মুহাম্মাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
r2.7.1) (রোবট পরিবর্তন করছে: ar:محمد (رسول)
Zahid Jason (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
{{Infobox Monarch
| name = হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)
| title =
| image =
| caption =
| reign =
| coronation =
| predecessor =
| successor =
| suc-type =
| heir =
| consort =
| issue =
| royal house =
| royal anthem =
| father = আব্দুল্লা
| mother = আমিনা (দুধ মা হালিমা সাদিয়া)
| date of birth = ১২ই রবিউল আউয়াল, ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দ
| place of birth = [[মক্কা]]
| date of death = ৬৩৩ খ্রীষ্টাব্দ বা রবিউল আউয়াল, ১১ হিজরী
| place of death = [[মদিনা]]
| buried =
}}
 
{{মুহাম্মাদ}}
 
'''হযরত মুহাম্মাদ [[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]]''' (আরবি উচ্চারণ শুনতে ক্লিক করুন {{শব্দ|Ar-muhammad.ogg|<big>'''محمد'''</big>}} মোহাম্মদ এবং মুহম্মদও বলা হয়), ([[তুর্কী ভাষা|তুর্কী]]: ''মুহাম্মেদ'') ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ধর্মীয় বিশ্বাসমতে [[আল্লাহ]] কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ [[নবী]] ([[আরবি ভাষা|আরবি ভাষায়]]: النبي আন-নাবিয়্যু) তথা "বার্তাবাহক" ([[আরবি ভাষা|আরবি]]: الرسول আর-রাসুল) যাঁর উপর [[কুরআন|আল কুরআন]] অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে তিনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনে। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য। বিবদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা।
 
 
== মুহাম্মাদের জন্মের পূর্বে বিশ্বের অবস্থা ==
[[চিত্র:Muhammad callig.gif|right|150px|frame|আরবি ক্যালিগ্রাফিতে "মুহাম্মাদ"]]
{{মূল নিবন্ধ|ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে আরবের অবস্থা}}
 
আরব বলতে এখানে [[মক্কা]] ও [[মদিনা]] এবং এদের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো নিয়ে গড়ে ওঠা অংশকে বুঝানো হচ্ছে, কারণ এই অংশের সাথেই মুহাম্মাদের জীবনের সাক্ষাৎ সম্পৃক্ততা ছিল। অঞ্চলটি ছিল মরুভূমির মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দ্বীপের মত। অবশ্য মরুভূমি পৃথিবীর সর্বত্রই রয়েছে, অর্থাৎ মরুভূমি ও ইসলামের মধ্যে বিশেষ কোন সম্পর্ক নেই। বিশ্বে মুহাম্মাদের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য তাঁর জন্মে-পূর্ব্ব আরবের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ভৌগলিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং নৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান আবশ্যক। তৎকালীন আরব অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল ব্যাবসায় ও পশুপালন। [[নোমাড|নোমেডীয়]] অঞ্চলের সাথে এখানকার বাণিজ্য যোগাযোগ ছিল।
 
== মুহাম্মাদের জীবনের উপর তথ্যসূত্র ==
{{মূল নিবন্ধ|মুহাম্মাদের জীবনের ইতিহাস-লিখন}}
 
== ইসলামী চরিতাভিধান অনুসারে জীবনী ==
{{তথ্যছক-ইসলাম}}
=== জন্ম ===
হযরত মোহাম্মদ [[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]] বর্তমান [[সৌদি আরব|সৌদি আরবে]] অবস্থিত [[মক্কা]] নগরীর [[কুরাইশ]] গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের তারিখ ছিল ১২ ই [[রবিউল আউয়াল]], ইংরেজি সন মোতাবেক [[৫৭০]] খৃস্টাব্দে। প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা [[মন্টগোমারি ওয়াট]] তার পুস্তকে ৫৭০ সনই ব্যবহার করেছেন। তবে নবীর প্রকৃত জন্মতারিখ বের করা বেশ কষ্টসাধ্য। এজন্যই এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। যেমন এক বর্ণনা মতে তাঁর জন্ম [[৫৭১]] সালের [[এপ্রিল ২০|২০]] বা [[এপ্রিল ২২|২২]] শে এপ্রিল। [[সাইয়েদ সোলাইমান নদভী]], সালমান মনসুরপুরী এবং মোহাম্মদ পাশা ফালাকির গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তবে শেষোক্ত মতই ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশী নির্ভরযোগ্য। যাই হোক, নবীর জন্মের বছরেই [[হস্তী যুদ্ধ|হস্তী যুদ্ধের]] ঘটনা ঘটে এবং সে সময় [[সম্রাট নরশেরওয়া|সম্রাট নরশেরওয়ার]] সিংহাসনে আরোহনের ৪০ বছর পূর্তি ছিল এ নিয়ে কারো মাঝে দ্বিমত নেই।
 
=== শৈশব ও কৈশোর কাল ===
তত্কালীন আরবের রীতি ছিল যে তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ এবং সুঠাম গড়ন তৈরির জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন। এই রীতি অনুসারে মোহাম্মদকেও [[হালিমা|হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের]] (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) হাতে দিয়ে দেয়া হয়। এই শিশুকে ঘরে আনার পর দেখা যায় হালিমার সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালনপালন করতে সমর্থ হন। তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য - শিশু মোহাম্মদ কেবল হালিমার একটি স্তনই পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালনপালনের পর হালিমা শিশু মোহাম্মদকে আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই মক্কায় মহামারী দেখা দেয় এবং শিশু মুহাম্মাদকে হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। হালিমাও চাচ্ছিলেন শিশুটিকে ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল। ইসলামী বিশ্বাসমতে এর কয়েকদিন পরই একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে - একদিন শিশু নবীর বুক চিরে কলিজার একটি অংশ বের করে তা [[জমজম কূপ|জমজম কূপের]] পানিতে ধুয়ে আবার যথাস্থানে স্থাপন করে দেয়া হয়। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে '''সিনা চাকের ঘটনা''' হিসেবে খ্যাত।
 
এই ঘটনার পরই হালিমা মুহাম্মাদকে মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি মায়ের সাথে কাটান। এই সময় একদিন আমিনার ইচ্ছা হয় ছেলেকে নিয়ে মদীনায় যাবেন। সম্ভবত কোন আত্মীয়ের সাথে দেখা করা এবং স্বামীর কবর জিয়ারত করাই এর কারণ ছিল। আমিনা ছেলে, শ্বশুর এবং দাসী ''উম্মে আয়মনকে'' নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মদীনায় পৌঁছেন। তিনি মদীনায় একমাস সময় অতিবাহিত করেন। একমাস পর মক্কায় ফেরার পথে '''আরওয়া''' নামক স্থানে এসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। মাতার মৃত্যুর পর দাদা [[আবদুল মোত্তালেব]] শিশু মুহাম্মাদকে নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন। এর পর থেকে দাদাই মুহাম্মাদের দেখাশোনা করতে থাকেন। মোহাম্মদের বয়স যখন ৮ বছর ২ মাস ১০ দিন তখন তার দাদাও মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্র [[আবু তালিব|আবু তালিবকে]] মোহাম্মদের দায়িত্ব দিয়ে যান।
 
আবু তালিব ব্যবসায়ী ছিলেন এবং আরবদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার সিরিয়া সফরে যেতেন। মুহাম্মাদের বয়স যখন ১২ ব্ছর তখন তিনি চাচার সাথে সিরিয়া যাওয়ার জন্য বায়না ধরলেন। প্রগাঢ় মমতার কারণে আবু তালিব আর নিষেধ করতে পারলেননা। যাত্রাপথে [[বসরা]] পৌঁছার পর কাফেলাসহ আবু তালিব তাঁবু ফেললেন। সে সময় আরব উপদ্বীপের রোম অধিকৃত রাজ্যের রাজধানী বসরা অনেক দিক দিয়ে সেরা ছিল। কথিত আছে, শহরটিতে '''জারজিস''' সামে এক [[খ্রিস্টান পাদ্রী]] ছিলেন যিনি '''বুহাইরা''' বা '''বহিরা''' নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি তার গীর্জা হতে বাইরে এসে কাফেলার মুসাফিরদের মেহমানদারী করেন। এ সময় তিনি বালক মুহাম্মাদকে দেখে শেষ নবী হিসেবে চিহ্নিত করেন। কারণ তিনি তার অন্তর দৃষ্টি দিয়ে লক্ষ্য করেন যে সব গাছপালা, পাথর এই বালকটিকে সেজদা করছে। ফুজ্জারের যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন নবীর বয়স ১৫ বছর। এই যুদ্ধে তিনি স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের নির্মমতায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন। কিন্তু তাঁর কিছু করার ছিলনা। সে সময় থেকেই তিনি কিছু একটি করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন।
 
=== নবুয়তের পূর্বের জীবন ===
{{মূল নিবন্ধ|নবুওয়তের পূর্বে মুহাম্মাদ}}
 
আরবদের মধ্যে উপস্থিত হিংশ্রতা, খেয়ানতদারীতা এবং প্রতিশোধমূলক মনোভাব দমনের জন্যই [[হিলফুল ফুজুল]] নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মাদ এতে যোগদান করেন এবং এই সংঘকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি বিরাট ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় তরুণ বয়সে মুহাম্মাদের তেমন কোন পেশা ছিলনা। তবে তিনি বকরি চরাতেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল [[বনি সা'দ গোত্র|বনি সা'দ গোত্রের]]। কয়েক কিরাত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসা শুরু করেন। মুহাম্মাদ অল্প সময়ের মধ্যেই একাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। এতই খ্যাতি তিনি লাভ করেন যে তার উপাধি হয়ে যায় '''আল আমিন''' এবং '''আল সাদিক''' যেগুলোর বাংলা অর্থ হচ্ছে যথাক্রমে '''বিশ্বস্ত''' এবং '''সত্যবাদী'''। ব্যবসা উপলক্ষ্যে তিনি [[সিরিয়া]], [[বসরা]], [[বাহরাইন]] এবং [[ইয়েমেন|ইয়েমেনে]] বেশ কয়েকবার সফর করেন। মুহাম্মাদের সুখ্যাতি যখন চারতিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন [[খাদীজা|খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ]] তা অবগত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসার জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। মুহাম্মাদ এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদীজার পণ্য নিয়ে সিরিয়ার অন্তর্গত বসরা পর্যন্ত যান।
[[চিত্র:Blackstone.JPG|thumb|left|220px|এই পাথরটিই মুহাম্মাদ শান্তিপূর্ণভাবে সবগুলো গোত্র নিয়ে কা'বা গৃহের অভ্যন্তরে স্থাপন করেছিলেন]]
খাদীজা মাইছারার মুখে মুহাম্মাদের সততা ও ন্যায়পরায়নতার ভূয়সী প্রশংশা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসার সফলতা দেখে তিনি তার যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি মুহাম্মাদকে ভালবেসে ফেলেন। তিনি তার বান্ধবী '''নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের''' কাছে বিয়ের ব্যাপরে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে মুহাম্মাদ বলেন যে তিনি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন জানাবেন। অবশ্য মানসিকভাবে তিনি তখনই রাজি ছিলেন। মুহাম্মাদ তাঁর চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদীজার বয়স ছিল ৪০ আর মুহাম্মাদের বয়স ছিল ২৫। খাদীজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোন বিয়ে করেননি। খাদীজার গর্ভে মুহাম্মাদের ৬ জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে যার মধ্যে ৪ জন মেয়ে এবং ২ জন ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে '''কাসেম, যয়নাব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম''', '''[[ফাতিমা]] এবং আবদুল্লাহ'''। ছেলে সন্তান দুজনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে সবাই ইসলামী যুগ পায় এবং ইসলাম গ্রহণ করে এবং একমাত্র ফাতিমা ব্যতিত সবাই নবীর জীবদ্দশাতেই মৃত্যুবরণ করে।
 
মুহাম্মাদের বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা'বা গৃহের পূনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মানের সময় যখন [[হাজরে আসওয়াদ]] (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের লোক এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ চলতে থাকার এক পর্যায়ে এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যা পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় '''আবু উমাইয়া মাখজুমি''' একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদে হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন মুহাম্মাদ সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার ব্যপক আস্থাও ছিল। যা হোক এই দায়িত্ব পেয়ে মুহাম্মাদ অত্যন্ত সুচারুভাবে ফয়সালা করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা ই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।
[[চিত্র:Qur'an folio 11th century kufic.jpg|thumb|right|একাদশ শতাব্দীর পারসিয়ান কুরআনের একটি পৃষ্ঠা]]
 
=== নবুওয়ত প্রাপ্তি ===
চল্লিশ বছর বয়সে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ [[নবুওয়ত]] লাভ করেন, অর্থাৎ এই সময়েই স্রষ্টা তার কাছে [[ওহী]] প্রেরণ করেন। নবুওয়ত সম্বন্ধে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় [[আজ জুহরি|আজ-জুহরির]] বর্ণনায়। জুহরি বর্ণিত হাদীস অনুসারে নবী সত্য দর্শনের মাধ্যমে ওহী লাভ করেন। ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর নবী প্রায়ই মক্কার অদূরে [[হেরা পর্বত|হেরা গুহায়]] ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। তাঁর স্ত্রী [[খাদিজা]] নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। এমনি এক ধ্যানের সময় [[ফেরেশতা]] [[জিব্রাইল]] তার কাছে আল্লাহ প্রেরিত [[ওহী]] নিয়ে আসেন। জিব্রাইল তাঁকে এই পংক্তি কটি পড়তে বলেন:
{{Cquote|
<i>'''পাঠ করুন,''' আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।<ref>'''[[আলাক্ব|সূরা আলাক্ব]]''': মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ [[কুরআন|পবিত্র কুরআনের]] ৯৬ নং সূরা; প্রথম পাঁচ (১ - ৫) আয়াত। www.islamdharma.net -এ প্রাপ্ত কুরআনের বাংলা অনুবাদ থেকে নেয়া হয়েছে।</ref>
}}
উত্তরে নবী জানান যে তিনি পড়তে জানেন না, এতে জিব্রাইল তাকে জড়িয়ে ধরে প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং আবার একই পংক্তি পড়তে বলেন। কিন্তু এবারও মুহাম্মাদ নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন। এভাবে তিনবার চাপ দেয়ার পর মুহাম্মাদ পংক্তিটি পড়তে সমর্থ হন। অবর্তীর্ণ হয় কুরআনের প্রথম আয়াত গুচ্ছ; [[সূরা আলাক|সূরা আলাকের]] প্রথম পাঁচ [[আয়াত]]। প্রথম অবতরণের পর নবী এতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে নিজ গ্রহে প্রবেশ করেই খাদিজাকে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেন। বারবার বলতে থাবেন, "আমাকে আবৃত কর"। খাদিজা নবীর সকল কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন এবং তাঁকে নবী হিসেবে মেনে নেন। ভীতি দূর করার জন্য মুহাম্মাদকে নিয়ে খাদিজা নিজ চাচাতো ভাই [[ওয়ারাকা ইবন নওফেল|ওয়ারাকা ইবন নওফেলের]] কাছে যান। নওফেল তাঁকে শেষ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে। ধীরে ধীরে আত্মস্থ হন নবী। তারপর আবার অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী প্রত্যাদেশের জন্য। একটি লম্বা বিরতির পর তাঁর কাছে দ্বিতীয় বারের মত ওহী আসে। এবার অবতীর্ণ হয় [[সূরা মুদ্দাস্‌সির]]-এর কয়েকটি আয়াত। এর পর থেকে গোপনে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন মুহাম্মাদ। এই ইসলাম ছিল জীবনকে সম্পূর্ণ বদলে দেয়ার জন্য প্রেরিত একটি আদর্শ ব্যবস্থা। তাই এর প্রতিষ্ঠার পথ ছিল খুবই বন্ধুর। এই প্রতিকূলততার মধ্যেই নবীর [[মক্কী জীবন]] শুরু হয়।
 
=== মক্কী জীবন ===
{{মূল নিবন্ধ|হিজরতের পূর্বে মুহাম্মাদ}}
[[চিত্র:Cave_Hira.jpg|thumb|right|200px|হেরা গুহা, এখানেই মুহাম্মাদ প্রথম প্রত্যাদেশ পান]]
==== গোপন প্রচার ====
প্রত্যাদেশ অবতরণের পর নবী বুঝতে পারেন যে, এটি প্রতিষ্ঠা করতে হলে তাকে পুরো আরব সমাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াতে হবে; কারণ তৎকালীন নেতৃত্বের ভীত ধ্বংস করা ব্যাতীত ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার অন্য কোন উপায় ছিলনা। তাই প্রথমে তিনি নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝে গোপনে ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন। মুহাম্মাদের আহ্বানে ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন [[খাদিজা]]। এরপর মুসলিম হন মুহাম্মাদের চাচাতো ভাই এবং তার ঘরেই প্রতিপালিত কিশোর [[আলী]], ইসলাম গ্রহণের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। ইসলামের বাণী পৌঁছে দেয়ার জন্য নবী নিজ বংশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা করেন; এই সভায় কেউই তাঁর আদর্শ সেন নেয়নি, এ সভাতে একজনই ইসলাম গ্রহণ করে, সে হলো [[আলী]]। ইসলাম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিল নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধূ [[আবু বকর]]। এভাবেই প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এই প্রচার ছিল সম্পূর্ণ গোপনে।
==== প্রকাশ্য দাওয়াত ====
তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেয়ার পর মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। এ ধরণের প্রচারের সূচনাটা বেশ নাটকীয় ছিল। নবী [[সাফা পর্বত|সাফা পর্বতের]] ওপর দাড়িয়ে চিৎকার করে সকলকে সমবেত করেন। এরপর প্রকাশ্যে বলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রাসূল। কিন্তু এতে সকলে তার বিরুদ্ধে প্রচণ্ড খেপে যায় এবং এই সময় থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার শুরু হয়।
==== মক্কায় বিরোধিতার সম্মুখীন ====
বিরুদ্ধবাদীরা কয়েকটি স্তরে নির্যাতন শুরু করে: প্রথমত উস্কানী ও উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি, এরপর অপপ্রচার, কুটতর্ক এবং যুক্তি। এক সময় ইসলামী আন্দোলনকে সহায়হীন করার প্রচেষ্টা শুরু হয় যাকে সফল করার জন্য একটি নেতিবাচক ফ্রন্ট গড়ে উঠে। একই সাথে গড়ে তোলা হয় সাহিত্য ও অশ্লীল গান-বাজনার ফ্রন্ট, এমনকি একং পর্যায়ে মুহাম্মাদের সাথে আপোষেরও প্রচেষ্টা চালায় কুরাইশরা। কিন্তু মুহাম্মাদ তা মেনে নেননি; কারণ আপোষের শর্ত ছিল নিজের মত ইসলাম পালন করা, সেক্ষেত্র তার ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই ভেস্তে যেতো।
==== ইথিওপিয়ায় হিজরত ====
ধীরে ধীরে যখন মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চরম রুপ ধারণ করে তখন নবী কিছু সংখ্যক মুসলিমকে [[আবিসনিয়ায় হিজরত]] করতে পাঠান। সেখান থেকেও কুরাইশরা মুসলিমদের ফেরত আনার চেষ্টা করে, যদিও তৎকালীন আবিসনিয়ার সম্রাট [[নাজ্জাশী|নাজ্জাশীর]] কারণে তা সফল হয়নি।
==== গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইসলাম গ্রহণ ====
এরপর ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে তা হল [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর ইবনুল খাত্তাবের]] ইসলাম গ্রহণ। নবী সবসময় চাইতেন যেন [[আবু জেহেল]] ও উমরের মধ্যে যেকোন একজন অন্তত ইসলাম গ্রহণ করে। তার এই ইচ্ছা এতে পূর্ণতা লাভ করে। আরব সমাজে উমরের বিশেষ প্রভাব থাকায় তার ইসলাম গ্রহণ ইসলাম প্রচারকে খানিকটা সহজ করে, যদিও কঠিন অংশটিই তখনও মুখ্য বলে বিবিচেত হচ্ছিল। এরপর একসময় নবীর চাচা [[হামযা]] ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণে আরবে মুসলিমদের আধিপত্য কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হয়।
==== একঘরে অবস্থা ====
এভাবে ইসলাম যখন শ্লথ গতিতে এগিয়ে চলছে তখন মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার অনুসারী সহ সহ গোটা [[বনু হাশেম গোত্রের আটকাবস্থা|বনু হাশেম]] গোত্রকে একঘরে ও আটক করে। তিন বছর আটক থাকার পর তারা মুক্তি পায়।
==== দুঃখের বছর ও তায়েফ গমন ====
কিন্তু মুক্তির পরের বছরটি ছিল মুহাম্মাদের জন্য দুঃখের বছর। কারণ এই বছরে খুব স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তার স্ত্রী [[খাদিজা]] ও চাচা [[আবু তালিব]] মারা যায়। দুঃখের সময়ে নবী মক্কায় ইসলামের প্রসারের ব্যাপরে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হয়ে তিনি মক্কা বাদ দিয়ে এবার ইসলাম প্রচারের জন্য [[মুহাম্মাদের(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)তায়েফ গমন|তায়েফ]] যান (অবশ্য তায়েফ গমনের তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে)। কিন্তু সেখানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি চূড়ান্ত অপমান, ক্রোধ ও উপহাসের শিকার হন। এমনকি তায়েফের লোকজন তাদের কিশোর-তরুণদেরকে মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পিছনে লেলিয়ে দেয়; তারা ইট-প্রস্তরের আঘাতে নবীকে রক্তাক্ত করে দেয়। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েননি; নব নব সম্ভবনার কথা চিন্তা করতে থাকেন।
 
==== মি'রাজ তথা উর্দ্ধারোহন ====
এমন সময়েই কিছু শুভ ঘটনা ঘটে। ইসলামী ভাষ্যমতে এ সময় মুহাম্মাদ এক রাতে মক্কায় অবস্থিত [[মসজিদুল হারাম]] থেকে [[জেরুজালেম|জেরুজালেমে]] অবস্থিত [[মসজিদুল আকসা|মসজিদুল আকসায়]] যান; এই ভ্রমণ ইতিহাসে [[ইসরা]] নামে পরিচিত। কথিত আছে, মসজিদুল আকসা থেকে তিনি একটি বিশেষ যানে করে উর্দ্ধারোহণ করেন এবং মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করেন, এছাড়া তিনি [[বেহেশ্‌ত]] ও [[দোযখ]] সহ মহাবিশ্বের সকল স্থান অবলোকন করেন। এই যাত্রা ইতিহাসে [[মি'রাজ]] নামে পরিচিত। এই সম্পূর্ণ যাত্রার সময়ে পৃথিবীতে কোন সময়ই অতিবাহিত হয়নি বলে বলা হয়।
 
=== মদীনায় হিজরত ===
{{মূল নিবন্ধ|মদীনায় হিজরত}}
 
এরপর আরও শুভ ঘটনা ঘটে। মদীনার বেশকিছু লোক ইসলামের প্রতি উৎসাহী হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। তারা মূলত [[হজ্জ্ব]] করতে এসে ইসলামে দাওয়াত পেয়েছিল। এরা [[আকাব]] নামক স্থানে মুহাম্মাদের কাছে শপথ করে যে তারা যে কোন অবস্থায় নবীকে রক্ষা করবে এবং ইসলামে প্রসারে কাজ করবে। এই শপথগুলো [[আকাবার শপথ]] নামে সুপরিচিত। এই শপথগুলোর মাধ্যমেই [[মদীনা|মদীনায়]] ইসলাম প্রতিষ্ঠার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং একসময় মদীনার ১২ টি গোত্রের নেতারা একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণের মাধ্যমে মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আসার আমন্ত্রণ জানায়। মদীনা তথা ইয়াসরিবে অনেক আগে থেকে প্রায় ৬২০ সাল পর্যন্ত গোত্র গোত্র এবং ইহুদীদের সাথে অন্যদের যুদ্ধ লেগে থাকে। বিশেষত বুয়াছের যুদ্ধে সবগুলো গোত্র যুদ্ধে অংশ নেয়ায় প্রচুর রক্তপাত ঘটে। এ থেকে মদীনার লোকেরা বুঝতে সমর্থ হয়েছিল যে, রক্তের বিনিময়ে রক্ত নেয়ার নীতিটি এখন আর প্রযোজ্য হতে পারেনা। এজন্য তাদের একজন নেতা দরকার যে সবাইকে একতাবদ্ধ করতে পারবে। এ চিন্তা থেকেই তারা মুহাম্মাদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, যদিও আমন্ত্রণকারী অনেকেই তখনও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেনি। এই আমন্ত্রণে মুসলিমরা মক্কা থেকে [[হিজরত]] করে মদীনায় চলে যায়। সবশেষে মুহাম্মাদ ও আবু বকর [[৬২২]] খ্রিস্টাব্দে মদীনায় হিজরত করেন। তাদের হিজরতের দিনেই কুরাইশরা মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)হত্যার পরিকল্পনা করেছিল যদিও তা সফল হয়নি। এভাবেই মক্কী যুগের সমাপ্তি ঘটে।
 
=== মাদানী জীবন ===
{{মূল নিবন্ধ|মদীনায় মুহাম্মাদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)}}
 
নিজ গোত্র ছেড়ে অন্য গোত্রের সাথে যোগদান আরবে অসম্ভব হিসেবে পরিগণিত হত। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে সেরকম নয়, কারণ এক্ষেত্রে ইসলামের বন্ধনই শ্রেষ্ঠ বন্ধন হিসেবে মুসলিমদের কাছে পরিগণিত হত। এটি তখনকার যুগে একটি বৈপ্লবিক চিন্তার জন্ম দেয়। [[ইসলামী পঞ্জিকা|ইসলামী পঞ্জিকায়]] হিজরতের বর্ষ থেকে দিন গণনা শুরু হয়। এজন্য ইসলামী পঞ্জিকার বর্ষের শেষে AH উল্লেখিত থাকে যার অর্থ: After Hijra।
==== স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও সংবিধান প্রণয়ন ====
মুহাম্মাদ মদীনায় গিয়েছিলেন একজন মধ্যস্থতাকারী এবং শাসক হিসেবে। তখন বিবদমান দুটি মূল পক্ষ ছিল [[আওস]] ও [[খাযরাজ]]। তিনি তার দায়িত্ব সুচারুরুপে পালন করেছিলেন। মদীনার সকল গোত্রকে নিয়ে ঐতিহাসিক [[মদীনা সনদ]] স্বাক্ষর করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম সংবিধান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। এই সনদের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে সকল রক্তারক্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এমনকি এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নীতির গোড়াপত্তন করা হয় এবং সকল গোত্রের মধ্যে জবাবদিহিতার অনুভুতি সৃষ্টি করা হয়। আওস, খাযরাজ উভয় গোত্রই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। এছাড়াও প্রধানত তিনটি [[ইহুদী]] গোত্র (বনু কাইনুকা, বনু কুরাইজা এবং বনু নাদির)। এগুলোসহ মোট আটটি গোত্র এই সনদে স্বাক্ষর করেছিল। এই সনদের মাধ্যমে মদীনা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)হন তার প্রধান।
==== মক্কার সাথে বিরোধ ও যুদ্ধ ====
মদীনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই মক্কার সাথে এর সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হতে থাকে। মক্কার কুরাইশরা মদীনা রাষ্ট্রের ধ্বংসের জন্য যুদ্ধংদেহী মনোভাব পোষণ করতে থাকে। মুহাম্মাদ(স)মদীনায় এসে আশেপাশের সকল গোত্রের সাথে সন্ধি চুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে শান্তি স্থাপনে অগ্রণী ছিলেন। কিন্তু মক্কার কুরাইশরা গৃহত্যাগী সকল মুসলিমদের সম্পত্তি ক্রোক করে। এই অবস্থায় [[৬২৪]] সালে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)৩০০ সৈন্যের একটি সেনাদলকে মক্কার একটি বাণিজ্যিক কাফেলাকে বাঁধা দেয়ার উদ্দেশ্যে পাঠায়। কারণ উক্ত কাফেলা বাণিজ্যের নাম করে অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। কুরাইশরা তাদের কাফেলা রক্ষায় সফল হয়। কিন্তু এই প্রচেষ্টার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য যুদ্ধের ডাক দেয়। আত্মরক্ষামূলক এই যুদ্ধে মুসলিমরা সৈন্য সংখ্যার দিক দিয়ে কুরাইশদের এক তৃতীয়াংশ হয়েও বিজয় অর্জন করে। এই যুদ্ধ [[বদর যুদ্ধ]] নামে পরিচিত যা [[৬২৪]] খ্রিস্টাব্দের [[মার্চ ১৫|১৫ মার্চ]] তারিখে সংঘটিত হয়। মুসলিমদের মতে এই যুদ্ধে আল্লাহ মুসলিমদের সহায়তা করেছিলেন। যাহোক, এই সময় থেকেই ইসলামের সশস্ত্র ইতিহাসের সূচনা ঘটে। এরপর [[৬২৫]] সালের [[মার্চ ২৩|২৩ মার্চে]] [[উহুদ যুদ্ধ]] সংঘটিতে হয়। এতে প্রথম দিকে মুসলিমরা পরাজিত হলেও শেষে বিজয়ীর বেশে মদীনায় প্রবেশ করতে সমর্থ হয়। কুরাইশরা বিজয়ী হওয়া সত্ত্বেও চূড়ান্ত মুহূর্তের নীতিগত দূর্বলতার কারণে পরাজিতের বেশে মক্কায় প্রবেশ করে। [[৬২৭]] সালে [[আবু সুফিয়ান]] কুরাইশদের আরেকটি দল নিয়ে মদীনা আক্রমণ করে। কিন্তু এবারও [[খন্দকের যুদ্ধ|খন্দকের যুদ্ধে]] মুসলিমদের কাছে পরাজিত হয়। যুদ্ধ বিজয়ে উৎসাহিত হয়ে মুসলিমরা আরবে একটি প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হয়। ফলে আশেপাশের অনেক গোত্রের উপরই মুসলিমরা প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়।
 
==== মদীনার ইহুদিদের সাথে সম্পর্ক ====
কিন্তু এ সময় মদীনার বসবাসকারী ইহুদীরা ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য হুমকী হয়ে দেখা দেয়। মূলত ইহুদীরা বিশ্বাস করতনা যে, একজন অ-ইহুদী শেষ নবী হতে পারে। এজন্য তারা কখনই ইসলামের আদর্শ মেনে নেয়নি এবং যখন ইসলামী রাষ্ট্রের শক্তি বুঝতে পারে তখন তারা এর বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)প্রতিটি যুদ্ধের পরে একটি করে ইহুদী গোত্রের উপর আক্রমণ করেন। বদর ও উহুদের যুদ্ধের পর বনু কাইনুকা ও বনু নাদির গোত্র সপরিবারে মদীনা থেকে বিতাড়িত হয়; আর খন্দকের পর সকল ইহুদীকে মদীনা থেকে বিতাড়ন করা হয়।<ref>Esposito (1998), pp.10-11</ref> মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এই ইহুদী বিদ্বেশের দুটি কারণের উল্লেখ পাওয়া যায়, একটি ধর্মীয় এবং অন্যটি রাজনৈতিক<ref name="Peters77">F.E.Peters(2003), p.77</ref>। ধর্মীয় দিক দিয়ে চিন্তা করলে [[আহলে কিতাব]] হয়েও শেষ নবীকে মেনে না নেয়ার শাস্তি ছিল এটি। আর রাজনৈতিকভাবে চিন্তা করলে, ইহুদীরা মদীনার জন্য একটি হুমকী ও দুর্বল দিক ছিল। এজন্যই তাদেরকে বিতাড়িত করা হয়।<ref name="Peters78">F.E.Peters(2003), p.76-78</ref>
==== হুদাইবিয়ার সন্ধি ====
কুরআনে যদিও মুসলিমদের হজ্জ্বের নিয়ম ও আবশ্যকীয়তা উল্লেখ ককরা আছে, তথাপি কুরাইশদের শত্রুতার কারণে মুসলিমরা হজ্জ্ব আদায় করতে পারছিল না। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক দিব্যদর্শনে দেখতে পান তিনি হজ্জ্বের জন্য মাথা কামাচ্ছেন। এ দেখে তিনি হজ্জ্ব করার জন্য মনস্থির করেন এবং ৬ হিজরী সনের শাওয়াল মাসে হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে ১৪০০ [[সাহাবা]] নিয়ে মদীনার পথে যাত্রা করেন। কিন্তু এবারও কুরাইশরা বাঁধা দেয়। অগত্যা মুসলিমরা মক্কার উপকণ্ঠে [[হুদাইবিয়া]] নামক স্থানে ঘাঁটি স্থাপন করে। এখানে কুরাইশদের সাথে মুসলিমদের একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ইতিহাসে [[হুদাইবিয়ার সন্ধি]] নামে সুপরিচিত। এই সন্ধি মতে মুসলিমরা সে বছর হজ্জ্ব করা ছাড়াই মদীনায় প্রত্যাবর্তন করে। সন্ধির অধিকাংশ শর্ত মুসলিমদের বিরুদ্ধে গেলেও মুহাম্মাদ এই চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন।
 
==== বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়কদের কাছে পত্র প্রেরণ ====
রাসূল (সাঃ)সারা বিশ্বের রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। সুতরাং পৃথিবীর সব জায়গায় ইসলামের আহ্বান পৌঁছ দেয়া তাঁর দায়িত্ব ছিল। হুদায়বিয়ার সন্ধির পর কুরাইশ ও অন্যান্য আরব গোত্রগুলো থেকে আশ্বস্ত হয়ে এ কাজে মননিবেশ করেন। সেসময়ে পৃথিবীর প্রধান রাজশক্তিগুলো ছিল ইউরোপের রোম সাম্রাজ্য (the holy roman empire),এশিয়ার পারস্য সাম্রাজ্য এবং আফ্রিকার হাবশা সাম্রাজ্য। এছাড়াও মিশরের 'আযীয মুকাউকিস',ইয়ামামার সর্দার এবং সিরিয়ার গাসসানী শাসনকর্তাও বেশ প্রতাপশালী ছিল। তাই ষষ্ঠ হিজরীর জিলহজ্জ মাসের শেষদিকে একইদিনে এদেঁর কাছে ইসলামের আহ্বানপত্রসহ ছয়জন দূত প্রেরণ করেন।<br />
===== প্রেরিত দূতগণের তালিকা =====
# দািহয়া ক্বালবী (রাঃ)কে রোমসম্রাট কায়সারের কাছে।<br />
# আবদুল্লাহ বিন হুযাফা (রাঃ)কে পারস্যসম্রাট পারভেজের কাছে।<br />
# হাতিব বিন আবূ বুলতা'আ (রাঃ) কে মিশরৈর শাসনকর্তার কাছে।<br />
# আমর বিন উমাইয়া (রাঃ) কে হাবশার রাজা নাজ্জাশীর কাছে।<br />
# সলীত বিন উমর বিন আবদে শামস (রাঃ) কে ইয়ামামার সর্দারের কাছে।
# শুজাইবনে ওয়াহাব আসাদী (রাঃ)কে গাসসানী শাসক হারিসের কাছে।
 
শাসকদের মধ্য হতে শুধুমাত্র বাদশাহ নাজ্জাসী ছাড়া আর কেউ ইসলাম গ্রহণ করেননি।
 
=== মক্কা বিজয় ===
{{মূল নিবন্ধ|মুসলমানদের মক্কা বিজয়}}
দশ বছরমেয়াদি হুদাইবিয়ার সন্ধি মাত্র দু' বছর পরেই ভেঙ্গে যায়। খুযাআহ গোত্র ছিল মুসলমানদের মিত্র,অপরদিকে তাদের শত্রু বকর গোত্র ছিল কুরাইশদের মিত্র। একরাতে বকর গোত্র খুযাআদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। কুরাইশরা এই আক্রমণে অন্যায়ভাবে বকর গোত্রকে অস্ত্র দিয়ে সহয়োগিতা করে। কোন কোন বর্ণনামতে কুরাইশদের কিছু যুবকও এই হামলায় অংশগ্রহণ করে।
এই ঘটনার পর মুহাম্মাদ (সঃ) কুরাইশদের কাছে তিনটি শর্তসহ পত্র প্রেরণ করেন এবং কুরাইশদেরকে এই তিনটি শর্তের যে কোন একটি মেনে নিতে বলেন। শর্ত তিনটি হলো;<br />
* কুরাইশ খুযাআ গোত্রের নিহতদের রক্তপণ শোধ করবে।
* অথবা তারা বকর গোত্রের সাথে তাদের মৈত্রীচুক্তি বাতিল ঘোষণা করবে।
* অথবা এ ঘোষণা দিবে যে, হুদায়বিয়ার সন্ধি বাতিল করা হয়েছে এবং কুরাইশরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।<br />
কুরাইশরা জানালো যে, তারা শুধু তৃতীয় শর্তটি গ্রহণ করবে। কিন্তু খুব দ্রুত কুরাইশ তাদের ভুল বুঝতে পারলো এবং আবু সুফয়ানকে সন্ধি নবায়নের জন্য দূত হিসেবে মদীনায় প্রেরণ করলো। কিন্তু মুহাম্মাদ (সঃ) কুরাইশদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন এবং মক্কা আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু করলেন।<br />
৬৩০ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদ (সঃ) দশ হাজার সাহাবীর বিশাল বাহিনী নিয়ে মক্কাভিমুখে রওয়ানা হলেন।সেদিন ছিল অষ্টম হিজরীর রমজান মাসের দশ তারিখ। বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ ছাড়া মোটামুটি বিনাপ্রতিরোধে মক্কা বিজিত হলো এবং মুহাম্মাদ (সঃ) বিজয়ীবেশে সেখানে প্রবেশ করলেন। তিনি মক্কাবাসীর জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিলেন। তবে দশজন নর এবং নারী এই ক্ষমার বাইরে ছিল। তারা বিভিন্নভাবে ইসলাম ও মুহাম্মাদ (সঃ)এর কুৎসা রটাত। তবে এদের মধ্য হতেও পরবর্তিতে কয়েকজনকে ক্ষমা করা হয়। মক্কায় প্রবেশ করেই মুহাম্মাদ (সঃ) সর্বপ্রথম কাবাঘরে আগমন করেন এবং সেখানকার সকল মূর্তি ধ্বংস করেন। মুসলমানদের শান-শওকত দেখে এবং মুহাম্মাদ (সঃ)এর ক্ষমাগুণে মুগ্ধ হয়ে অধিকাংশ মক্কাবাসীই ইসলাম গ্রহণ করে। কোরআনে এই বিজয়ের ঘটনা বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে।
 
=== মক্কা বিজয়ের পর ===
{{মূল নিবন্ধ|মক্কা বিজয়ের পরে মুহাম্মাদ}}
 
=== মৃত্যু ===
{{মূল নিবন্ধ|মুহাম্মাদের মৃত্যু}}
বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরী ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ (সাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের তাপমাত্রা প্রচন্ড হওয়ার কারণে পাগড়ির ওপর থেকেও উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিল। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি এগারো দিন নামাজের ইমামতি করেন। অসুস্থতা তীব্র হওয়ার পর তিনি সকল স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আয়েশা (রাঃ)এর কামরায় অবস্থান করতে থাকেন। তাঁর কাছে সাত কিংবা আট দিনার ছিল,মৃত্যুর একদিন পূর্বে তিনি এগুলোও দান করে দেন। বলা হয়, এই অসুস্থতা ছিল খাইবারের এক ইহুদি নারীর তৈরি বিষ মেশানো খাবার গ্রহণের কারণে। অবশেষে ১১ হিজরী সালের রবিউল আউয়াল মাসে তিনি মৃত্যবরণ করেন। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। আলী (রাঃ) তাকেঁ গোসল দেন এবং কাফন পরান। আয়েশ (রাঃ)এর কামরার যে স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন,জানাযার পর সেখানেই তাকেঁ দাফন করা হয়।
 
== সংস্কারক হিসেবে মুহাম্মাদ ==
{{মূল নিবন্ধ|ইসলামের অধীনে প্রাথমিক সংস্কার}}
 
== ইসলামী বর্ণনামতে মুহাম্মাদের অলৌকিকত্ব ==
 
 
ব্যতিক্রমের প্রতি আকর্ষন মানুষের স্বভাবজাত, অন্যদিকে অলৌকিকত্বের প্রভাব আমাদের লৌকিক জীবনে সুদূর প্রসারী। আরবী মু’জেযা শব্দের অর্থ আসাধারন বিষয়, অলৌকিকত্ব।
রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অসংখ্য মু’জেযার মধ্যে প্রকাশ্য মু’জেযার সংখ্যা দশ হাজারেরও অধিক। <ref>১.নাশরুত তিব ফী যিকরীন নাবিয়্যিল হাবীবঃ মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. পৃ. ১৯৯</ref>
ব্যাখ্যাকারীগন প্রিয় নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মু’জেযা গুলো কে তিন ভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করেছেন। প্রথমতঃ যা তাঁর দেহ হতে বহির্ভূত। যথা- চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়া, বৃক্ষ নিকটে আসা, ঊট ও হরিনের অভিযোগ ইত্যাদি। দ্বিতীয়তঃ যা তাঁর দেহ সম্পৃক্ত যথা- ‘মহরে নবুওয়াত’ যা হলো দু; কাধের মাঝখানে আল্লাহর রাসূল মোহাম্মাদ শব্দটি লেখা ছিল মৃত্যুর আগে পর্যন্ত। তৃতীয়তঃ তাঁর নৈতিক ও চারিত্রিক গুনাবলী যথা- নির্ভিক, অকুতোভয়, দানশীলতা, সত্য ভাষন, দুনিয়া বিমুখ ইত্যাদি।
আল কোরানের সুরা ক্বামারে রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আংগুল দ্বারা চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়ার কথা বলা আছে। বদর যুদ্ধের আগের দিন বদর নামক স্থানে পৌঁছে রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন ‘ এটা আমুকের শাহাদাতের স্থান, এটা অমুকের (কাফেরের) হত্যার স্থান... সাহাবী (রাঃ)রা বলেন ‘রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যার জন্য যে স্থান দেখিয়েছেন, তার সামান্য এদিক সেদিক হয়নি।’ (মুসলিম)
বিভিন্ন যুদ্ধে আকাশের ফেরেশতাগন অংশগ্রহন করতো। যা আল্লাহর সাহায্য ও রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মু’জেযার প্রমান। হযরত সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন- ‘ ওহুদের যুদ্ধের দিন আমি রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ডানে বামে সাদা পোষাকের দু জন কে (জিব্রাইল, মিকাইল) দেখলাম যাদের কে আর কোন দিন দেখেনি। (বুখারী, মুসলিম)
সাহাবীর ভাংগা পা রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্পর্শে ভালো হওয়া আরো একটি মু’জেযা। সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক (রাঃ) এর পা ভেংগে গেলে তিনি তা রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জানালে রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পায়ের উপর হাত বুলালেন। সাহাবী বলেন- ‘ এতে আমার পা এমনভাবে সুস্থ হয়ে গেলো যেন তাতে আমি কখনো আখাতই পাইনি। (বুখারী)
স্বল্প খাদ্যে হাজার মানুষের পরিতৃপ্ত ভোজন হওয়া প্রিয়নবী রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উল্লেখযোগ্য মু’জেযা। এরুপ বহু ঘটনা বহু সাহাবী বর্ণনা করেছেন। খন্দকের যুদ্ধের সময় যখন রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সকল সাহাবীগন ক্ষুধায় অস্থির ও দুর্বল হয়ে পরেছিলেন তখন জাবের (রাঃ) একটি বকরীর বাচ্চা জবাই করলেন আর এক সা পরিমান জবের রুটি তৈরি করলেন আর তা দিয়েই সবাই তৃপ্তিতে খেলেন। সাহাবী জাবের (রাঃ) আল্লাহর শপথ করে বলেন- ‘সকলে তৃপ্তি সহকারে খেয়ে চলে যাওয়ার পরও চুলায় গোশত ভর্তি ডেকচি ফুটছিল এবং রুটি হচ্ছিল।’(বুখারী, মুসলিম)
 
সামান্য পানিতে সবার প্রয়োজন পূরন হওয়ার মত ঘটনাকে প্রিয়নবী রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মু’জেযা ছাড়া আর কি বলা যায় ?
জাবির রাঃ এর বর্ণনায় র‌যেছে, হুদাইবিয়ার দিন একটি চামড়ার পাত্রে সামান্য পানি ছিল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাতে হাত রাখলেন আর সাথে সাথে তাঁর আংগুলের ফাঁক থেকে ঝর্ণার মত পানি বের হতে লাগলো। জাবির (রা) বলেন, ‘ আমরা ঐ পানি পান করলাম, তা দিয়ে অযু করলাম। জিজ্জাস করা হল, সংখ্যায় আপনারা কতজন ছিলেন? জাবির (রা.) বললেন, এক লাখ হলেও ঐ পানিই যথেষ্ট ছিল আর আমরা ছিলাম পনেরো শত! (বুখারী, মুসলিম)
 
তথ্যসুত্রঃ মাসিক মদিনা, ফেব্রুয়ারী, ২০১১,পৃষ্টা ৪৬।--[[User:Farabi|ফারাবী]] ([[User talk:Farabi|আলাপ]]) ০৯:৪০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি) ফারাবী
 
রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কয়েকটি নামঃ
আল-কোরান এবং বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু নামের বাংলা অর্থ দিলাম-
 
প্রশংসিত, প্রশংসাকারী, প্রতিনিধি, বিজয়ী, সমাপনকারী, একত্রকারী, নিশ্চিহ্নকারী, আহবানকারী, প্রদীপ, ন্যায়পরায়ন, সুসংবাদদাতা, ভয় প্রদর্শনকারী, পথ প্রদর্শক, আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ, আল্লাহর বার্তাবাহক, কম্বল পরিহিত, চাদর পরিহিত, সুপারিশকারী, প্রিয় বন্ধু, মনোনিত, নির্বাচীত, মক্কাবাসী, মদীনাবাসী, মরুবাসী, আরবের অধিবাসী, বনি হাশেম বংশীয়, কোরাইশ বংশীয়, নিরক্ষর, পিত্রহীন, সৎ কাজের আদেশ দাতা, অসৎ কাজে বাধা প্রদানকারী, দানশীল, সর্বশেষ, হালালকারী, হারামকারী, সর্দার, অভিভাবক, .......।
তথ্যসুত্রঃ তিরমিযী শরীফের বাংলা অনুবাদ।
 
== মুহাম্মাদ সম্পর্কে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ==
=== ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ===
{{মূল নিবন্ধ|ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে মুহাম্মাদের অবদান}}
=== নব্যুওয়তের মোহর ===
===মুসলিমদের শ্রদ্ধা নিবেদন===
=== চিত্র বা ভাস্কর্যের মাধ্যমে চিহ্নিতকরণ ===
===খ্রিস্টান ও পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি===
প্রখ্যাত ইংরেজ বৈজ্ঞানিক মি. এডওয়ার্ড টিম্বার প্রৃথিবীর মহাপুরুষগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ১৭ জন মহাপুরুষের নাম the faith and Favour পুস্তকে লিপিবদ্ধ করেছেন। তন্মধ্যে আমাদের প্রিয় নবিজীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম প্রথমে স্থান পেয়াছে।
নোবেল বিজয়ী চিন্তাবিদ প্রখ্যাত সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ডশ রাখঢাক না করেই বলে গিয়েছেন, বিশ্ববাসী! যদি তোমরা নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে চাও এবং সর্বাঙ্গীন সুন্দর জীবন ব্যবস্থা কামনা করো, তবে বিশ্ব-সংসারের নিয়ন্ত্রন ভার মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাতে ছেড়ে দাও।
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক জোসেফ হেল বলেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনই একজন মহান ব্যক্তি ছিলেন, যাকে না হলে বিশ্ব অসম্পুর্ন থেকে যেতো। তিনি নিজেই নিজের তুলনা। তাঁর কৃতিত্বময় ইতিহাস মানব জাতির ইতিহাসে এক সমুজ্জল অধ্যায় রচনা করেছে।
আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদী প্রফেসর জুল ম্যাসারমান বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, সর্বকালের সর্বশ্র্রেষ্ঠ অনুসরনীয় ও অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
হিলফুল ফুযুল
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আরবে যখন জন্ম হয়, তখন যুদ্ধ ছিল সেখানকার একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। শৈশবেই এ সকল যুদ্ধ তাকে প্রচন্ড বেদনাহত করে। তাই যৌবনের প্রারম্ভে তাঁর একান্ত অনুপ্রেরনায় ও উদ্যোগে হিলফুল-ফুযুল নামক একটি সেবাসংঘ গঠিত হয়। এই সংঘের লক্ষ্য ছিল সমকালিন যাবতীয় অনাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
এর মুখ্য উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ছিল, দরিদ্রের দারিদ্র মোচন করা, অত্যাচার ও অনাচারের প্রতিরোধ করা। এই সংঘের সকল সদস্য তাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে আল্লাহর নামে শপথ গ্রহণ করেন। মক্কার কোন নির্যাতিত ব্যক্তি হিলফুল-ফুযুল এর কাছে সাহায্য চাইলে এই সংঘের সবাই সম্মেলিত ভাবে তাকে সাহায্য করত। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরবর্তীকালে বলেছিলেন, আমাকে যদি এই সংঘের বদলে অনেকগুলো লাল উটও উপহার দেয়া হয় তা হলেও আমি ও গুলো গ্রহণ করবো না। কোনো ব্যক্তি যদি এই সময় হে হিলফুল ফুযুলের সদস্যগন বলে ডাক দেয়, আমি অবশ্যই তার ডাকে সারা দিব।
তথ্য সুত্রঃ মাসিক মদিনা, সীরাতুন্নবী সংখ্যা, ২০১০, ফারাবী
 
=== অন্যান্য ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি ===
 
== সমালোচনা ==
{{মূল নিবন্ধ|মুহাম্মাদের সমালোচনা}}
 
== আরও দেখুন ==
{{col-begin}}
{{col-break}}
* [[সাহাবা]]
* [[সাহাবীদের তালিকা]]
* [[খুলাফায়ে রাশেদীন]]
* [[আমিনা]]
{{col-break}}
* [[আব্দুল্লাহ]]
* [[হালিমা]]
* [[আব্দুল মুত্তালিব]]
{{col-break}}
* [[আবু তালিব]]
* [[হিলফুল ফুজুল]]
* [[ইসলাম]]
{{col-break}}
* [[আল কুরআন]]
* [[হাদিস]]
* [[মুহাম্মাদের স্ত্রীগণ]]
{{col-end}}
 
== তথ্যসূত্র ও পাদটীকা ==
{{reflist|2}}
== সহায়ক পাঠ্যসমূহ ==
<div style="-moz-column-count:2; column-count:2;">
* {{cite book | author=গোলাম মোস্তফা | title=বিশ্বনবী | publisher= | year= | id=}}
* ''হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (স):সমকালীন পরিবেশ ও জীবন''। ইসলামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউ বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত। শায়খুল হাদীস মাওলানা মুহাম্মদ তফাজ্জল হোসাইন রচিত এবং ড;এ.এইচ.এম মুজতবা হোসাইন কর্তৃক সম্পাদিত।
* {{cite book | author=Andrae, Tor | title=Mohammed: The Man and His Faith | publisher=Dover | year=2000 | id=ISBN 0-486-41136-2}}
* {{cite book | author=Armstrong, Karen | title=Muhammad: A Biography of the Prophet | location=San Francisco | publisher=Harper | year=1993 | id=ISBN 0-06-250886-5}}
* {{cite book | author=Cook, Michael | title=Muhammad | publisher=Oxford University Press | year=1983 | id=ISBN 0-19-287605-8 (reissue 1996)}}
* {{cite book | author=Dashti, Ali | title=Twenty-Three Years: A Study of the Prophetic Career of Mohammad | publisher=Mazda | year=1994 | id=ISBN 1-56859-029-6}}
* {{cite book | author=[[John Bagot Glubb|Glubb, John Bagot]] | title=The Life and Times of Muhammad | publisher=Hodder & Stoughton | year=1970 | id=ISBN 0-8154-1176-6 (reprint 2002)}}
* {{cite book | author=[[Alfred Guillaume|Guillaume, Alfred]], ed. | title=The Life of Muhammad: A Translation of Ibn Ishaq's Sirat Rasul Allah | publisher=Oxford University Press | year=1955 | id=ISBN 0-19-636033-1}}
* {{cite book | author=Hamidullah, Muhammad | title=The Life and Work of the Prophet of Islam | publisher=[s.n.](Islamabad: Islamic Research Institute) | year=1998 | id=ISBN 969-8413-00-6}}
* {{cite book | author=[[Haykal, Muhammad Husayn]] | title=The Life of Muhammad | publisher=Islamic Book Service | year=1995 | id=ISBN 1-57731-195-7}}
* {{cite book | author=Lings, Martin | title=Muhammad: His Life Based on Earliest Sources | publisher=Inner Traditions International, Limited | year=1987 | id=ISBN 0-89281-170-6}}
* {{cite book |author=Motzki, Harald, ed. | title=The Biography of Muhammad: The Issue of the Sources (Islamic History and Civilization: Studies and Texts, Vol. 32) | publisher=Brill | year=2000 |id=ISBN 90-04-11513-7 }}
* {{cite book | author=Rodinson, Maxime| title=Muhammad | publisher=New Publishers | year=1961 | id=ISBN 1-56584-752-0}}
* {{cite book | author=Rubin, Uri| title=The Eye of the Beholder: The Life of Muhammad as Viewed by the Early Muslims (A Textual Analysis) | publisher=Darwin Press | year=1995 | id=ISBN 0-87850-110-X}}
* {{cite book | author=[[Annemarie Schimmel|Schimmel, Annemarie]] | title=And Muhammad is His Messenger: The Veneration of the Prophet in Islamic Piety | publisher=The University of North Carolina Press | year=1985 | id=ISBN 0-8078-4128-5}}
* {{cite book | author=Warraq, Ibn | title=The Quest for the Historical Muhammad | publisher=Prometheus Books | year=2000 | id=ISBN 1-57392-787-2}}
* {{cite book | author=Watt, W. Montgomery | title=Muhammad: Prophet and Statesman | publisher=Oxford University Press | year=1961 | id=ISBN 0-19-881078-4}}
* {{cite book | author=Berg, Herbert (Ed.) | title=Method and Theory in the Study of Islamic Origins | publisher=E. J. Brill | year=2003 | id=ISBN 90-04-12602-3}}
* {{cite book | author=Lewis, Bernard | title=The Arabs in History | edition = 6th edition | publisher=Oxford University Press | year=2002 | id=ISBN 0-19-280310-7}}
* {{cite book | author=Stillman, Norman | year = 1975 | title = The Jews of Arab Lands: a History and Source Book | publisher = Jewish Publication Society of America | id = ISBN 0-8276-0198-0}}
</div>
 
== বহিঃসংযোগ ==
{{কমন্স|Muhammad}}
{{উইকিউক্তি}}
=== সাধারণ ===
* [http://www.pbs.org/muhammad মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জীবনের উপর গণপ্রচারমূলক অনুষ্ঠান]
* [http://encarta.msn.com/encyclopedia_761553918/Muhammad_(prophet).html/ এনকার্টা বিশ্বকোষ]
* [http://31.1911encyclopedia.org/M/MA/MAHOMET.htm 1911 বিশ্বকোষ]
 
=== মুসলিম রচিত ===
* [http://web.archive.org/web/20040625103910/http://www.hraic.org/hadith/ibn_ishaq.html#The%20earliest%20biography%20of%20Muhammad,%20by%20ibn%20Ishaq ইবনে ইসহাক প্রণীত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রাচীনতম জীবনী]
* [http://www.al-sunnah.com/nektar/ আর রাহীকুল মাখতুম] - বিস্তারিত আধুনিক জীবনী
* [http://www.quraan.com/index.aspx?tabindex=4&tabid=11&bid=7 আর রাহীকুল মাখতুম] - আগেরটির মতই তবে কিছুটা সহজে বুঝা যায়
* [http://www.theprophetmuhammad.org/ হারুন ইয়াহিয়া রচিত জীবনী]
* [http://www.usc.edu/dept/MSA/fundamentals/prophet/ মুহাম্মাদ (সাঃ) সম্বন্ধে]
* [http://www.alislam.org/urdu/pdf/SeeratKhatamunNabiyeen.pdf সীরাত খাতামুন নাবিয়্যিন] উর্দু জীবনী.
 
=== অমুসলিম রচিত ===
* [http://www.answering-islam.org.uk/Books/Muir/Life1/index.htm William Muir: The Life of Mahomet]
 
{{তথ্যছক-কুরআনে উল্লেখিত পয়গম্বরবৃন্দ}}
 
[[বিষয়শ্রেণী:মুহাম্মাদ]]
[[বিষয়শ্রেণী:ইসলাম ধর্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:ইসলামী ব্যক্তিত্ব]]
 
{{Link FA|ur}}
 
[[ace:Muhammad]]
[[af:Mohammed]]
[[als:Mohammed]]
[[an:Mahoma]]
[[ang:Muhammad]]
[[ar:محمد (رسول)]]
[[arc:ܡܘܚܡܕ]]
[[arz:محمد]]
[[ast:Mahoma]]
[[av:МухIаммад авараг]]
[[az:Məhəmməd peyğəmbər]]
[[ba:Мөхәммәт]]
[[bat-smg:Mahuomets]]
[[bcl:Muhammad]]
[[be:Магамет]]
[[be-x-old:Мухамад]]
[[bg:Мохамед]]
[[bi:Muhammed]]
[[br:Mohammed]]
[[bs:Muhamed]]
[[ca:Mahoma]]
[[ce:Мохьмад]]
[[ceb:Muhammad]]
[[ckb:موحەممەد]]
[[cs:Mohamed]]
[[cy:Muhammad]]
[[da:Muhammed]]
[[de:Mohammed]]
[[diq:Hz. Mıhemmed]]
[[dv:މުޙައްމަދުގެފާނު]]
[[el:Μωάμεθ]]
[[en:Muhammad]]
[[eo:Mohamedo]]
[[es:Mahoma]]
[[et:Muḩammad]]
[[eu:Mahoma]]
[[fa:محمد]]
[[fi:Muhammad]]
[[fiu-vro:Muhammad]]
[[fo:Muhammed]]
[[fr:Mahomet]]
[[fy:Mohammed]]
[[ga:Mahamad]]
[[gan:穆罕默德]]
[[gd:Muhammad]]
[[gl:Mahoma]]
[[gu:મુહંમદ]]
[[haw:Mohameka]]
[[he:מוחמד]]
[[hi:मुहम्मद]]
[[hif:Muhammad]]
[[hr:Muhamed]]
[[hu:Mohamed próféta]]
[[ia:Mahomet]]
[[id:Muhammad]]
[[io:Muhamad]]
[[is:Múhameð]]
[[it:Maometto]]
[[ja:ムハンマド・イブン=アブドゥッラーフ]]
[[jv:Muhammad]]
[[ka:მაჰმადი]]
[[kaa:Muxammed]]
[[kab:Muḥemmed]]
[[kk:Мұхаммед пайғамбар]]
[[kn:ಮೊಹಮ್ಮದ್]]
[[ko:무함마드]]
[[ku:Mihemed Pêxember]]
[[kw:Mahomm]]
[[la:Mahometus]]
[[lad:Muhamad]]
[[lbe:МухIаммад идавс]]
[[lmo:Maumèt]]
[[lt:Mahometas]]
[[lv:Muhameds]]
[[mhr:Мохаммад]]
[[mk:Мухамед]]
[[ml:മുഹമ്മദ്]]
[[mn:Мухамэд]]
[[mr:मोहम्मद पैगंबर]]
[[ms:Nabi Muhammad s.a.w.]]
[[mt:Muħammed]]
[[mwl:Maomé]]
[[nds-nl:Mohammed]]
[[nl:Mohammed]]
[[nn:Muhammed]]
[[no:Muhammed]]
[[oc:Maomet]]
[[pag:Muhammad]]
[[pl:Mahomet]]
[[pnb:محمد]]
[[ps:محمد صلی الله علیه وسلم]]
[[pt:Maomé]]
[[qu:Muhamad]]
[[ro:Mahomed]]
[[ru:Мухаммед]]
[[rue:Могамед]]
[[sa:मुहम्मद]]
[[sah:Муhаммед]]
[[scn:Maumettu]]
[[sco:Mohammad]]
[[sd:محمد]]
[[sh:Muhamed]]
[[simple:Muhammad]]
[[sk:Mohamed]]
[[sl:Mohamed]]
[[so:Nabi Muxamed S.C.W.]]
[[sq:Muhammedi]]
[[sr:Мухамед]]
[[su:Muhammad]]
[[sv:Muhammed]]