ডায়োড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে, কোনো সমস্যা?
Rabbanituhin (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৭ নং লাইন:
 
ইলেকট্রনিক্সে '''ডায়োড''' হলো একটি দু-প্রান্ত বিশিষ্ট ইলেকট্রনিক উপাদান যা বিদ্যুৎ প্রবাহকে কোন নির্দিষ্ট এক দিকে প্রবাহিত করে। ডায়োড বলতে আসলে অর্ধ পরিবাহী ডায়োডকেই প্রধানত বোঝায়।এটা অর্ধ পরিবাহী বস্তুর একটি ক্রিস্টাল অবস্থার টুকরা যা দুইটি বৈদ্যুতিক প্রান্তে সংযুক্ত থাকে।<ref> "Physical Explanation - General Semiconductors". 2010-05-25. http://www.element-14.com/community/docs/DOC-22519/l/physical-explanation--general-semiconductors. Retrieved 2010-08-06</ref> একটি ভ্যাকুয়াম পাওয়ার ডায়োড ; যা বর্তমানে খুব কমই ব্যবহার করা হয় উচ্চ বৈদ্যুতিক ক্ষমতার সুবিধা বিশিষ্ট স্থান ছাড়া, হলো একটি ভ্যাকুয়াম টিউব যাতে থাকে ২টি ইলেক্ট্রোড, যথাঃ প্লেট এবং একটি ক্যাথোড।
 
ডায়োডের সবচেয়ে সাধারণ কাজ হলো বিদ্যুৎ প্রবাহকে নির্দিষ্ট এক দিকে প্রবাহিত করা যাকে মূলত সম্মুখ প্রবাহ বলা অয়ে থাকে এবং বিপরীত প্রবাহকে প্রতিরোধ করে।এভাবে ডায়োডকে চেক ভালভের ইলেকট্রনিক সংস্করণ বলা যায়।এই ধরনের একদিকে প্রবাহিত করার প্রবণতাকে রেকটিফিকেশন বলা হয়ে থাকে যা এ সি কারেন্টকে ডিসি কারেন্টে পরিণত করে এবং রেডিও গ্রাহকযন্ত্রে এটি রেডিও সংকেত থেকে মড্যুলেশন বের করে আনে।
যাই হোক, ডায়োড অনেক জটিল ধরনের থাকতে পারে এরকম সাধারণ অন-অফ কার্য সম্বলিত থাকার চেয়ে। এটা তাদের জটিল নন-লিনিয়ার বৈদ্যুতিক ধর্মের কারণে হয়ে থাকে মূলত যা তাদের পি-এন সংযোগটার গঠনকে পরিবর্তিত করে করা যায়।কিছু বিশেষ ধরনের ডায়োডও আছে যা বিশেষ ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে পারে।যেমন [[জেনার ডায়োড]] বিভবকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ভ্যারাকটার ডায়োড টিভি ও রেডিও গ্রাহকযন্ত্রকে টিউন করতে পারে, রেডিও তরঙ্গকে দোলানো শুরু করতে পারে টানেল ডায়োড এবং লাইট ইমেটিং ডায়োড আলো সৃষ্টি করতে পারে। টানেল ডায়োড ঋণাত্নক রোধ সৃষ্টি করতে পারে যা তাদের ব্যবহার উপযোগী করে তুলেছে কিছু বর্তনীতে।
জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ফার্দিনান্দ ব্রাউন ১৮৭৪ সালে ক্রিস্টালের রেকটিফাই করার ধর্মকে আবিষ্কার করেন প্রথম। ১৯০৬ সালে খনিজ ক্রিস্টাল গ্যালেনা থেকে প্রথম অর্ধ পরিবাহী ডায়োড সৃষ্টি হয় যা ক্যাটস হুইস্কার ডায়োড বলা হত।বর্তমানে বেশির ভাগ ডায়োড সিলিকন থেকে প্রস্তুত করা হয়, তবে জার্মেনিয়ামও ব্যবহৃত হয় কিছু ক্ষেত্রে। <ref>http://www.element-14.com/community/docs/DOC-22518/l/the-constituents-of-semiconductor-components</ref>
== ইতিহাস ==
যদিও ক্রিস্টাল অর্ধপরিবাহী ডায়োড থার্মিয়োনিক ডায়োডের আগে জনপ্রিয় ছিল, থার্মিয়োনিক ডায়োড এবং কঠিন অবস্থার ডায়োড একই সাথেই বিকশিত হয়েছিল।
১৮৭৩ সালে ফ্রেডিক গুথরি প্রথম থার্মিয়োনিক ডায়োডের মূলনীতি আবিষ্কার করেন। <ref>http://nobelprize.org/physics/laureates/1928/richardson-lecture.pdf</ref> তিনি দেখেন যে একটি ধনাত্নক চার্জ বিশিষ্ট ইলেকট্রোস্কোপ তার চার্জ হারিয়ে ফেলে যদি তার কাছে কোন সংযোগ ছাড়াই মাটিতে লাগানো সাদা গরম লোহা নিয়ে আসা হয়।১৮৮০ সালের ১৩ই ফ্রেব্রুয়ারি টমাস এডিসন এটা আবার পুনঃআবিষ্কার করেন।
== থার্মিয়োনিক ও গ্যাসীয় অবস্থার ডায়োড ==
[[চিত্র:Vacuum_diode.svg|thumb|right|200px| এটা ভ্যাকুয়াম ডায়োডের প্রতীক যা ইনডাইরেক্ট ও উত্তপ্ত করা।উপর থেকে নিচেঃ অ্যানোড, ক্যাথোড এবং হিটার ফিলামেন্ট।]]
থার্মিয়োনিক ডায়োড হলো থার্মিয়োনিক ভালভ জাতের যন্ত্র যা ভ্যাকুয়াম টিউব, টিউব বা ভ্যালব নামেও পরিচিত; যা হলো বায়ু শূন্য পরিবেশে ইলেকট্রোডের সমাবেশ যেখানে একটা গ্লাস এনভেলপও থাকে।বিশ শতকে থার্মিয়োনিক ভালব ডায়োড অ্যানালগ সংকেতের বিভিন্ন ব্যবহারে যেমন রেকটিফায়ার হিসেবে বিভিন্ন পাওয়ার সাপ্লাইয়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।বর্তমানে ভালব ডায়োড [[ইলেকট্রিক গিটার|ইলেকট্রিক গিটারের]] রেকটিফায়ার এবং হাই অ্যান্ড অডিও অ্যামপ্লিফায়ার ও হাই ভোল্টের যন্ত্রপাতিতেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
থার্মিয়োনিক ভালব ডায়োডে হিটার ফিলামেন্টের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুৎ ক্যাথোডকে উত্তপ্ত করে তোলে পরোক্ষভাবে এবং আরেকটি অন্তঃস্থ ক্যাথোড, বেরিয়াম ও স্ট্রোন্টিয়াম অক্সাইডের মিশ্রণের সাথে কাজ করে যেগুলো ক্ষারীয় আর্থ ধাতুর অক্সাইড।এই পদার্থগুলোকে নির্বাচন করা হয়েছে কারণ এদের ওয়ার্ক ফাংশনটা ছোট।ইলেকট্রনের থার্মিয়োনিক নির্গমন ঘটে ভ্যাকুয়ামের মধ্য দিয়ে।সম্মুখ বিক্রিয়ায় ধাতুর ইলেকট্রোডের সমাবেশ অ্যানোড ধ্নাত্নক ভাবে চার্জিত থাকে ,ফলে তা স্থির বৈদ্যুতিকভাবে নির্গমন ঘটা ইলেকট্রনকে আকর্ষণ করে।এখানে বিপরীত প্রবাহ তেমন থাকে না।
 
 
== অর্ধপরিবাহক ডায়োড ==
[[চিত্র:Diode pinout en fr.svg|thumb|right|200px| এখানে পাতলা বারটা ক্যাথোড]]
অধিকাংশ আধুনিক ডায়োডই অর্ধপরিবাহী P-N জংশন তত্বের উপর নির্ভর করে বানানো হয়। P-N জংশন ডায়োডে প্রচলিত অর্থের তড়িৎ প্রবাহের দিক হচ্ছে P টাইপ অর্ধপরিবাহী থেকে N টাইপ অর্ধপরিবাহক দিকে। এর বিপরীত দিকে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে না।
আধুনিক অর্ধ পরিবাহী ডায়োড অর্ধ পরিবাহীর ক্রিস্টাল যেমন সিলিকন থেকে নির্মিত হয় এবং তাতে কিছু অপদ্রব্য মেশানো হয় একটি প্রান্তে এমন একটা জায়গা তৈরি করতে যাতে ঋণাত্নক চার্জের বাহক বা ইলেকট্রন থাকে, যাকে বলা হয় এন-টাইপ অর্ধপরিবাহী এবং এর অপর দিকে থাকে একটা স্থান আছে যা ধনাত্নক চার্জকে ধারণ করে, যা পি-টাইপ বলে।ডায়োডের প্রান্তগুলো এসব জায়গার সাথে লাগানো থাকে।এই ২টি স্থানের মধ্যবর্তী সীমানাকে বলে পি-এন জাংশন যেখানে ডায়োডের মূল কাজগুলো সংগঠিত হয়ে থাকে।ক্রিস্টাল পরিবহন করে বিদ্যুৎ পি-প্রান্ত (অ্যানোড) থেকে এন-প্রান্ত (ক্যাথোড) পর্যন্ত। সচোট্টিকি নামের একজাতের অর্ধপরিবাহী ডায়োড আছে যা ধাতু ও অর্ধপরিবাহী পদার্থের মিলনে তৈরি হয়ে থাকে।
 
 
== অর্ধপরিবাহক ডায়োডের গঠন ==
একটি অর্ধপরিবাহক ডায়োড মূলতঃ একটি P টাইপ ও একটি N টাইপ অর্ধপরিবাহকের সমন্বয়ে গঠিত। P টাইপ ও N টাইপ অর্ধপরিবাহকের
স্পর্শতলকে ''জংশন'' ([http://en.wikipedia.org/wiki/P-n_junction P-N Junction]) বা ''সংযোগ তল'' বলে।
 
== নিঃশেষিত স্তর বা ডিপলেশন স্তর ==
একটি P টাইপ অর্ধপরিবাহকের অভ্যন্তরে প্রচুর হোল ও খুবই কম সংখ্যক মুক্ত ইলেক্ট্রন থাকে। আবার N টাইপ অর্ধপরিবাহকের ক্ষেত্রে এর বিপরীত অর্থাৎ প্রচুর মুক্ত ইলেক্ট্রন ও খুবই কম সংখ্যক হোল থাকে। যখন একটি P-N জংশন তৈরী করা হয় তখন P অঞ্চল হতে হোলগুলো N অঞ্চলের দিকে যেতে চেষ্টা করে। P অঞ্চল হতে N অঞ্চলে প্রবেশকারী হোলগুলো N অঞ্চলের মুক্ত ইলেক্ট্রনের সাথে মিলিত হয়; ফলে ধনাত্মক আয়ন উন্মুক্ত হয়। একইভাবে N অঞ্চল হতে P অঞ্চলে প্রবেশকারী মুক্ত ইলেক্ট্রনগুলো P অঞ্চলের হোলের সাথে মিলিত হয়; ফলে ধনাত্মক ঋণাত্মক আয়ন উন্মুক্ত হয়। সহজ কথায় P অঞ্চলে ঋণাত্মক আয়ন (ইলেক্ট্রন গ্রহণ) এবং N অঞ্চলে ধনাত্মক আয়ন (হোল গ্রহণ) উন্মুক্ত হয়। এভাবে এক পর্যায়ে যখন পর্যাপ্ত পরিমান আয়ন (ধনাত্মক/ঋণাত্মক) তৈরী হবে তখন-<br />
১. P অঞ্চলের ঋণাত্মক আয়ন, N অঞ্চলের ইলেক্ট্রনকে P অঞ্চলে প্রবেশে বাধা দিবে<br />
২. N অঞ্চলের ধনাত্মক আয়ন, P অঞ্চলের হতে হোলকে N অঞ্চলে প্রবেশে বাধা দিবে<br />
এর ফলে জংশন বা সংযোগস্থলে একটি বিভব প্রাচীর (Potential Barrier) সৃষ্টি হয়। এই বিভব প্রাচীরের উভয় পাশে একটি সীমা পর্যন্ত শুধুমাত্র আয়ন (P অঞ্চলে ঋণাত্মক আয়ন এবং N অঞ্চলে ধনাত্মক আয়ন) থাকে, এই সীমার মধ্যে কোন মুক্ত মুখ্য আধান বাহক (Charge Carrier) তথা ইলেক্ট্রন বা হোল থাকেনা। এই স্তরে আধানবাহকের অনুপস্থিতির কারণে একে ''নিঃশেষিত স্তর'' বা ''ডিপলেশন স্তর'' (Depletion Layer/ [http://en.wikipedia.org/wiki/Depletion_region Depletion Region]) বলে।
উল্লেখ্য যদি কোন গৌণ আধান বাহক ডিপলেশন স্তরের কাছে চলে আসে তাহলে তা ডিপলেশন স্তরে শোষিত হয়ে ''গৌণ প্রবাহ'' (Minority Carrier Flow)সৃষ্টি করতে পারে।
 
== ডায়োডের কার্যপ্রণালী ==
৪১ ⟶ ১৭ নং লাইন:
২. বিমুখী ঝোঁক বা বিমুখী বায়াস (Reverse Bias)
 
=== সম্মুখী ঝোঁক বা সম্মুখী বায়াস ===
বহিঃস্থ ভোল্টেজ যদি এমনভাবে প্রয়োগ করা হয় যে, তড়িৎ-উৎসের (ব্যাটারী) ধনাত্মক প্রান্ত ডায়োডের P প্রান্তের সাথে এবং তড়িৎ-উৎসের ঋণাত্মক প্রান্ত ডায়োডের N প্রান্তের সাথে যুক্ত থাকে তবে তাকে ''সম্মুখী ঝোঁক'' বা ''সম্মুখী বায়াস'' বলা হয়।
এক্ষেত্রে ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্ত-<br />
১. N অঞ্চলের ইলেক্ট্রন গুলোকে P অঞ্চলের দিকে টানবে (কারণ ইলেক্ট্রনের চার্জ এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের চার্জ বিপরীত)<br />
২. P অঞ্চলের হোলগুলোকে N অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিবে (কারণ হোলের চার্জ এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের চার্জ সমপ্রকৃতির)<br />
এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্ত-<br />
১. N অঞ্চলের ইলেক্ট্রন গুলোকে P অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিবে (কারণ ইলেক্ট্রনের চার্জ এবং ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের চার্জ সমপ্রকৃতির)<br />
২. P অঞ্চলের হোলগুলোকে N অঞ্চলের দিকে টানবে (কারণ হোলের চার্জ এবং ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের চার্জ বিপরীত)<br />
ফলে ভোল্টেজ বাড়াতে থাকলে ডিপলেশন স্তর সংকুচিত হতে থাকবে (যেহেতু আধান বাহকের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে) এবং এক পর্যায়ে ডিপলেশন স্তর উপেক্ষা করে আধান বাহকগুলো জংশন অতিক্রম করবে।
যেহেতু P অঞ্চল হতে হোল N অঞ্চলে প্রবেশ করছে এবং N অঞ্চল হতে ইলেক্ট্রন P অঞ্চলে প্রবেশ করছে সেহেতু এটা বলা যায় ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎ/বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যাটারীর উপস্থিতির কারণে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে এবং বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ চলতে থাকবে।
 
=== বিমুখী ঝোঁক বা বিমুখী বায়াস ===
৬১ ⟶ ২৭ নং লাইন:
২. P অঞ্চলের হোলগুলোকে জংশন থেকে P অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিবে (কারণ হোলের চার্জ এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের চার্জ সমপ্রকৃতির)<br />
এইক্ষেত্রে ভোল্টেজ বাড়াতে থাকলে ডিপলেশন স্তর সম্প্রসারিত হতে থাকবে (যেহেতু আধান বাহকের চাপ কমে যাচ্ছে); নির্দিষ্ট সীমার অতিরিক্ত ভোল্টেজ প্রয়োগ করলে ডিপ্লেশন স্তর ভেঙ্গে যায়, এবং সম্পূর্ণ মাত্রায় তড়িত-প্রবাহ চলতে থাকে। এই ভোল্টেজকে ''বিনাশী ভোল্টেজ'' ([http://en.wikipedia.org/wiki/Breakdown_voltage Breakdown Voltage]) বলে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারন ডায়োড (যেমন- সিলিকন রেক্টিফায়ার) নষ্ট হয়ে যায় (ডায়োডের বৈশিষ্ট হারিয়ে ফেলে) এবং তা আর ব্যবহার করা যায়না। তবে জেনার ডায়োড বিনাশী ভোল্টেজেও নষ্ট হয়না।
== বিদ্যুৎ-বিভব ধর্ম ==
একটি বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ডায়োডের কাজ তাঁর বিদ্যুৎ-বিভব ধর্ম দিয়ে ব্যাখা করা যেতে পারে অথবা I–V গ্রাপ দিয়ে। এখানে তিনটি স্থান সৃষ্টি হয়।প্রথমটা হলো খালি স্থান বা ডিপ্লেসন রিজিয়ন যা পি-এন সংযোগে সৃষ্টি হয়।যখন প্রথম পি-এন সংযোগ সৃষ্টি হয় তখন এন-ডোপড স্থান থেকে সংযোগ ব্যান্ডের ইলেকট্রনগুলো ব্যাপৃত হয়ে পি-ডোপড স্থানে চলে যায় যেখানে প্রচুর হোল আছে।
যখন একটি মোবাইল ইলেকট্রন হোলের সাথে মিলিত হয়, তখন হোল এবং ইলেকট্রন উভয়ই মিলিয়ে যায় এবং এন-সাইডে ধনাত্নক চার্জে চার্জিত দাতা এবং ঋণাত্নক চার্জে চার্জিত পি-সাইডে গ্রহীতার একটি স্তর সৃষ্টি হয়।[[পি-এন সংযোগ|পি-এন সংযোগের]] স্থলে চার্জিত বাহকের একটি স্থল সৃষ্টি হয়ে অন্তরকের সৃষ্টি হয়।
যাইহোক সীমা ছাড়া ডিপ্লেসন স্থানের প্রস্থ বাড়তে পারে না। প্রত্যেকটা ইলেকট্রন-হোলের জোড়ার জন্য ধনাত্নকভাবে চার্জিত আধান অবশিষ্ট থাকে এন-ডোপড স্থানের পাশে এবং ঋনাত্নকভাবে চার্জিত আধান অবশিষ্ট থাকে পি-ডোপড স্থানের পাশে। এভাবে ডিপ্লেসন স্থানে একটা ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ ক্ষেত্র সৃষ্টি হয় যা ইলেকট্রন ও হোলের মিলনকে বাধা দেয়।তাই একটা স্বয়ংক্রিয় বিভবের সৃষ্টি হয় ডিপ্লেসন রিজিয়নে।
যদি বাইরের বিভব প্রয়োগ করা হয় যার পোলারিটি থাকে স্বয়ংক্রিয় বিভবের মতো, তবে ডিপ্লেসন রিজিয়ন একটি অন্তরকের মতো কাজ করা অব্যাহত রাখে এবং কোন উল্লেখযোগ্য মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহকে বন্ধ রাখে যতক্ষণ যা আলোর মাধ্যমে ইলেকট্রন হোলের জোড়া সৃষ্টি না হচ্ছে। এটা হলো বিপরীত ঝোঁকের ঘটনা।যাইহোক যদি বাইরের বিভবের পোলারিটি স্বয়ংক্রিয় বিভবের মতো না হয় তখন পুনঃমিলন আরো একবার সংগঠিত হয় একটা বিদ্যুৎ প্রবাহ পি-এন সংযোগের মাঝে সৃষ্টি করে।একটি সিলিকন ডায়োডের জন্য এই বিল্ড ইন বা স্বয়ংক্রিয় বিভবের মান হচ্ছে প্রায় ০.৭ V যা আবার জার্মেনিয়াম ও সচোট্টকির জন্য ০.৩ V ও ০.২ V যথাক্রমে।এভাবে যদি কোন বাইরের বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় তবে ডায়োডে ০.৭ V বিভব সৃষ্টি হয় যেখানে পি-ডোপড এলাকা এন-ডোপড এলাকা থেকে বেশি ধনাত্নক হয়ে থাকে এবং বলা হয়ে থাকে যে ডায়োডটা চালু অবস্থায় আছে যেহেতু এটা সম্মুখ ঝোঁকে আছে।
[[চিত্র:Diode-IV-Curve.svg|frame|none|চিত্র ৫:পি-এন জাংশন ডায়োডের I–V বৈশিষ্ট্য]]
বেশী মাত্রার বিপরীত ঝোঁকে শীর্ষ বিপরীত বিভবের বাইরে একটা প্রক্রিয়া সংগঠিত হয় যা হলো বিপরীত ব্রেকডাউন যা বেশী মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে মানে বেশী পরিমাণে ইলেকট্রন ও হোলের সৃষ্টি হয়, যা যন্ত্রকে চিরতরে নষ্ট করে দেয়।অবশ্য [[জেনার ডায়োড|জেনার ডায়োডে]] এই ব্যাপারটা খাটে না।
দ্বিতীয় এলাকা হলো বিপরীত ঝোঁকের এলাকা বা রিভারস বায়াসড রিজিয়ন যেখানে বেশী ধনাত্নক থাকে [[শীর্ষ বিপরীত বিভব|শীর্ষ বিপরীত বিভবের]] চেয়ে এবং কম পরিমাণে বিপরীত সম্পৃক্ত বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়।একটা সাধারণ পি-এন রেকটিফায়ার ডায়োডের ক্ষেত্রে বিপরীত ঝোঁকের এলাকাতে খুব কম মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ থাকে।যাইহোক, এটা তাপমাত্রার ওপর নির্ভরশীল এবং উচ্চ তাপমাত্রায় একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিপরীত বিদ্যুৎ প্রবাহ দেখা যেতে পারে।
তৃতীয় এলাকা হলো সম্মুখ ঝোঁক বা ফরোয়ার্ড বায়াসড রিজিয়ন যেখানে সামান্য সম্মুখ বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়।একটা বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয় কাট ইন ভোল্টেজের বাইরে গিয়ে যেখানে বিদ্যুৎ প্রশংসনীয় পরিমাণে বৃদ্ধি পায় এবং ডায়োড খুব কম [[রোধ]] প্রদর্শন করে।একটা সিলিকন ডায়োডের কাট-ইন ভোল্টেজ হলো ০.৬ V থেকে ০.৭ V।অন্যান্য ডায়োডের ক্ষেত্রে অবশ্য মানটা অন্যরকম হয়ে থাকে।সচোট্টকি ডায়োডের জন্য ০.২ V ,জার্মেনিয়াম ডায়োডের জন্য তা ০.২৫-০.৩ V এবং লাল বা নীল লাইট ইমিটিং ডায়োডের জন্য কাট ইন ভোল্টেজ ১.৪ V এবং 4 V যথাক্রমে।
 
== শকলে ডায়োড সূত্র ==
শকলে আদর্শ ডায়োড সূত্র ডায়োডের বৈশিষ্ট্য চিত্রিত করে ফরোয়ার্ড যা রিভারস বায়াসড অবস্থাতে। সূত্রটা হলোঃ
:<math>I=I_\mathrm{S} \left( e^{V_\mathrm{D}/(n V_\mathrm{T})}-1 \right),\,</math>
 
যেখানে,
:''I'' হলো ডায়োড কারেন্ট,
:''I''<sub>S</sub> হলো রিভাস বায়াসড সম্পৃক্ত বিদ্যুৎ,
:''V''<sub>D</subহলো ডায়োডের বিভব,
:''V''<sub>T</sub> হলো তাপীয় বিভব, এবং
:''n'' হলো আইডেন্টিটি ফ্যাকটর যাকে কোয়ালটি ফ্যাকটর বা ইমিশন সহগও বলা হয়ে থাকে।
তাপীয় বিভব ''V''<sub>T</sub> হলো প্রায় ২৫.৮৫ mV ৩০০ K তাপমাত্রাতে, যা প্রায় কক্ষ তাপমাত্রার কাছাকাছি যা সিমুলেশন সফটওয়ারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেকোন তাপমাত্রাতে এটা ধ্রুবক যাকে প্রকাশ করা হয়ঃ
 
:<math>V_\mathrm{T} = \frac{k T}{q} \, ,</math>
 
যেখানে ''k'' হলো বল্টজম্যান ধ্রুবক, ''T'' হলো পরম তাপমাত্রা পি-এন সংযোগের এবং ''q'' হলো একটি ইলেকট্রনের আধানের মান।
 
== ব্যবহার ==
১১২ ⟶ ৫৫ নং লাইন:
{{float_end|caption=চিত্র: কিছু ডায়োডের প্রতীক}}
 
=== রেডিও ডিমড্যুলেশন ===
অ্যাম্পলিচ্যুড মড্যুলেটেড রেডিও প্রচারের ক্ষেত্রে ডিমড্যুলেশনের জন্য ডায়োড ব্যবহার করা হয়।সারাংশ হলো একটি এএম সংকেতে পরিবর্তনশীল ঋণাত্নক ও ধনাত্নক চূড়া দেখা যায় যার বিস্তার বা এনভেলপ হলো মূল অডিও সংকেতে সমানুপাতিক।ডায়োড একমুখীকরণ করে এএম রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি সংকেতকে যা এমন একটি সংকেত দেয় যা মূল সংকেতটির পারিপার্শ্বিক কোলাহল ছাড়া সংকেতের মার্জিত রূপ। অডিওকে বের করা হয় একটি সাধারণ ফিল্টার ব্যবহার করে এবং তা ট্রান্সডিউসার এবং অডিও অ্যাম্পলিফায়ার ব্যবহার করে শব্দ তরঙ্গ সৃষ্টি করা হয়।
=== ক্ষমতার রূপান্তর ===
[[রেকটিফায়ার]] মূলত ডায়োডের মাধ্যমে গঠিত হয় যা পরিবর্তনশীল তড়িৎ প্রবাহকে একমুখী প্রবাহে পরিণত করে।অটোমোটিভ অল্টারনেটর হলো এর একটি উদাহরণ যেখানে ডায়োড এসি কারেন্টকে ডিসি কারেন্টে রূপান্তরিত করে যা প্রথমদিকে ডায়নামোতে ব্যবহৃত কম্যুটেটরের থেকে ভালো ফলাফল দিয়ে থাকে।
=== অতিরিক্ত বিভবের থেকে সুরক্ষা ===
ডায়োডকে বৈদ্যুতিক বর্তনীর মাঝে অতিরিক্ত বিভবের থেকে সুরক্ষা দিতে ব্যবহার করা হয়।সেগুলো সাধারণত রিভারস বায়াসড হয়ে থাকে সাধারণ অবস্থাতে।যখন ভোল্টেজ খুব বেড়ে যায় তখন তা ফরওয়ার্ড বায়াসড হয়ে যায়।উদাহরণ স্বরূপ মোটর নিয়ন্ত্রক ও রিলেতে বৈদ্যুতিক কুন্ডুলীকে শক্তিহীন করতে এটা ব্যবহার করা হয়।অনেক ইন্ট্রিগ্রেটেড বর্তনীতে এটা ব্যবহার করা হয় ট্রান্সজিস্টরকে অতিরিক্ত বিভবের হাত থেকে রক্ষা করতে।
=== লজিক গেট ===
অ্যান্ড এবং অর লজিক গেটে ডায়োড ব্যবহার করা হয়।এগুলোকে ডায়োড লজিক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
=== তাপমাত্রা নির্ণয় ===
ডায়োডের সম্মুখ বিভবের পতন নির্ভর করে তাপমাত্রার ওপর, তাই ডায়োডকে তাপমাত্রা নির্ণয়ের কাজে ব্যবহার করা যায়।সিলিকন ব্যান্ড গ্যাপ টেম্পারেচার সেন্সর এমন একটি যন্ত্র।সাধারণত সিলিকন ডায়োডের তাপমাত্রা সহগ হলো -২ mV/˚C কক্ষ তাপমাত্রায়।
=== বিদ্যুৎ চালনায় ===
ডায়োড বিদ্যুৎকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পাওয়ার বিহীন অবস্থাতে পাওয়ার সাপ্লাই করা যায় ব্যাটারী থেকে। ইউপিএসে তাই ডায়োড ব্যবহার করা যায় বিদ্যুৎ প্রবাহকে অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনের সময়।তেমনি ছোট নৌকাতেও ২টি বর্তনী ব্যবহার করা হয়, একটা নৌকাকে চালাতে এবং আরেকটা অন্য কাজে। ২টি বর্তনীই চার্জিত হয় একটি একক অল্টারনেটর থেকে এবং হেভি ডিউটি স্পলিট চার্জ ডায়োড ব্যবহার করা হয় উচ্চ চার্জিত ব্যাটারীকে চার্জবিহীন অবস্থা হওয়া থেকে বিরত রাখতে যখন অল্টারনেটরটা আর চলবে না।
=== বিকিরণ ডিটেক্টরকে আয়নায়িত করতে ===
অর্ধ পরিবাহী ডায়োড খুবই স্পর্শকাতর অধিকশক্তি সম্পন্ন বিকিরনের ক্ষেত্রে।নয়েজ পালস এবং একক ও বহু বিট এরর সংগঠিত হয় কসমিক রে ও অন্যান্য বিকিরণ উৎসে নির্গমনের ফলে।
== সংক্ষেপে ==
সংক্ষেপে ডায়োডকে D দিয়ে প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডে চিহ্নিত করা হয়। ক্রিস্টাল রেকটিফায়ারের ক্ষেত্রে CR চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। <ref>{{cite book|author=John Ambrose Fleming|year=1919|url=http://books.google.com/books?id=xHNBAAAAIAAJ&pg=PA550&dq=%22crystal+rectifier%22+CR&as_brr=1|title=The Principles of Electric Wave Telegraphy and Telephony|place=London|publisher=Longmans, Green|page=550}}</ref>
== ডায়োডের প্রয়োগ ==
যেহেতু ডায়োড একদিকে বিদ্যুতপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে; সেজন্য ডায়োডকে রেক্টিফায়ার হিসেবে ( যা AC তড়িতকে DC তড়িতে রূপান্তর করে ) পাওয়ার সাপ্লাই, ভোল্টেজ রেগুলেটরে ব্যবহার করা হয়।
 
== বহিঃসংযোগ ==