গেয়র্ক ভিটিশ

জার্মান রসায়নবিদ

গেয়র্ক ভিটিশ (জার্মান: [ˈɡeː.ɔʁk ˈvɪ.tɪç] (শুনুন); ১৬ই জুন ১৮৯৭ – ২৬শে আগস্ট ১৯৮৭) ছিলেন একজন জার্মান রসায়নবিদ, তিনি অ্যালডিহাইড এবং কিটোন থেকে অ্যালকিন সংশ্লেষের একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। ফসফোনিয়াম ইলাইড যৌগগুলি ব্যবহার করে উইটিগ বিক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি এই সংশ্লেষটি করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি হারবার্ট সি. ব্রাউনের সঙ্গে যৌথভাবে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।

গেয়র্ক ভিটিশ
জন্ম(১৮৯৭-০৬-১৬)১৬ জুন ১৮৯৭
মৃত্যু২৬ আগস্ট ১৯৮৭(1987-08-26) (বয়স ৯০)
জাতীয়তাজার্মান
মাতৃশিক্ষায়তনমারবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণউইটিগ বিক্রিয়া
১,২-ভিটিশ পুনর্বিন্যাস
২,৩-ভিটিশ পুনর্বিন্যাস
পটাশিয়াম টেট্রাফিনাইলবোরেট
পুরস্কাররসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানের জন্য অটো হান পুরস্কার (১৯৬৭)
পল কারের স্বর্ণপদক (১৯৭২)
রসায়নে নোবেল পুরস্কার (১৯৭৯)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্ররসায়ন
প্রতিষ্ঠানসমূহমারবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়
ব্রনসুইগ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়
ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়
টুবিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়
হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়
ডক্টরাল উপদেষ্টাকার্ল ফন আউয়ার্স
ডক্টরেট শিক্ষার্থীওয়ার্নার টোকটারম্যান, উলরিখ শেলকফ

জীবনী সম্পাদনা

উইটিগের জন্ম হয়েছিল জার্মানির বার্লিন শহরে। তার জন্মের কিছু দিনের মধ্যেই তার পরিবার কাসেল অঞ্চলে চলে আসে। সেখানে তার বাবা ফলিত কলা উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যাপক ছিলেন। তিনি কাসেলের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৯১৬ সালে টুবিঙেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন অধ্যয়ন শুরু করেন। তাঁকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হয়েছিল এবং তিনি হেসে-কাসেল (বা হেসি-কাসেল) অশ্বারোহী বাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদে ছিলেন। ১৯১৮ সাল থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত মিত্র যুদ্ধ বন্দী থাকার পরে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অত্যধিক ভিড়ের কারণে, ভিটিশ মনে করেছিলেন, তার রসায়ন পড়াশোনা পুনরায় চালু করা কঠিন হবে। সেই সময়ের মারবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়নের অধ্যাপক কার্ল ফন আউয়ার্স কে সরাসরি অনুরোধ করার পর, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা আবার শুরু করতে সক্ষম হন এবং তিন বছর পর জৈব রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

কার্ল ফন আউয়ার্স তাঁকে অধ্যয়ন বিষয়ক কর্মজীবন শুরু করতে রাজি করিয়েছিলেন, এরপর ১৯২৬ সালে তিনি তার হ্যাবিলিয়েশন (স্বনির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাদানের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা) করেন। সেই সময় কার্ল জিগলার তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন, যিনি সেই সময়ে আউয়ার্সের সাথে তার হ্যাবিলিয়েশন করছিলেন। কার্ল ফন আউয়ার্সের উত্তরসূরি হান্স মীরভেন ভিটিশকে প্রভাষক হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন, তিনি ভিটিশ লিখিত নতুন ৪০০-পৃষ্ঠার স্টিরিওকেমিস্ট্রি সম্পর্কিত বইটি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এটি ভিটিশকে প্রভাষক পদ প্রদানের আংশিক কারণ ছিল। ১৯৩১ সালে ভিটিশ তার সহকর্মী ওয়ালট্রাড আর্নস্টকে বিবাহ করেছিলেন। কার্ল ফ্রাইসের আমন্ত্রণে তিনি ১৯৩২ সালে ব্রনসুইগ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। ব্রনসুইগে থাকার সময়টি অত্যন্ত সমস্যাসঙ্কুল হয়ে উঠেছিল। নাৎসীরা কার্ল ফ্রাইসকে বহিষ্কার করার চেষ্টা করেছিল এবং ভিটিশ তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন। ফ্রাইসের বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণের পরে, ১৯৩৭ সালে হারমান স্টডিংগার ভিটিশকে ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি ভিটিশকে তার স্টেরিওকেমিস্ট্রি বইটির জন্য জানতেন, যেখানে তিনি স্টডিংগারের ম্যাক্রো-অণুর তীব্র সমালোচিত তত্ত্বকে সমর্থন করেছিলেন। ফ্রাইবুর্গে ভিটিশের সময়েই কার্বানিয়ন রসায়নের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল।

১৯৪৪ সালে তিনি টুবিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগের প্রধান উইলহেলম শ্লেঙ্কের স্থলাভিষিক্ত হন। উইটিগ বিক্রিয়ার ক্রমবিকাশ সহ তার বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক কাজ, এই সময়ে টুবিঙেনে সম্পন্ন হয়েছিল। ১৯৫৬ সালে প্রায় ষাট বছর বয়সী ভিটিশকে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্ল ফ্রয়েডেনবার্গ এর উত্তরসূরি হিসাবে জৈব রসায়ন বিভাগের প্রধান পদে নিয়োগ, সেই সময়েও যথেষ্ট ব্যতিক্রমী ঘটনা ছিল। নতুন নির্মিত বিভাগ এবং বিএএসএফ এর সাথে ঘনিষ্ঠ সংযোগের জন্য ভিটিশ এই সুযোগটি গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে অবসর নেওয়ার পরেও তিনি হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছিলেন এবং ১৯৮০ সাল পর্যন্ত গবেষণালব্ধ কাগজপত্র প্রকাশ করে গেছেন। তার বেশিরভাগ পুরস্কার এই হাইডেলবার্গে থাকার সময়েই তিনি পেয়েছিলেন, এর মধ্যে আছে ১৯৫৬ সালে সরবোনের সম্মানসূচক ডক্টরেট এবং ১৯৭৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার

কাজ সম্পাদনা

ভিটিশের অবদানের মধ্যে আছে ফেনিলিথিয়াম প্রস্তুত করা এবং ১,২-ভিটিশ পুনর্বিন্যাস২,৩-ভিটিশ পুনর্বিন্যাস আবিষ্কার করা।

রসায়ন মণ্ডলীর মধ্যে ভিটিশ একজন নিখুঁত পরীক্ষক এবং রাসায়নিক রূপান্তরের পর্যবেক্ষক হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি উৎপাদিত কাজের তাত্ত্বিক এবং যান্ত্রিক ভিত্তিকে একেবারেই গ্রাহ্য করতেন না।


কোলোপিডালল নামের একটি যৌগের শিরোনাম সংবলিত একটি সাহিত্যে রচনায়ও গেয়র্কের নাম রয়েছে।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Wittig, Georg; Mangold, Ruth; Felletschin, Günter (১৯৪৮)। "Über die Stevens'sche und Sommelet'sche Umlagerung als Ylid-Reaktionen"। Justus Liebigs Annalen der Chemie560 (1): 116–127। আইএসএসএন 0075-4617ডিওআই:10.1002/jlac.19485600105 
  • Werner Tochtermann (১৯৯৭)। "Obituary: Georg Wittig (1897-1987)"। Liebigs Annalen1997 (3): I। ডিওআই:10.1002/jlac.199719970303 
  • Gericke, D (১৯৭৯)। "[Nobel prize for chemistry 1979 for the Wittig reaction as a basis for many-sided syntheses. Georg Wittig, 60th German Nobel laureate]"। Fortschr. Med. (প্রকাশিত হয় নভে ১৫, ১৯৭৯)। 97 (43): 1958, 1964। পিএমআইডি 389768 
  • Hoffmann, Reinhard W. (২০০১)। "Wittig and His Accomplishments: Still Relevant Beyond His 100th Birthday"। Angewandte Chemie International Edition40 (8): 1411–1416। ডিওআই:10.1002/1521-3773(20010417)40:8<1411::AID-ANIE1411>3.0.CO;2-U 
  • Brock, WH (২০০১)। "Wittig, Georg Friedrich Karl"। Encyclopedia of Life Sciencesআইএসবিএন 0470016175ডিওআই:10.1038/npg.els.0002959 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা