের কল্যাণে ইংল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর কেবলমাত্র ১৯৭৭ সালের অ্যাশেজ সিরিজেই তিন বা ততোধিক টেস্টে জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড দল। তবে, তার ব্যাটিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। লিভারপুলে সারের বিপক্ষে নিজস্ব সেরা ১৮৬ রান তুলেন। এ সময় ডিক পিলিংয়ের সাথে দশম উইকেট জুটিতে তৎকালীন ১৭৩ রানের রেকর্ড গড়েন।[৬]

১৮৮৭ সালের গ্রীষ্মের শুষ্ক মৌসুমটি ব্যতিক্রমভাবে পার করেন। প্রথমবারের মতো এক মৌসুমে ১০০ উইকেট পান। ১৮৮৮ সালে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন। মাত্র ১০.৪৯ গড়ে ১৬০ উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে পরের বছর উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।

১৮৮৮-৮৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথম দুই টেস্টে ম্যাটিং পিচে বেশ সফলতা পান। কেপটাউনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাটিং করে ২৯২ রান তুলে। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ইনিংস ৪৭ ও ৪৩ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সাতজনকে বোল্ড করেন ও তৎকালীন টেস্টে রেকর্ড হিসেবে ইনিংসে ৮/১১ পান এবং ২৮ রান দিয়ে ১৫ উইকেট পান। তন্মধ্যে, চৌদ্দটি উইকেট পান বোল্ড করে।[৭] খেলাটি মাত্র দুইদিনেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।[৮]

ইয়র্কশায়ারের ববি পিলের সাথে বামহাতি স্পিনারের ইংল্যান্ড দলে অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে ব্রিগসকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হতো। টেস্ট পর্যায়ে তারা বেশ সুন্দর ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপন করেছিলেন। তন্মধ্যে ১৮৯১-৯২ সালে অ্যাডিলেড টেস্ট ও ১৮৯৩ সালের ওভাল টেস্ট অন্যতম।

ফলো-অন পরবর্তী জয় সম্পাদনা

১৮৯৪-৯৫ মৌসুমে সিডনিতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ফলো-অনে থাকার পরও প্রথমবারের মতো বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। তুলনামূলকভাবে দূর্বল পিচে অস্ট্রেলিয়া দল ৫৮৬ রানের বিশাল ইনিংস খেলে। এরজন্য মূলতঃ ইংল্যান্ডের উইকেট-রক্ষক বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করার বিষয়টি জড়িত ছিল। ইংল্যান্ড ৩২৫ রান তুলে। আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্রিগস করেছিলেন ৫৭ রান। ফলো-অনে পড়েও তারা বেশ ভালো খেলা উপহার দিতে থাকে। ল্যাঙ্কাশায়ারের আলবার্ট ওয়ার্ড শতরান করেন ও ব্রিগস করেন ৪২ রান। ১৭৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় দিনশেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১১৭/২ হয়। ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় হাল ছেড়ে দেন। অন্য স্পিনার পিল বেশ মাতাল হয়ে পড়েন।

পূর্বরাত্রে বৃষ্টি ও সকালে সূর্যকিরণ দেখা দেয়। ভেজা উইকেট প্রখর আলোয় উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ববি পিলও জেগে উঠেন। তিনি ও ব্রিগস অসাধারণ খেলেন এবং দল ১০ রানে নাটকীয়ভাবে বিজয়ী হয়।

অর্জনসমূহ সম্পাদনা

বিখ্যাত ব্যাটসম্যান কলিন কাউড্রের সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ছয়বার অস্ট্রেলিয়া সফর করারও কৃতিত্ব দেখান।[৯]

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় হ্যাট্রিকের সাথে নিজের নাম লেখান ব্রিগস। ১৮৯২ সালে সিডনিতে অনুষ্ঠিত টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে হ্যাট্রিক করে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সমাপ্তি ঘটান তিনি।

১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৫ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে শততম টেস্ট উইকেট লাভের কৃতিত্ব গড়েন।[১০]

শততম টেস্ট উইকেট সম্পাদনা

টেস্ট ক্রিকেটের সূচনালগ্নে অন্যতম সফলতম বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন ব্রিগস। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট লাভ করেন তিনি।[১১] টেস্টে তিনি দুইবার সর্বোচ্চ উইকেট লাভের রেকর্ড গড়েন। ১৮৯৫ সালে প্রথমবার ও ১৮৯৮ থেকে ১৯০৪ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয়বার হিউ ট্রাম্বলের কাছ থেকে এ রেকর্ড নিজের করে নেন তিনি।[১২]

মেলবোর্নের দ্বিতীয় টেস্টে ব্রিগস ফ্রেড স্পফোর্থের সংগৃহীত ৯৪ টেস্ট উইকেটের সাথে যুক্ত হন ২৯ ডিসেম্বর, ১৮৯৪ তারিখে। দুই দিন পর চার্লস টার্নারও এর সাথে একত্রিত হন। এ তিনজন সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রেকর্ডটি নিজেদের করে রাখেন। অ্যাডিলেডের তৃতীয় টেস্টে টার্নার খেলেননি। ফলে ব্রিগস দুজনকেই টপকে শীর্ষে আরোহণ করেন। ১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৫ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ টেস্ট উইকেট লাভের অধিকারী হন। ৪ ফেব্রুয়ারি টার্নার তার শেষ টেস্টে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এ কৃতিত্বের অধিকারী হন।

খেলার ধরন সম্পাদনা

শারীরিক কাঠামোয় প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতা থাকায় তার গড়ন তুলনামূলকভাবে বেশ কম ছিল। ফ্লাইট ও পেস সহযোগে স্পিন বল প্রয়োগে তিনি দক্ষতা দেখান। ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি বলকে সীমানার বাইরে প্রেরণে জন্য বেশ চেষ্টা চালান। কিন্তু, প্রত্যেক বলকেই মোকাবেলা করার চেষ্টা করায় তাকে স্বল্প সময় মাঠে অবস্থান করতে হতো।

ল্যাঙ্কাশায়ার ও ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্রিগস অসম্ভব দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নেন। জেন্টলম্যান শৌখিন খেলোয়াড়দের বৃহৎ অংশ নিয়ে গড়া ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে পেশাদার বা খেলোয়াড় হিসেবে অবশ্যম্ভাবী হিসেবে বোলিং উদ্বোধনে নামতেন তিনি। বার্লো, ক্রসল্যান্ড, মোল্ডের ন্যায় পেশাদার ক্রিকেটারদের সাথে কখনোবা সারাদিন বোলিং করতে হতো।

অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচবার গমন করেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় অত্যন্ত গরম আবহাওয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। পেশাদার ক্রিকেটারদেরকে আঘাতের মধ্যেও খেলতে হতো; নতুবা বেতন প্রদান করা হতো না। আঘাতের কারণে ও সবশেষে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

শুধুমাত্র ক্রিকেট জগতেই তার অংশগ্রহণ ছিল না। ম্যানচেস্টারের পক্ষে হকি খেলেছেন জনি ব্রিগস। ১৮৭৮ থেকে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত উইডনেস রাগবি ফুটবল ক্লাবের পক্ষে খেলেন। ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী হওয়া স্বত্ত্বেও ফুলব্যাক অবস্থানে থাকতেন। ১৮৮২ সালে হাত ভেঙ্গে গেলে রাগবি থেকে চলে আসেন।

জুন, ১৮৯৯ সালে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অতঃপর ১১ জানুয়ারি, ১৯০২ তারিখে চিডল রয়্যাল হাসপাতালে জনি ব্রিগসের দেহাবসান ঘটে।[১৩] ১৯০২ সালের শুরুতে তার দেহাবসান ঘটে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে। এক অপ্রত্যাশিত অপূরণীয় ক্ষতি হয় ক্রিকেট জগতে। বিশেষ করে ল্যাঙ্কাশায়ার দল ১৯০১ থেকে ১৯০৩ সাল পর্যন্ত তার বোলিংয়ের অভাব দেখতে পায়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Profile of Johnny Briggs at Northern CC 1878–79"। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০১৭ 
  2. "County Cricket in 1893"। The Times। London। ৩১ আগস্ট ১৮৯৩। পৃষ্ঠা 6। 
  3. Wynne-Thomas, p. 58.
  4. Wynne-Thomas, p. 59.
  5. "First-class bowling in each season by Johnny Briggs"। Cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০০৮ 
  6. Webber, Roy; The Playfair Book of Cricket Records; p. 127. Published 1951 by Playfair Books.
  7. "Archived copy"। ২১ নভেম্বর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০০৫ 
  8. South Africa v England, Cape Town 1888-89
  9. http://www.espncricinfo.com/wisdenalmanack/content/story/154334.html
  10. Bill Frindall, The Guinness Book of Cricket Facts and Feats, p. 44, Guinness Publishing, 1996
  11. Steven Lynch (১১ মার্চ ২০০৮)। "The fewest runs in a day, and 96 successive Tests"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-১১ 
  12. Players Holding Highest Aggregate Record 1877 – 2007, HowStat
  13.   Owen, W. B. (১৯১২)। "Briggs, John"। লি, সিডনিডিকশনারী অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি, ১৯১২ সম্পূরক​। লন্ডন: স্মিথ, এল্ডার এন্ড কো 

আরও দেখুন সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

  • "Johnny Briggs" (1902) by Herbert Turner
  • "Giants of the Game" (1901) by Lyttleton, Ford, Fry, Giffen
  • Howat, Gerald M. D.। "Briggs, John (1862–1902)"। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/32070  (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন।)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

রেকর্ড
পূর্বসূরী
ফ্রেড স্পফোর্থ
বিশ্বরেকর্ড - টেস্টে সর্বাধিক উইকেট
৩৩ টেস্টে ১১৮ উইকেট (১৭.৭৫ গড়ে)
রেকর্ড ধারণ: ১২ জানুয়ারি, ১৮৯৫ - ২ জানুয়ারি, ১৯০৪
উত্তরসূরী
হিউ ট্রাম্বল