ইডেন গার্ডেন্স

ভারতে ক্রিকেট স্টেডিয়াম

ইডেন গার্ডেন্স ভারতের কলকাতায় অবস্থিত একটি প্রাচীনতম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১৮৬৪ সালে এ স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি বেঙ্গল ক্রিকেট টীম এবং আইপিএল এর কলকাতা নাইট রাইডার্সের হোম গ্রাউন্ড, এর পাশাপাশি এটি বিভিন্ন টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলার ভেন্যু হিসাবেও সম্যক পরিচিত। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচ, এই মাঠে ১৯১৭-১৮ সালে প্রথমবার খেলা হয় এবং প্রথম টেস্টম্যাচ খেলা হয় ১৯৩৪ সালে। এই মাঠে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টটি খেলা হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭-তে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে। ১৯৮৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপেরের ফাইনাল এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়।

ইডেন গার্ডেন্স
খেলার দিনের জমজমাট ইডেন গার্ডেন্স
মানচিত্র
ঠিকানাভারত
অবস্থানকলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
স্থানাঙ্ক২২°৩৩′৫২″ উত্তর ৮৮°২০′৩৬″ পূর্ব / ২২.৫৬৪৪৪° উত্তর ৮৮.৩৪৩৩৩° পূর্ব / 22.56444; 88.34333
মালিকভারতীয় সেনাবাহিনী
পরিচালকক্রিকেট এসোসিয়েশন অব বেঙ্গল
নির্বাহী কর্মকর্তা৩২
ধারণক্ষমতা৪০,০০০ (১৮৬৪–১৯৮৭)
১,০০,০০০+ (১৯৮৭–২০১১)
৬৬,৩৪৯ (২০১১–২০১৮)
৮০,০০০ (বর্তমানে)
ক্ষেত্রফল৫০ একর (২০ হেক্টর)
উপরিভাগপ্রাকৃতিক সবুজ ঘাস
ইডেন গার্ডেন্স
স্টেডিয়ামের তথ্যাবলি
অবস্থানকলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
ঘরোয়া দলবাংলা
প্রতিষ্ঠা১৮৬৪; ১৫৯ বছর আগে (1864)
ধারণক্ষমতা৮০,০০০
ভাড়াটে
প্রান্তসমূহ
হাইকোর্ট প্রান্ত
ক্লাবঘর প্রান্ত
আন্তর্জাতিক খেলার তথ্য
প্রথম পুরুষ টেস্ট৫–৮ জানুয়ারি ১৯৩৪:
ভারত  বনাম  ইংল্যান্ড
সর্বশেষ পুরুষ টেস্ট২২–২৪ নভেম্বর ২০১৯:
ভারত  বনাম  বাংলাদেশ
প্রথম পুরুষ ওডিআই১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭:
ভারত  বনাম  পাকিস্তান
সর্বশেষ পুরুষ ওডিআই১৬ নভেম্বর ২০২৩:
অস্ট্রেলিয়া  বনাম  দক্ষিণ আফ্রিকা
প্রথম পুরুষ টি২০আই২৯ অক্টোবর ২০১১:
ভারত  বনাম  ইংল্যান্ড
সর্বশেষ পুরুষ টি২০আই২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২:
ভারত  বনাম  ওয়েস্ট ইন্ডিজ
প্রথম নারী ওডিআই১ জানুয়ারি ১৯৭৮:
ভারত  বনাম  ইংল্যান্ড
সর্বশেষ নারী ওডিআই৯ ডিসেম্বর ২০০৫:
ভারত  বনাম  ইংল্যান্ড
একমাত্র নারী টি২০আই৩ এপ্রিল ২০১৬:
অস্ট্রেলিয়া  বনাম  ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বাংলা ক্রিকেট দল (১৯০৮–বর্তমান)
কলকাতা নাইট রাইডার্স (২০০৮–বর্তমান)
মোহনবাগান (১৮৮৯-বর্তমান)
ইস্টবেঙ্গল ক্লাব (১৯২০-বর্তমান)
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব (১৮৯১-১৯৮৪)
২৪ নভেম্বর ২০১৯ অনুযায়ী
ইডেন গার্ডেন্স কলকাতা-এ অবস্থিত
ইডেন গার্ডেন্স
ইডেন গার্ডেন্স
ইডেন গার্ডেন্স (কলকাতা)

তথ্য সম্পাদনা

  • ফ্লাড লাইট্‌স: বর্তমান
  • প্রান্ত: হাইকোর্ট প্রান্ত, ক্লাব হাউস প্রান্ত
  • দর্শক সংখ্যা: ৬৭,০০০
  • পীচ প্রস্তুতকারক: সুজন মুখোপাধ্যায়

ইতিহাস সম্পাদনা

 
Ground of the Calcutta Cricket Club, 15th Jan'y. 1861 H.M. 68th L.I. from Rangoon, versus the Calcutta Cricket Club

১৮৩৬ থেকে ১৮৪২ অবধি ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড অকল্যান্ড। পোশাকি ভারী পরিচয় ‘ফার্স্ট আর্ল অব অকল্যান্ড’-এর আড়ালে চাপা পড়ে গিয়েছিল তাঁর প্রকৃত নাম, জর্জ ইডেন। প্রশাসনিক দায়িত্ব পেয়ে তিনি ভারতে এসে বিপত্তি হয়েছিল তাঁর দুই বোনের। মানিয়ে নিতে পারছিলেন না পরিবেশের সঙ্গে। সান্ধ্যভ্রমণে যেতেন দুই বোন। শহরের সেই নির্দিষ্ট অংশে সকালে ও সন্ধ্যায় হাঁটতে যেতেন ইউরোপীয়রা। দুই বোন চাইলেন, সেই জায়গাটুকু মনোরম করে সাজাতে। শহরের মান্যগণ্য মহলে লর্ড অকল্যান্ডের দুই বোনের পরিচয় ছিল ‘মিস ইডেন’ বলে।যা কলকাতা ময়দান, উনিশ শতকের মাঝামাঝি, সেখানে ছিল ঘন জঙ্গল। ইতিউতি কয়েক ঘর তাঁতির বাস। তখন প্রধান ঘাট ছিল চাঁদপাল ঘাট। জনৈক চন্দর (বা চন্দ্র) নাথ পালের নামে এই ঘাটের নামকরণ হয়েছিল। মাঝিমাল্লা ও পথিকদের জন্য একটা মুদির দোকান দিয়েছিলেন তিনি। সেই ঘাটেই এসে নামতেন ব্রিটিশরা। যাঁদের কাছে মুক্ত বাতাসের ফুসফুস ছিল ইডেন বোনদের তৈরি উদ্যান। এর নাম ছিল ‘লেডি বাগান’। পোশাকি নাম ছিল ‘অকল্যান্ড সার্কাস গার্ডেন’। ১৮৫৬ সালে নাম দেওয়া হয় ‘ইডেন গার্ডেন্স। ১৮৬৫ থেকে ১৮৭১ অবধি এই উদ্যানের সংস্কারসাধন করা হয়। উদ্যান সেজে গুজে ওঠার আগেই ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে এখানে ক্রিকেট খেলত ‘ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব’। ১৮৬৪ সালে স্টেডিয়ামের গোড়াপত্তন। ক্রিকেট খেলার মাঠ ছাড়াও ধীরে ধীরে ইডেন উদ্যানের বড় অংশ নিয়ে পরবর্তী কালে তৈরি হয় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং আকাশবাণীর কার্যালয়। বাকি অংশ পড়ে থাকে লর্ড অকল্যান্ডের দুই বোনের স্মৃতি নিয়ে। আগে লর্ড অকল্যান্ডের মূর্তি ছিল ইডেন উদ্যানে। পরে তা স্থানান্তরিত হয় হাইকোর্টের দিকে। কিন্তু যাঁদের জন্য এই উদ্যানের জন্ম, সেই দুই বোনের স্মৃতি বা স্মারক বিশেষ নেই। দুই বোনের মধ্যে বড় জন, এমিলি ইডেনকে বলা হত ‘বড়ি মেমসাহিব’। ইডেন উদ্যান তাঁর তরফে কলকাতাকে দিয়ে যাওয়া উপহার। তবে দুই বোনের ইচ্ছেপূরণে লর্ড অকল্যান্ডের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। ১৮৮০ সালে ইডেন উদ্যান নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। উদ্যানে প্রবেশমূল্য দিতে অস্বীকার করেন ব্রিটিশ সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি সেটন কার। তাঁর দাবি মেনে প্রবেশমূল্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেটন কার যুক্তি দিয়েছিলেন, ইডেন উদ্যান ছিল ব্যক্তিগত সম্পত্তি। শোনা যায়, লর্ড অকল্যান্ডের দুই বোনকে হুগলি নদীর ধারে নিজের বাগান উপহার দিয়েছিলেন রানি রাসমণির স্বামী, জমিদার বাবু রাজচন্দ্র দাস। পরে সেই বাগানই মনের মতো করে সাজিয়ে তুলেছিলেন মিস ইডেন-রা। ফলে বন্ধ করা গিয়েছিল প্রবেশমূল্য। কিংবদন্তি যা-ই হোক না কেন,এই উদ্যানের কৃতিত্ব দুই ব্রিটিশ নারীর। লর্ড ডালহৌসির শাসনকালে মায়ানমার (তৎকালীন বর্মা)-র প্রোম থেকে জাহাজে করে ইডেন উদ্যানে নিয়ে আসা হয় ‘প্যাগোডা’। বর্মার বৌদ্ধ প্যাগোডার পরিবর্তিত ঠিকানা হয় ইডেন উদ্যান। [১]

স্টেডিয়ামটির নামকরণ কলকাতার অন্যতম পুরাতন পার্কগুলোর একটি ইডেন গার্ডেন্স এর নামকরণে করা হয়, ১৮৪১ সালে পার্কটির নকশা করা হয়েছিলো এবং পার্কটির নামকরণ তৎকালীন ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড অকল্যান্ড এর ইডেন বোনদের নামানুসারে করা হয়েছিলো প্রথমে যদিও পার্কটির নাম ‘অকল্যান্ড সার্কাস গার্ডেন্স’ রাখা হয়েছিলো কিন্তু পরবর্তীতে এর নির্মানকারীগণ বাইবেলে বর্ণিত গার্ডেন অব ইডেন দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে এর নাম ‘ইডেন গার্ডেন্স’ এ পরিবর্তন করেন ।

ধারণক্ষমতা সম্পাদনা

  স্টেডিয়ামটি ১৮৬৪ সালে নির্মিত হয়েছিলো এবং বর্তমানে এর ধারণক্ষমতা ৬৬,৩৪৯ জন দর্শক ।[২] ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে সামনে রেখে ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজ শুরু করা হয় । এ সংস্কারের উদ্দেশ্য ছিলো ২০১১ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক হিসাবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল(আইসিসি) এর নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড বা যোগ্যতা অর্জন করা।

উল্লেখযোগ্য ঘটনা সম্পাদনা

  • ১৯৩৪ সালে প্রথম টেস্ট ম্যাচ হয় ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে। প্রায় ১৫ বছর পর ১৯৪৯ সালে এই মাঠের ২য় টেস্টটি হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে।
  • ১৯৪৬ সালে ইন্ডিয়া টীম এর সাথে অস্ট্রেলিয়ার একটি টেস্ট ম্যাচ এ ইন্ডিয়া টীম এর ফর্মে থাকা একজন খেলোয়াড় মুশতাক আলীকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় সমর্থকরা অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে নির্বাচকরা তাকে খেলার জন্য পুনরায় দলে নিয়ে আসে।
  • ১৯৫৬ সালে প্রথম নির্ণায়ক টেস্ট ম্যাচ হয় ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে। অস্ট্রেলিয়া ৯৪ রানে জয় লাভ করে। সেই টেস্ট টি হয় এই মাঠে ৪টি ইনিংস মিলিয়ে সবচেয়ে কম রানের টেস্ট। মাত্র ৬৩৪ রান হয় গোটা ম্যাচে।
  • ১৯৬১/৬২ সালে ভারত এই মাঠে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয় লাভ করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ।
  • ১৯৬৬/৬৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ট্যুর এবং ১৯৬৯/৭০ সালে অস্ট্রেলিয়া ট্যুর এর সময় ইডেন গার্ডেন এ দাঙ্গা বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়।
  • ১৯৭২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে ভারত ২৮ রানে জয় পায়। এই মাঠে রানের বিচারে সবথেকে কম ব্যাবধানে জয়।
  • ১৯৮৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ম্যাচে ৩য় ইনিংসে ভারত ৯০ রানে অল আউট হয়ে যায়। এই মাঠে মাত্র ১ বারই কোনো দল ১০০ রানের কম রানে অল আউট হয়েছে।
  • ১৯৮৭ সালের ঐতিহাসিক বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়, যে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে ৭ রানে পরাজিত করে।
  • ১৯৯১ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে কপিল দেব শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হ্যাট্রিক করেন।
  • ১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ার অন্যতম ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার পাকিস্তানের শোয়েব আকতার দ্বারা বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে রান আউট হন । এ ঘটনায় দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

টেস্ট ক্রিকেট সম্পাদনা

ইডেন গার্ডেন এ এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৩৯টি টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

  • এ মাঠে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচে সর্বোচ্চ দলগত রানের পাঁচটি ইনিংস ভারতের অধিকারে রয়েছে:
  1. ৬৫৭/৭ উইকেট ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩য় ইনিংসে
  2. ৬৪৩/৬ উইকেট ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২য় ইনিংসে
  3. ৬৩৩/৫ উইকেট ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২য় ইনিংসে
  4. ৬৩১/৭ উইকেট ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১ম ইনিংসে
  5. ৬১৬/৫ উইকেট ২০০৭ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১ম ইনিংসে
  • ইডেন গার্ডেন্স এ সর্বোচ্চ রানের অধিকারী ভিভিএস লক্ষ্মণ (১২১৭ রান)। ১৯৯৬-২০১১ সময়ে সর্বমোট ১০ টি টেস্ট খেলেছেন। ৫ টি শতরান ও ৩ টি অর্ধশতরান রয়েছে।
  • সর্বোচ্চ রানের ইনিংস রয়েছে ভিভিএস লক্ষ্মণ এর ২৮১ রান(৬৩১ মিনিট - ৪৫২ বল) । ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে করা ইনিংসে রয়েছে ৪৪টি বাউন্ডারি।
  • সর্বোচ্চ উইকেট লাভ করেছেন হরভজন সিং (৪৬ উইকেট), ১৯৯৯-২০১০ সময়ে সর্বমোট ৭ টি টেস্ট খেলেছেন। ১ টি ১০-উইকেট ও ৬ টি ৫-উইকেট শিকার রয়েছে।
  • অভারতীয় অম্পায়ারদের মধ্যে রড টাকাররিচার্ড কেটেলবরা সর্বাধিক ৩ টি টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করেছেন।

২০০১ সম্পাদনা

২০০১ সালের মার্চে কলকাতা টেস্টে মহাকাব্য রচনা করেছিলেন লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ৪৪৫ রান তুলে চাপে ফেলেছিল ভারতকে। জবাবে সৌরভ গাঙ্গুলীর দল গুটিয়ে গিয়েছিল ১৭১ রানেই। ফলোঅনে নেমে সবার সব হিসাব পালটে দেওয়া শুরু করল লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়ের সেই জুটি। ৬৩১ মিনিট ক্রিজে ছিলেন লক্ষণ, খেলেছিলেন ৪৫২টি বল। ৪৪টি চারের মারে খেলেছিলেন জীবনের সেরা ইনিংস— ২৮১। ওদিকে লক্ষ্মণের সঙ্গে রেকর্ড জুটিতে ১৮০ রান করেছিলেন দ্রাবিড়। ৩৫৩ বল খেলেছিলেন ৪৪৬ মিনিটের ইনিংসে। দ্রাবিড়ের ব্যাট থেকে এসেছিল ২০টি চার। সাত উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৫৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। পরে হরভজন সিংয়ের তাণ্ডবে ২১২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। হারের মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অসাধারণ এক ইতিহাসের জন্ম দেয় ভারত।[৩]

ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনাল সম্পাদনা

ইডেন গার্ডেন্স এ এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২৮টি ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্টেডিয়ামটিতে ১৯৭৮ এবং ১৯৯৭ সালের মহিলা বিশ্বকাপসহ ১৯৮৭, ১৯৯৬, ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

  • এ মাঠে অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের গৌরব অর্জন করে ভারত, যারা ২০১৪ সালের একটি ম্যাচে ৫ উইকেটে ৪০৪ করে । দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটিও ইন্ডিয়াই খেলেছে, ২০০৯ সালের একটি ম্যাচে ইন্ডিয়া ৩ উইকেটে ৩১৭ রান করে ।তৃতীয় ও চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের অধিকারী হলো শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল।
  • এ স্টেডিয়ামটিতে অনুষ্ঠিত ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ রানের অধিকারী ভারতের শচীন টেন্ডুলকার(৪৯৬ রান) দ্বিতীয় ও তৃতীয় যথাক্রমে আজাহারউদ্দিন(৩৩২ রান) ও অরবিন্দ ডি সিলভা । সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন অনিল কুম্বলে এবং কপিল দেব(প্রত্যেকেই ১৪ উইকেট করে নিয়েছেন)।

টি-টোয়েন্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্পাদনা

ভেন্যুটিতে এখন পর্যন্ত ৬টি টি টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২০১৫ আইপিএল পরিসংখ্যান সম্পাদনা

  • প্রথম ইনিংস-এ দলের মোট রানের গড় = ১৭৬
  • প্রথম ইনিংস এ দলের উইকেট পতনের গড় = ৬
  • গড় রান তাড়া করে জয় = ১৭৩
  • সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় = ১৮৩ (কলকাতা , পাঞ্জাব এর বিরুধ্যে ; রাসেল ৫১(২১)
  • গড় রান তাড়া করে হার = ১৮০
  • সর্বনিম্ন রান তাড়া করে হার = ১৬৭ (হায়দেরাবাদ , কলকাতা এর বিরুধ্যে ; হগ ২/১৭ (৪ ওভার))

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Eden Backdrops" 
  2. "Eden Gardens"। Kolkata City Tours। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  3. "2001 Eden Test" 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা