ক্লোরোমিথেন

রাসায়নিক যৌগ
টেমপ্লেট:Chembox তাপরসায়ন

ক্লোরোমিথেন (যাকে মিথাইল ক্লোরাইড, রেফ্রিজারেন্ট-৪০, আর-৪০ এবং এইচসিসি-৪০ বলা হয়) এক ধরনের জৈব যৌগ, যার রাসায়নিক সংকেত CH3Cl.ক্লোরোমিথেন এক ধরনের হ্যালোঅ্যালকেন। এটি বর্ণহীন, গন্ধহীন ও দাহ্য গ্যাস। শিল্প রসায়নে ক্লোরোমিথেন গুরুত্বপূর্ণ বিকারক বা রিএজেন্ট,তবে ভোক্তারা সাধারণত একে কম ব্যবহার করেন। [৫]

ক্লোরোমিথেন
Stereo, skeletal formula of chloromethane with all explicit hydrogens added
Ball and stick model of chloromethane
Ball and stick model of chloromethane
Spacefill model of chloromethane
Spacefill model of chloromethane
নামসমূহ
ইউপ্যাক নাম
ক্লোরোমিথেন[২]
অন্যান্য নাম
  • রেফ্রিজারেন্ট বা শীতক-৪০
  • R-40[১]
  • মিথাইল ক্লোরাইড [১]
  • মনোক্লোরোমিথেন[১]
শনাক্তকারী
ত্রিমাত্রিক মডেল (জেমল)
বেইলস্টেইন রেফারেন্স 1696839
সিএইচইবিআই
সিএইচইএমবিএল
কেমস্পাইডার
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড ১০০.০০০.৭৪৪
ইসি-নম্বর
  • ২০০-৮১৭-৪
মেলিন রেফারেন্স 24898
কেইজিজি
এমইএসএইচ মিথাইল+ক্লোরাইড
আরটিইসিএস নম্বর
  • পিএ৬৩০০০০০
ইউএনআইআই
ইউএন নম্বর 1063
  • InChI=1S/CH3Cl/c1-2/h1H3 YesY
    চাবি: NEHMKBQYUWJMIP-UHFFFAOYSA-N YesY
বৈশিষ্ট্য
CH3Cl
আণবিক ভর ৫০.৪৯ g·mol−১
বর্ণ বর্ণহীন গ্যাস
গন্ধ মিষ্টি গন্ধ[৩]
ঘনত্ব ১.০০৩ গ্রাম/মিলিলিটার (-২৩.৮ °C, তরল)[১] 2.3065 g/L (0 °C, gas)[১]
গলনাঙ্ক −৯৭.৪ °সে (−১৪৩.৩ °ফা; ১৭৫.৮ K)[১]
স্ফুটনাঙ্ক −২৩.৮ °সে (−১০.৮ °ফা; ২৪৯.৩ K)[১]
৫.৩২৫ গ্রাম লিটার−1
লগ পি 1.113
বাষ্প চাপ ৫০৬.০৯ কিলোপ্যাসকেল (at ২০ °সে (৬৮ °ফা))
কেএইচ 940 nmol Pa−1 kg−1
-32.0·10−6 cm3/mol
গঠন
Coordination
geometry
চতুস্তলকীয়
আণবিক আকৃতি Tetrahedron
ডায়াপল মুহূর্ত 1.9 D
ঝুঁকি প্রবণতা
প্রধান ঝুঁকিসমূহ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী
জিএইচএস চিত্রলিপি The flame pictogram in the Globally Harmonized System of Classification and Labelling of Chemicals (GHS) The health hazard pictogram in the Globally Harmonized System of Classification and Labelling of Chemicals (GHS)
জিএইচএস সাংকেতিক শব্দ বিপদজনক
জিএইচএস বিপত্তি বিবৃতি H220, H351, H373
জিএইচএস সতর্কতামূলক বিবৃতি P210, P281, P410+403
এনএফপিএ ৭০৪
ফ্ল্যাশ পয়েন্ট −২০ °সে (−৪ °ফা; ২৫৩ K)[১]
৬২৫ °সে (১,১৫৭ °ফা; ৮৯৮ K)[১]
বিস্ফোরক সীমা ৮.১%-১৭.৪%[৩]
প্রাণঘাতী ডোজ বা একাগ্রতা (LD, LC):
1800 mg/kg (oral, rat)[১]
5.3 mg/L/4 h (inhalation, rat)[১]
৭২,০০০ পিপিএম (rat, 30 min)
২,২০০ পিপিএম (mouse, 6 hr)
২৭৬০ পিপিএম(mammal, 4 hr)
২৫২৪ পিপিএম (rat, 4 hr)[৪]
২০,০০০ পিপিএম (guinea pig, 2 hr)
14,661 ppm (dog, 6 hr)[৪]
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য অনাবৃতকরণ সীমা (NIOSH):
টিডব্লিউএ ১০০ পিপিএম, সি ২০০ পিপিএম ৩০০ পিপিএম (5-minute maximum peak in any 3 hours)[৩]
Ca[৩]
Ca [2000 ppm][৩]
সম্পর্কিত যৌগ
সম্পর্কিত অ্যালকেন
সম্পর্কিত যৌগ
২-ক্লোরোমিথানল
সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ছাড়া, পদার্থসমূহের সকল তথ্য-উপাত্তসমূহ তাদের প্রমাণ অবস্থা (২৫ °সে (৭৭ °ফা), ১০০ kPa) অনুসারে দেওয়া হয়েছে।
☒না যাচাই করুন (এটি কি YesY☒না ?)
তথ্যছক তথ্যসূত্র

প্রাপ্তি সম্পাদনা

ক্লোরোমিথেন একটি বহুল লভ্য অর্গানোহ্যালোজেন। সামুদ্রিক ফাইটোপ্লাংকটনসমূহ অত্যন্ত কম মাত্রায় ক্লোরোমিথেন উৎপন্ন করে। এছাড়াও, Batis Maritima উদ্ভিদে মিথাইল ক্লোরাইড ট্রান্সফারেজ উৎসেচক থাকে, যেটি এস-অ্যাডিনোসিন এল মেথিওনিন ও ক্লোরাইড হতে ক্লোরোমিথেন সংশ্লেষণে অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা পালন করে। ইক্ষুশিল্পে জৈব বর্জ্য সাধারণত পুড়িয়ে ফেলা হয়। ক্লোরাইড দ্বারা দূষিত হলে এটি বায়ুমণ্ডলে ক্লোরোমিথেন নির্গত করে।

রোসেটা মহাকাশযানে রোসেটা আয়ন শনাক্তকারী বর্ণালিমিতিক যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করে দেখা গেছে , ৬৭পি/চুরিমভ -গেরাসিমেঙ্কো ধূমকেতুতেও ক্লোরোমিথেনের উপস্থিতি রয়েছে। তারা-গঠনকারী অঞ্চলে ক্লোরোমিথেনের উপস্থিতি এভাবেই প্রমাণিত হয়।

উৎপাদন সম্পাদনা

মিথানল, সালফিউরিক এসিড ও সোডিয়াম ক্লোরাইডের একটি সংমিশ্রণকে সিদ্ধ করে ফ্রেঞ্চ রসায়নবিদ জঁ ব্যাপটিস্ট দ্যুমা ও ইউজিন পেলিগো ১৮৩৫ সালে সর্বপ্রথম ক্লোরোমিথেন সংশ্লেষণ করেন।

বাণিজ্যিকভাবে মিথানল এবং হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বা হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়ার মাধ্যমে মিথানল উৎপন্ন করা হয়। বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ:[৫]

CH3OH + HCl → CH3Cl + H2O

উপযুক্ত তাপমাত্রায় ক্লোরিন ও মিথেনকে মিশিয়ে ক্লোরোমিথেন প্রস্তুত করা যায়। তবে এ প্রক্রিয়ায় অনেকসময় অধিক ক্লোরিনেটেড যৌগ, যেমন- ডাইক্লোরোমিথেন,ক্লোরোফর্ম ও কার্বন টেট্রাক্লোরাইড প্রস্তুত হয়ে যায়। এ কারণে ক্লোরিনেশন প্রক্রিয়া তখনই ব্যবহার করা হয়, যখন উৎপাদ হিসেবে এ সকল পদার্থের প্রয়োজন অনুভূত হয়। ক্লোরিনেশনের ফলে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড-ও উৎপন্ন হয়, যা সংরক্ষণ করা অত্যন্ত দুরূহ। [৫]

পরিবেশে সম্পাদনা

পরিবেশে উপস্থিত অধিকাংশ মিথাইল ক্লোরাইড বায়ুমণ্ডলে চলে যায়। বায়ুমণ্ডলে এর আয়ুষ্কাল এক থেকে তিন বছর। [৬]

তবে মিথাইল ক্লোরাইড পানিতে মিশলে স্বতঃবাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় একসময় পানি থেকে অপসারিত হয়। স্বতঃবাষ্পীভবনের প্রেক্ষাপটে নদীতে এর গড় অর্ধায়ু ২.১ ঘণ্টা, উপহ্রদে গড় অর্ধায়ু ২৫ ঘণ্টা এবং হ্রদে গড় অর্ধায়ু ১৮ দিন।[৭]

প্রতি বছর স্ট্রাটোমণ্ডলে ২ গুণন ১০ টন মিথাইল ক্লোরাইড উপস্থিত থাকে। এই পরিমাণ প্রতিবছর নির্গত ক্লোরিন যৌগের ২০%-২৫%।[৮]

ব্যবহার সম্পাদনা

ডাইমিথাইলডাইক্লোরোসিলেন এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অর্গানোসিলিকন যৌগসমূহ উৎপন্ন করতে ক্লোরোমিথেন ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয়। [৫] সরাসরি প্রক্রিয়ায় এ যৌগ বিপুল পরিমাণে উৎপাদন করা হয়। নিচে বিক্রিয়ার মাধ্যমে এটি দেখানো হলো -(এখানে স্মর্তব্য যে, Me=CH3):

x MeCl + Si → Me3SiCl, Me2SiCl2, MeSiCl3, Me4Si2Cl2

ডাইমিথাইলডাইক্লোরোসিলেন (সিলিকনের পূর্বসূচক) অত্যন্ত মূল্যবান বস্তু। এছাড়াও ট্রাইমিথাইলসাইল ক্লোরাইড ও মিথাইলট্রাইক্লোরোসিলেন অত্যন্ত মূল্যবান দ্রব্য হিসেবে পরিগণিত হয়। বিউটাইল রাবার তৈরি ও পেট্রোলিয়াম পরিশোধনের ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

মেথিলেটিং ও ক্লোরিনেটিং এজেন্ট হিসেবে ক্লোরোমিথেন ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ -মিথাইলসেলুলোজ উৎপাদনে এটি কাজে লাগে। গ্রিজ, তেল ও রেজিন আহরণে এবং পলিস্টিরিন ফোম প্রস্তুতেও ক্লোরোমিথেনের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ওষুধ উৎপাদন ও চেতনানাশক তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও নিম্ন তাপমাত্রায় পলিমার তৈরি ও কীটনাশক হিসেবে ক্লোরোমিথেন ব্যবহার করা হয়।

একসময় ক্লোরোমিথেন শীতক হিসেবে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হত। কিন্তু বর্তমানে শীতক হিসেবে এর ব্যবহারের প্রচলন নেই। টেট্রামিথাইলেডের ন্যায় সীসাজাত যৌগ তৈরিতেও এটি একদা ব্যবহৃত হত।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Record in the GESTIS Substance Database from the IFA
  2. "Methyl Chloride - Compound Summary"PubChem Compound। USA: National Center for Biotechnology Information। ২৬ মার্চ ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১২ 
  3. "NIOSH Pocket Guide to Chemical Hazards #0403" (ইংরেজি ভাষায়)। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (NIOSH)। 
  4. "Methyl chloride"স্বাস্থ্য এবং জীবনের জন্য সহসা ঝুঁকিপূর্ণ। National Institute for Occupational Safety and Health (NIOSH)। 
  5. https://doi.org/10.1002%2F14356007.a06_233.pub2
  6. Fabian, P.; Borchers, R.; Leifer, R.; Subbaraya, B. H.; Lal, S.; Boy, M. (19 অক্টোবর, 1996)। "Global stratospheric distribution of halocarbons"Atmospheric Environment30 (10): 1787–1796। ডিওআই:10.1016/1352-2310(95)00387-8 – ui.adsabs.harvard.edu-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. Lyman, Warren J. (19 অক্টোবর, 1982)। "Handbook of chemical property estimation methods : environmental behavior of organic compounds"। New York : McGraw-Hill – Internet Archive-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  8. https://doi.org/10.1029%2FJC088iC11p06641