গেরহার্ড এর্টল

জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী

গেরহার্ড এর্টল (জন্ম ১০ অক্টোবর ১৯৩৬) হলেন একজন জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী জার্মানির বার্লিনে অবস্থিত ফ্রিৎজ-হাবার-ইনস্টিটিউট ডার ম্যাক্স-প্ল্যাঙ্ক-জেসেলশ্যাফট এর ভৌত রসায়ন বিভাগের একজন ইমেরিটাস অধ্যাপক। এর্টল এর গবেষণা আধুনিক পৃষ্ঠ রসায়নের ভিত্তি স্থাপন করেছে, যা ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করেছে যে কীভাবে জ্বালানী কোষ দূষণ ছাড়া শক্তি উৎপাদন করতে পারে।

Gerhard Ertl
জন্ম (1936-10-10) ১০ অক্টোবর ১৯৩৬ (বয়স ৮৭)
জাতীয়তাGermany
মাতৃশিক্ষায়তনUniversity of Stuttgart
Technical University of Munich
পরিচিতির কারণSurface chemistry
পুরস্কারJapan Prize (1992)[১]
Wolf Prize in Chemistry (1998)
Nobel Prize in Chemistry (2007)
Otto Hahn Prize (2007)
Faraday Lectureship Prize (2007)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রSurface chemistry
প্রতিষ্ঠানসমূহTechnical University of Munich
Technical University of Hannover
Ludwig Maximilian University of Munich
Fritz Haber Institute of the MPG
ডক্টরাল উপদেষ্টাHeinz Gerischer

তার গবেষণা পরিষ্কার শক্তির উৎসের উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করেছে এবং জ্বালানী কোষের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পথপ্রদর্শক।

কঠিন পৃষ্ঠে রাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি ২০০৭ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। নোবেল একাডে বলেছে যে পৃষ্ঠে কীভাবে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এর্টল তার বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করেছে। একাডেমি বলেছে, তার আবিষ্কার একাডেমিক অধ্যয়ন এবং শিল্প উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

২০১৫ সালে এরটল ৬৫তম লিন্ডাউ নোবেল বিজয়ী সভার চূড়ান্ত দিনে জলবায়ু পরিবর্তনের উপর মৈনাউ ঘোষণা ২০১৫ স্বাক্ষর করে। ঘোষণাটি মোট ৭৬ জন নোবেল বিজয়ী দ্বারা স্বাক্ষরিত হয় এবং প্যারিসে অনুষ্ঠিত সফল সিওপি২১ জলবায়ু সম্মেলনের অংশ হিসেবে ফরাসি প্রজাতন্ত্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। [৩]

জীবনী সম্পাদনা

এর্টল জার্মানির স্টুটগার্টে জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তিনি ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত স্টুটগার্ট এর টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন এবং তারপর ইউনিভার্সিটি অফ প্যারিস (১৯৫৭-১৯৫৮) এবং মিউনিখের লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে (১৯৫৮-১৯৫৯) পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৬১ সালে স্টুটগার্ট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে তার ডিপলোমা সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে মিউনিখ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

পিএইচডি সম্পন্ন করার পর তিনি মিউনিখের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি (১৯৬৫-১৯৬৮) এর প্রভাষক হন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি হ্যানোভার টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও পরিচালক ছিলেন। এরপর তিনি ইনস্টিটিউট ফর ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি, লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ মিউনিখ (১৯৭৩-১৯৮৬) অধ্যাপক হন। ১৯৭০ এবং ৮০-এর দশকে, তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, উইসকনসিন-মিলওয়াকি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলির একজন পরিদর্শক অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটি এবং বার্লিনের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি এর অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৮৬ থেকে ২০০৪ সালে [৪] অবসর গ্রহণ পর্যন্ত এমপিজির ফ্রিৎজ হাবার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বার্লিনের হামবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হন। [৫] এর্টল এখন টেকনিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন।

গবেষণা সম্পাদনা

গেরহার্ড এর্টল আয়রন (হাবার বোশ প্রক্রিয়া) এর উপর অ্যামোনিয়ার ক্যাটালিটিক সংশ্লেষণের বিস্তারিত আণবিক পদ্ধতি এবং প্ল্যাটিনাম (ক্যাটালিটিক কনভার্টার) এর উপর কার্বন মনোক্সাইড এর অনুঘটক অক্সিডেশন নির্ধারণের জন্য পরিচিত। তার গবেষণার সময় তিনি প্ল্যাটিনাম পৃষ্ঠে দোলনাপ্রতিক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আবিষ্কার করেন এবং ফটোইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে প্রথমবারের মত ছবি তুলতে সক্ষম হন।

তিনি সবসময় তার কর্মজীবনের শুরুতে লো-এনার্জি ইলেকট্রন ডিফেকশন (এলইডি) এর মত নতুন পর্যবেক্ষণ কৌশল ব্যবহার করতেন, পরবর্তীতে অতিবেগুনী ফটোইলেকট্রন স্পেকট্রোস্কোপ (ইউপিএস) এবং স্ক্যানিং টানেলিং মাইক্রোস্কোপ (এসটিএম) ব্যবহার করা শুরু করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলি-এর গ্যাবোর এ. সোমরজাই-এর সাথে যৌথভাবে রসায়নে উলফ পুরস্কার লাভ করেন। [৬]

গেরহার্ড এর্টল কঠিন পৃষ্ঠে রাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণার জন্য রসায়নে ২০০৭ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ১.১৫ মিলিয়ন পাউন্ড) মূল্যের এই পুরস্ককারটি এর্টল-এর ৭১তম জন্মদিনে ঘোষণা করা হয়। [৭][৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Laureates of the Japan Prize. japanprize.jp
  2. Till Weishaupt (ডিসেম্বর ২০০৭)। "Glauben Sie an Gott?"Cicero। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪Translated from German: Oh, yes, I believe in God. (...) I am a Christian and I try to live as a Christian (...) I read the Bible very often and I try to understand it. 
  3. "Mainau Declaration"www.mainaudeclaration.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১১ 
  4. Freund, H.-J; Knözinger, H. (২০০৪)। "Foreword for the Gerhard Ertl Festschrift"J. Phys. Chem. B108 (38): 14183–14186। ডিওআই:10.1021/jp049239i। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০০৮ 
  5. "Prof. Dr. Gerhard Ertl"Max Planck Society। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২১ 
  6. "The 2008 Wolf Foundation Prize in Chemistry"Wolf Foundation। ১৭ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০০৮ 
  7. "The Nobel Prize in Chemistry 2007" (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। Royal Swedish Academy of Sciences। ১০ অক্টোবর ২০০৭। 
  8. "Nobel for ozone layer scientist"CNN। Associated Press। ১১ অক্টোবর ২০০৭। ৯ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০০৮