আন্তঃকোরীয় সম্মেলন

আন্তঃকোরীয় সম্মেলন  হল উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃবৃন্দের মধ্যকার সম্মেলন। দুই কোরিয়ার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে পর্যাপ্ত যোগাযোগ ও কথোপকথন হয় না। এই সম্মেলন মূলতঃ সেই শূন্যতা পূরণেই পাথেয় হয়ে থাকে। কোরীয় যুদ্ধ থেকে শুরু করে কোরীয় অসামরিকীকৃত অঞ্চল ইত্যাদি এই সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তু।[১] এছাড়াও উত্তর কোরিয়ায় মানবাধিকার ও পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নীতিকরণ এই সম্মেলনের অন্যতম বিষয়। 

আন্তঃকোরীয় সম্মেলন
(উত্তর কোরীয় নাম) 
চোসেঙ্গুল북남수뇌상봉
হাঞ্ছা北南首腦相逢
সংশোধিত রোমানীকরণBungnam Sunoe-sangbong
ম্যাক্কিউন-রাইশাওয়াPungnam Sunoe-sangbong
Inter-Korean summits
(South Korean name)
হাঙ্গুল남북정상회담
হাঞ্জা南北頂上會談
সংশোধিত রোমানীকরণNambuk Jeongsang-hoedam
ম্যাক্কিউন-রাইশাওয়াNampuk Ch'ŏngsang-hoedam

সারসংক্ষেপ  সম্পাদনা

২০০০ আন্তঃকোরীয় সম্মেলন  সম্পাদনা

কিম দে জং এর সময়কালে সর্বপ্রথম কোরীয় পেনিনসুলার দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার এই রাষ্ট্রপতি পিয়ংইয়াং সুনান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উত্তর কোরিয়ার জাতীয় সুরক্ষা দলের প্রধান কিম জং-ইলের সাথে সাক্ষাৎ করেন। কোরীয় যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এটাই দুই দেশের নেতার মধ্যে হওয়া প্রথম কোন সাক্ষাৎ। তিন বছর পর অবশ্য প্রকাশিত হয় যে, এই সাক্ষাতের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়াকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছিল। তদন্তের পরে প্রমাণ হয় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়াকে গোপনে ২০০ মিলিয়ন ডলার দেয়া হয়। এই কলঙ্কের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ৬ জন সরকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।[২] সম্মেলন পরবর্তীতে একই বছরের আগস্টে, প্রায় ৫০ বছর পরে দুই কোরিয়ার সাধারণ মানুষেরা নিজেদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পায়। এই রিইউনিয়ন উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়াং ও দক্ষিণ কোরিয়ার সউল শহরে হয়েছিল।

  • অংশগ্রহণকারী: দক্ষিণ কোরিয়ার  রাষ্ট্রপতি কি দে জং এবং উত্তর কোরিয়ার জাতীয় সুরক্ষা দলের প্রধান কিম জং ইল।
  • সাক্ষাৎস্থান: পিয়ংইয়াং, উত্তর কোরিয়া।
  • সাক্ষাৎ তারিখ:১৩ই জুন-১৫ই জুন,২০০০ 
  • ফলাফল: ১৫ই জুনের যৌথ বিবৃতি

২০০৭ আন্তঃকোরীয় সম্মেলন সম্পাদনা

২০০৭ সালের জুনে সম্মেলনের ঘোষণা দেয়া হয়। তিন দলীয় সম্মেলনকে চার দলীয় সম্মেলনে উন্নীত করা হয়। কোরীয় পেনিনসুলার নিউক্লিয়ার সংক্রান্ত ইস্যু সমাধানে এর আয়োজন করা হয়েছিল। একই সাথে দুই কোরিয়ার মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নও এই সম্মেলনের বিষয়বস্তু ছিল। পূর্বের সাক্ষাৎ উত্তর কোরিয়াতে হওয়ায় ধারণা করা হয়েছিল ২০০৭ সালের সম্মেলন দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে হবে। সেই ধারণা অবশ্য ভুল প্রমাণিত হয় , যখন দ্বিতীয়বারের মতো আন্তঃকোরীয় সম্মেলন উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়াং এ ঘটে।[৩] এই সাক্ষাতে হওয়া আলোচনার কোন নথি দক্ষিণ কোরিয়ার আর্কাইভে না থাকায় ২০১৩ সালে দুই দেশের সীমান্তরেখা নিয়ে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। সে সময় দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্টেলিজেন্স বিভাগ নিজেদের তৈরি এই আলোচনার নথি প্রকাশ করে। যেখানে তৎকালীন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি কিম জং ইলের সাথে উত্তরীয় সীমান্ত রেখার ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করেন।[৪]

  • অংশগ্রহণকারী: দক্ষিণ কোরিয়ার  রাষ্ট্রপতি রো মু হিয়ন এবং উত্তর কোরিয়ার জাতীয় সুরক্ষা দলের প্রধান কিম জং ইল।
  • সাক্ষাৎস্থান: পিয়ংইয়াং, উত্তর কোরিয়া।
  • সাক্ষাৎ তারিখ:২রা অক্টোবর - ৪ঠা অক্টোবর, ২০০৭ 
  • ফলাফল: ২০০৭ উত্তর-দক্ষিণ সম্মেলন বিবৃতি

২০১৮ আন্তঃকোরীয় সম্মেলন  সম্পাদনা

২০১৮ সালের ২৭ শে এপ্রিল আন্তঃকোরীয় সম্মেলন কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের যুক্ত নিরাপত্তা অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে।  এটি দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার তৃতীয় সম্মেলন, যা রাষ্ট্রপতি মুন জে ইন এবং কিম জং ঊনের সহসম্মতিতে সম্ভবপর হয়েছে।[৫] উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুকে প্রধান নজরে রেখে কোরীয় পেনিনসুলাকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তাঞ্চল করাই এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য।

  • অংশগ্রহণকারী: দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুন জে ইন এবং উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের প্রধান চেয়ারম্যান কিম জং উন। 
  • সাক্ষাৎস্থান: যৌথ নিরাপত্তা অঞ্চল, দক্ষিণ কোরিয়া। 
  • সাক্ষাৎ তারিখ:২৭শে এপ্রিল
  • সাক্ষাতের বিষয়: ২০১৭-১৮ উত্তর কোরিয়া সংকট
  • ফলাফলঃ পানমুনজম ঘোষণাঃ কোরিয়া পেনিনসুলার শান্তি, উন্নতি ও একতার নিমিত্ত

আরো দেখুন সম্পাদনা

প্রেস রিলিজ সম্পাদনা

পাদটীকা  সম্পাদনা

  1. "Kim's War Machine"Time। ২০০৩-০২-২৪। ২০০৭-১২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১১-০৪ 
  2. "South Korea convicts six over summit"। BBC। ২০০৩-০৯-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১২ 
  3. Korean leaders issue peace call, BBC, 4 October 2007, 9:27 GMT
  4. "Ex-officials acquitted of destroying Inter-Korean summit transcript"The Korea Herald। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ 

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা