যৌনতার ক্ষেত্রে, আঁকড়ে ধরা হলো কোনো ব্যক্তি কর্তৃক অন্য কোনো অনিচ্ছুক ব্যক্তিকে যৌন কামনা তাড়িত হয়ে স্পর্শ বা আদর করা। অনেক সমাজে শব্দটি নেতিবাচক অর্থ বহন করে, এবং যৌন আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে যে অঙ্গগুলো সবচেয়ে বেশি আঁকড়ে ধরা হয় সেগুলো হল নিতম্ব, স্তন, যোনিঊরু। যারা আঁকড়ে ধরে, তারা সাধারণত হাত ব্যবহার করে, তবে শরীরের অন্য কোনো অঙ্গও ব্যবহার করতে পারে।

জাপানের চিবায় একটি বাইসাইকেল পার্কিং লটের বাইরে একটি সতর্কবাণী "আঁকড়ে ধরা থেকে সতর্ক হোন"

আঁকড়ে ধরার ঘটনা বিশ্বব্যাপী ঘটে। কোনো কোনো দেশে এটি একটি নিয়মিত ঘটনা। কিছু কিছু দেশে ভিড়ের মধ্যে বা জনাকীর্ণ স্থানে নারীদের নিতম্ব আঁকড়ে ধরা বা নিতম্বে চাপড় মারা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। অনেক দেশে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কোনো ব্যক্তির শরীরের যে কোনো অংশ আঁকড়ে ধরা বেআইনি, এবং প্রায় সকল দেশেই এটি অগ্রহণযোগ্য আচরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ইতালিতে পুরুষ কর্তৃক নারীদের নিম্নাঙ্গ চেপে ধরা একটি দৈনন্দিন বিষয় ছিল, কিন্তু 'আঁকড়ে ধরা' শব্দগুচ্ছটি তখন প্রচলিত ছিল না। জাপানে বাস ও ট্রেনে নারীদের আঁকড়ে ধরার ঘটনা এত বেশি ঘটে যে সেখানকার কর্তৃপক্ষ 'আঁকড়ে ধরা'র বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে, যা প্রচারমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ আরম্ভ হয়েছে। ভারত[১], নেপাল[২] এবং বাংলাদেশসহ[৩] দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অংশে নারীদের প্রকাশ্যে আঁকড়ে ধরা বা যৌন হয়রানি করাকে সাধারণত ইভটিজিং নামে অভিহিত করা হয়।

জাপান সম্পাদনা

জাপানে যেসব পুরুষ প্রকাশ্যে নারীদের আঁকড়ে ধরে তারা চিকান (痴漢, チカン, or ちかん) নামে পরিচিত; এবং এই শব্দটি দ্বারাই জাপানে 'আঁকড়ে ধরা'কে বুঝানো হয়। জনাকীর্ণ ট্রেন নারীদের আঁকড়ে ধরার একটি সাধারণ স্থান এবং ২০০১ সালে পরিচালিত একটি জরিপ অনুযায়ী, ট্রেনে যাতায়াতকারী ৭০ শতাংশের বেশি ছাত্রীকে আঁকড়ে ধরা হয়েছে[৪]। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কিছু রেলওয়ে কোম্পানি কেবল নারীদের জন্য যাত্রীবাহী গাড়ি চালু করেছে[৫][৬][৭]। জনাকীর্ণ ট্রেন নারীদের আঁকড়ে ধরার একটি দৈনন্দিন স্থান হলেও আরেকটি এরকম স্থান হচ্ছে বাইসাইকেল পার্কিং অঞ্চলসমূহ, যেখানে সাইকেলের তালা খোলার জন্য ঝুঁকে থাকা নারীরা আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

এই সমস্যাটি পুরুষদের ভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। জাপানে যে কোনো মামলায় শাস্তিপ্রদানের হার প্রায় ৯৯ শতাংশ। এজন্য নির্দোষ ব্যক্তিরা আদালতে তাদের নির্দোষিতা প্রমাণ করতে সমস্যার মুখোমুখি হয়[৮]। তবে জাপানের ফৌজদারি আদালতগুলো ঐতিহ্যগতভাবে আঁকড়ে ধরার মামলাগুলোর প্রতি তেমন গুরুত্ব দিত না। কেবল সাম্প্রতিক সময়ে এই সামাজিক সমস্যাটি সমাধান করার রক্ষ্যে তারা এসব মামলায় কঠোর সাজা দিতে শুরু করেছে[৯][১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. The Express Tribune, July 8, 2013: Eve teasing: The power game, by Tehniya S Afridi.
  2. Smriti Lakhey, "Eve Teasing" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ জুন ২০১০ তারিখে, Wave # 55, July 2000.
  3. "Eve-teasers beat dead youth in Dhaka", Daily Star, 11 October 2014.
  4. "Tokyo police act on train gropers"
  5. The His and Hers Subway
  6. "Japan Tries Women Only Train Cars to Stop Groping: Tokyo Subway Experiment Attempts to Slow Epidemic of Subway Fondling" An ABC News article.
  7. "Women Only Cars on Commuter Trains Cause Controversy in Japan"
  8. "Tokyo legal drama gets grip on groping"The StandardAssociated Press। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। ৩১ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৫ 
  9. Lewis, Leo (২০০৪-১১-২৪)। "All women trains are only way to defeat Tokyo bottom pinchers"। The Times Online। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১১-০১ 
  10. Fukada, Takahiro, "In anonymous packed train lurk gropers", The Japan Times, August 18, 2009, p. 3.