উত্তরকাশী

ভারতের উত্তরাখণ্ডের একটি জেলা শহর

উত্তরকাশী (হিন্দি: उत्तरकाशी) শব্দটির অর্থ হলো উত্তরের কাশী। এটি ভারতের উত্তরাখণ্ডের একটি জেলা শহর এবং এই জেলার সদর দপ্তর। সমুদ্রতল থেকে ১১৫৮ মি উচ্চতায় ভাগীরথী নদীর তীরে এই শহরের অবস্থান। এখানে অসংখ্য মন্দির এবং আশ্রমের দেখা পাওয়া যায়। এছাড়াও নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং এই শহরেই অবস্থিত। কাশী (বারানসী) অর্থাৎ বারাণসী শহরের সঙ্গে এই শহরের নামের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। বরুণ পর্বতের পাশে বরুণা এবং অসি নদীর সঙ্গমস্থলে এই শহরের অবস্থান।

উত্তরকাশী
শহর
উত্তরকাশী উত্তরাখণ্ড-এ অবস্থিত
উত্তরকাশী
উত্তরকাশী
ভারতের উত্তরাখণ্ডের মধ্যে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৩০°৪৪′ উত্তর ৭৮°২৭′ পূর্ব / ৩০.৭৩° উত্তর ৭৮.৪৫° পূর্ব / 30.73; 78.45
দেশ ভারত
রাজ্যউত্তরাখণ্ড
জেলাউত্তরকাশী
উচ্চতা১,১৫৮ মিটার (৩,৭৯৯ ফুট)
Languages
 • Officialহিন্দি, গাড়োয়ালী
সময় অঞ্চলভারতীয় আদর্শ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন কোড২৪৯১৯৩
টেলিফোন কোড০১৩৭৪
যানবাহন নিবন্ধনUK10

ইতিহাস সম্পাদনা

উত্তরকাশী হিমালয়ের একটি অত্যন্ত প্রাচীন তীর্থক্ষেত্র।অ সংখ্য সাধু সন্ত এখানে বিমুক্তকামী হয়ে সাধনা করেছিলেন। পবিত্র এই তীর্থক্ষেত্রকে অর্ধচন্দ্রাকারে বেষ্টন করে বয়ে চলেছে উত্তরবাহিনী গঙ্গা।এই উত্ত্ররকাশীতেই জ্যোতিরধামের রাজাকে উত্তরাখণ্ডে বৈদিক ধর্ম পুনস্থাপনের কাজে আত্মনিয়োগের করার উপদেশ দিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন আচার্য শঙ্কর।[১]

ভূগোল সম্পাদনা

উত্তরকাশীর অবস্থান ৩০°৪৪′ উত্তর ৭৮°২৭′ পূর্ব / ৩০.৭৩° উত্তর ৭৮.৪৫° পূর্ব / 30.73; 78.45.[২] এটির গড় উচ্চতা ১১৬৫ মিটার (৪৪৩৬ ফুট). মূল ভূখণ্ডের অধিকাংশই পাহাড়ি, এবং এই অঞ্চলের উপর দিয়ে উত্তরকাশী জেলার অনেক ছোট এবং বড় নদী প্রবাহিত হয়েছে। যার মধ্যে যমুনা এবং গঙ্গা (ভাগীরথী) সবচেয়ে বড় এবং পবিত্র। এয়েই দুই নদীর উৎপত্তিস্থল যমুনোত্রী ও গঙ্গোত্রী (গোমুখ) এই জেলাতেই অবস্থিত।

 
উত্তরকাশী শহরে সকালের দৃশ্য
 
উত্তরকাশী

জনপরিসংখ্যান সম্পাদনা

২০০১ সালে ভারতের আদমশুমারি[৩] অনুযায়ী সকালে এ শহরের জনসংখ্যা ছিল ১৬২২০. এখানে পুরুষদের জনসংখ্যার হার ৫৭% এবং নারীদের ৪৩%। উত্তরকাশীর গড় সাক্ষরতার হার ৭৮%, যা জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি। পুরুষদের ক্ষেত্রে গড় সাক্ষরতার হার ৮৩% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৭১%। এখানকার ১১% জনসংখ্যা ৬ বছরের অধীন। এখানকার অধিকাংশ নাগরিক গাড়োয়ালি। এছাড়াও বৃহৎ সংখ্যক পাঞ্জাবি, কুমায়ুনি ও উত্তর ভারতের অন্য অংশের লোকজন এখানে বসবাস করেন। এখানে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভুটিয়াদের দেখা পাওয়া যায়।

এই অঞ্চলের মানুষ হিন্দি ও গাড়োয়ালি ভাষায় কথা বলে থাকেন।

২০০৩ সালে বরুনাবত ধসের ফলে অন্যান্য শহর থেকে অনেক লোক এই শহরে চলে আসে। ফলে এই শহরের জনবসতি উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরের উন্নতি এবং জনসংখ্যা দুইয়েরই বৃদ্ধি হয়। কিন্ত ২০১২ এবং ২০১৩ সালে বন্যা বিপর্যয়ের ফলে এই শহর বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে এই শহর থেকে বহু লোক দেরাদুন এর মত নিরাপদ স্থানে চলে যায়।

শিক্ষা সম্পাদনা

এই শহরে ছেলে ও মেয়েদের স্কুল, জুনিয়র কলেজ এবং গাড়োয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি ডিগ্রি কলেজ আছে। মূল শহরের থেকে ৩-৪ কিলোমিটার দূরে জোশিয়ারা অঞ্চলে একটি সরকারি পলিটেকনিক কলেজ আছে, যা বৃত্তিমূলক উচ্চশিক্ষা প্রদান করে।

যোগাযোগ সম্পাদনা

এই বসতিতে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের দরূন রেলপথ হয় নি। বসতি থেকে দক্ষিণ -  পশ্চিমে ৩২ কিমি দূরত্বে (প্রায় ১ ঘন্টার সড়ক পথে) চিনিয়ালিসৌর বিমানবন্দর (মা গঙ্গা এয়ার স্ট্রিপ) রয়েছে।

সড়কপথে সম্পাদনা

জাতীয় হাইওয়ে 34 বসতিটিকে উত্তরে গঙ্গোত্রী ও দক্ষিণে হরিদ্বার এর সঙ্গে যুক্ত করেছে।

প্রধান দ্রষ্টব্য স্থল সম্পাদনা

  • ভারতের উল্লেখযোগ্য মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটগুলির একটি হল নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং । এখানে বিভিন্ন পর্বতারোহণ বিষয়ক শিক্ষা দেওয়া হয়। আরোহণ প্রশিক্ষণ কোর্সের সঙ্গে আরোহণ অভিযান সংগঠন করা হয়। ভারতের প্রথম মহিলা এভারেস্ট আরোহণকারী বাচেন্দ্রি পাল এই সংস্থার ছাত্রী ছিলেন
  • দোডীতালঃ এটি একটি অন্যতম জনপ্রিয় তাজা জলের লেক । উত্তরকাশী থেকে ২১ কিমি ট্রেক করে দোডীতাল পৌছতে হয়। সঙ্গমচটি থেকে এই ট্রেকিং শুরু হয়।
  • কাশী বিশ্বনাথ মন্দির
  • তিলথ বিদ্যুৎকেন্দ্র
  • মানেরী বাঁধ
  • নচিকেতা তাল

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ভারতী, শিবশঙ্কর (২৮-৭-২০০৫)। ভারতের মন্দিরে মন্দিরে (অষ্টম সংস্করণ)। শ্রী নির্মলকুমার সাহা। পৃষ্ঠা ৫৫,৮৫।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);
  2. "অধ বৃষ্টি, ধরন, Inc - Uttarkashi"। ৫ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৬ 
  3. "Census of India 2001: Data from the 2001 Census, including cities, villages and towns (Provisional)"। Census Commission of India। ২০০৪-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা