ওজেন দুবোয়া (ফরাসি: Eugène Dubois, ২৮শে জানুয়ারি, ১৮৫৮ - ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৪০) ছিলেন বিখ্যাত ওলন্দাজ অ্যানাটমিবিদ, ভূবিজ্ঞানী ও জীবাশ্ম-নৃবিজ্ঞানী। তার পুরো নাম Marie Eugène François Thomas Dubois। তিনি ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপ থেকে হোমো ইরেক্টাস প্রজাতির প্রথম জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন।

ওজেন দুবোয়া

আবিষ্কার সম্পাদনা

১৮৮৬ সালে দুবোয়া ইউনিভার্সিটি অফ আমস্টারডামে প্রভাষক নিযুক্ত হয়েছিলেন। সে সময় তিনি মেরুদণ্ডী প্রাণীদের বাকযন্ত্রের তুলনামূলক অ্যানাটমি নিয়ে কাজ করতেন, কিন্তু দিনদিন মানব বিবর্তন নিয়ে বেশি উৎসাহী হয়ে উঠতে থাকেন। ১৮৮৭ সালে সামরিক শল্য-চিকিৎসক হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে যান এবং সেখানকার সুমাত্রা দ্বীপে প্রাগৈতিহাসিক হোমিনিন জীবাশ্মের আশায় গুহায় খননকার্য চালানো শুরু করেন।

সুমাত্রার পর জাভাতেও তার গুহাভিত্তিক খননকার্য অব্যাহত থাকে এবং এই দ্বীপের ত্রিনিল নামক স্থানেই অবশেষে ১৮৯০ সালে একটি মানবসদৃশ মাথার খুলির টুপি ও ঊরুর হাড় আবিষ্কার করেন। খুলি থেকে বোঝা যায় এই ব্যক্তির মস্তিষ্ক অপেক্ষাকৃত ছোট, ভুরুর হাড় অপেক্ষাকৃত বড়, এবং কপাল অপেক্ষাকৃত সমতল কিন্তু মানুষের মত উল্লম্ব না হয়ে পেছনের দিকে হেলানো। এই বৈশিষ্ট্যগুলো মানুষের চেয়ে অন্য নরবানরদের বেশি কাছাকাছি। দুবোয়া এর নাম দিয়েছিলেন Pithecanthropus erectus যার অর্থ "সোজা হয়ে হাঁটতে সক্ষম নরবানর"। সিমিয়ান তথা বানরসদৃশ পূর্বপুরুষদের থেকে মানুষের বিবর্তনে দুই পায়ে হাঁটা একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় এবং দুবোয়া এই জীবাশ্মকে সেই অধ্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরেন। ১৮৯৪ সালে তার গবেষণার ফল প্রকাশ করার পর ১৮৯৫ সালে তিনি ইউরোপে ফিরে এসে আমস্টারডামেই ভূতত্ত্বের অধ্যাপক পদে যোগ দেন। কিন্তু অত্যধিক বিতর্কের চাপে পড়ে ১৯২৩ সালের আগ পর্যন্ত তার সব আবিষ্কার লোকচক্ষুর অন্তরালে রেখে দিয়েছিলেন।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Eugène Dubois, Encyclopedia Britannica, ১৩ আগস্ট ২০১৩ তারিখে সংগৃহীত

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা