কে. সি. ইব্রাহিম

ভারতীয় ক্রিকেটার

খানমোহাম্মদ কাসামভয় ইব্রাহিম (মারাঠি: खानमोहम्मद इब्राहीम; জন্ম: ২৬ জানুয়ারি, ১৯১৯ - মৃত্যু: ১২ নভেম্বর, ২০০৭) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৮ থেকে ১৯৪৯ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

কে. সি. ইব্রাহিম
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামখানমোহাম্মদ কাসামভয় ইব্রাহিম
জন্ম২৬ জানুয়ারি, ১৯১৯
বোম্বে, মহারাষ্ট্র, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১২ নভেম্বর, ২০০৭
করাচী, সিন্ধু প্রদেশ, পাকিস্তান
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৫)
১০ নভেম্বর ১৯৪৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৬০
রানের সংখ্যা ১৬৯ ৪৭১৬
ব্যাটিং গড় ২১.১২ ৬১.২৪
১০০/৫০ -/১ ১৪/-
সর্বোচ্চ রান ৮৫ ২৫০
বল করেছে - ৪০৮
উইকেট -
বোলিং গড় - ৪৬.৭৫
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - ১/২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং -/- ১৫/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ এপ্রিল ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন খানমোহাম্মদ ইব্রাহিম নামে পরিচিত কে. সি. ইব্রাহিম। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৩৮-৩৯ মৌসুম থেকে ১৯৪৯-৫০ মৌসুম পর্যন্ত কে. সি. ইব্রাহিমের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। চারটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন ও সেন্ট জাভিয়ার্স কলেজে পড়াশুনো করেন। ১৯৩৮-৩৯ মৌসুম থেকে ১৯৪৯-৫০ মৌসুম পর্যন্ত ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে বোম্বে দলের সদস্যরূপে শীর্ষসারির উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন ও মাঝেমধ্যে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন। এছাড়াও, বোম্বে পঞ্চদলীয় প্রতিযোগিতায় মুসলিম দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪১-৪২ মৌসুমে অপরাজিত ২৩০ রানের ইনিংসের কল্যাণে বোম্বে দলে শেষদিকে সদস্যরূপে মনোনীত হন ও রঞ্জী ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় বোম্বের ইনিংস বিজয়ে ১১৭ রান তুলেছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ডিসমিসাল ব্যতিরেকে সর্বাধিক রান সংগ্রহের রেকর্ডের অধিকারী তিনি।[১] ডিসমিসাল হবার পূর্বে মৌসুম শুরু করেন ২১৮*, ৩৬*, ২৩৪* ও ৭৭* রানে অপরাজিত থাকার পর ১৪৪ রান করে মোট ৭০৯ রান তুলেন।[১] একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে উপর্যুপরী প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে দ্বি-শতরান করেছিলেন।[২] পূর্ববর্তী মৌসুমে শেষের ইনিংসগুলোয় ২, ২, ও ৪ রান তুলেছিলেন। ঐ মৌসুমে তিনি ১৬৭.২৯ গড়ে ১,১৭১ রান তুলেছিলেন। ফলশ্রুতিতে, ১৯৪৮ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কর্তৃক বর্ষসেরা ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৪৮ সালে রঞ্জী ট্রফিতে বোম্বে দলের অধিনায়কত্ব করেন। চূড়ান্ত খেলায় তিনি ২১৯ রান তুলেছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন কে. সি. ইব্রাহিম। সবগুলো টেস্টই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছেন। ১০ নভেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে দিল্লিতে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৯ তারিখে মুম্বইয়ে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

পূর্ববর্তী গ্রীষ্মকালে ঘরোয়া ক্রিকেটে তার রান সংগ্রহের প্রাচুর্যতার ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৬১.২৪ ব্যাটিং গড়ে রান সংগ্রহ বেশ উঁচু পর্যায়ের হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু, কেবলমাত্র চার টেস্টে অংশ নিতে পেরেছিলেন। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঐ খেলাগুলোয় অংশগ্রহণ ছিল তার। বিনু মানকড়ের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে প্রথম টেস্টে ৮৫ ও ৪৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু, পরবর্তী ছয়টি টেস্ট ইনিংসে মাত্র ৪০ রান তুলতে সক্ষম হন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৯৫০ সালে করাচীতে চলে যাবার ফলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। ১৯৫১-৫২ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল ভারত গমনে আসার পর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র নিকট আত্মীয়ের সাথে পরিণয়সূত্র আবদ্ধ হন ও পাকিস্তান অভিবাসিত হন। জীবনের শেষদিকে দূর্বল স্বাস্থ্যে নিপতিত হন। ১২ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে ৮৮ বছর বয়সে সিন্ধু প্রদেশের করাচীতে নিজ গৃহে কে. সি. ইব্রাহিমের দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন তিনি ভারতের বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Frindall, Bill (২০০৯)। Ask BeardersBBC Books। পৃষ্ঠা 86আইএসবিএন 978-1-84607-880-4 
  2. Frindall, Bill (১৯৯৮)। The Wisden Book of Cricket Records (Fourth সংস্করণ)। London: Headline Book Publishing। পৃষ্ঠা 116আইএসবিএন 0747222037 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা