কুষ্টিয়া জিলা স্কুল
কুষ্টিয়া জিলা স্কুল বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি। ১৯৬১ সালে এই স্কুলটি কুষ্টিয়া জেলার কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩] ১৯৬১ সালে এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই স্কুল এই অঞ্চলের অন্যতম সেরা স্কুল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।[৪]
কুষ্টিয়া জিলা স্কুল Kusthia Zilla School | |
---|---|
অবস্থান | |
মজমপুর, কুষ্টিয়া , ৭০০০ | |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৫৪′১৯″ উত্তর ৮৯°০৭′১৫″ পূর্ব / ২৩.৯০৫৪০২৮° উত্তর ৮৯.১২০৮০১৪° পূর্ব |
তথ্য | |
ধরন | সরকারি |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৬১ |
অবস্থা | সক্রিয় |
বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর |
বিদ্যালয় জেলা | কুষ্টিয়া জেলা |
ইআইআইএন | ১১৭৭৪৩[১] |
প্রধান শিক্ষক | মোঃ এফতে খাইরুল ইসলাম[২] |
লিঙ্গ | বালক |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ২৩৫৯ জন[১] |
ভাষা | বাংলা |
সময়সূচির ধরন |
|
ক্যাম্পাসসমূহ | ০১ টি |
আয়তন | ৮ একর (৩২,০০০ মি২)[১] |
ক্যাম্পাসের ধরন | শহুরে |
রং |
|
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, হ্যান্ডবল, ভলিবল[১] |
ডাকনাম |
|
ওয়েবসাইট | kushtiazillaschool |
অবস্থান সম্পাদনা
কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পূর্ব পার্শ্বে মজমপুরে (পুরাতন বাস স্ট্যান্ডের সন্নিকটে) অবস্থিত। যার দক্ষিণ প্রাচীর ঘেঁষে রয়েছে সার্কিট হাউস। প্রায় ২০০ গজ দক্ষিণে রেয়েছে ডি.সি. কোর্ট, পূর্ব দক্ষিণ কোণে রয়েছে ২৫০ শয্যার আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল। সামান্য উত্তরে রয়েছে বিপনী বিতান সমৃদ্ধ সুপার মার্কেট, পুলিশ ষ্টেশন এবং আর একটু উত্তরদিয়ে বয়ে গেছে গড়াই নদী।[৩]
অবকাঠামো সম্পাদনা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত ০৮ একর ভূমির উপর গড়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী এই কুষ্টিয়া জিলা স্কুল।[১]
- ০১টি তিনতলা বিশিষ্ট প্রশানিক ভবন
- ০১টি চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন
- ০১ টি মসজিদ
- ০১টি অভিভাবক ছাউনী
- ০১টি ঈদগাহ ময়দান
- ০১টি ভলিবল কোর্ট
- ০১টি গ্যারেজ
- ০১টি স্মৃতিসৌধে
- ০১টি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ
অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো সম্পাদনা
- ০১টি ক্যানটিন
- দেওয়ালিকা
- ০৩টি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব
- ০১টি টেনিস বল কোর্ট
- ০১টি সুবিশাল অডিটোরিয়াম
- ল্যাব ০৪টি
- উচ্চতর গণিত ল্যাব
- পদার্থবিজ্ঞান ল্যাব
- রসায়ন ল্যাব
- জীববিজ্ঞান ল্যাব
শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পাদনা
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে ৩য় শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চলমান। বিদ্যালয়টি যশোর বোর্ডের আওতাধীন।[৫]
শিফট সম্পাদনা
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে ২টি শিফট রয়েছে।[১]
- প্রভাতী
- দিবা
প্রতিটি শ্রেণীতে ২টি করে শাখা থাকে এগুলো হলো ক ও খ শাখা।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সম্পাদনা
দুই শিফটের এই বিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র সংখ্যা প্রায় ২,৩৫৯ জন এবং প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক সংখ্যা ৫৪ জন।[১]
শিক্ষা খরচ সম্পাদনা
বেতন সাধারানত মাসিক হিসাবে নেয়া হয়। সরকারি বেতন ৬ থেকে ১৫ টাকা ক্লাসভিত্তিক ভাবে বাড়তে থাকে। সাথে টিফিন ফি এর জন্য অতিরিক্ত ৭৫ টাকা প্রদান করতে হয় প্রতি মাসের বেতনের সাথে।এছাড়া একজন শিক্ষার্থীকে প্রতিমাসে কম্পিউটার শিক্ষার জন্য বাড়তি ২০ টাকা প্রদান করতে হয়। উল্লেখ্য যে যারা বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী তাদের শুধু বেতন বাদে অন্যান্য ফি প্রদান করা লাগে।
ইউনিফর্ম সম্পাদনা
স্কুলের ইউনিফর্ম হলো ফুল হাতা সাদা শার্ট, খাকি প্যান্ট, সাদা মোজা ও সাদা জুতো। এছাড়া শীতকালে নেভী ব্লু রঙের সোয়েটারও ইউনিফর্মের অন্তর্ভুক্ত। শার্টে বিদ্যালয়ের মনোগ্রাম সংবলিত ব্যাজ থাকে।
সাফল্য সম্পাদনা
কুষ্টিয়া জেলায় ৩০৯টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, কুষ্টিয়া জেলার তথা বাংলাদেশের মধ্যে একটি স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ। ১৯৬১ সলে সরকারীভাবে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ১৯৬২ সালে বোর্ডের অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৬৩ সালে প্রথমবারের মত এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। প্রথম বারেই এই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী মোঃ আব্দুল কাদের যশোর বোর্ডের সম্মিলিত মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান দখলের গৌরব অর্জন করে। গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যালয়টি ১ম/২য় স্থানসহ প্রতিনিয়ত মেধা তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখলের মধ্যদিয়ে অত্র অঞ্চলের একটি অসাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এস.এস.সি পরীক্ষার ফলাফলে গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হওয়ার পর অত্র অঞ্চলের বোর্ড নির্ধারিত সেরা দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্তমানে এটি ২য় স্থানে অবস্থান করছে। সম্প্রতি ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এস.এস.সি পরীক্ষায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর এ প্রথম স্থান অধিকার করে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসানুল হক।[৪][৩]
শিক্ষা সুবিধাসমূহ সম্পাদনা
এই বিদ্যালয়ে তিনটি বিজ্ঞানাগার, একটি লাইব্রেরী, একটি কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, একটি ব্যায়ামাগার ও কর্মশালা কক্ষ রয়েছে। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যার প্রায়োগিক পাঠসমূহ সাধারণত বিজ্ঞানাগারে পড়ানো হয়। মূল ভবনে বড় একটি হলঘর আছে যেখানে সভা, সাংস্কৃতিক উতসব, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা(যেমন; চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, রচনা লিখন, বিজ্ঞান মেলা, সঙ্গীত ইতাদি) আয়োজিত হয় এবং প্রতি বছর ইনডোর গেম্সের আয়োজন হয়। এছাড়া দূরবর্তী ছাত্রদের জন্য বিদ্যালয়ের অদূরে একটি ছাত্রাবাস রয়েছে (বর্তমানে র্যাব-১২ এর তত্ত্বাবধানে আছে)।
খেলাধুলা সম্পাদনা
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। হ্যান্ড বল ও দাবা খেলায় প্রতিষ্ঠানটি যথেষ্ঠ সুনাম অর্জন করেছে।
সহশিক্ষা কর্মসূচী সম্পাদনা
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি যথেষ্ঠ সুনাম অর্জন করেছে।[৬][৭]
- বিতর্ক ক্লাব
- বিজ্ঞান ক্লাব
- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
- বার্ষিক সাময়িকী
- গণিত উৎসব ও ভাষা প্রতিযোগ
- বিজ্ঞান মেলা
- বিএনসিসি (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর),
- রোভার স্কাউট
- রেড ক্রিসেন্ট
স্কুলের বিভিন্ন ক্লাব সম্পাদনা
স্কুলটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ কাব, রোভার স্কাউট এবং বিএনসিসি ক্লাব আছে। এছাড়া রয়েছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। ২০০৪ সালে বিতর্ক চর্চা বাড়ানোর লক্ষে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল ডিবেটিং ক্লাব আত্মপ্রকাশ করে। কুষ্টিয়া জিলা স্কুল ডিবেটিং ক্লাব প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ২০০৫ সালের ৫ জুন তার গৌরবময় যাত্রা শুরু করে।
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদনা
অতিসম্প্রতি জিলা স্কুলের ৫০ বছর পূর্তি(সুবর্ণজয়ন্তী) উপলক্ষে ৯/১০/১১ তারিখ একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজন হয় । অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০০ প্রাক্তন ছাত্র অংশগ্রহণ করে ।
প্রাক্তন ছাত্র সম্পাদনা
- ড. আবুল বারাকাত, (জন্ম: ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৪) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান
- আবুল আহসান চৌধুরী, লেখক ও গবেষক
- এস আই টুটুল, বাংলাদেশি গায়ক
- ড. চমক হাসান, বাংলাদেশি লেখক
- গোলাম ইশতিয়াক, আন্তর্জাতিক পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে দুইবার ব্রোঞ্জ জয়ী।
গ্যালারি সম্পাদনা
-
প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক ভবন
-
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের দুটি ভবন।
-
শহিদ মিনার
-
মসজিদ
-
রাতের দৃশ্য
আরো দেখুন সম্পাদনা
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "এক নজরে | কুষ্টিয়া জিলা স্কুল :: KUSHTIA ZILLA SCHOOL"। kushtiazillaschool.edu.bd। ২০১৮-০৯-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ "প্রধান শিক্ষক | কুষ্টিয়া জিলা স্কুল :: KUSHTIA ZILLA SCHOOL"। kushtiazillaschool.edu.bd। ২০২০-১২-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ ক খ গ "বিদ্যালয়ের ইতিহাস | কুষ্টিয়া জিলা স্কুল :: KUSHTIA ZILLA SCHOOL"। kushtiazillaschool.edu.bd। ২০১৮-০৯-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ ক খ "কুষ্টিয়ায় সেরা জিলা স্কুল"। banglanews24.com। ২০১৩-০৫-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ "Kushtia Zilla School"। kushtiazillaschool.jessoreboard.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ kushtia24 (২০১৯-০৪-১২)। "'পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক' : চূড়ান্ত বিজয়ী কুষ্টিয়া জিলা স্কুল দল"। Kushtia 24 | News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ "কুষ্টিয়ায় বই উৎসব"। সোনালী নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।