আহমদ শাহ

ইসলামি ব্যক্তিত্ব

সৈয়দ মুহাম্মদ আহমদ শাহ (আরবি: سید محمّد احمد شاہ) একজন সুফি, শিক্ষক, পণ্ডিত এবং শিক্ষাবিদ। তিনি ১৮৫৬ সালে সিরিকোটের শেতালু শরীফে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তিনি কাদেরিয়া ত্বরিকার একজন সুফি এবং খাজা আবদুর রহমান চৌহরভীর খলিফা। [২]

হাফিজ, ক্বারী, আল্লামা

সৈয়দ মুহাম্মদ আহমদ শাহ

বা'জি সিরিকোটি আল কাদেরী
জন্ম১৮৫৬ সাল
মৃত্যু১১ই জিলক্বদ ১৩৮০ হিজরী,
২৭ এপ্রিল ১৯৬১ সাল
শেতালু শরীফ, সিরিকোট, পাকিস্তান
সমাধিশেতালু শরীফ, সিরিকোট, পাকিস্তান
পরিচিতির কারণকাদেরী সুফি
সন্তানসৈয়দ মুহাম্মদ সালেহ শাহ ও সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ
পিতা-মাতাসৈয়দ সদর উদ্দিন শাহ

পরিবার সম্পাদনা

আহমদ শাহ একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ সদর উদ্দিন শাহ ছিলেন সুপরিচিত পণ্ডিত। তিনি সায়্যিদ এর মাশওয়ানি গোত্রভুক্ত ছিলেন, মাশওয়ানি গেসুদারাজের পুত্র।[৩] সৈয়দ মুহাম্মদ গীসুদারাজ প্রথম ও সৈয়দ মুহাম্মদ মাসুদ মাশওয়ানীর মাধ্যমে তার বংশ ৩৯টি ধারায় হজরত মুহাম্মদ (দ.) পর্যন্ত পৌঁছায়। তিনি সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহের পিতা এবং সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ ও পীর সাবির শাহের পিতামহ।[৪]

শিক্ষা এবং বক্তৃতা সম্পাদনা

তিনি ১৪ বছরে কুরআনে হাফিজ হন। তিনি কুরআন, ফিকাহ, হাদিস, সুফিবাদ এবং অন্যান্য ইসলামী সাহিত্যের ক্ষেত্রগুলিতে কাজ করেছেন। তিনি দিল্লী, ভারত এবং আফ্রিকা থেকে জ্ঞান অর্জন করেছেন। তিনি ১৮৮০ সালে প্রাতিষ্ঠানিক সনদ ফাজিল অর্জন করেন।[৫]

বায়াত (আনুগত্যের শপথ) সম্পাদনা

তিনি খাজা আবদুর রহমান চৌহরভীর (দারুল উলুম ইসলামিয়া রহমানিয়া হরিপুরের প্রতিষ্ঠাতা ও মাজমুয়ায়ে সালাওয়াতির রাসুল (দ.) গ্রন্থের লেখক) কাছে সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ায় আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করেন এবং তার থেকে খেলাফত প্রাপ্ত হন।

ইসলাম প্রচার সম্পাদনা

আহমদ শাহ সিরিকোটি প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা শেষে তার সহোদরদের সাথে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকাতে ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন ও প্রতিষ্ঠিত হন। একই সাথে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন, জাঞ্জিবার ও মোমবাসা শহরে সেখানকার জনগণের মাঝে দ্বীনী দাওয়াত পৌঁছান।[৬]

রেঙ্গুন ও বাংলাদেশে সম্পাদনা

তিনি ১৯২০ সালে স্বীয় পীর ও শিক্ষক খাজা আবদুর রহমান চৌহরভীর নির্দেশে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্য বার্মায় গমন করেন। সেখানে বাঙ্গালী জামে মসজিদের খতিব নিযুক্ত হন। তিনি সেখানে তরিকত ও শরীয়তের প্রচার করতে থাকেন। তিনি দারুল উলুম রহমানিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা ও ধর্মীয় কাজের প্রসারের জন্য আনজুমান-এ শুরা-ই-রহমানিয়া (বর্তমান নাম আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট) নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন৷ পরবর্তীতে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) আগমন করেন। সেখানে তার কাছ থেকে মানুষ শরীয়ত ও তরিকতের দীক্ষা গ্রহণ করেন। ইসলামী শিক্ষার জন্য তিনি জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা নামে একটি সুন্নি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। [৬]

ইন্তেকাল সম্পাদনা

তিনি ১৩৮০ হিজরীর ১১ই জিলক্বদ, ২৭ শে এপ্রিল ১৯৬১ সালে সিরিকোটের শেতালু শরীফে মৃত্যুবরণ করেন। তার মাজার সিরিকোটের শেতালু শরীফে অবস্থিত। প্রত্যেক বছর হাজার হাজার মানুষ স্থানটি পরিদর্শনে যান।[৭] আরবি মাসের ১১ই জিলক্বদ তার ওরশ পালিত হয়।

আরো দেখুনঃ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Darbar-E-Alia Sirikot Shareef"HaripurOnline.Com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৬-০২। ২০১৬-০৮-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১৫ 
  2. "Khwaja Abdur-Rehman Chorwi (RA) | Haripur"meraharipur.com। ২০১৬-০৮-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১৫ 
  3. "شجره ارتباطی اولاد حضرت قیس عبدالرشید با اولاد پیامبر اسلام(ص) - نقش طایفه م৭ادقلی و تیره های وابسته در انقلاب و دفاع مقدس"پارسی بلاگ (ফার্সি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২২ 
  4. "Anjuman Rahmaniya Document titled Syed Muhammad Sabir Shah" (পিডিএফ)। ১৩ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "Syed Ahamed Shah Sirikoti (Radiallahu Ta'ala Anhu) | Islam 786 Forum"ashraf786.proboards.com। ২০১৭-০২-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২২ 
  6. ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলম। "আল্লামা সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি (রহঃ)'র জীবন পরিক্রমা" [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. "Hazrat Syed Ahmad Shah Sirikoti (Radi Allahu Anhu) - বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সুন্নি ওয়েবসাইড" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৩-০২। ২০১৬-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১৫