গর্ডন হোয়াইট

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার

গর্ডন চার্লস হোয়াইট (ইংরেজি: Gordon White; জন্ম: ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮২ - মৃত্যু: ১৭ অক্টোবর, ১৯১৮) কেপ প্রদেশের পোর্ট সেন্ট জোন্সে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯০৬ থেকে ১৯১২ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে গটেংয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, লেগব্রেক বোলিং করতেন গর্ডন হোয়াইট

গর্ডন হোয়াইট
আনুমানিক ১৯০৫ সালে গর্ডন চার্লস হোয়াইট
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম৫ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮২
পোর্ট সেন্ট জোন্স, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু১৭ অক্টোবর, ১৯১৮ (৩৬ বছর)
গাজা সিটি, ফিলিস্তিন
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগব্রেক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৭ ৯৭
রানের সংখ্যা ৮৭২ ৩৭৪০
ব্যাটিং গড় ৩০.০৬ ২৭.৭০
১০০/৫০ ২/৪ ৪/১৭
সর্বোচ্চ রান ১৪৭ ১৬২*
বল করেছে ৪৯৮ ৫৩২৩
উইকেট ১৫৫
বোলিং গড় ৩৩.৪৪ ২০.০৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৪৭ ৭/৩৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০/- ৪৬/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ১২ অক্টোবর ২০১৮

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন গর্ডন হোয়াইট। কেপ কোরে ১ম ব্যাটেলিয়নে কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফিলিস্তিনের গাজায় গুরুতরভাবে জখমপ্রাপ্ত হন ও পরবর্তীতে দেহাবসান ঘটে তার।

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

১৯০২ সালে ট্রান্সভালের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যান হিসেবে গর্ডন হোয়াইটের সুনাম ছিল। এছাড়াও মাঝে-মধ্যে লেগস্পিন বোলিং করতেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন গর্ডন হোয়াইট। ১৯০৫-০৬ ও ১৯০৯-১০ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজ দেশে খেলেছেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৭ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন গর্ডন হোয়াইট। ২ জানুয়ারি, ১৯০৬ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে গর্ডন হোয়াইটের। ১৯০৪ ও ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ড সফরে যান। এছাড়াও ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ১৯০৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩০ গড়ে ৯৩৭ রান তুলেন।

তন্মধ্যে, নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে ১১৫ রান তুললেও কোন টেস্টে অংশ নিতে পারেননি। ১৯০৫-০৬ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসে। পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের সবকটিতেই তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। জোহেন্সবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ১৪৭ রানের মনোরম ইনিংস উপহার দেন। এছাড়াও দুইটি অর্ধ-শতকের ইনিংস ছিল তার। ১৯০৭ সালের সফরে তিন টেস্টে অংশ নেন। তবে ১৯০৪ সালের তুলনায় কম সফলতা পান। অংশগ্রহণকৃত টেস্টের পাঁচ ইনিংসে মাত্র ১৫ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। তবে, গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অপরাজিত ১৬২ রান তুলেছিলেন গর্ডন হোয়াইট। লেগস্পিন বোলার হিসেবে মাঠে ঈর্ষনীয় সফলতা পেয়েছেন। মাত্র ১৩ গড়ে ৭২ উইকেট দখল করেছিলেন।

১৯০৯-১০ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চার টেস্টে অংশ নেন। তন্মধ্যে, ডারবানে ১১৮ রানের ইনিংস খেলেন। ১৯১২ সালে ত্রিজাতি প্রতিযোগিতায় পাঁচ টেস্টে খেললেও ব্যাট কিংবা বল হাতে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।

বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন গর্ডন হোয়াইট। আগস্ট, ১৯১৬ সালে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সাথে কেপ কোরের ১ম ব্যাটেলিয়নে ক্যাপ্টেন পদবী লাভ করেন। ডিসেম্বর, ১৯১৬ সালে স্বেচ্ছায় অবনমন ঘটিয়ে লেফটেনেন্ট হন। ১৯১৬-১৭ সালে পূর্ব আফ্রিকা রণাঙ্গনের মরোগোরো এলাকায় তিনি দায়িত্ব পালন করেন। জুলাই, ১৯১৭ সালে অক্সফোর্ডশায়ার নামীয় চিকিৎসা জাহাজে চড়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যান। মার্চ, ১৯১৮ সালে নিজ বাহিনীর সাথে মিশরে যান ও ১৬০তম ব্রিগেডের সাথে যুক্ত হন।

২০ সেপ্টেম্বর, ১৯১৮ তারিখে মেগিদ্দো যুদ্ধে জেরুজালেমের কাছে খান জিবেইতের কাছাকাছ এলাকায় তুর্কিবাহিনীর বেয়নেটে গুরুতরভাবে আহত হন। প্রায় এক মাস পর ফিলিস্তিনের গাজায় অবস্থিত ৪৭তম স্ট্যাশনারি হাসপাতালে থাকার পর ১৭ অক্টোবর, ১৯১৮ তারিখে ৩৬ বছর বয়সে গর্ডন হোয়াইটের জীবনাবসান ঘটে।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা