গ্লেন চ্যাপেল

ইংরেজ ক্রিকেটার

গ্লেন চ্যাপেল (ইংরেজি: Glen Chapple; জন্ম: ২৩ জানুয়ারি, ১৯৭৪) ইয়র্কশায়ারের স্কিপটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংয়ে দক্ষতা প্রদর্শন করে চলেছেন।

গ্লেন চ্যাপেল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগ্লেন চ্যাপেল
জন্ম (1974-01-23) ২৩ জানুয়ারি ১৯৭৪ (বয়স ৫০)
স্কিপটন, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামচ্যাপি, বরিস
উচ্চতা৬ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র ওডিআই
(ক্যাপ ১৯১)
১৩ জুন ২০০৬ বনাম আয়ারল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯২-২০১৭ল্যাঙ্কাশায়ার (জার্সি নং ৩)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা ওডিআই এফসি এলএ টি২০
ম্যাচ সংখ্যা ৩১৫ ২৮৩ ৬৬
রানের সংখ্যা ১৪ ৮,৭২৫ ২,০৬২ ৩০১
ব্যাটিং গড় ১৪.০০ ২৪.১৬ ১৭.৭৭ ১৩.০৮
১০০/৫০ ০/০ ৬/৩৭ ০/৯ ০/১
সর্বোচ্চ রান ১৪ ১৫৫ ৮১* ৫৫*
বল করেছে ২৪ ৫৪,৪৪৯ ১২,১৬৫ ১,৩০০
উইকেট ৯৮৫ ৩২০ ৬৮
বোলিং গড় ২৬.৭১ ২৮.৫৫ ২৩.৩২
ইনিংসে ৫ উইকেট ৩৯
ম্যাচে ১০ উইকেট - - -
সেরা বোলিং ৭/৫৩ ৬/১৮ ৩/৩৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ১০৪/– ৬৬/– ১৬/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৯৩ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে মাত্র ২৭ বলে ও ২১ মিনিটে গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে এ কীর্তিগাঁথা রচনা করেন। তবে, ম্যাথু মেনার্ডটনি কট্টি’র চেষ্টায় ডিক্লেয়ার করা হয়েছিল।[১][২] লর্ডসে ১৯৯৬ সালের ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় এসেক্সের বিপক্ষে স্মরণীয় ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। খেলায় তিনি ৬/১৮ পান ও গোল্ড অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ছয়টি সেঞ্চুরির সন্ধান পেয়েছেন। মার্ক পেট্টিনি’র সাথে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড রয়েছে তার।

অক্টোবর, ২০০৮ সালে মৌসুম শেষে স্টুয়ার্ট ল ক্লাব ত্যাগ করলে চ্যাপেলকে ২০০৯ মৌসুম থেকে ল্যাঙ্কাশায়ারের অধিনায়কের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন যে, বড় ধরনের কাউন্টির পক্ষে খেলা ভীষণ সৌভাগ্যের ব্যাপার। ১৮ বছর ধরে ক্লাবের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে অধিনায়কের দায়িত্ব পালনে বেশ বড় ধরনের সম্মাননা বিশেষ। আমি ল্যাঙ্কাশায়ারের পদ্ধতির আবিষ্কারবিশেষ। আমি ভবিষ্যতের সফলতা প্রাপ্তিতে প্রতিভাধর খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে সামনের দিকে দলকে এগিয়ে যাবো।[৩] আঘাতের কারণে ২০০৯ সালে পাঁচটি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অনুপস্থিত থাকলেও তাকে ল্যাঙ্কাশায়ারের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদা দেয়া হয়।[৪] ২০১১ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দেন। ঐ বছর ল্যাঙ্কাশায়ারের পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে ৭,০০০ রান ও ৭০০ উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।[৫]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

আগস্ট, ২০০৩ সালে ক্যাপবিহীন অবস্থায় স্পিন বোলার গারেথ ব্যাটি ও ব্যাটসম্যান এড স্মিথের সাথে তাকেও ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে ১৩ সদস্যের দলে নেয়ার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য জিওফ মিলারের মতে, অতিরিক্ত স্পিন ও দ্রুত বোলিংয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যাটি ও চ্যাপেলকে নেয়া হয়। কেননা, তারা স্ব-স্ব কাউন্টির পক্ষে বেশ ভালো ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিলেন। ঐ মৌসুমে চ্যাপেল ২৭ উইকেট ও ৪৫.১৮ গড়ে রান তুলেন।[৬] তবে, চূড়ান্ত একাদশে তাকে রাখা হয়নি।

কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সফলতা লাভের প্রেক্ষিতে ১৩ জুন, ২০০৬ তারিখে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। কিন্তু চার ওভার উইকেটবিহীন অবস্থায় বোলিং করার পরপরই তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। এরপর শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য তাকে দলে রাখা হলেও তলপেটের আঘাতের কারণে বাদ দেয়া হয়। এরপর থেকেই তিনি ইংল্যান্ড দলের বাইরে থাকেন।

সম্মাননা সম্পাদনা

২০০২ মৌসুমে ল্যাঙ্কাশায়ারের বর্ষসেরা খেলোয়াড় হন তিনি।[৭] ২০০৪ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্তির মৌসুমে তিনি পুরস্কৃত হন।[৮] ল্যাঙ্কাশায়ারকে শিরোপা জয়ে তার অনবদ্য ভূমিকায় ২০১২ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে মৌসুমটি চমৎকারভাবে কাটিয়েছি। স্বাভাবিক কারণেই এ পুরস্কার লাভ করেছি। তবে, এ কৃতিত্ব গত বছরে বেশ ভালো করা খেলোয়াড়দের জন্যেই সম্ভবপর হয়েছে। ল্যাঙ্কাশায়ারের জন্য এটি চমকপ্রদ বছর। এ পুরস্কার প্রাপ্তিতে নিঃসন্দেহে খেলোয়াড়গণ বিরাট ভূমিকা পালন করেছেন।[৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Never giving up, Cricinfo, ১৩ জুন ২০০৬, সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০০৭ 
  2. "The fastest hundreds, and a Case history"। Cricinfo। ২ অক্টোবর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০০৭ 
  3. ICL a factor as Lancashire release Law, Cricinfo, ১৩ অক্টোবর ২০০৮, সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ 
  4. Ostick, Chris (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯), "Chilton lands Lancashire player of the year award", Manchester Evening News, ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  5. Wilson, Andy (২০১২)। "Glen Chapple"। Booth, LawrenceThe Shorter Wisden 2012। Bloomsbury। আইএসবিএন 9781408180211 
  6. England call up Chapple, Batty and Smith, Cricinfo, ৯ আগস্ট ২০০৩, সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ 
  7. Chapple wins award, BBC Sport, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০২, সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৭ 
  8. "Glen Chapple Lancashire player profile"। Lancashire CCC। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৭ 
  9. Alastair Cook and Tim Bresnan on Wisden cricketers list, BBC Sport, ১১ এপ্রিল ২০১২, সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১২ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা