চার্লস লেসলি

ইংরেজ ক্রিকেটার

চার্লস ফ্রেডরিক হেনরি লেসলি (ইংরেজি: Charles Leslie; জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৮৬১ - মৃত্যু: ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯২১) লন্ডনের মেফেয়ার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ইংরেজ ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৩ সময়কালে সংক্ষিপ্তকালের জন্য ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অক্সফোর্ডমিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন চার্লস লেসলি

চার্লস লেসলি
ক্রিকেট তথ্য
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৮
রানের সংখ্যা ১০৬ ১,৮৬০
ব্যাটিং গড় ১৫.১৪ ২২.৯৬
১০০/৫০ ০/১ ৪/১০
সর্বোচ্চ রান ৫৪ ১৪৪
বল করেছে ৯৬ ৩৩২
উইকেট
বোলিং গড় ১১.০০ ২০.৬২
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৩১ ৩/৩১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/০ ১৮/০
উৎস: ক্রিকইনফো, ৩ নভেম্বর ২০১৮

শৈশবকাল সম্পাদনা

হেনরি ডেভিড লেসলি ও তদ্বীয় পত্নী মেরি বেটসি পেরির সন্তান ছিলেন চার্লস লেসলি।[১] রাগবি স্কুলে থাকাকালীন ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ঐ বছরে এটনের চার্লস টমাস স্টাড বর্ষসেরা সরকারী বিদ্যালয়ের অল-রাউন্ডারের পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।[২] হ্যারো স্কুলের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ম্যানলি কেম্পের সাথে তাকে তুলনা করা হতো।[৩]

১৮৮০ সালে অক্সফোর্ডের অরিয়েল কলেজ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেন তিনি।[৪]

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯০১ সালে তিনটি জাহাজী প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে গঠিত লন্ডনের ফেনচার্চ স্ট্রীটে উইলিয়াম ফ্রান্স, ফেনউইক এন্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানত কয়লা ও বাল্টিক কাঠের ব্যবসা সমুদ্রপথে পরিচালনা করতো।[৫][৬] বাকু রাশান পেট্রোলিয়ামের পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে ১৯০৪ সালে বাকু গমন করেন। এ সময়ে প্রথিতযশা উদ্যোক্তা লেসলি আর্কুহার্টের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।[৭]

১৯০৫ সালের রুশ বিপ্লবের পর ও ক্রমাগত অবসাদে ভোগার পর আর্কুহার্টের সাথে ব্যবসা করেন। রুশ তৈল ও খনিজজাত দ্রব্যে অর্থ বিনিয়োগ করেন তিনি।[৮]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

শক্ত প্রতিরোধ ব্যূহ গড়ে তোলে আক্রমণধর্মী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করতেন চার্লস লেসলি। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কার্যকরী ডানহাতি ফাস্ট বোলারের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও কভার অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডার হিসেবে সুনাম ছিল তার। অক্সফোর্ডে থাকাকালীন ১৮৮১ থেকে ১৮৮৩ সালে একাধারে তিন বছর ক্রিকেটে ব্লু লাভ করেন। এছাড়াও, র‌্যাকেট ও ফুটবলেও তার সমান দক্ষতা ছিল।

১৮৮১ থেকে ১৮৮৮ সময়কালীন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান ছিল চার্লস লেসলির। ১৮৮১ থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত মিডলসেক্সের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন চার্লস লেসলি। এ সময়ে ৪৮টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে চার সেঞ্চুরি সহযোগে ২২.৯৬ গড়ে ১৮৬০ রান তুলেছিলেন।

টেস্ট ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৪ টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ৩০ ডিসেম্বর, ১৮৮২ তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে চার্লস লেসলি’র। তার অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মানীয় ইভো ব্লাইয়ের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে ১৮৮২-৮৩ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে খেলেন। অ্যাশেজ হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। ইভো ব্লাইয়ের দলে অংশগ্রহণকৃত চার টেস্টের সবকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। ১৫.১৪ গড়ে সর্বসাকুল্যে ১০৬ রান তুলেন। এছাড়াও ১১.০০ গড়ে চার উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। এ টেস্টগুলোই তার পূর্ণাঙ্গ খেলোয়াড়ী জীবন হিসেবে রয়ে যায়।

১৮৮২ সালে বিলি মারডকের নেতৃত্বাধীন সফরকারী দলের বিপক্ষে প্রথম তিন টেস্টে খেলেন ও অ্যাশেজের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। তন্মধ্যে শেষ দুই টেস্টে কোন উইকেট পাননি। চতুর্থ খেলায় সম্মিলিত অস্ট্রেলীয় দলের বিপক্ষে খেলে প্রথম ইনিংসে একটি উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ইভো ব্লাই একাদশের সদস্যরূপে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৪৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২০.৬২ গড়ে আট উইকেট লাভ করেছেন। এছাড়াও, ১৮টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন চার্লস লেসলি।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৯০৫ সালে হার্টফোর্ডশায়ারে অবস্থিত হার্টিংফোর্ডবারির কাছাকাছি এপকম্বে চার্লস লেসলি নিবাস গড়েন।[৯][১০] ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯২১ তারিখে ৬০ বছরবয়সে লন্ডনের মেফেয়ার এলাকায় চার্লস লেসলি’র দেহাবসান ঘটে।

চার্লস লেসলির প্রপৌত্র ম্যাথু ফ্লেমিং কেন্ট ও ইংল্যান্ডের সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে খেলেছেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Baker, Anne Pimlott। "Leslie, Henry David"। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/37667  (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন।)
  2. Grubb, Norman (২০১৪-১২-২৫)। C.T. Studd: Cricketer and Pioneer। The Lutterworth Press। পৃষ্ঠা 16। আইএসবিএন 9780718842468। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  3. Watson, Alfred Edward Thomas (১৮৯৫)। "The Badminton Magazine of Sports and Pastimes"Internet Archive। London: Longmans, Green, & Co.। পৃষ্ঠা 517। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  4. s:Alumni Oxonienses: the Members of the University of Oxford, 1715-1886/Leslie, Charles Frederick Henry
  5. "Grace's Guide: 1914 Who's Who in Business: Company F"। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  6. "Wm France, Fenwick & Co. Steam Ship Company"। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৮ 
  7. Kennedy, Kett Howard (১৯৮৬)। Mining Tsar: The Life and Times of Leslie Urquhart। Allen & Unwin। পৃষ্ঠা 61। আইএসবিএন 9780868618982। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৮ 
  8. Dukes, Paul (২০১৫-০২-২৬)। A History of the Urals: Russia's Crucible from Early Empire to the Post-Soviet Era। Bloomsbury Publishing। পৃষ্ঠা 85। আইএসবিএন 9781472573797। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  9. Betham, J. D. (১৯০৫)। Oxford and Cambridge: Scores and Biographies। Simpkin, Marshall, Hamilton, Kent। পৃষ্ঠা 119। 
  10. 'Parishes: Hertingfordbury', in A History of the County of Hertford: Volume 3, ed. William Page (London, 1912), pp. 462–468. British History Online http://www.british-history.ac.uk/vch/herts/vol3/pp462-468 [accessed 2 April 2018].

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা