অ্যারিওলা

স্তনবৃন্তের চারপাশ ঘিরে রাখা রঞ্জিত ত্বকের বৃত্তাকার অঞ্চল

শারীরস্থানবিদ্যায় অ্যারিওলা (ইংরেজি: areola), বহুবচনে অ্যারিওলি (areolae) বলতে স্তনবৃন্ত (nipple) ঘিরে রাখা ত্বকের মতো কোনো রঙিন অংশকে বোঝায়। এটি ল্যাটিন: area থেকে এসেছে যার অর্থ “খোলা অংশ"। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের স্তনের, স্তনবৃন্তের চারপাশ ঘিরে থাকা রঞ্জিত অংশটিকে অ্যারিওলা বলা হয়। এছাড়া ফুস্কুড়ির চারপাশ ঘিরে থাকা লাল বৃত্তাকার অংশকেও অ্যারিওলা বলে অভিহিত করা হয়।

অ্যারিওলা
মানুষের স্ত্রী স্তনের অ্যারিওলা
প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী মানবদেহের স্তন
(বিন্যাসচিত্রের লম্বচ্ছেদ)
1. বুকের দেয়াল 2. পেকটোরিয়াল পেশি 3. লোবিউল 4. স্তনবৃন্ত (nipple) 5. আরিওলা 6. নালি (duct) 7. মেদ কলা 8. ত্বক
বিস্তারিত
শনাক্তকারী
লাতিনareola mammae
মে-এসএইচD009558
টিএ৯৮A16.0.02.012
টিএ২7106
এফএমএFMA:67796
শারীরস্থান পরিভাষা

বর্ণ সম্পাদনা

স্তনের অন্য অংশ থেকে অ্যারিওলার রঙে ভিন্নতা রয়েছে। অ্যারিওলার বর্ণ সম্পর্কিত একটি ব্যাখ্যায় বলা হয় যে, এই রঙ আসে দুইটি পলিমারের অ্যাবডুসেন্স থেকে। সেগুলোর একটি, ইউমেলানিন (বাদামী রঙ-এর) এবং অপরটি ফিওমেলানিন (লাল রঙ-এর)। এ দুটি কী পরিমাণে ক্ষরিত হবে তা বংশগতভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, আর এ দুটোই মূলত অ্যারিওলার রঙ গঠনের পেছনে ভূমিকা রাখে। অ্যারিওলার রঙ মলিন হলুদ থেকে গাঢ় হতে হতে কালোর কাছাকাছি পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত যেটা দেখা যায়, যেসব মানুষের ত্বকের রঙ হালকা, তাদের অ্যারিওলার রঙও হালকা হয়, এবং যেসব মানুষ গাঢ় রঙের ত্বকের অধিকারী তাদেরটার রঙ অপেক্ষাকৃত গাঢ় ধরনের। অ্যারিওলার রঙ বিভিন্ন সময় হরমোন ক্ষরণের কারণে পরিবর্তন হতে পারে, যেমন: রজঃচক্র, ঔষধ প্রয়োগ, এবং বয়স বৃদ্ধির সাথে এর রঙ পরিবর্তন হতে দেখা যেতে পারে। রঙ পরিবর্তন সবচে বেশি পরিলক্ষিত হয় গর্ভধারণের সময়। তখন এর রঙ যথেষ্ট গাঢ় হয়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে শিশু জন্মদানের পর অ্যারিওলা তার পূর্বের রঙে ফিরে পায়, যদিও এখানেও বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।

আকার ও গড়ন সম্পাদনা

অ্যারিওলার আকার ও আকৃতিতে যথেষ্ট পরিমাণ ভিন্নতা রয়েছে। সচারচর দেখা যায় প্রজননে সক্ষম নারীর অ্যরিওলা, প্রজননে সক্ষম পুরুষ বা বয়ঃসন্ধিকালীন মেয়ের চেয়ে আকারে বড়ো। মানুষের অ্যারিওলা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গোলাকৃতি, কিন্তু অনেক নারী ও কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে উপবৃত্তাকৃতি (ডিম্বাকৃতি) অ্যারিওলা দেখা যায়।

পুরুষের ক্ষেত্রে অ্যারিওলার ব্যস প্রায় ২.৫ সেন্টিমিটার (১ ইঞ্চি)। প্রজননে সক্ষম নারীর অ্যারিওলার ব্যস ১০ সেন্টিমিটার (৪ ইঞ্চি) পর্যন্ত হতে পারে, কিন্তু গড়ে এই ব্যস ৩ সেন্টিমিটার (১.২ ইঞ্চি)।[১] যেসব মহিলা শিশুকে বুকের দুধ পান করান বা যাদের স্তনের আকার অপেক্ষাকৃত বড়ো—তাদের অ্যারিওলা গড় আকৃতি থেকে বড়ো হতে পারে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. M. Hussain, L. Rynn, C. Riordan and P. J. Regan, Nipple-areola reconstruction: outcome assessment; European Journal of Plastic Surgery, Vol. 26, Num. 7, December, 2003