ওয়াজির আকবর খান

আফগানিস্তানের আমির

ওয়াজির আকবর খান (১৮১৬–১৮৪৫; ফার্সি: وزير اکبر خان), জন্মনাম মুহাম্মদ আকবর খান (محمد اکبر خان) (আমির আকবর খান নামেও পরিচিত) (امير اکبر خان) ছিলেন আফগান রাজপুত্র, সেনাপতি ও আমির। ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আমির হন। এরপর মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিন বছর তিনি আমির ছিলেন। ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে জামরুদের যুদ্ধে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় রাজধানী পেশাওয়ার পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার সময় তার খ্যাতি বৃদ্ধি পায়।[১][২]

ওয়াজির আকবর খান
وزير اکبر خان
আফগানিস্তানের আমির
ওয়াজির আকবর খান
আফগানিস্তানের আমির
রাজত্বমে ১৮৪২–১৮৪৫
পূর্বসূরিশুজা শাহ দুররানি
উত্তরসূরিদোস্ত মুহাম্মদ খান
জন্ম১৮১৬
মৃত্যু১৮৪৫(1845-00-00) (বয়স ২৮–২৯)
জালালাবাদ, আফগানিস্তান
সমাধি
প্রাসাদবারাকজাই রাজবংশ
পিতাদোস্ত মুহাম্মদ খান
মাতামিরমেন খাদিজা পুপালজাই
ধর্মইসলাম (সুন্নি)

ওয়াজির আকবর খান প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে সামরিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। এই যুদ্ধ ১৮৩৯ থেকে ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলেছিল। ১৮৪১ থেকে ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দে কাবুলে জাতীয় বাহিনীর নেতৃত্ব ও এলফিনস্টনের বাহিনীর উপর আক্রমণে নেতৃত্ব দানের জন্য তিনি পরিচিত। ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে তিনি আফগানিস্তানের আমির হন।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

আকবর খান ১৮১৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন আমির দোস্ত মুহাম্মদ খান ও মা ছিলেন মিরমেন খাদিজা পুপালজাই। দোস্ত মুহাম্মদ খানের ২ স্ত্রী, ৮ পুত্র (ওয়াজির আকবর খানসহ) এবং ২ কন্যা ছিল।[৩]

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে দোস্ত মুহাম্মদ খানের বাহিনী তার পুত্র ওয়াজির আকবর খানের অধীনে জামরুদের যুদ্ধে শিখদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই স্থান বর্তমান পেশাওয়ারের ১৫ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত।[১] তবে দোস্ত মুহাম্মদ খান পেশাওয়ার দখল করেননি। এর বদলে তিনি শিখদের বিরুদ্ধে সহায়তা করার জন্য গভর্নর জেনারেল ব্যারন অকল্যান্ডকে চিঠি লেখেন। এর ফলে আফগানিস্তানে ব্রিটিশ হস্তক্ষেপের পথ অনেকাংশে খুলে যায়।[২]

আকবর খান কাবুলের ব্রিটিশ মিশনের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এতে উইলিয়াম হে ম্যাকনাগটেন, আলেক্সান্ডার বার্ন‌স এবং ঘাটিতে ৪,৫০০ লোক ছিল। ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে আকবর খান মেজর জেনারেল উইলিয়াম এলফিনস্টনের উপর অবরোধ আরোপ করেন।

এলফিনস্টন তার বাহিনী নিয়ে পেশাওয়ারে চলে যাওয়ার সুযোগ পান। ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে যাত্রাপথে তাদের উপর আক্রমণ করে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়। ইতিহাসবিদদের মতে আকবর খান পুরো বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাননি। রাজনৈতিকভাবে কৌশলী হওয়ার কারণে তিনি ব্রিটিশদের চলে যেতে দিয়ে নিজ নিয়ন্ত্রণ সুসংহত করার সময় পাওয়া যাবে এমনটা বুঝতে পেরেছিলেন। অন্যদিকে ১৬,৫০০ লোকের হত্যার ঘটনা ব্রিটিশরা মেনে নিত না এবং এর ফলশ্রুতিতে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আরেকটি বাহিনী প্রেরণের আশঙ্কা ছিল। পরের বছর ঠিক এই ঘটনা ঘটে।

১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে আকবর খান কাবুলের বালা হিসার দুর্গ দখল করেন। এবং আফগানিস্তানের আমির হন।[১] ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিন আমির ছিলেন।

সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সম্পাদনা

জর্জ ম্যাকডোনাল্ড ফ্রেসারের উপন্যাস ফ্ল্যাশম্যানে আকবর খান একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। এছাড়া তার নামে আফগানিস্তানে ওয়াজির আকবর খান প্রাদেশিক গ্রেড নামে প্রতিবছর একটি স্থানীয় ক্রিকেট টুনামের্ন্টের আয়োজন করা হয়। এতে প্রতিটি প্রদেশ থেকে একটি করে দল অংশ নেয়।[৪]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Adamec, Ludwig W. (২০১১)। Historical Dictionary of Afghanistan। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা xxi। আইএসবিএন 0-8108-7957-3। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৬ 
  2. "THE GREAT GAME"Library of Congress Country Studies। ১৯৯৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-১৩ 
  3. Christopher Buyers। "Afghanistan, The Barakzai dynasty, genealogy"। The Royal Ark। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-১০ 
  4. "Wazir Mohammad Akbar Khan Provincial Grade 1 One-Day Tournament - Cricket Schedules, Updates, Results | ESPNcricinfo.com"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

রাজত্বকাল শিরোনাম
পূর্বসূরী
শুজা শাহ দুররানি
আফগানিস্তানের আমির
মে ১৮৪২-১৮৪৫
উত্তরসূরী
দোস্ত মুহাম্মদ খান