কৌশাম্বী জেলা

উত্তর প্রদেশের একটি জেলা

কৌশাম্বী জেলা ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি জেলামাঞ্জানপুর হল জেলা সদর, এবং ভরওয়ারি হল কেন্দ্রীয় বাজার। ১৯৯৭ সালের ৪ঠা এপ্রিল, প্রয়াগরাজ জেলা থেকে কেটে এই জেলাটি তৈরি করা হয়েছিল। মনৌরী বাজার প্রয়াগরাজ ও কৌশাম্বী জেলাকে রেলপথে সংযুক্ত করেছে, এসএইচ ৯৯ এর ওপর একটি সেতুর মাধ্যমে। মাঞ্জানপুর প্রয়াগরাজের দক্ষিণ-পশ্চিমে যমুনা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত, শহর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার (৩৪ মা) দূরে। এটির দক্ষিণে চিত্রকূট জেলা, উত্তরে প্রতাপগড় জেলা, পূর্বে প্রয়াগরাজ জেলা এবং পশ্চিমে ফতেপুর জেলা। কৌশাম্বি প্রয়াগরাজ বিভাগের একটি অংশ। নিকটতম রেল স্টেশন, ভরওয়ারি, যেটি দিল্লি, এলাহাবাদ, কলকাতা, গয়া এবং কানপুরকে এর সাথে সংযুক্ত করেছে।

কৌশাম্বী জেলা
উত্তর প্রদেশের জেলা
উত্তরপ্রদেশে কৌশাম্বী জেলার অবস্থান
উত্তরপ্রদেশে কৌশাম্বী জেলার অবস্থান
দেশভারত
রাজ্যউত্তরপ্রদেশ
বিভাগএলাহাবাদ বিভাগ
সদর দপ্তরমাঞ্জানপুর
তহশিল
সরকার
 •  লোকসভা কেন্দ্রকৌশাম্বী
 •  বিধানসভা কেন্দ্রগুলি১. চাইল ২. মাঞ্জানপুর ৩. সিরাথু
আয়তন
 • মোট১,৯০৩.১৭ বর্গকিমি (৭৩৪.৮২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১৫,৯৯,৫৯৬
 • জনঘনত্ব৮৪০/বর্গকিমি (২,২০০/বর্গমাইল)
জনসংখ্যার উপাত্ত
 • সাক্ষরতা৬৩.৬৯ %
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
ওয়েবসাইটhttp://kaushambi.nic.in/
ঘোষিতারম মঠ

ইতিহাস সম্পাদনা

কৌশাম্বী ছিল প্রাচীন ভারতীয় বৎসা মহাজনপদের রাজধানী,[১][২][৩] এই জাতীয় ১৬ টি রাজধানীর মধ্যে একটি। পুরাণ অনুসারে, বৎসা নামকরণ করা হয়েছিল কাশী রাজার নামে।[৪] রামায়ণ এবং মহাভারতে, রাজধানী কৌশাম্বী প্রতিষ্ঠার কারণকে, চেদি রাজপুত্র (কুসা বা কুসাম্বা) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পুরাণে বলা হয়েছে যে হস্তিনাপুর গঙ্গার জলে ভেসে যাবার পর, ভরত রাজা নিকাকসু (জন্মেজয়ের অধস্তন পুরুষ) শহর ত্যাগ করে কৌশাম্বীতে স্থায়ী হন। এই ঘটনাটি স্বপ্নবাসবদত্ত এবং প্রতিজ্ঞা-যুগান্ধরায়না দ্বারা সমর্থিত, এবং এর স্বীকৃতি ভাসকে দেওয়া হয়েছে। দুজনেই রাজা উদয়নকে বর্ণনা করেছিলেন, ভরত পরিবারের (ভরত-কুল) একজন বংশধর হিসাবে। পুরাণে নিকাকসুর উত্তরসূরিদের একটি তালিকা রয়েছে যেখানে শেষ রাজা হিসেবে সেমাকার নাম পাওয়া যায়।[৫] উদয়নের রাজত্বকালে গৌতম বুদ্ধ ধর্ম বা অষ্টাঙ্গিক মার্গ এবং চারটি মহৎ সত্য প্রচার করার জন্য বেশ কয়েকবার কৌশাম্বী গিয়েছিলেন। উদয়ন ছিলেন বৌদ্ধ উপাসক । বৌদ্ধ ক্যানোনিকাল পাঠ্য একোত্তারা আগামার চীনা অনুবাদ অনুসারে, উদয়নের অনুরোধে বুদ্ধের প্রথম চিত্র (চন্দন কাঠে খোদাই করে) তৈরি হয়েছিল। পুরাণে বর্ণিত হয়েছে যে তাঁর চার উত্তরসূরী ছিলেন বাহিনারা, দণ্ডপাল, নীরামিত্র এবং সেমাকা। বৎসাকে পরে অবন্তীর সাথে যুক্ত করা হয়েছিল, এবং মণিপ্রভা (প্রদ্যোতের নাতি) অবন্তীর রাজপুত্র হিসাবে কৌশাম্বী শাসন করেছিলেন। অশোক কৌশাম্বীকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছিলেন, এবং সেখানে পালিতে লেখা শিলালিপিসহ একটি স্তম্ভ স্থাপন করেছিলেন; একটি জৈন মন্দিরও নির্মিত হয়েছিল। স্তম্ভ এবং মন্দিরটি এখনও আছে এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা বৎসা খনন করা হচ্ছে।

