অ্যালান কিপাক্স

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

অ্যালান ফলকোনার কিপাক্স (ইংরেজি: Alan Kippax; জন্ম: ২৫ মে, ১৮৯৭ - মৃত্যু: ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২) নিউ সাউথ ওয়েলসের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

অ্যালান কিপাক্স
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামঅ্যালান ফলকোনার কিপাক্স
জন্ম(১৮৯৭-০৫-২৫)২৫ মে ১৮৯৭
প্যাডিংটন, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭২(1972-09-05) (বয়স ৭৫)
বেলেভ্যু হিল, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামকিপ
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি রিস্ট স্পিন
ভূমিকামাঝারিসারির ব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১২২)
২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯২৫ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২২ আগস্ট ১৯৩৪ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯১৮–১৯৩৫নিউ সাউথ ওয়েলস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২২ ১৭৫
রানের সংখ্যা ১১৯২ ১২,৭৯২
ব্যাটিং গড় ৩৬.১২ ৫৭.২২
১০০/৫০ ২/৮ ৪৩/৪৫
সর্বোচ্চ রান ১৪৬ ৩১৫*
বল করেছে ৭০ ১৮২৭
উইকেট ২১
বোলিং গড় - ৫২.৩৩
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং - ৪/৬৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৩/০ ৭২/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের (এনএসডব্লিউ) প্রতিনিধিত্ব করেছেন ‘কিপ’ ডাকনামে পরিচিত অ্যালান কিপাক্স। দুইটি বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়কালে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা প্রতিভাবান ক্রিকেটার ছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে বেশ সময় নিয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তিনি। ১৯২৮-২৯ থেকে ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেন।

মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। দুইবার ইংল্যান্ড গমন করেন। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করে নিয়মিতভাবে রান সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন আট বছর। তবে, টেস্ট ক্রিকেটে তেমন দক্ষতা প্রদর্শনে সক্ষমতা দেখাতে পারেননি। ১৯২৮-২৯ মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শেফিল্ড শিল্ডে শেষ উইকেট জুটিতে রেকর্ডসংখ্যক রান তুলে পরিচিতি পেয়েছেন। ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে বিতর্কিত বডিলাইন সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার পর তার খেলোয়াড়ী জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটে। এ সিরিজে গৃহীত অপকৌশল নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেন অ্যালান কিপাক্স।

কিপাক্স সঠিকমানের ও দর্শনীয় ব্যাটিংশৈলীর অধিকারী ব্যাটসম্যান ছিলেন। উইকেটে স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াতেন। তার শৈশবের আদর্শ ভিক্টর ট্রাম্পারের ন্যায় কোমর ও কনুইকে একত্রিত করে রাখতেন ও লেট কাটের সাহায্যে বল মোকাবেলা করতেন।[১] সম্ভবতঃ ১৯২০-এর দশকে তার স্বর্ণালী সময় কাটে।[২] ১৯২৬ সালে ইংল্যান্ড সফর থেকে তাকে বঞ্চিত করায় ব্যাপক বিতর্কের উদ্রেক ঘটে।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

আর্থার পার্সিভাল হাওয়েল কিপাক্স ও সোফি এস্তেল দম্পতির তৃতীয় সন্তান ছিলেন তিনি। সিডনির কাছাকাছি প্যাডিংটনে তার জন্ম।[১] বন্ডি ও ক্লেভল্যান্ড স্ট্রিট পাবলিক স্কুল - উভয় প্রতিষ্ঠানেই পড়াশোনা করেছেন। ১৪ বছর বয়সে কিপাক্স ওয়াভার্লিতে যোগ দেন যা বর্তমানের ইস্টার্ন সাবার্বস ক্রিকেট ক্লাব নামে পরিচিত। তিন বছরের মধ্যেই প্রথম-স্তরের দলটিতে নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেন তিনি।[৩] কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিযোগিতা পুনরায় শুরু হলে ১৯১৮-১৯ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে তার অভিষেক হয়। তবে দলে প্রতিভাধর ব্যাটসম্যানের অভাব ছিল না। যুদ্ধের পর ইংল্যান্ড থেকে ফিরে আসা অস্ট্রেলিয়ান ইম্পেরিয়াল ফোর্সেস ক্রিকেট দলের সদস্যরা দলে অন্তর্ভুক্ত হন। ফলশ্রুতিতে কিপাক্সের দলে অংশগ্রহণ কয়েক মৌসুমের জন্য সীমিত হয়ে পড়ে। এছাড়াও তিনি ওয়াভার্লি বেসবল ক্লাবের পক্ষে বেসবল খেলায় অংশগ্রহণ করেছেন ও আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সফরকারী দলের বিপক্ষে খেলার জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করতেন।[৪]

১৯২১ সালের শরৎকালে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। টেস্ট ব্যাটসম্যান ভার্নন র‌্যান্সফোর্ডের নেতৃত্বে দ্বিতীয়সারির অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে ঐ সফরে নয় ইনিংস খেলে মাত্র দুইবার অর্ধ-শতকের সন্ধান পান।[৫] ১৯২২-২৩ মৌসুমে এনএসডব্লিউ’র নিয়মিত সদস্য হন ও ৯০.১৪ গড়ে ৬৩১ রান তুলেন।[৬] এরফলে দলের প্রথম-শ্রেণীর খেলায় গড়ে শীর্ষস্থান দখল করেন। পরের মৌসুমে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ৩১৬ মিনিটে ২৪৮ রানের মনোরম ইনিংস উপহার দেন। এনএসডব্লিউ’র অধিনায়ক চার্লি ম্যাককার্টনি’র নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। সেখানে ৯২.২০ গড়ে দুই সেঞ্চুরি সহযোগে ৪৬১ রান তুলেন।[৭] তিনি দ্রুত সতীর্থ খেলোয়াড় ও দর্শকদের কাছে নিজেকে তুলে ধরেন।

ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান এ ক্রীড়ায় হুক শটে তাকে সেরা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।[৮]

ক্ল্যারি গ্রিমেটের বিপক্ষে এসসিজিতে শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় লেট কাট শট খেলে বেশ সুনাম কুড়ান।

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

১৯২৪-২৫ মৌসুমের গ্রীষ্মে এসসিজিতে অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে এনএসডব্লিউ’র সদস্যরূপে ১১৫ রান তুলেন। শেফিল্ড শিল্ডে ১২৭, ১২২ ও ৩১, অপরাজিত ২১২ ও ৪০ রান তুলেন।[৯] এরফলে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিডনিতে অ্যাশেজ সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। প্রথম ইনিংসে বিল পন্সফোর্ডের সাথে ১০৫ রানের জুটি গড়েন। সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন।[১০] উইজডেন মন্তব্য করে যে, এ জুটিটি খেলার ভবিষ্যতের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। অস্ট্রেলিয়া খেলায় জয় পায়।[১১]

১৯২৫-২৬ মৌসুমে ৮৩.৫৭ গড়ে ৫৮৫ রান তোলার পর ধারণা করা হচ্ছিল যে, ১৯২৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে কিপাক্সকে হয়তোবা দলের সদস্য মনোনীত করা হবে। ডিসেম্বরের শুরুতে টেস্টের পূর্ব-প্রস্তুতিমূলক খেলায় তিনি ব্যর্থ হন। তবে, শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতায় ৪২৩ মিনিটে অপরাজিত ২৭১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।[১২] এসসিজিতে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে এনএসডব্লিউ জয় পেয়ে শিরোপা লাভ করে। সফরকারী দল থেকে কিপাক্সকে প্রত্যাখ্যান করার ফলে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষো অমার্জনীয় ভুল হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।[১] কিপাক্সের বয়স তখন প্রায় ২৯ বছর ছিল। সাবেক অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মন্টি নোবেল তাকে অন্তর্ভুক্ত না করার ফলে অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ক্রিকেটারদের বিপক্ষে গুরুতর অপরাধরূপে আখ্যায়িত করেন।[১৩] তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়ে আন্তঃরাজ্যীয় ক্ষুদ্র দৃষ্টিভঙ্গী ও ব্যাটিংয়ের উপর জোর না দেয়ার খেসারত দিতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে।[৪] ঐ সফরে অস্ট্রেলিয়া অ্যাশেজ খুঁইয়ে আসে। দলীয় অধিনায়ক হার্বি কলিন্সকে সরাসরি দোষারোপ করা হয়। অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার পর প্রশাসকমণ্ডলী গ্রেড দল ও এনএসডব্লিউ থেকে কলিন্সের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেয়া হয়।[১৪] ফলশ্রুতিতে কিপাক্সের অন্তর্ভূক্তির সুযোগ আসে।

নিউ সাউথ ওয়েলসের অধিনায়কত্ব সম্পাদনা

এনএসডব্লিউ’র অধিনায়ক হিসেবে পরবর্তী তিন বছর অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যানের মর্যাদা লাভ করেন। তার অধিনায়কত্ব দয়ালুপূর্ণ ও কিছুটা বাস্তবমূখী কৌতুকপ্রবণতায় ভরপুর ছিল যা দলকে অবিস্মরণীয়ভাবে একতাবদ্ধ করে তুলে, আর্চি জ্যাকসন, স্ট্যান ম্যাককাবে ও স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের ন্যায় তরুণ ক্রিকেটারদেরকে স্নেহপ্রবণ করে তোলে।[১] ১৯২৬-২৭ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ডের উদ্বোধনী খেলায় প্রতিপক্ষ কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন। পরের বছর এসসিজিতে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৩৮৮ মিনিটে অপরাজিত ৩১৫ রানের ইনিংস খেলেন।[৪] ব্র্যাডম্যান তার এ ক্রীড়াশৈলীর বিষয়ে লেখেন যে, যদিও তারা ভিক্টর ট্রাম্পারের সুন্দর ক্রীড়াশৈলী দেখেছেন, তবে এবার আমাদের দলনায়ক তারচেয়েও মনোরম ইনিংস উপহার দিয়েছেন।[১৫] ঐ মৌসুম শেষে ৮৪.১৮ গড়ে ৯২৬ রান তুলেন তিনি।[১৬]

দল নির্বাচকমণ্ডলী তখনো কিপাক্সের দিকে নজর রাখছিলেন। মার্চ, ১৯২৮ সালে তিনি আবারো দ্বিতীয়সারির অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। তবে, সাত ইনিংস খেললেও ৪০-এর রানের কোটা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হন।[১৭] ১৯২৮-২৯ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে টেস্ট দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চার ইনিংসে তিনি মাত্র ৫০ রান তুলেন। দুইটি বড় ব্যবধানে পরাজিত হয় অস্ট্রেলিয়া দল ও কিপাক্সের স্থানচ্যূতির আশঙ্কা ঘটে।

সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্ট চলাকালে ঐ গ্রীষ্মের সর্বাপেক্ষা বিতর্কিত ঘটনার মূল চরিত্রে ছিলেন। ঐ টেস্টের পর কিপাক্স মেলবোর্নে যান।

২২ ডিসেম্বর শুরু হওয়া শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় এনএসডব্লিউকে নেতৃত্ব দেন। ভিক্টোরিয়ার ৩৭৬ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিনশেষে এনএসডব্লিউ ৫৮ রানে সাত উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের সমূহ আশঙ্কায় ভুগছিল। বড়দিন উপলক্ষ্যে পরদিন বিরতি ছিল। ১১৩/৯ হবার পর কিপাক্স অপরাজিত ২০ রানে ছিলেন। একাদশ ব্যাটসম্যান হল হুকার অধিনায়কের সাথে রান তুলতে থাকলে প্রতিপক্ষের উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে।

শেষ উইকেটের প্রতিরোধের খবর ছড়িয়ে পড়লে দর্শক সমাগম বাড়তে বাড়তে ১৫,০০০-এ পৌঁছে। কিপাক্স তার সঙ্গীর অসহায়ত্বের বিষয়টি মন থেকে সড়িয়ে ফেলেন। অধিকাংশ ওভারই কিপাক্স প্রথম দুই বা তিন বল ঠেকিয়ে এক রান সংগ্রহ করে হুকারকে পরবর্তী চতুর্থ বা পঞ্চম বল মোকাবেলা করতে দিতেন।[১৮]

খেলা শেষ হলে কিপাক্স দ্বি-শতক থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন। পরদিন এ জুটি ৩০৭ রান তুলে ৩০৪ মিনিটে। কিপাক্স তখন অপরাজিত ছিলেন ২৬০ রানে। এই অবিস্মরণীয় জুটিটি অনেকগুলো বিশ্বরেকর্ড ভেঙ্গে ফেলে।[১৯] অদ্যাবধি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বশেষ জুটির সর্বোচ্চ সংগ্রহরূপে টিকে রয়েছে।[২০]

কয়েকদিন পরই একই মাঠে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে কিপাক্স অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে তার অভিষেক সেঞ্চুরির সন্ধান পান। এ সময় ইংল্যান্ডের পেসার হ্যারল্ড লারউডের বল মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়া হিমশিম খাচ্ছিল।[২১] কিপাক্স দৃঢ়চিত্তে রুখে দাঁড়ান ও তারপর লারউডের উপর পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে চারটি বাউন্ডারি মারেন। সাংবাদিক রে রবিনসন মন্তব্য করেন যে, কিপাক্সের বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছোটার পূর্বে সিরিজে লারউড ১৮.৩০ গড়ে ১৪ উইকেট পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ৪৭২ রান দিয়ে তিনি মাত্র চার উইকেট পেয়েছিলেন।[১৯] দ্বিতীয় ইনিংসে কিপাক্স ৪১ রান তুলেন। তাস্বত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া উপর্যুপরী তৃতীয় পরাজয়ের কবলে পড়ে রাবার হারায় ও অ্যাশেজ খুঁইয়ে ফেলে।

অ্যাডিলেডে ৩ ও ৫১ রান তুলেন কিপাক্স। এমসিজিতে ৩৮ ও ২৮ রান তুলে জয়ের সাথে নিজেকে যুক্ত করার মাধ্যমে সিরিজ শেষ করেন। জয়ের কাছাকাছি থাকা খেলাগুলোয় তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন বলে সমালোচকেরা মন্তব্য করেন।[২২] ১৯২৯-৩০ মৌসুমের ঘরোয়া ক্রিকেটে অসাধারণ খেলেন। চার সেঞ্চুরি সহযোগে ৬২ গড়ে ৭৪৪ রান তুলেন অ্যালান কিপাক্স।[২৩] এ ফলাফলের প্রেক্ষিতে ইংল্যান্ড সফরের জন্য তাকে মনোনীত করা হয়।

ইংল্যান্ড সফর সম্পাদনা

১৯৩০ সালে ইংল্যান্ড সফরে উদীয়মান ডন ব্র্যাডম্যানের প্রাধান্য লক্ষ্যণীয়। ব্র্যাডম্যানের পরবর্তী স্থানে অবস্থান করে প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয় ৫৮.০৪ গড়ে ১,৪৫১ রান তুলে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। সাসেক্সের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে জিম বার্ক সমারসেটের বিপক্ষে এ কৃতিত্বের অধিকারী হন। টেস্ট খেলায় সাত ইনিংসের চারটিতেই অর্ধ-শতকের সন্ধান পান। তবে, কোন সেঞ্চুরির দেখা পাননি। ব্র্যাডম্যানের সাথে দুইটি বড় ইনিংসের জুটি গড়েন। লর্ডসের দ্বিতীয় টেস্টে ১৯২ ও লিডসের তৃতীয় টেস্টে ২২৯ রানের জুটি গড়েন। তবে, নটিংহামের প্রথম টেস্টের ভেজা উইকেটে অপরাজিত ৬৪ রান উইজডেনের দৃষ্টিকোণে সেরা ছিল।

১৯৩০-৩১ মৌসুমে নিজদেশে অনুষ্ঠিত সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিপাক্স তার সর্বোচ্চ রান তুলেন। অ্যাডিলেড ওভালের প্রথম টেস্টে ১৪৬ রানের এ শতরানটি চার ঘণ্টারও কম সময় সম্পন্ন হয়। এটিই দুই দলের মধ্যে প্রথম সেঞ্চুরি ছিল। ব্রিসবেনের তৃতীয় টেস্টে ৮৪ রান তুলেন ও ব্র্যাডম্যানের সাথে ১৯৩ রানের জুটি গড়েন। তবে উইজডেনের ভাষায় কিপাক্সের খেলাগুলো নিয়ন্ত্রণহীন ছিল। বাকী তিন ইনিংসে তিনি তেমন কিছু উপহার দিতে পারেননি। শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় এনএসডব্লিউ’র পক্ষে দুই সেঞ্চুরি হাঁকান।

পরের মৌসুমটি মন্দভাবে শুরু হয় কিপাক্সের। পার্কসের ম্যাটিং উইকেটে অনুল্লেখ্য খেলায় বাউন্স বলে তার নাক ভেঙ্গে যায়। ৬ নভেম্বর, ১৯৩১ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত মৌসুমের প্রথম খেলায় এনএসডব্লিউ’র বিপক্ষে ফাস্ট বোলার পাড থার্লো'র বল তার কপালে লাগে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় ও খেলা থেকে রিটায়ার্ড হার্ট হন। তাস্বত্ত্বেও দল নির্বাচকমণ্ডলী কর্তৃক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে খেলার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে তিনি মাত্র এক রান তুলতে পেরেছিলেন। আঘাতের কারণে দ্বিতীয় টেস্টে তার পরিবর্তে কিথ রিগ খেলতে নেমে অভিষেকেই দূর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকান।

মেলবোর্নের তৃতীয় টেস্টের মাধ্যমে খেলার জগতে ফিরে আসেন। দল নির্বাচকমণ্ডলীর আস্থার প্রতিদান হিসেবে ৫২ ও ৬৭ রান তুলেন। এ রানগুলো ঐ মৌসুমে তার সর্বোচ্চ প্রথম-শ্রেণীর রান ছিল। তবে, ঐ গ্রীষ্মে বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় আরও একটি সেরা খেলা উপহার দেন। মেলবোর্নের চূড়ান্ত টেস্টে দলের সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পুরো দল করেছিল ৩৬ ও ৪৫ রান। রান করতে না পারলেও জানুয়ারির শেষে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে এনএসডব্লিউ’র জয়ে নেতৃত্ব দেন ও শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা জয় করে তার দল। ১৯৩২ সালের শীতে ব্যক্তিগত দলে যোগ দিয়ে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। সাবেক টেস্ট বোলার আর্থার মেইলি এ সফরের আয়োজক ছিলেন। দলীয় সঙ্গীরা তার আত্মবিশ্বাসের অভাব লক্ষ্য করেন ও সেরা হুক শটে খেলতে পারছেন না।

বডিলাইন সিরিজ সম্পাদনা

১৯৩২-৩৩ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়া সফরে আসে ও কুখ্যাত বডিলাইন সিরিজে অংশ নেয়। এ অপকৌশলটি মূলতঃ দূর্দান্ত অবস্থায় থাকা ডন ব্র্যাডম্যানকে উদ্দেশ্য করে রচিত হয় যাতে শর্ট পিচ বোলিং ও লেগ সাইডে ফিল্ডারদেরকে কাছাকাছি অবস্থায় রাখা হয়।

পরবর্তীতে সকল অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে প্রয়োগ করা হয়। কিপাক্স ও অন্যান্য ব্যাটসম্যান দীর্ঘ ইনিংস খেলার চিন্তা-ভাবনা করেন ও টেস্টে কিপাক্স তিনবার ব্র্যাডম্যানের সাথে শতাধিক রানের জুটি উপহার দেয়। অন্যদিকে ইংরেজরা কিপাক্সের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির বিষয়টি লক্ষ্য করে।

১৯৩২ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গাব্বায় অনুষ্ঠিত খেলায় কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৯ রান তুলে টেস্টে তার স্থান অক্ষুণ্ন রাখেন। এক পক্ষকাল পর সফরকারী দলের বিপক্ষে এনএসডব্লিউকে নেতৃত্ব দেন। উভয় ইনিংসে ব্যর্থ হলে তার দল বিরাট ব্যবধানে পরাজিত হয়।

সিডনিতে প্রথম টেস্টে বডিলাইন আক্রমণের প্রধান হোতা হ্যারল্ড লারউডের বলে দুবারই উইকেট খোঁয়ান। প্রথম ইনিংসে চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে স্ট্যান ম্যাককাবের সাথে জুটি গড়েছিলেন। তার এনএসডব্লিউ'র দলীয় সঙ্গী ম্যাককাবে দ্বিতীয় ইনিংসে তেমন কিছু করতে না পারলেও প্রথম ইনিংসে চমকপ্রদ অপরাজিত ১৮৭ রানের ইনিংস খেলেন। বডিলাইন আক্রমণকে রুখে দিয়ে বেশকিছু আক্রমণাত্মক হুক শট খেলেন ম্যাককাবে। অমার্জনীয় পরিবর্তনের ফলে অস্ট্রেলিয়া ১৬৪ রানে ইনিংস শেষ করতে বাধ্য হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল মাত্র এক রান। বিশ্রাম কক্ষে কিপাক্স লারউডকে লক্ষ্য করে মন্তব্য করেন যে, তিনি আমাকে বেশ রক্তাক্ত করে ফেলেছেন।

সিরিজের বাদ-বাকী টেস্টে উপেক্ষিত হলে ঐ গ্রীষ্মে অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকজন ব্যাটিং প্রতিভার অধিকারী অবসর নেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার ভাগ্য দায়ী ছিল ও পূর্ববর্তী মৌসুমে তার আস্থাহীনতাও অনেকাংশে দায়ী। রেডিও ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব নিয়ে সিরিজের বাদ-বাকী টেস্টগুলোর বর্ণনা দেন। বিবিসিতে দশ মিনিটের পর্যালোচনায় অংশ নেন যা এম্পায়ার শর্ট ওয়েভ সার্ভিসের মাধ্যমে ইংল্যান্ডে সম্প্রচারিত হতো।

বডিলাইনের বিষয়ে সরব থেকে কিপাক্স এরিক বারবোর নামীয় ক্রিকেটার ও চিকিৎসকের সাথে যৌথভাবে এন্টি বডি-লাইন শীর্ষক গ্রন্থ এ সফর শেষ হবার একমাস পর প্রকাশ করেন।

কয়েক মৌসুম রান খরায় ভোগার পর ১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে কিপাক্সের প্রত্যাবর্তন ঘটে। নববর্ষে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৫ রান তুলেন ও মাত্র ১৩৫ মিনিটে ব্র্যাডম্যানের সাথে ৩৬৩ রানের জুটি গড়েন। সর্বোপরি চার সেঞ্চুরি ও প্রায় ৭২ গড়ে রান তোলার প্রেক্ষিতে ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য নির্বাচিত হন। ব্র্যাডম্যানের অনুকূলে তার সহঃঅধিনায়কত্ব চলে যায়। কিপাক্স নিশ্চিত হন যে, অস্ট্রেলীয় কন্ট্রোল বোর্ড এমসিসির সাথে সমঝোতা করেছে যে, এ সফরে তারা বডিলাইনের ন্যায় ঘটনার মুখোমুখি হবে না।

এ সফরে শূন্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় কিপাক্সের। লিচেস্টারে ৮৯ রান তোলার পর মারাত্মক সর্দি-কাশির মুখোমুখি হলে পরবর্তী চার খেলায় অংশগ্রহণ থেকে তিনি বিরত থাকেন। মাঠে ফিরে আসার পর আবারও দূর্বল ক্রীড়াশৈলী দেখা যায়। ফলশ্রুতিতে, প্রথম টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ ঘটেনি তার। সফরে কিপাক্স তৃতীয় নির্বাচক ছিলেন। কিন্তু সতীর্থ দল নির্বাচকমণ্ডলীর সমর্থনের অভাবে না খেলার সিদ্ধান্ত দলে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অস্ট্রেলিয়া খেলায় জয় পায় ও পরবর্তী দুইট প্রস্তুতিমূলক খেলায়ও তিনি ব্যর্থ হন। এরফলে লর্ডসের পরবর্তী টেস্টে খেলতে পারেননি যাতে দল পরাজিত হয়েছিল।

আবারও গুরুতর অসুস্থ হলে কিপাক্সকে সন্দেহজনকভাবে ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। এরফলে ড্র হওয়া ওল্ড ট্রাফোর্ড ও লিডস - এ দুই টেস্টে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হন। জুলাইয়ের শেষে খেলতে নেমে সঠিক সময়ে পুণঃপ্রত্যাবর্তন ঘটে তার। এক-এক ব্যবধানে সিরিজ চলমান অবস্থায় ওভালে অ্যাশেজ নির্ধারণী খেলার জন্য অসীম সময়ের টেস্টের আয়োজন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী ব্যাটিং অর্ডারের প্রয়োজন পড়ে। মাঝারিসারিতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কিপাক্স তরুণ লেন ডার্লিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন। এ টেস্টই তার সর্বশেষ টেস্ট ছিল।

ব্যাটহাতে কিপাক্স খুব কমই সহায়তা করতে পেরেছিলেন। বিল পন্সফোর্ড ও ডন ব্র্যাডম্যানের ৪৫১ রানের রেকর্ডসংখ্যক রানের জুটি দলকে এক পর্যায়ে ৫৭৪/৪-এ নিয়ে যায়। এরপর তিনি ক্রিজে নেমে এক ঘণ্টারও কম সময়ে ২৮ রান তুলে ও অস্ট্রেলিয়া ৭০১ রানে ইনিংস শেষ করে। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি মাত্র ৮ রান তুলেন। তবে, অস্ট্রেলিয়া ৫৬২ রানের বিশাল জয় পায় ও অ্যাশেজ অক্ষুণ্ন রাখতে সমর্থ হয়। ছয়দিন পর কিপাক্স সাসেক্সের বোলিং আক্রমণ মোকাবেলা করে ২৫০ রান তুলেন। এটিই ইংল্যান্ডে তার সর্বোচ্চ রান ও গত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম দ্বি-শতক রান ছিল। ফলশ্রুতিতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার গড় ৫০-এর উপর চলে যায়। এভাবেই মিশ্র সাফল্য নিয়ে সফর সমাপণ ঘটান।

অবসর সম্পাদনা

ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে আসার পর এনএসডব্লিউ’র অধিনায়কের দায়িত্বভার টেস্টের দলীয় সঙ্গী বার্ট ওল্ডফিল্ডের কাছে হস্তান্তর করেন। রাজ্য দলকে চারবার শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা জয়ে সহায়তা করে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবনের সমাপ্তি ঘটান। ১৯৩৪ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সর্বশেষ সেঞ্চুরি হাঁকান। অ্যাডিলেড ওভালে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মনোরম ১৩৯ রান তুলেন তিনি। এরফলে এনএসডব্লিউ’র পক্ষে সর্বমোট ৩২ সেঞ্চুরি করেন তিনি। পরবর্তীকালে মাইকেল বেভান তার এ কীর্তিগাঁথাকে অতিক্রম করেন। শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় এনএসডব্লিউ’র পক্ষে ৭০.০৬ গড়ে ৬,০৯৬ রান তুলেন। এরফলে তার দল পাঁচবার শিরোপা জয় করতে সমর্থ হয়। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১২,৭৯২ রান তোলার পাশাপাশি গ্রেড ক্লাব ওয়াভার্লির পক্ষে ৫৩ গড়ে সাত সহস্রাধিক রান তুলেন।

কিপাক্স ৪৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় এনএসডব্লিউকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯ জয় ও মাত্র নয় পরাজয়ের বিপরীতে ড্রয়ের সংখ্যা ছিল ১৭।

১৯৩৭ সালের শুরুতে অ্যাডিলেডের চতুর্থ টেস্টে ধারাভাষ্য দেন। রেডিও-টেলিফোন ব্যবস্থার ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়া থেকে ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো সরাসরি ক্রিকেট খেলার ধারাভাষ্য এটিই প্রথম ছিল।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

কেরাণী হিসেবে কিছু সময় কাজ করার পর ১৯২৬ সালে সিডনির মার্টনি প্লেসে একটি ক্রীড়াসরঞ্জাম বিক্রয় প্রতিষ্ঠান গড়েন। ব্যবসাটি বেশ লাভজনক হয়। দুই বছর পর ২০ এপ্রিল, ১৯২৮ তারখে সেন্ট স্টিফেন্স প্রেসবাইটেরিয়া চার্চে মাবেল শার্লত ক্যাটস নামীয় এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন তিনি।

১৯৪৩-৪৪ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট সংস্থা তাকে আজীবন সদস্যরূপে নির্বাচিত করে। দলীয় সঙ্গী ও উইকেট-রক্ষক বার্ট ওল্ডফিল্ডের সাথে তিনিও যৌথভাবে আর্থিক সুবিধাগ্রহণের জন্য মনোনীত হন। লিন্ডসে হ্যাসেট একাদশ বনাম আর্থার মরিস একাদশের খেলাটি সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৬,০৩০ পাউন্ড-স্টার্লিং অর্থ সংগৃহীত হয় যা উভয়ের মাঝে বণ্টন করা হয়। পরবর্তী বছরগুলোয় সিডনিভিত্তিক কিপাক্স দ্য লেকস কোর্সের এ-গ্রেডের গল্ফার ও ডাবল বে'র ক্লাব চ্যাম্পিয়ন লন বোলার হন।

৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২ তারিখে হৃদযন্ত্র ক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে বেলভ্যু হিলের নিজ গৃহে তার দেহাবসান ঘটে।

ক্যানবেরা হল্টে কিপাক্স সেন্টার তার নামে নামাঙ্কিত করা হয়। তার কাকা এইচ. জি. কিপাক্স সুপরিচিত নাট্য সমালোচক ছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Andrews (1983), pp 606–07.
  2. "Kippax, Alan Falconer Born 25 May 1897 Died 5 September 1972"। cricinfom.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  3. "Our History"। Eastern Suburbs Cricket Club। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  4. Cashman et al. (1996), pp 290–91.
  5. Pollard, p 280.
  6. "Australian First-Class Season 1922/23: Highest Batting Averages"। cricinfom.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  7. Pollard (1995), p 196.
  8. Robinson (1985), p 53.
  9. "Australian Domestic Season, 1924-25"। cricinfom.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  10. Whitington (1974), pp 138–39.
  11. "Australia v England 1924-25"। Wisden। ১৯৩১। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  12. Harte (1993), p 298.
  13. Harte (1993), p 299.
  14. Harte (1993), pp 300–01.
  15. Bradman (1950), p 24.
  16. "Australian First-Class Season 1927/28: Highest Batting Averages"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  17. Pollard (1995), p 281.
  18. Williamson, Martin (২৫ ডিসেম্বর ২০০৪)। "Festive frolics at the MCG"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  19. Robinson (1985), p 55.
  20. Lane, Tim (৬ নভেম্বর ২০০৪)। "Tailend tale may eclipse Diva's triumph"The Age। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 
  21. Whitington (1974), p 145.
  22. Robinson (1985), p 54.
  23. "Australian First-Class Season 1929/30: Highest Batting Averages"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৭ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

আরও পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা