এমিলি ওয়াটসন

ব্রিটিশ অভিনেত্রী

এমিলি মার্গারেট ওয়াটসন ওবিই (ইংরেজি: Emily Margaret Watson; জন্ম ১৪ জানুয়ারি ১৯৬৭) হলেন একজন ইংরেজ অভিনেত্রী। তিনি মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৯২ সালে রয়্যাল শেকসপিয়ার কোম্পানিতে যোগদান করেন। ২০০২ সালে তিনি ডনমার ওয়্যারহাউজে টুয়েলফথ নাইটআঙ্কল ভানিয়া মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন এবং দ্বিতীয় কাজটির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে অলিভিয়ে পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ব্রেকিং দ্য ওয়েভস (১৯৯৬)-এ অভিনয় করে তার প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। দুই বছর পর তিনি হিলারি অ্যান্ড জ্যাকি (১৯৯৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তার দ্বিতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বিআইএফএ পুরস্কার অর্জন করেন। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল দ্য বক্সার (১৯৯৭), অ্যাঞ্জেলাস অ্যাশেজ (১৯৯৯), গসফোর্ড পার্ক (২০০১), পাঞ্চ-ড্রাঙ্ক লাভ (২০০২), রেড ড্রাগন (২০০২), কর্পস ব্রাইড (২০০৫), মিস পটার (২০০৬), সিনেকডোশ, নিউ ইয়র্ক (২০০৮), অরেঞ্জস অ্যান্ড সানশাইন (২০১০), ওয়ার হর্স (২০১১), দ্য থিওরি অব এভরিথিং (২০১৪) এবং কিংসম্যান: দ্য গোল্ডেন সার্কেল (২০১৭)। তিনি আইটিভির জীবনীনির্ভর টিভি চলচ্চিত্র অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অ্যাডাল্ট-এ অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা টিভি পুরস্কার অর্জন করেন।[১] এছাড়া তিনি দ্য লাইফ অ্যান্ড ডেথ অব পিটার সেলার্স (২০০৪) টিভি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ টিভি পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং এইচবিওর মিনি ধারাবাহিক চেরনোবিল-এ অভিনয় করে প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার ও গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

এমিলি ওয়াটসন

Emily Watson
২০১৬ সালে ওয়াটসন
জন্ম
এমিলি মার্গারেট ওয়াটসন

(1967-01-14) ১৪ জানুয়ারি ১৯৬৭ (বয়স ৫৭)
মাতৃশিক্ষায়তনব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯৯১-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীজ্যাক ওয়াটার্স (বি. ১৯৯৫)
সন্তান

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

ওয়াটসন ১৯৬৭ সালের ১৪ই জানুয়ারি লন্ডনের ইসলিংটনে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতা রিচার্ড ওয়াটসন ছিলেন একজন স্থপতি এবং তার মাতা ক্যাথরিন (জন্মনাম ভেনবলস, মৃ. ২০১১) ছিলেন পশ্চিম লন্ডনের সেন্ট ডেভিড্‌স গার্লস স্কুলের ইংরেজির শিক্ষিকা। তার হ্যারিয়েট নামে এক বড় বোন রয়েছে।[৩] ওয়াটসন অ্যাঞ্জেলিকান ধর্মাবলম্বী হিসেবে বেড়ে ওঠেন।

ওয়াটসন পশ্চিম লন্ডনের সেন্ট জেমস ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কুলসে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে ইংরেজিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরবর্তী কালে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে সম্মানসূচক স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।[৪]

মঞ্চনাটকে কর্মজীবন সম্পাদনা

ওয়াটসন মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। মঞ্চে তার কাজের মধ্যে রয়েছে দ্য চিলড্রেন্‌স আওয়ার, থ্রি সিস্টার্স, মাচ অডো অ্যাবাউট নাথিং এবং দ্য লেডি ফ্রম দ্য সি। তিনি ১৯৯২ সালে রয়্যাল শেকসপিয়ার কোম্পানিতে যোগদান করেন এবং সেখানে আ জোভিয়াল ক্রু, দ্য টেমিং অব দ্য শ্রু, অল্‌স ওয়েল দ্যাট এন্ডস ওয়েল এবং দ্য চেঞ্জলিং মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। ২০০২ সালে তিনি চলচ্চিত্র থেকে বিরতি নিয়ে স্যাম মেন্ডেজের নির্দেশনায় লন্ডনের ডনমার ওয়্যারহাউজে টুয়েলফথ নাইট এবং ব্রুকলিন একাডেমি অব মিউজিকে আঙ্কল ভানিয়া মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন।[৫] তার এই দুটি কাজই বিপুল সমাদৃত হয় এবং দ্বিতীয় কাজটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে অলিভিয়ে পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

চলচ্চিত্রে কর্মজীবন সম্পাদনা

ওয়াটসন সে সময় অপরিচিত পরিচালক লার্স ফন ট্রায়ারের ব্রেকিং দ্য ওয়েভস (১৯৯৬)-এ অভিনয়ের জন্য নির্বাচিত হন। এর পূর্বে হেলেনা বোনাম কার্টার এই চরিত্রটিতে কাজ করতে অসম্মতি জানিয়েছিলেন। এই চলচ্চিত্রে বেস ম্যাকনেইল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে লস অ্যাঞ্জেলেস, লন্ডন ও নিউ ইয়র্ক ক্রিটিকস সার্কেল পুরস্কার এবং ইউএস ন্যাশনাল সোসাইটি অব ফিল্ম ক্রিটিকস পুরস্কার লাভ করেন এবং তার প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৬] এছাড়া তিনি সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারশ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। পরের বছর তিনি দ্য বক্সার (১৯৯৭) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৯৮ সালে তিনি হিলারি অ্যান্ড জ্যাকি চলচ্চিত্রে চেলোবাদক জাকুলিন দ্যু প্রে চরিত্রে অভিনয় করে পুনরায় সকলের নজর কাড়েন। এই কাজের জন্য তিনি তিন মাস চেলো বাজানো শিখেন এবং তার অভিনয়ের জন্য তিনি তার দ্বিতীয় একাডেমি পুরস্কার,[৬] গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার ও বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বিআইএফএ পুরস্কার অর্জন করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. হোগান, মাইকেল (২৪ ডিসেম্বর ২০১৭)। "Emily Watson: 'Turning 50 felt great… I was, like, so where's the party?'"দি অবজারভার (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২০ 
  2. "Emily Watson Biography (1967-)"ফিল্ম রেফারেন্স। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২০ 
  3. লিপওয়ার্থ, এলাইন (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Emily Watson - My family values"দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২০ 
  4. টাইজ্যাক, অ্যানা (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "My perfect weekend: Emily Watson"দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ (ইংরেজি ভাষায়)। লন্ডন। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২০ 
  5. "Emily Watson - Filmbug"ফিল্মবাগ। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২০ 
  6. কেলাওয়ে, কেট (২০ মার্চ ২০১১)। "Emily Watson: 'I had to put a lid on my grief… bury it deep down'"দি অবজারভার (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা