কার্ল ডেভিড অ্যান্ডারসন

পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী

কার্ল ডেভিড অ্যান্ডারসন (সেপ্টেম্বর ৩, ১৯০৫ - জানুয়ারি ১১, ১৯৯১) ছিলেন একজন মার্কিন পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানী। পজিট্রন আবিষ্কারের জন্য তিনি সবচেয়ে বিখ্যাত হয়ে আছেন। এই আবিষ্কারের জন্য তিনি ১৯৩৬ সালে বিজ্ঞানী ভিক্টর ফ্রান্ৎস হেস-এর সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন।

কার্ল ডেভিড অ্যান্ডারসন
অ্যান্ডারসন, ১৯৩৬
জন্ম(১৯০৫-০৯-০৩)৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৫
মৃত্যু১১ জানুয়ারি ১৯৯১(1991-01-11) (বয়স ৮৫)
জাতীয়তামার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মাতৃশিক্ষায়তনক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি
পরিচিতির কারণপজিট্রন
মিউওন
পুরস্কার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯৩৬)
Elliott Cresson Medal (1937)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রপদার্থবিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীডোনাল্ড আর্থার গ্লেজার
Seth Neddermeyer

জীবনী সম্পাদনা

অ্যান্ডারসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিতে এক সুয়েডীয় অভিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৭ সালে ক্যালটেক থেকে পদার্থবিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিষয়ে ব্যাচেলর অফ সাইন্স ডিগ্রী অর্জন করেন; একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৩০ সালে ডক্টর অফ ফিলোসফি সম্পন্ন করেন। রবার্ট এ মিলিকান-এর সাথে যৌথভাবে তিনি মহাজাগতিক রশ্মি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। গবেষণাকালে তার ব্যবহৃত মেঘ চেম্বারের ছবিগুলোতে তিনি কিছু অপ্রত্যাশিত কণার উপস্থিতির প্রমাণ পান। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, এই কণাগুলো ইলেকট্রনের সমান ভর কিন্তু বিপরীত তড়িৎ আধানবিশিষ্ট কোন কণা থেকে সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৩২ সালে তিনি এই তত্ত্ব প্রকাশ করেন এবং অন্য বিজ্ঞানীরা একে সত্য প্রমাণ করেন। এই তত্ত্বটি পল দিরাক-এর পজিট্রনের অস্তিত্ব সম্পর্কে করা ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা প্রমাণ করেছে। অ্যান্ডারসন পজিট্রনের অস্তিত্বের প্রথম সরাসরি প্রমাণ পন থোরিয়াম কার্বাইড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত গামা রশ্মিকে অন্য পদার্থের মধ্যে নিক্ষেপ করার মাধ্যমে। এর ফলে প্রকৃতপক্ষে ইলেকট্রন-পজিট্রন জোড় উৎপন্ন হয়েছিল।[১]

১৯৩৬ সালে অ্যান্ডারসন এবং তার হাতে তৈরি প্রথম স্নাতক ছাত্র সেথ নেডারমেয়ার মিউওন আবিষ্কার করেন। এই অতিপারমানবিক কণাটি ইলেকট্রনের চেয়ে প্রায় ২০৭ গুণ অতিকায়। অ্যান্ডারসন এবং নেডারমেয়ার প্রথমে মনে করেছিলেন যে, পাইয়ন দেখেছেন। হিদেকি ইওকাওয়া তার শক্তিশালী মিথস্ক্রিয়ার সূত্রে পাইয়ন নামক এই কণাটির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যখন প্রমাণিত চেয়ে তাদের আবিষ্কৃত কণাটি পাইয়ন নয় তখন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী আই আই রাবি আশ্চার্যান্বিত হয়েছিলেন এই ভেবে যে, এই অপ্রত্যাশিত আবিষ্কারটিকে কীভাবে কণা পদার্থবিজ্ঞানের জগতে সঠিকভাবে স্থাপন করা যেতে পারে। মিউয়ন ছিল সে সমস্ত অতিপারমানবিক কণার দীর্ঘ তালিকার প্রথম কণা যা তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীদেরকে দুর্ভোগের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। এজন্যই উইল্‌স ল্যাম্ব বলেছিলেন, তিনি শুনতে পেয়েছেন এই কণার আবিষ্কারককে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে, অথচ বর্তমানে এমন একটি আবিষ্কারের জন্য ১০,০০০ ডলার জরিমানা করা হতো।

কার্ল অ্যান্ডারসন তার কর্মজীবনের পুরোটাই ক্যালটেকে কাটিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি রকেট বিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণা করেন। ১৯৯১ সালের জানুয়ারি ১১ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। লস অ্যাঞ্জেল্‌স-এর ফরেস্ট লন মেমোরিয়াল পার্কে তাকে সমাধিস্থ করা হয়েছে।

নির্বাচিত গবেষণাপত্র সম্পাদনা

  • C.D. Anderson, "The Positive Electron", Phys. Rev. 43, 491 (1933)

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা