গোশিন (জাপানি: 護神, "আত্মার রক্ষক")[১] হল জন নাকা কর্তৃক তৈরিকৃত একটি বনসাই বন। এটি একটি হাতে লাগানো ফোমিনা জুনিপার্সের বন, যা নাকা ১৯৪৮ সালে যখন তিনি বনসাইয়ের প্রশিক্ষণ শুরু করেন তখন লাগিয়েছিলেন। নাকা ১৯৮৪ সালে এটি জাতীয় বনসাই ফাউন্ডেশনকে দান করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আরবোরেটুমে প্রদর্শন করা হয়। গাছগুলো পৃথকভাবে একেকটি নাকার একেকজন নাতিদের প্রতিনিধিত্ব করে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আরবোরেটুমে প্রদর্শনের জন্য রাখা জন নাকার মাস্টারপিস গোশিন
পিছনের দিক থেকে গোশিন
ঐতিহাসিক বনসাই মার্কার ২১ গোশিন (যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আরবোরেটুমের সৌজন্যে)

ইতিহাস সম্পাদনা

নাকা এগারটি গাছের মধ্যে দুটি নিয়ে ১৯৪৮ সালে প্রথম কাজ শুরু করেন যা থেকে শেষ পর্যন্ত গোশিন তৈরি করতে সক্ষম হন। তিনি একই সমান উচ্চতার দুটি ফোমিনিয়া জুনিপার্স ব্যবহার করে একটি “টু ট্রি স্টাইল’’ সংকলন তৈরি করেছেন। ১৯৫৩ সালে একটি প্রদর্শনী চলাকালে, নাকা তার বনসাই শ্রেণীর জন্য প্রথাগত লম্ব পদ্ধতিতে একটি ফোমিনিয়া তৈরি করেন। তিনি এছাড়াও একটি লম্বা গাছ অধিগ্রহণ করেন (অবশেষে যেটি গোশিনের প্রধান লম্বা গাছে পরিণত হয়), যা ধীরে ধীরে চিকন এবং রুপায়িত করতে পুনরায় মাটিতে লাগানো হয়েছিল; ১৯৬০ সালে এটি প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল।[২]

গোশিন ১৯৬৪ সালের দিকে প্রথম হাতে লাগানো বনের আকৃতি নেয়। নাকা জাপানের একটি কবরস্থানের কাছে একটি ক্যামেলিয়া ফুলের বন দ্বারা অনুপ্রাণিত হন এবং প্রথম চারটি গাছ মিলিত করেন, যা তিনি ইতিমধ্যেই এককভাবে ৪ ফুট (১.২ মিটার) লম্বা গঠন করে গড়ে তুলেছিলেন।[২][৩] সাতটি গাছের একটি বনসাই তৈরি করতে তিনি শীঘ্রই আরও তিনটি গাছ যোগ করেন। এছাড়াও নাকা পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে পাত্র পরিবর্তন করেছিলেন- যার অভাবের কারণে গাছগুলোর একটি মরে এবং তা বারবার প্রতিস্থাপন করতে হত। এই সময়, নাকার সাতজন নাতি ছিল এবং প্রত্যেকজনের জন্য একটি গাছ প্রতিনিধিত্ব করছিল। সহযোগী বনসাই শিল্পিদের অনুরোধে, তার এ সংকলনের নাম দেন গোশিন, যার অর্থ আত্মার রক্ষক। তিনি কবরস্থানের বন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলে এ নামকরণ করেন বলে মনে করা হয়। ১৯৭৩ সালে নাকার ১১ জন নাতি ছিল এবং তিনি গোশিনের সাদৃশ রক্ষা করতে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করেন। এগারোটি গাছ মূলত তার এগারো নাতির প্রতিনিধিত্ব করে।[২]

১৯৮৪ সালের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে, গোশিন প্রথম ফিলাডেলফিয়া পুষ্পপ্রদর্শনীতে দেখানো হয়, যেখানে একে প্রায় ২৫০,০০০ জন মানুষ দেখেছিল।[৪] প্রদর্শনীর শেষে নাকা গোশিনকে জাতীয় বনসাই ফাউন্ডেশনে (যা ১৯৭৬ সালে তার সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়) দান করে দেন, যা জাতীয় বনসাই-এর নতুন উত্তর আমেরিকান প্যাভালিয়নে (তার সম্মানে নামকরণ করা) এবং ওয়াশিংটন ডি.সি.তে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আরবোরেটুমে পিনজিং জাদুঘরে প্রদর্শিত হবে।[৫] ১৯৮৪ সাল থেকে গোশিন উল্লেখযোগ্য বিশিষ্ট বনসাই ম্যাগাজিনের কভার পেজে বারবার শোভিত হয়েছে। গোশিন সবচেয়ে বহুল স্বীকৃত বনসাইগুলোর একটি।[৪]

নাকা ১৯৯৯ সালের বিস্তৃর্ণ কাজ সহ, গোশিনের তত্বাবধায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্য পরীক্ষা করতে প্রায়ই ওয়াশিংটন ডিসিতে ফিরে আসতেন। পরের বছর, তিনি অন্য আরেকটি বনের বনসাই তৈরি করেন, যা গোশিন টু নামে পরিচিত। ২০০৪ সালে নাকা যখন মৃত্যুবরণ করেন, একটি ফরাসি সাইটে একটি বিস্তারিত কার্টুন প্রকাশিত হয়: "জন নাকা চলে গেছেন। গোশিনের শাখাগুলির মধ্যে বিস্ময়বিহ্বলতার প্রলাপের ফিস্ ফিস্ শব্দ।"[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Akey C.F. Hung (এপ্রিল–জুন ২০১৩)। "How did John Naka write Goshin in Japanese?"। BCI Magazine: 59। 
  2. William N. Valavanis, "The History of Goshin (Protector of the spirit) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ জুন ২০০৭ তারিখে", North American Bonsai Federation Newsletter #1, Feature #5 (December 2002). Accessed August 9, 2007.
  3. Gallery MuseumDesigning Bonsai. Accessed March 28, 2008.
  4. John Y. Naka Biography, Part II ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ আগস্ট ২০০৭ তারিখে, accessed August 9, 2007.
  5. "John Naka ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ আগস্ট ২০০৭ তারিখে", The National Heritage Fellowship Program, 1992. Accessed August 9, 2007.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা