আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট

আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ যোগ্যতা নির্ধারণ প্রতিযোগিতা বা আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃক পরিচালিত টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আইসিসি’র সহযোগী সদস্য দেশসমূহের জাতীয় দলকে আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতার অধিকারী করা। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় যা আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের অণুরূপ। উদ্বোধনী আসরে ৬ দল অংশগ্রহণ করলেও ২০১০ সালের প্রতিযোগিতায় ৮ দলে উপনীত করা হয়।[১] পরবর্তীতে ২০১২ সালে এ সংখ্যাটি ১৬ দলে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে শীর্ষ ছয় দলকে আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে।

আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
২০১০ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব লোগো
ব্যবস্থাপকআন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল
খেলার ধরনটুয়েন্টি২০
প্রথম টুর্নামেন্ট২০০৮, প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ডউত্তর আয়ারল্যান্ড
আয়ারল্যান্ড
শেষ টুর্নামেন্ট২০১৯,  ইউএই
পরবর্তী টুর্নামেন্ট
প্রতিযোগিতার ধরনরাউন্ড রবিননক-আউট
দলের সংখ্যা১৬ (৮+৮)
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সংযুক্ত আরব আমিরাত (১ম শিরোপা) [২০২২ গ্রুপ এ]
সর্বাধিক সফল আয়ারল্যান্ড
 নেদারল্যান্ডস
(৩বার করে উভয়ে)
সর্বাধিক রানআফগানিস্তান মোহাম্মাদ শেহজাদ (৮৯৫)
সর্বাধিক উইকেটনেদারল্যান্ডস মুদাচ্ছার বুখারী (৩৯)
ওয়েবসাইটঅফিসিয়াল ওয়েবসাইট
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ বৈশ্বিক বাছাইপর্ব এ

ইতিহাস সম্পাদনা

২০০৮ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব সম্পাদনা

২০০৯ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য সর্বপ্রথম টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্বের আয়োজন করা হয়। উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টের স্টরমন্ট এলাকায় ২ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট, ২০০৮ তারিখ পর্যন্ত এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শীর্ষ তিনটি দল ২০০৯ সালের টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটের বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্যতা অর্জন করে।[২] সর্বমোট ছয়টি দল এতে অংশগ্রহণ করে:

বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় কোন বল মাঠে গড়ায়নি। তাই, আয়ারল্যান্ডনেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দল যৌথভাবে প্রতিযোগিতার শিরোপাধারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরফলে দল দু’টি ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। তৃতীয় স্থান লাভ করে স্কটল্যান্ড

২০১০ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব সম্পাদনা

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০১০ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্বের ২য় আসর বসে। ৯-১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় দলের সংখ্যা আটটিতে নিয়ে আসা হয়।[৩] প্রথমবারের মতো আফগানিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মোট আটটি দল অংশগ্রহণ করে। কিন্তু বারমুদা ক্রিকেট দল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেনি। অংশগ্রহণকারী আটটি দল হলো:[৪]

আফগানিস্তান ক্রিকেট দল আয়ারল্যান্ডকে পরাজিত করে শিরোপা লাভ করে। এরফলে উভয় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত ২০১০ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।

২০১২ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব সম্পাদনা

২০১২ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতা বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দশটি দল ও একদিনের আন্তর্জাতিক/টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে মর্যাদাপ্রাপ্ত ছয়টি দলসহ মোট ১৬টি দল এ প্রতিযোগিতার সাথে সংশ্লিষ্ট হয়। দশটি অঞ্চলে ৮১ দল আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা করে। ষোল দলের বিবরণ নিম্নে দেয়া হলো:

আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত খেলায় পরাজিত করে। কিন্তু উভয় দল ২০১২ সালের টুয়েন্টি২০ বিশ্বকাপে খেলার জন্য বিবেচিত হয়।

২০১৩ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব সম্পাদনা

২০১৩ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতা একই সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বেকার আসরের ন্যায় এবারও ১৬ দল নিয়ে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দশটি দল ও ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত পূর্বেকার প্রতিযোগিতায় শীর্ষ-৬ দল অংশগ্রহণ করে। গ্রুপের শীর্ষ দল: আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তান; নক-আউট খেলায় প্রথম রানার আপ: নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত; ৫ম ও ৬ষ্ঠ স্থানের অধিকারী: নেদারল্যান্ডস ও হংকং ২০১৪ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। অংশগ্রহণকারী দলের বিবরণ নিম্নে দেয়া হলো:

শীর্ষ ছয়টি দল ২০১৪ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

২০১৫ বাছাইপর্ব সম্পাদনা

২০১৫ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতাটি খেলা হয় ২০১৫ সালের জুলাই মাসে এবং প্রথমবারের মতো যৌথভাবে আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড মিলে আয়োজন করে। প্রতিযোগিতার ফাইনাল ও তৃতীয় স্থান নির্ধারনী উভয় খেলাটি পরিত্যাক্ত হয় বৃষ্টির কারণে; স্কটল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস শিরোপা ভাগাভাগি করে।

সেরা ছয়টি দল আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তান, হংকং এবং ওমান যারা এই প্রতিযোগিতায় অভিষেক করেছিল, সকলেই ২০১৬ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অগ্রসর হয়।

২০১৯ বাছাইপর্ব সম্পাদনা

২০২২ বাছাইপর্ব সম্পাদনা

পূর্বেকার বিজয়ী সম্পাদনা

২০০৭ সালের বিশ্ব ক্রিকেট লীগের প্রথম বিভাগ প্রতিযোগিতাকালীন সময়ে আইসিসি’র দুই সহযোগী সদস্য দেশ - কেনিয়া ও স্কটল্যান্ডকে আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে যোগ্য দলরূপে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বছর আয়োজক ফাইনাল
মাঠ
ফাইনাল
বিজয়ী ফলাফল রানার-আপ
২০০৮    আয়ারল্যান্ড স্টরমন্ট,
বেলফাস্ট
  আয়ারল্যান্ড
  নেদারল্যান্ডস
পরিত্যাক্ত – শিরোপা ভাগাভাগি
স্কোরকার্ড
২০১০   সংযুক্ত আরব আমিরাত দুবাই স্টেডিয়াম,
দুবাই
  আফগানিস্তান
১৪৭/২ (১৭.৩ ওভার)
আফগানিস্তান ৮ উইকেটে বিজয়ী
স্কোরকার্ড
  আয়ারল্যান্ড
১৪২/৮ (২০ ওভার)
২০১২   আয়ারল্যান্ড
১৫৬/৫ (১৮.৫ ওভার)
আয়ারল্যান্ড ৫ উইকেটে বিজয়ী
স্কোরকার্ড
  আফগানিস্তান
১৫২/৭ (২০ ওভার)
২০১৩ শেখ জায়েদ,
আবুধাবি
  আয়ারল্যান্ড
২২৫/৭ (২০ ওভার)
আয়ার‍ল্যান্ড ৬৮ রানে বিজয়ী
স্কোরকার্ড
  আফগানিস্তান
১৫৭ (১৮.৫ ওভার)
২০১৫    আয়ারল্যান্ড
  স্কটল্যান্ড
দ্য ভিলেজ,
ডাবলিন
  নেদারল্যান্ডস
  স্কটল্যান্ড
পরিত্যাক্ত – শিরোপা ভাগাভাগি
স্কোরকার্ড
২০১৯   সংযুক্ত আরব আমিরাত দুবাই স্টেডিয়াম,
দুবাই
  নেদারল্যান্ডস
১৩৪/৩ (১৯ ওভার)
নেদারল্যান্ডস ৭ উইকেটে বিজয়ী
স্কোরকার্ড
  পাপুয়া নিউগিনি
১২৮/৮ (২০ ওভার)
২০২২   ওমান আল আমিরাত স্টেডিয়াম,
মাস্কাট
  সংযুক্ত আরব আমিরাত
১৬০/৩ (১৮.৪ ওভার)
সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭ উইকেটে জয়ী স্কোরকার্ড   আয়ারল্যান্ড
১৫৯/৩ (২০ ওভার)
বি   জিম্বাবুয়ে অনির্ধারিত

দলগত সাফল্য সম্পাদনা

আইসিসি টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্বে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সাফল্য তুলে ধরা হলো।

সাংকেতিক চিহ্ন
  • ১ম – চ্যাম্পিয়ন
  • ২য় – রানার-আপ
  • ৩য় – তৃতীয় স্থান
  •     — আয়োজক
  • স্থানের নীচে দাগ দেওয়া দলটি টি২০ বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে
  • Q – বাছাইকৃত
  • § – দলটি প্রতিযোগিতার জন্য বাছাইকৃত, কিন্তু পরে নাম তুলে নিয়েছে বা অযোগ্য বলে ঘোষিত হয়েছে।
  • × – অংশ গ্রহণ করে নাই, অন্য পদ্ধতি অবলম্বনে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
দল  
 
২০০৮ ()
 
২০১০ ()
 
২০১২ (১৬)
 
২০১৩ (১৬)
    
২০১৫ (১৪)
 
২০১৯ (১৪)
মোট
  আফগানিস্তান ১ম ২য় ২য় ৫ম ×
  বারমুডা ৬ষ্ঠ ১৩তম ১৪তম ১৩তম
  কানাডা ৫ম ৮ম ৬ষ্ঠ ১২তম ১৪তম ৯ম
  ডেনমার্ক ১৬তম ১৬তম
  হংকং ১১তম ৬ষ্ঠ ৪র্থ ৮ম
  আয়ারল্যান্ড ১ম ২য় ১ম ১ম ৩য় ৩য়
  ইতালি ১০ম ৯ম
  জার্সি ১১তম ১০ম
  কেনিয়া ৪র্থ ৫ম ৯ম ১১তম ৯ম ১১তম
  নামিবিয়া ৩য় ১০ম ৭ম ৪র্থ
    নেপাল ৭ম ৩য় ১২তম
  নেদারল্যান্ডস ১ম ৪র্থ ৪র্থ ৫ম ১ম ১ম
  নাইজেরিয়া ১৪তম
  ওমান ১৫তম ৬ষ্ঠ ৬ষ্ঠ
  পাপুয়া নিউগিনি ৮ম ৮ম ৮ম ২য়
  স্কটল্যান্ড ৩য় ৭ম ৫ম ৭ম ১ম ৫ম
  সিঙ্গাপুর ১২তম
  সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩য় ৪র্থ ১৩তম ৭ম
  উগান্ডা ১৪তম ১৩তম
  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৬ষ্ঠ ১২তম ১৫তম ১০ম
  জিম্বাবুয়ে × × × × × §

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০১৪ 
  2. http://icc-cricket.yahoo.com/media-release/2008/July/media-release20080717-39.html[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] ICC-Cricket, retrieved 17 July 2008
  3. "Important dates for Associate cricket"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১১, ২০০৯ 
  4. "UAE to host expanded World Twenty20 Qualifiers"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৭, ২০০৯ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা