আফগানিস্তান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

১৯৭৮-১৯৯২ দক্ষিণ এশিয়ার প্রজাতন্ত্র

আফগানিস্তান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (দারি: جمهوری دمکراتی افغانستان‎, Jumhūri-ye Dimukrātī-ye Afghānistān; পশতু: دافغانستان دمکراتی جمهوریت, Dǝ Afġānistān Dimukratī Jumhūriyat) ছিল ১৯৭৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান একটি রাষ্ট্র। ১৯৮৭ সালে রাষ্ট্রের নাম বদলে আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্র রাখা হয়। এই সময় আফগানিস্তান পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপিএ) শাসন করেছে। সাওর বিপ্লবের মাধ্যমে এই দল ক্ষমতায় আসে। এই বিপ্লবে মুহাম্মদ দাউদ খানের সরকার উৎখাত হয়। দাউদের পর নূর মুহাম্মদ তারাকি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হন। তারাকি ও হাফিজউল্লাহ আমিন তাদের শাসনামলে বেশ কিছু সংস্কার করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে নারী অধিকার, শিক্ষা ও ভূমি সংস্কার। তবে ক্ষমতা গ্রহণের পর শীঘ্রই তারাকি ও আমিনের নেতৃত্বাধীন খালকপন্থি এবং বাবরাক কারমালের নেতৃত্বাধীন পারচামপন্থিদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব্ব শুরু হয়। খালকপন্থিরা এতে জয়ী হয় পারচামপন্থিরা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়। অধিকাংশ উল্লেখযোগ্য পারচাম নেতারা সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পূর্বাঞ্চলীয় ব্লকে পালিয়ে যান।

আফগানিস্তান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (১৯৭৮–৮৭)
جمهوری دمکراتی افغانستان
Jumhūri-ye Dimukrātī-ye Afghānistān
دافغانستان دمکراتی جمهوریت
Dǝ Afġānistān Dimukratī Jumhūriyat

আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্র (১৯৮৭–৯২)

جمهوری افغانستان
Jumhūrī-ye Afġānistān
د افغانستان جمهوریت
Dǝ Afġānistān Jumhūriyat
১৯৭৮–১৯৯২
জাতীয় সঙ্গীত: গারাম শাহ লা গারাম শাহ
আফগানিস্তানের অবস্থান
রাজধানীকাবুল
প্রচলিত ভাষাদারি
পশতু
সরকার একদলীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (১৯৭৮–১৯৮৭)
বহুদলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (১৯৮৭–১৯৯২)
দলীয় মহাসচিব 
• ১৯৭৮–১৯৭৯
নূর মুহাম্মদ তারাকি (প্রথম)
• ১৯৮৬–১৯৯২
মুহাম্মদ নজিবউল্লাহ (শেষ)
রাষ্ট্রপ্রধান 
• ১৯৭৮–১৯৭৯
নূর মুহাম্মদ তারাকি (প্রথম)
• ১৯৯২
আবদুর রহিম হাতিফ (শেষ)
সরকারপ্রধান 
• ১৯৭৮–১৯৭৯
নূর মুহাম্মদ তারাকি (প্রথম)
• ১৯৯০–১৯৯২
ফজল হক খালিকিয়ার (শেষ)
আইন-সভাবিপ্লবী কাউন্সিল (আফগানিস্তান)
ঐতিহাসিক যুগস্নায়ু যুদ্ধ
২৭-২৮ এপ্রিল ১৯৭৮
• সরকার স্থাপিত
৩০ এপ্রিল ১৯৭৮
• কাবুলের পতন
২৮ এপ্রিল ১৯৯২
আয়তন
১৯৯২৬,৪৭,৫০০ বর্গকিলোমিটার (২,৫০,০০০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
• ১৯৯২
13811900
মুদ্রাআফগানি
আইএসও ৩১৬৬ কোডAF
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্র
আফগানিস্তান ইসলামি রাষ্ট্র

খালক-পারচাম দ্বন্দ্ব্বের পর খালকপন্থিদের অভ্যন্তরে তারাকি ও আমিনের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব্ব শুরু হয়। আমিন এই দ্বন্দ্ব্বে জয়ী হন এবং তার নির্দেশে তারাকিকে হত্যা করা হয়। সংস্কারের ফলে দেশে অজনপ্রিয় ছিলেন। সোভিয়েত ইউনিয়নেও তিনি জনপ্রিয় হননি। ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে আফগান সরকারের সমর্থনে সোভিয়েত ইউনিয়ন হস্তক্ষেপ করে। ২৭ ডিসেম্বর সোভিয়েত সামরিক বাহিনীর হাতে আমিন নিহত হন। এরপর কারমাল আফগানিস্তানের নতুন নেতা হন। কারমাল ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তার শাসনামল সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের জন্য পরিচিত। যুদ্ধের ফলে ব্যাপক সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়। কয়েক লক্ষ উদ্বাস্তু এসময় পাকিস্তান ও ইরানে পালিয়ে যায়। ১৯৮০ সালের এপ্রিল একটি সংবিধান প্রণীত হয় এবং সমর্থন মজবুত করার জন্য দলের বাইরে থেকে সরকারে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়। কারমালের কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশে শান্তি আনয়ন করা যায়নি। ১৯৮৬ সালে মুহাম্মদ নজিবউল্লাহ দলের মহাসচিব হিসেবে কারমালের উত্তরসুরি হন।

নজিবউল্লাহ বিরোধীদের সাথে সমঝোতা চেষ্টা করেন। ১৯৮৭ সালে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। ১৯৮৮ সালে আইনসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মুজাহিদিনরা এই নির্বাচন বয়কট করে। আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েতরা চলে যাওয়ার পর সরকার ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। ১৯৯০ সালে আফগান রাজনীতিতে আরো পরিবর্তন আসে। এসময় প্রণীত সংবিধানে আফগানিস্তানকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ওয়াতান পার্টিতে রূপান্তর করা হয়। সামরিক ক্ষেত্রে সরকার সশস্ত্র বিরোধীদের লড়াইয়ে পরাজিত করতে সক্ষম হয়। তবে সামরিক বিরোধীপক্ষ, অভ্যন্তরীণ বিবাদ, ১৯৯০ সালে খালকপন্থিদের ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির ফলে ১৯৯২ সালের এপ্রিলে নজিবউল্লাহর সরকারের পতন হয়।

ইতিহাস সম্পাদনা

সাওর বিপ্লব এবং তারাকি: ১৯৭৮–১৯৭৯ সম্পাদনা

মুহাম্মদ দাউদ খান ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৭৮ সালে সংঘটিত সাওর বিপ্লবের ফলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হুন। খালক গ্রুপের হাফিজউল্লাহ আমিন ছিলেন অভ্যুত্থানের প্রধান পরিকল্পনাকারী।[১] খালকপন্থিদের প্রধান নূর মুহাম্মদ তারাকি বিপ্লবী কাউন্সিলের প্রেসিডিয়ামের চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীপরিষদের চেয়ারম্যান হন। পাশাপাশি তিনি পিডিপিএর কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিবের পদেও বহাল থাকেন।[২] তার অধীনে পারচামপন্থি বাবরাক কারমাল বিপ্লবী কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান[৩] ও মন্ত্রীপরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান, আমিন মন্ত্রীপরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান[৪] ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী[২] এবং মুহাম্মদ আসলাম ওয়াতানজার মন্ত্রীপরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন।[৫] কারমাল, আমিন ও ওয়াতানজারকে মন্ত্রীপরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়ার এই সিদ্ধান্ত অস্থিতিশীল হিসেবে দেখা দেয়। এর ফলে সরকারের ভেতরে তিনটি পৃথক সরকার প্রতিষ্ঠিত করে। খালকপন্থিদেরকে আমিনের নিকট, পারচামপন্থিদেরকে কারমালের নিকট এবং সামরিক অফিসারদেরকে (তারা পারচামপন্থি ছিলেন) ওয়াতানজারের নিকট জবাবদিহি করতে হত।[৬]

খালকপন্থিরা বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী সামরিক অফিসারদেরকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ দিতে চাইলে প্রথম দ্বন্দ্ব্ব সৃষ্টি হয়। আমিন প্রথমে এই পদক্ষেপের বিরোধী হলেও মত পরিবর্তন করে সমর্থন দেন। দলের পলিটব্যুরো সামরিক অফিসারদের দলের সদস্যপদ প্রদানের ব্যাপারে সম্মতি দিয়ে ভোট দেয়। বিজয়ী খালকপন্থিরা পারচামপন্থিদের সুযোগসন্ধানি হিসেবে চিহ্নিত করে, তাদের দাবি ছিল যে পারচামপন্থিরা বিপ্লবে প্রকৃতপক্ষে অংশগ্রহণ করেনি। তারাকির মতে পারচাম শব্দটি বিচ্ছিন্নতাবাদের সমার্থক যা পরিস্থিতি পারচামপন্থিদের জন্য আরো খারাপ করে তোলে।[৭] বিপ্লবের তিনমাস পর ২৭ জুন আমিন কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে পারচামপন্থিদের পরাস্ত করেন।[৮] এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে খালকপন্থিরা নীতি প্রণয়ন ও গ্রহণ করার অধিকার পাবে। ফলে পারচামপন্থিরা অক্ষম হয়ে পড়ে। কারমাল নির্বাসিত হন। পরে পারচামপন্থিরা একটি অভ্যুত্থান পরিকল্পনা করে। কারমাল এতে নেতৃত্বে দিয়েছিলেন। কিন্তু খালকপন্থি নেতারা পরিকল্পনা জেনে যান। এর ফলে পারচামপন্থিদের উপর দমন শুরু হয়। পারচামপন্থি রাষ্ট্রদূতদের ডাকা হলেও অল্প কয়েকজন ফিরে আসে। কারমাল ও মুহাম্মদ নজিবউল্লাহ তাদের অবস্থানরত দেশেই থেকে যান।[৯]

তারাকির শাসনামলে ভূমি সংস্কার করা হয়। এই পদক্ষেপ অজনপ্রিয় ছিল। সংস্কারের সময় ক্ষতিপূরণ না দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল।[১০] জনগণের অসন্তোষ বুঝতে পেরে তারাকি নীতিতে পরিবর্তন আনেন।[১১] ফলে ভূমি সংস্কার পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। অভ্যুত্থানের পরের মাসগুলোতে তারাকি ও দলের অন্যান্য নেতারা অন্যান্য মার্ক্সবাদী নীতি চালু করেন যা ঐতিহ্যবাহী আফগান মূল্যবোধ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত ক্ষমতা কাঠামোর প্রতি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তারাকি নারীদেরকে রাজনীতিতে আনেন এবং জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার প্রথা বন্ধ করেন। সংস্কার বিরোধী মানসিকতা শেষপর্যন্ত গৃহযুদ্ধের দিকে মোড় নেয়।[১২]

আমিন এবং সোভিয়েত হস্তক্ষেপ: ১৯৭৯ সম্পাদনা

শুরুর দিকে আমিন ও তারাকির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। পরে এই সম্পর্কের অবনতি হয়। আমিন তারাকির ব্যক্তিগত কাল্ট গঠনে সহায়তা করেছিলেন। কিন্তু তারাকি তাকে উপেক্ষা করতে শুরু করেন এবং তার পরামর্শ বাতিল করে দিয়েছিলেন। আমিন ও তারাকির মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠার পর সেনাবাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব্ব তৈরী হয়।[১৩] ১৯৭৯ সালে হেরাতের বিদ্রোহের পর বিপ্লবী কাউন্সিল ও দলের পলিটব্যুরো একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিরক্ষা কাউন্সিল গঠন করে। তারাকি এর চেয়ারম্যান এবং আমিন এর ডেপুটি নিযুক্ত হন। তবে এর ফলে তার ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়নি; সাংবিধানিক সংস্কারের ফলে তার নতুন অফিসের ক্ষমতা খুব বেশি ছিল না।[১৪] চারজনের একটি দল তাকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। এই দলে ছিলেন ওয়াতানজার, সাইয়িদ মুহাম্মদ গুলাবজই, শেরজান মাজদুরইয়ার ও আসাদউল্লাহ সারওয়ারি। এর ফলে আমিন তারাকির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে উৎসাহ পান।[১৫] তারাকি হাভানায় একটি সফর শেষে ফেরার পর ক্ষমতাচ্যুত হন[১৬] এবং পরে আমিনের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়।[১৫]

আমিন ১০৪ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। এই সময়ে তিনি সম্মিলিত নেতৃত্ব গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন। তারাকি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আমিন প্রতিশ্রুতি দেন যে এরপর থেকে স্বৈরশাসন থাকবে না।[১৭] তারাকি ও আমিনের শাসনামলে গ্রেপ্তারকৃতদের মোট সংখ্যা ১৭,০০০ থেকে ৪৫,০০০ ছিল।[১৮] আমিনকে আফগানরা পছন্দ করত না। তার শাসনামলে কমিউনিস্ট শাসন বিরোধীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং গ্রামাঞ্চলে সরকারের নিয়ন্ত্রণ লোপ পায়। দলত্যাগের ফলে সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা কমে যায় ফলে সেনাবাহিনীর অবস্থারও অবনতি হয়। সাওর বিপ্লবের অব্যবহিত পরে সেনাসদস্য ছিল প্রায় ১,০০,০০০; এই সময় সেনা সংখ্যা কমে ৫০,০০০ থেকে ৭০,০০০ হয়। এছাড়াও দল, সামরিক বাহিনী ও আমলাতন্ত্রে কেজিবি প্রবেশ করায় আরো সমস্যা দেখা দেয়।[১৯] আফগানিস্তানের অবস্থা অবনতি হতে থাকার সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্বাঞ্চলীয় ব্লকে নির্বাসিত আমিনের বিরোধীরা তাকে উৎখাতের ব্যাপারে চিন্তা করে। পারচামপন্থিদের নেতা বাবরাক কারমাল এই সময় পূর্বাঞ্চলীয় ব্লকের নেতৃস্থানীয়দের সাথে আলাপ করেন। এছাড়াও মুহাম্মদ আসলাম ওয়াতানজার, সাইয়িদ মুহাম্মদ গুলাবজই ও আসাদউল্লাহ সারওয়ারি আমিনের উপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন।[২০] সোভিয়েত হস্তক্ষেপের পূর্বে পিডিপিএ ১০,০০০ থেকে ২৭,০০০ ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয় যার অধিকাংশই পুল-এ-চারখি কারাগারে কার্যকর হয়।[২১][২২][২৩]

ইতোমধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নে ইয়ুরি এন্ড্রুপভ, আন্দ্রেই গ্রুমিকো, দিমিত্রি উস্তিনভ এবং বরিস পোনোমারেভকে নিয়ে গঠিত পলিটব্যুরোর আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ কমিশন চাইছিল যাতে সোভিয়েত ইউনিয়ন আমিনের নেতৃত্ব ও নীতিকে সমর্থন করছে এই ধারণার সমাপ্তি ঘটে।[২৪] এন্ড্রুপভ সোভিয়েত হস্তক্ষেপের পক্ষে ছিলেন। তিনি লিওনিদ ব্রেজনেভকে বলেন যে আমিনের নীতি সামরিক বাহিনী এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ধ্বংস করে ফেলেছে। তার পরিকল্পনা ছিল যাতে একটি ছোট সেনাদল প্রেরণ করে আমিনকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং কারমালকে ক্ষমতায় বসানো হয়।[২৫] ১৯৭৯ সালের ১২ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক পরিকল্পনা ঘোষণা করে। ২৭ ডিসেম্বর সোভিয়েত হস্তক্ষেপের প্রথম পর্ব হিসেবে অপারেশন স্টর্ম-৩৩৩ শুরু হয়।[২৬]

সরকারিভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে সম্পর্কহানি হলেও শেষ সময় পর্যন্ত আমিন সোভিয়েত ইউয়িনয়ের প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন। আফগান গোয়েন্দারা পূর্বেই তাকে এই বিষয়ে অবহিত করে যে সোভিয়েতরা দেশে আক্রমণ করে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। কিন্তু আমিন এই রিপোর্টকে সাম্রাজ্যবাদের পণ্য বলে উপেক্ষা করেছিলেন।

কারমালের যুগ: ১৯৭৯–১৯৮৬ সম্পাদনা

আমিন নিহত হওয়ার পর কামাল ক্ষমতালাভ করেন।[২৭] ২৭ ডিসেম্বর রেডিও কাবুল কারমালের পূর্বে ধারণকৃত একটি বক্তব্য প্রচার করে। এতে তিনি বলা হয় "আজ আমিনের নির্যাতন যন্ত্র ধ্বংস হয়েছে" বলে উল্লেখ করেন। ১ জানুয়ারি সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব লিওনিদ ব্রেজনেভ এবং মন্ত্রিসভার চেয়ারম্যান আলেক্সেই কোসিগিন কারমালকে "নির্বাচিত" নেতা অভিনন্দন জানান। তবে এসময় পর্যন্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় বা দলীয় তরফ থেকে তাকে কিছুতে নির্বাচন করা হয়নি।[২৮]

ক্ষমতায় আসার পর কারমাল মৃত্যুদণ্ড বিলোপ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন, সংবিধান প্রণয়ন, পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি ছাড়াও অন্যান্য দলের বৈধতা প্রদান এবং ব্যক্তিগত সম্পদের অধিকারের প্রতিশ্রুতি দেন। পূর্ববর্তী দুই সরকারের আমলে বন্দী হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়াও তিনি জোট সরকার গঠন এবং এতে সমাজতন্ত্রকে গ্রহণ করা হবে না মর্মে ঘোষণা দেন। তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন যে অর্থনৈতিক, সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তার জন্য তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে আলোচনা করেছেন। তবে তিনি এমনটা চাইলেও সোভিয়েতদের অবস্থানের কারণে তা সম্ভব ছিল না।[২৯] অধিকাংশ আফগানই এসময় সরকারকে বিশ্বাস করেনি। কারমাল ব্যক্তিগত সম্পদের অধিকারের কথা বললেও পরে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়।[৩০]

রাজনৈতিক সমাধান ব্যর্থ হওয়ার পর আফগান সরকার ও সোভিয়েত সামরিক বাহিনী সামরিক পন্থায় সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয়। রাজনৈতিক থেকে সামরিক সমাধানের এই সিদ্ধান্ত ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। শুরুতে ১৯৮১ সালের জানুয়ারি মাসে কারমাল সামরিক ব্যক্তিদের বেতন দ্বিগুণ করেন, কয়েকজনকে পদোন্নতি দেন এবং একজন জেনারেল ও তেরজন কর্নেলকে পদক প্রদান করা হয়। সেনাবাহিনীতে যোগদানের বয়স কমানো হয়, বাধ্যতামূলক সামরিক দায়িত্বপালনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয় এবং রিজার্ভদের বয়স সীমা বৃদ্ধি করে পয়ত্রিশ বছর করা হয়। জুন মাসে আসাদউল্লাহ সারওয়ারি দলের পলিটব্যুরোতে তার আসন হারান এবং তার স্থলে সাবেক ট্যাঙ্ক কমান্ডার ও পরবর্তীকালে যোগাযোগ মন্ত্রী মুহাম্মদ আসলাম ওয়াতানজার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মেজর জেনারেল মুহাম্মদ রফি এবং গোয়েন্দা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নজিবউল্লাহকে নিয়োগ দেয়া হয়। সেনাবাহিনীতে ভাঙন ধরায় এসকল পদক্ষেপ নেয়া হয়; সোভিয়েত আক্রমণের পূর্বে সেনাসদস্য ছিল ১,০০,০০০ এবং আক্রমণের পর ছিল ২৫,০০০। সেনাবাহিনী ত্যাগ ব্যাপকমাত্রায় ঘটছিল। তরুণদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের সময় প্রায়ই তারা বিরোধী শিবিরে পালিয়ে যেত।[৩১] সামরিক বাহিনীকে উত্তমরূপে সংগঠিত করার জন্য সাতটি সামরিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং প্রত্যেকের নিজস্ব প্রতিরক্ষা কাউন্সিল গঠন করা হয়। জাতীয়, প্রাদেশিক ও জেলা পর্যায়ে প্রতিরক্ষা কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল যাতে পিডিপিএর স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতা বিস্তৃত হয়।[৩২] আফগান সরকার রাজস্বের ৪০ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করেছিল বলে অণুমান করা হয়।[৩৩]

সোভিয়েত নেতাদের ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে ১৯৮৫ সালের মে মাসে কারমাল দলের মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার স্থলে মুহাম্মদ নজিবউল্লাহ মহাসচিব হন।[৩৪] ১৯৮৬ সালের নভেম্বরে বিপ্লবী কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কারমাল দল ও রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ে প্রভাব বজায় রাখেন। এরপর হাজি মুহাম্মদ চামকানি তার পদ লাভ করেন। চামকানি দলের সদস্য ছিলেন না।[৩৫]

নজিবউল্লাহ এবং সোভিয়েতদের আফগানিস্তান ত্যাগ: ১৯৮৬–১৯৮৯ সম্পাদনা

১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নজিবউল্লাহর নির্দেশে ন্যাশনাল কম্প্রোমাইজ কমিশন (এনসিসি) গঠিত হয়। এই কমিশনের লক্ষ্য ছিল পাল্টা-বিপ্লবীদের সাথে যোগাযোগ করা। আনুমানিক ৪০,০০০ বিদ্রোহীর সাথে সরকারের যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ১৯৮৬ সালের শেষে নজিবউল্লাহ ছয় মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন এবং বিভিন্ন বিরোধী পক্ষের সাথে আলোচনা চলতে থাকে। এই আলোচনা সফল হলে একটি জোট সরকার গঠন করা যেত এবং পিডিপিএর একচেটিয়া ক্ষমতার অবসান হত। এই কার্যক্রম ব্যর্থ হয় তবে সরকার অনেক মুজাহিদিন যোদ্ধাকে সরকারি মিলিশিয়া হিসেবে নিযুক্ত করতে সক্ষম হয়।[৩৬] এই সমঝোতা চেষ্টার ফলে শহুরে আফগানদের অনেকে তাকে সমর্থন দেয়।[৩৭]

 
নজিবউল্লাহ এক সোভিয়েত সৈনিককে পদক প্রদান করছেন।

নজিবউল্লাহ এসময় দৃশ্যত ক্ষমতায় থাকলেও সোভিয়েত উপদেষ্টারা অধিকাংশ কাজ করছিলেন। আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাষ্ট্রদূত ফিকরিয়াত তাবিভ গর্বাচেভের গভর্নর জেনারেলের মত কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। ১৯৮৬ সালের জুলাই মাসে তাকে আফগানিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। সোভিয়েত পলিটব্যুরোর বৈঠকে গর্বাচেভ বলেছিলেন, "পুরনো উপকরণ দিয়ে নতুন দালান নির্মাণ কঠিন [...] আমি ঈশ্বরের কাছে আশা করি যে আমরা নজিবউল্লাহকে নিয়ে কোনো ভুল করিনি।"[৩৮] নজিবউল্লাহ সোভিয়েতদের প্রত্যাহারের বিরোধী ছিলেন। তিনি ধারণা করতেন যে সোভিয়েতদের উপস্থিতিই তাকে রক্ষা করতে পারবে।[৩৮] ১৯৮৬ সালের জুলাই মাসে ছয়টি সোভিয়েত রেজিমেন্ট আফগানিস্তান ত্যাগ করে। গর্বাচেভের মতে সোভিয়েত ইউনিয়ন এ দ্বারা দেখাতে চাইছিল যে তারা আফগানিস্তান ত্যাগ করা নিয়ে বাস্তবেই চিন্তিত।[৩৯]

১৯৮৮ সালের ১৪ এপ্রিল আফগান ও পাকিস্তান সরকার জেনেভা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র জামিন হিসেবে স্বাক্ষর করে। এতে নির্দিষ্টভাবে বলা হয় যে সোভিয়েত সামরিক বাহিনী ১৯৮৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নাগাদ আফগানিস্তান ত্যাগ করবে।[৪০] পলিটব্যুরো বৈঠকে এডওয়ার্ড শেভারদনাদজ বলেন "আমরা শোচনীয় পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান ত্যাগ করব",[৪১] এবং তিনি অর্থনৈতিক অবনতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি আফগানিস্তানে কমপক্ষে ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ সৈনিক রাখার পক্ষে ছিলেন। কেজিবি চেয়ারম্যান ভ্লাদিমির ক্রুয়ুচকভ এই অবস্থানকে সমর্থন দেন। তবে এই পদক্ষেপ নিলে সদ্য স্বাক্ষরিত জেনেভা চুক্তির লঙ্ঘন হত।[৪১] নজিবউল্লাহ কোনোপ্রকার সোভিয়েত প্রত্যাহারের বিরোধী ছিলেন।[৪২] সোভিয়েতদের চলে যাওয়ার পর অল্প সংখ্যক সোভিয়েত সেনা থেকে যায়, এদের মধ্যে ছিল সোভিয়েত দূতাবাসকে রক্ষা করা ছত্রীসেনা, সামরিক উপদেষ্টা, বিশেষ বাহিনী এবং দূরবর্তী প্রদেশসমূহে পরিদর্শনরত সৈনিক যারা মূলত আফগান-সোভিয়েত সীমান্তে নিয়োজিত ছিল।[৪৩]

পতন: ১৯৮৯–১৯৯২ সম্পাদনা

জেনেভা চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরও পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ জিয়া-উল-হক মুজাহিদিনদের সমর্থন করতে থাকেন। প্রথমদিকে অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের ধারণা ছিল যে নজিবউল্লাহর সরকারের পতন ঘটবে এবং একটি ইসলামি সরকারের উত্থান হবে। সিআইএ একটি রিপোর্টে উল্লেখ করে যে নতুন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অধিক আগ্রাসী হবে। সোভিয়েতদের আফগানিস্তান ত্যাগের প্রায় পরপরই সরকারি বাহিনী ও মুজাহিদিনদের মধ্যে জালালাবাদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সরকারি বাহিনী এতে জয়ী হয়।[৪৪] ১৯৯০ সালের গ্রীষ্ম নাগাদ আফগান সরকারি বাহিনী প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে সরে আসে। ১৯৯১ সালের সূচনা নাগাদ আফগানিস্তানের মাত্র ১০% এলাকায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। মুজাহিদিনদের বিজয়ের মাধ্যমে ১১ বছরব্যপী চলা খোস্ত অবরোধ সমাপ্ত হয় এবং আফগান সামরিক বাহিনীর মনোবল শেষপর্যন্ত ভেঙে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়নও ভাঙনের দিকে এগোচ্ছিল বিধায় এদিক থেকে কোনো সহায়তা আসেনি।[৪৫] মস্কো থেকে নজিবউল্লাহকে দেয়া বার্ষিক বিলিয়ন ডলারের সহায়তাও সমাপ্ত হয়।[৪৬]

মার্চে নজিবউল্লাহ তার সরকারকে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন। জাতিসংঘের সাথে এক সমঝোতার পর তার সরকারের পরিবর্তে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। এপ্রিলে সাত ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জাতিসংঘের পরিকল্পনায় নজিবউল্লাহ হস্তক্ষেপ করেন। বাগরাম বিমানঘাটি ও চারিকার শহরের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে ১৪ এপ্রিল ওয়াতান পার্টির নির্দেশে নজিবউল্লাহ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। নজিবউল্লাহর পদত্যাগের পর আবদুর রহিম হাতিফ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধান হন।[৪৭] কাবুলের পতনের পূর্বে নজিবউল্লাহ জাতিসংঘের কাছে ক্ষমা চাইলে তা মঞ্জুর করা হয়। এদিকে আবদুর রশিদ দোস্তাম নজিবউল্লাহর পলায়ন রোধ করতে চাইছিলেন। এরপরও নজিবউলাহ কাবুলের স্থানীয় জাতিসংঘ দপ্তরে আশ্রয় নেন।[৪৮] নজিবউল্লাহর ক্ষমতা হারানোর পরও আফগানিস্তানে যুদ্ধ সমাপ্ত হয়নি এবং এখনো সংঘর্ষ চালু রয়েছে।[৪৯] মুজাহিদিনদের সাথে যুদ্ধে আফগান সরকার ব্যাপক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। রুডলফ রুমেলের হিসাব অনুযায়ী সোভিয়েত বাহিনীর হাতে ২,৫০,০০০ এবং আফগান সরকারের হাতে ১,৭৮,০০০ ব্যক্তি নিহত হয়।[৫০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Hussain 2005, পৃ. 95
  2. Gladstone 2001, পৃ. 117
  3. Brecher, Wilkenfeld 1997, পৃ. 356
  4. Asthana 2009, পৃ. 219
  5. Rasanayagam 2005, পৃ. 70
  6. Rasanayagam 2005, পৃ. 70–71
  7. Rasanayagam 2005, পৃ. 71
  8. Rasanayagam 2005, পৃ. 72–73
  9. Rasanayagam 2005, পৃ. 73
  10. Amtstutz 1994, পৃ. 315
  11. Amtstutz 1994, পৃ. 315–316।
  12. Brown 2009, পৃ. 356।
  13. Misdaq 2006, পৃ. 122।
  14. Misdaq 2006, পৃ. 123।
  15. Misdaq 2006, পৃ. 125।
  16. Misdaq 2006, পৃ. 123–124।
  17. Male 1982, পৃ. 192
  18. Amtstutz 1994, পৃ. 273
  19. Tomsen 2011, পৃ. 160
  20. Tomsen 2011, পৃ. 160–161
  21. Valentino (2005) Final solutions p. 219.
  22. Kaplan, Robert D., Soldiers of God: With Islamic Warriors in Afghanistan and Pakistan, New York, Vintage Departures, (2001), p.115
  23. Kabul's prison of death BBC, February 27, 2006
  24. Tripathi Falk, পৃ. 54
  25. Tripathi Falk, পৃ. 55
  26. Camp 2012, পৃ. 12–13
  27. Braithwaite 2011, পৃ. 99।
  28. Braithwaite 2011, পৃ. 103–104।
  29. H. Kakar ও M. Kakar 1997, পৃ. 71
  30. H. Kakar ও M. Kakar 1997, পৃ. 71–72
  31. Weiner ও Banuazizi 1994, পৃ. 47
  32. Weiner ও Banuazizi 1994, পৃ. 48
  33. Staff writer 2002, পৃ. 86
  34. Kalinovsky 2011, পৃ. 97
  35. Amtstutz 1994, পৃ. 151–152
  36. Amtstutz 1994, পৃ. 152
  37. Amtstutz 1994, পৃ. 153
  38. Braithwaite 2011, পৃ. 276
  39. Braithwaite 2011, পৃ. 277
  40. Braithwaite 2011, পৃ. 281
  41. Braithwaite 2011, পৃ. 282
  42. Braithwaite 2011, পৃ. 286
  43. Braithwaite 2011, পৃ. 294
  44. Braithwaite 2011, পৃ. 296
  45. Braithwaite 2011, পৃ. 299
  46. Charlie Wilson's War, George Crile III, 2003, Atlantic Monthly Press
  47. Staff writer 2002, পৃ. 66
  48. Braithwaite 2011, পৃ. 301
  49. Braithwaite 2011, পৃ. 302–303
  50. 20th Century Democide Rudolph Rummel

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Socialist states