চল্লিশা বা আল-আরবাʿঈন (আরবি: الأربعين, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Arba‘īn, অনুবাদ'চল্লিশ' বা চেহলম (ফার্সি: چهلم, অনুবাদ'চল্লিশতম দিন') হল শিয়া মুসলমানদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান যা আশুরার চল্লিশ দিন পর পালিত হয়। এই দিনে নবী মুহাম্মাদের নাতি হুসাইন ইবনে আলীর মৃত্যুকে স্মরণ করা হয়। ৬১ হিজরীর ১০ই মুহররম (৬৮০ খ্রিষ্টাব্দ) কারবালার যুদ্ধে উমাইয়া খলিফা প্রথম ইয়াজিদের সৈন্যবাহিনী ইমাম হোসেন ও তাঁর ৭১ জন সহচারীকে কতল করে।

চল্লিশা
আরবাঈন
চল্লিশার সময় পায়ে হেটে তীর্থ যাত্রা পর হুসাইনের মাজারে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভীড়।
আনুষ্ঠানিক নামالأربعين al-Arba‘īn (আরবি ভাষায়)
অন্য নাম
পালনকারীশিয়া মুসলিম সুফি মুসলিম
ধরনশিয়া, আলেভি, সুফি
তাৎপর্যআশুরার পর চল্লিশতম দিন
পালনকারবালার ইমাম হুসাইনের মাজারে ভ্রমণ
তারিখ২০ সফর
সংঘটনপ্রত্যেক ইসলামি বর্ষে একবার

বহু মুসলিম ঐতিহ্যে পরিবারের কোনো সদস্যের মৃত্যুর পরে বা প্রিয়জনের মৃত্যুর পরে শোকের নকেও আরবাঈন বা চল্লিশা বলা হয়। আরবাঈন পৃথিবীর বৃহত্তম তীর্থযাত্রাগুলোর মধ্যে একটি, এসময় ৪৫ মিলিয়ন মানুষ ইরাকের কারবালা শহরে যায়।[২][৩][৪][৫]

৪০ সংখ্যাটির তাৎপর্যের মূল কারণ মুহম্মদের একটি উক্তি বা হাদীসঃ "আমার লোকদের মধ্যে যারা বিদ্বান মানুষ হিসেবে চল্লিশটি হাদীস মুখস্থ করবে, শেষ বিচারের দিনে আল্লাহ বিবেচনা করবেন"।

শিয়া সম্প্রদায়ের অসংখ্য ইসলামী পণ্ডিত নবী ও ইমামগণের অনুসরণ করে চল্লিশটি হাদীসের সংগ্রহ সংগ্রহ করেছেন।

আরবিন জিয়ারত সম্পাদনা

জিয়ারত আরবাইন একটি প্রার্থনা যা সাধারণত আরবাইনের দিনে কারবালায় পাঠ করা হয়। এটি শিয়া ইমাম ইমাম জাফর আল-সাদিক থেকে সাফওয়ান আল-জামাল থেকে বর্ণিত হয়েছে, যেখানে ইমাম তাকে ইমাম হুসাইনের মসজিদ পরিদর্শন করতে এবং আরবাইনে একটি নির্দিষ্ট ভ্রমণ প্রার্থনা পাঠ করার নির্দেশ দেন যার দ্বারা বিশ্বাসীকে অবশ্যই হুসেইনে বিশ্বাস করতে হবে। এর আদর্শের প্রতিশ্রুতি। জিয়ারত বা প্রার্থনা এমন একটি পাঠ্য যা হুসাইনকে নবী আদম, নূহ, ইব্রাহিম, মূসা, যীশু মসীহ এবং মুহাম্মদ সাহাবের "উত্তরসূরি" হিসাবে উল্লেখ করে।[৬]

আরবের অন্যান্য ধর্ম ও দেশ সম্পাদনা

যদিও আরবাইন একটি স্বতন্ত্রভাবে শিয়া আধ্যাত্মিক অনুশীলন, সুন্নি মুসলমান এমনকি খ্রিস্টান, ইয়াজিদি, জরথুস্ট্রিয়ান এবং সাবিয়ানরা উভয়ই তীর্থযাত্রা করে এবং ভক্তদের সেবা করে। সুইডেন, রাশিয়া সহ ইউরোপীয় দেশের তীর্থযাত্রীরা এমনকি ভ্যাটিকান সিটির একটি প্রতিনিধি দলও অতীতের আচার -অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। কিছু ইরাকি খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতাও ভ্যাটিকান থেকে প্রতিনিধিদলে যোগ দেন।[৭]

ঘানা, নাইজেরিয়া, তানজানিয়া এবং সেনেগাল সহ বিভিন্ন আফ্রিকান দেশ থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দলও আরবিনে অংশ নিয়েছে।[৮]

গ্যালারি সম্পাদনা

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে আরবাঈন সম্পাদনা

ইসলামিক বছর সৌদি আরব [৯] ইরাক
১৪৩৭ ২ ডিসেম্বর ২০১৫
১৪৩৮ ২০ নভেম্বর ২০১৬
১৪৩৯ ৯ নভেম্বর ২০১৭ ১০ নভেম্বর ২০১৭[১০]
১৪৪০ ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ৩০ অক্টোবর ২০১৮[১১]
১৪৪১ ১৯ অক্টোবর ২০১৯
১৪৪২ ০৮ অক্টোবর ২০২০
১৪৪৩ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
১৪৪৪ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
১৪৪৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Badruddīn, Amir al-Hussein bin (20th Dhul Hijjah 1429 AH)। The Precious Necklace Regarding Gnosis of the Lord of the Worlds। Imam Rassi Society।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. "El Paso Inc"। El Paso Inc.। ১০ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১০ 
  3. uberVU – social comments (৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "Friday: 46 Iraqis, 1 Syrian Killed; 169 Iraqis Wounded - Antiwar.com"। Original.antiwar.com। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১০ 
  4. "Powerful Explosions Kill More Than 40 Shi'ite Pilgrims in Karbala | Middle East | English"। .voanews.com। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১০ 
  5. Hanun, Abdelamir (৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "Blast in crowd kills 41 Shiite pilgrims in Iraq"। News.smh.com.au। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১০ 
  6. YJC, خبرگزاری باشگاه خبرنگاران | آخرین اخبار ایران و جهان | (২০১৬)। "اربعین شد دل ما در سفر کرب و بلاست"fa (ফার্সি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১৯ 
  7. "খ্রিস্টান পুরোহিত: আরবাইন ওয়াক "আশার" ইঞ্জিন"خبرآنلاین (ফার্সি ভাষায়)। ২০১৯-০৯-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১৯ 
  8. "Irak : des millions de fidèles participent à un pèlerinage chiite"Le Monde.fr (ফরাসি ভাষায়)। ২০১৪-১২-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১৯ 
  9. "The Umm al-Qura Calendar of Saudi Arabia"uu.nl 
  10. "Arbaeen in Iraq will be one day after Iran's Arabeen"Tasnim News Agency। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৭ 
  11. "اربعین ایران و عراق؛ ۸ آبان"mehrnews। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৭