খ্রিস্টান সমাধিক্ষেত্র, ঢাকা

ঢাকার সমাধিক্ষেত্র, বাংলাদেশ

খ্রিস্টান সমাধিক্ষেত্র পুরান ঢাকার ওয়ারীতে অবস্থিত। এই সমাধিক্ষেত্রটি স্থাপনের কিছুদিন পর থেকেই আস্তে আস্তে ধ্বংসের সম্মুখীন হয় এবং বর্তমানেও এই ধ্বংসের ধারা অব্যাহত রয়েছে।

খ্রিস্টান সমাধিক্ষেত্র, ঢাকা

খ্রিস্টান সমাধিক্ষেত্র

অবস্থান বাংলাদেশ ঢাকা, বাংলাদেশ
প্রতিষ্ঠিত ১৭০০
স্থাপত্য তথ্য
ধরন খ্রিস্টান স্থাপত্য
খ্রিস্টান সমাধিক্ষেত্র
খ্রিস্টান সমাধিক্ষেত্র

ইতিহাস সম্পাদনা

এই সমাধিক্ষেত্রটি মূলত ইউরোপীয়ান বণিক ও তাদের পরিবারবর্গের জন্য স্থাপিত হয়। তাই এই সমাধিক্ষেত্রের বেশিরভাগ সমাধি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সদস্যদের। এই সমাধিক্ষেত্রের সবচেয়ে প্রাচীন সমাধি হল কলকাতার মন্ত্রী রেভারেন্ড জোসেফ প্যাজেট এর, যিনি ১৭৪৪ সালে ২৬ বছর বয়সে মারা যান।

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

১৮০০ সালের প্রথম দিক থেকেই এই সমাধিক্ষেত্রের অবনতি শুরু হয়, রেজিনাল্ড হেবার এবং এফ.বি. ব্র্যাডলী বার্ট উভয়ের দ্বারা পরিলক্ষিত হয়। যদিও ঐ দশকের অনেক অনুভূতিপ্রবন জিনিস তাদের আকর্ষণ করে। সমাধিক্ষেত্রের প্রধান রাস্তাটি সময়ের সাথে বিলীন হয়ে যায়, কিন্তু এটা বোঝা যায় যে, একজোড়া সোজা রাস্তা সমাধিক্ষেত্রের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য একটি নেটওয়ার্ক তৈরী করে। এই সমাধিক্ষেত্রের একাধিক সমাধি একসাথে মিশে একটি মাত্র সমাধিতে পরিণত হয়, যে কারণে দর্শনার্থীরা সহজে বুঝতে পারে না সমাধির প্রকৃত সংখ্যা।

স্থাপত্য মর্মার্থ সম্পাদনা

এই সমাধিক্ষেত্রে ছয় ধরনের সমাধি দেখা যায়

টাইপ-এ এই ধরনের সমাধিগুলো হয় একেবারে পুরনো যার কোন অংশ অবশিষ্ট নেই অথবা একেবারে নতুন। সমাধির আসল অবস্থাটি দর্শনার্থীদের জন্য পাশে নির্দেশিত থাকে।

টাইপ-বি এই ধরনের সমাধিগুলো মূরিশ ধাঁচের তোরণ। যার অধিকাংশই বহু বছর ধরে পরিবর্তন করা হয়েছে। এবং যা এখনো বিদ্যমান। এই ধরনের সমাধিগুলো চিত্তাকর্ষক নকশার বদলে অনেকটা সমতলভূমির কেন্দ্রের উপর দণ্ডায়মান সাধারণ তোরণের মত। এর অবস্থানগুলো নির্দেশ করে যে, এই সমাধিগুলোর কোনপ্রকার প্রাতিষ্ঠানিক সংরক্ষণ কার্য পরিচালনা হয় না।

টাইপ- সি, ডি এবং ই এখানকার "obelisk" এবং "urn" এর সাথে মিল আছে কলকাতার সমাধিক্ষেত্রগুলোতে যেগুলো আছে সেগুলোর। এই ধরনের সমাধিগুলো ভারতীয় পিরামিডের মত। যা একটি পাকা ভিত্তির উপর দণ্ডায়মান থাকে, যে পাকা ভিত্তিটি সমাধির উপর তৈরী হয়, যার স্মৃতিস্তম্ভের আস্তে আস্তে কোণাকুণিভাবে উপর দিকে উঠে একটি চূড়ায় গিয়ে সমাপ্ত হয়। যা অনেকটা পিরামিডের ছোট সংস্করণের মত।

টাইপ-এফ এই সমাধিক্ষেত্রের এই ধরনের সমাধিগুলো সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ও বৈচিত্রপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এই সমাধিগুলো বৃত্তাকার নয় কিন্তু ডোরিক ও আয়ন কলামের দ্বারা অষ্টভুজ বা বর্গাকৃত হয়। এই ধরনের সমাধিগুলোর মধ্যে কলম্বো শাহীব সমাধিটি সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক। সময়ের সাথে এই সমাধিটির পরিবর্তন সাধন করা হয়। এই সমাধিটি তিনটি সমাধির সমন্বয়ে গঠিত, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, কেন্দ্রীয়ভাবে এই সমাধির কোন শিলালিপি নেই। যদিও শিলালিপি পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়, কারণ এই সমাধির আসল কাঠামো ঋতুগত পরিবর্তন বা অন্যান্য ভৌগোলিক কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। এই সমাধির স্তম্ভটি মোঘল আমলে তৈরী মসজিদসমূহের নকশার গড় পরিকল্পনায় তৈরী। বর্গাকার একটি সমাধির চারপাশের প্রত্যেকদিকে চারটি করে দরজা বিদ্যমান। সামনের দিকে তিনদিকের বৃহৎ মধ্যভাগে একটি মুখমণ্ডলের ছবি ও এর শেষের দিক অষ্টাভুজাকৃতির একটি স্তম্ভ বিদ্যমান যাতে একটি স্বর্গের পরীর ছবি বিদ্যমান।

আরও দেখুন সম্পাদনা

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  • Asiatic Society Of Bangladesh. Dhaka(p. 58).