১৯৯৭ সালের ৪ঠা এপ্রিল তৎকালীন এলাহাবাদ জেলা ভেঙে কৌশাম্বী জেলাটি তৈরি করা হয়েছিল। ২০০৬ সালে, পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক কৌশম্বিকে ভারতের ২৫০টি সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির মধ্যে একটি ঘোষণা করেছিল (মোট ৬৪০টি জেলার মধ্যে)।[৬] এটি উত্তর প্রদেশের ৩৪টি জেলার মধ্যে একটি যে পশ্চাৎ অঞ্চল অনুদান তহবিল (বিআরজিএফ) থেকে অনুদান পাচ্ছে।[৬]

জনসংখ্যার উপাত্ত সম্পাদনা

ঐতিহাসিক জনসংখ্যা
বছরজন.ব.প্র. ±%
১৯০১৩,৪৬,১৮৫—    
১৯১১৩,৪০,৭৮৮−০.১৬%
১৯২১৩,২৬,২৩০−০.৪৪%
১৯৩১৩,৪৬,৪৫৮+০.৬%
১৯৪১৪,২০,৭৯৮+১.৯৬%
১৯৫১৪,৭৫,৫২৫+১.২৩%
১৯৬১৫,৫৫,৮৭০+১.৫৭%
১৯৭১৬,৪৪,৯৯৪+১.৫%
১৯৮১৮,১৩,৭৮৮+২.৩৫%
১৯৯১১০,২১,৬৫৩+২.৩%
২০০১১২,৯১,৯৯৩+২.৩৮%
২০১১১৫,৯৯,৫৯৬+২.১৬%
সূত্র:ভারত সরকার[৭]
কৌশাম্বী জেলাতে ধর্ম
ধর্ম শতাংশ
হিন্দু
  
৮৫.৮০%
মুসলমান
  
১৩.৭৮%

২০১১ আদমশুমারি অনুসারে, কৌশাম্বী জেলার জনসংখ্যা ছিল ১,৫৯৯,৫৯৬ জন,[৮] (গিনি-বিসাউ[৯] এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহোর জনসংখ্যার সাথে তুলনীয়);[১০] জনসংখ্যারভিত্তিতে এটি ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে ৩১৩তম স্থানে রয়েছে।[৮] জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব ৮৯৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,৩২০ জন/বর্গমাইল)।[৮] এর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০১১ - ২০১১ দশকে ছিল ২৩.৪৯ শতাংশ।[৮] কৌশাম্বীর যৌন অনুপাত ৯০৫ মহিলা আছে এক হাজার পুরুষ পিছু,[৮] এবং সাক্ষরতার হার ৬৩.৬৯ শতাংশ।[৮]

২০১১ সালের ভারতের আদমশুমারি অনুসারে, জেলার জনসংখ্যার ৯৮.৮১% হিন্দিতে এবং ১.১৫% উর্দুতে তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে কথা বলে।[১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Geographical Review of India। Original from the University of Michigan: Geographical Society of India। ১৯৫১। পৃষ্ঠা 27। 
  2. Hermann Kulke, Dietmar Rothermund (২০০৪)। A History of India। Routledge। পৃষ্ঠা 52। আইএসবিএন 0-415-32920-5 
  3. Dr.K.K.Sharma (২০০৯-০১-০১)। Civil Services Pre.Exam.Indian History ( From Earliest Times To 1964 A.D.) (ইংরেজি ভাষায়)। Upkar Prakashan। আইএসবিএন 9788174828880 
  4. Pargiter, F.E. (1972) Ancient Indian Historical Tradition, Motilal Banarasidass, Delhi, pp.269-70
  5. Raychaudhuri, Hemchandra (1972) Political History of Ancient India, University of Calcutta, Calcutta, p.117-8
  6. Ministry of Panchayati Raj (৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "A Note on the Backward Regions Grant Fund Programme" (পিডিএফ)। National Institute of Rural Development। ৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  7. "Decadal Variation In Population Since 1901"Office of the Registrar General & Census Commissioner। ৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  8. "Kaushambi District Population Census 2011, Uttar Pradesh literacy sex ratio and density"। Census Organization of India। ২০১২। ৩ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৯ 
  9. US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২০১১-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১Guinea-Bissau 1,596,677 July 2011 est. 
  10. "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ১ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০Idaho 1,567,582 
  11. 2011 Census of India, Population By Mother Tongue

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Allahabad division topics

টেমপ্লেট:Kaushambi district