বাঘা যতীন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ragib (আলোচনা | অবদান)
Suvray (আলোচনা | অবদান)
উপ-শিরোনাম পরিবর্তন, "কয়েকটি পত্র" ও যতিচিহ্ন, দু'টি অনুচ্ছেদে তথ্যসূত্রে অস্পষ্টতা
১১৭ নং লাইন:
 
 
==যতীন মুখোপাধ্যায়ের কয়েকটি পত্র==
 
===যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কয়েকটি পত্রঃ-===
১২৩ নং লাইন:
[১৯১০ সালের ৪ঠা এপ্রিল তারিখে আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে দিদি '''বিনোদবালা''' দেবীকে লেখা]
 
{{cquote|
শ্রীশ্রীচরণকমলেষু-
 
'''দিদি''', আমার অসংখ্য প্রণাম জানিবেন। আপনার স্নেহাশীর্বাদী পত্র পাইয়া সমস্ত অবগত হইলাম।-আপনারা সকলে ভাল আছে জানিয়া সুখী হইলাম। আপনি আমার অসুখের সংবাদে ব্যস্ত হইয়াছেন, ব্যস্ত হইবেন না। আমি এক্ষণে সুস্থ হইয়াছি, তবে অসুখটা একটু বেশী হইয়াছিল তাই দুর্বল হইয়া পড়িয়াছিলাম, আবার শ্রীগুরুর কৃপায় আস্তে আস্তে সবল হইতেছি। যাহা হউক, ভগবানে আত্মসমর্পণ করিয়া তাঁহারই চরণে আমাকে নিবেদন করিয়া রাখুন, তিনি যেমন আমাকে শৈশব হইতে নানা বিপদে রক্ষা করিয়া আসিতেছেন, এস্থলেও তিনিই একমাত্র ভরসা। তিনি যাহাকে যত বেশী ভালবাসেন তাহাকে তত বেশী পরীক্ষা করেন এবং সেইজন্যই নানা বিপদের মুখে নিপাতিত করিয়া তাঁহারই অস্তিত্ব বুঝাইয়া দেন।- তিনি যাহা করিবেন তাহার উপর মানুষের বিন্দুমাত্র হাত নাই; মানুষ কেবল তাঁহাতে নির্ভর করিয়া পুরুষকার করিতে পারে; ফলাফল তাঁহারই হাতে। যাহা হউক আমার জন্য কোন চিন্তা করিবেন না। তাঁহার প্রতি চাহিয়া বুক বাঁধিয়া সংসারে অবস্থান করুন। আমাপেক্ষাও ভগবানের অধিক স্নেহ আপনার প্রতি, তাই আপনার পরীক্ষা আমাপেক্ষা অধিক ও কঠিনতর। যাহা হউক, তাঁহার দয়া ভুলিবেন না। অথবা তাঁহাকে অবিশ্বাস করিবেন না। ইন্দুকে ও অপর সকলকে এই পত্রই দেখাইবেন। মেজমামাকে আর একবার সাক্ষাৎ করিতে বলিবেন।-তাঁহারা সকলে কেমন আছেন?
 
শ্রীচরণে নিবেদনমিতি
১৩২ ⟶ ১৩৩ নং লাইন:
 
জ্যোতি
}}
 
 
১৩৮ ⟶ ১৪০ নং লাইন:
[১৯১০ সালের ২০শে অগাস্ট জেল থেকে দিদিকে এই পত্রটি লেখা]
 
{{cquote|
শ্রীশ্রীচরণকমলেষু-
 
'''দিদি''', আমার অসংখ্য প্রণাম জানিবেন। আপনার স্নেহাশীর্বাদী পত্র পাইয়া সমস্ত অবগত হইলাম এবং সকলেই শারীরিক কুশলে আছেন জানিয়া সুখী হইলাম।-খোকাদের লইয়া সর্বদা সাবধানে থাকিবেন। আমি আর সে বিষয়ে আপনাকে কি লিখিব?-আমার জন্য বিশেষ কোন চিন্তা করিবেন না-আমি শারীরিক ভাল আছি। মেজমামাকে মধ্যে মধ্যে পত্র লিখিব: তিনিই আপনদিগকে আমার সংবাদ লিখিবেন। কতদিনে মোকদ্দমা উঠিবে এখনও জানিতে পারি নাই।-যাহা হউক সেই সর্বমংগলময় পরম পিতার চরণের দিকে চাহিয়া আছি।-তিনি যে বিধান করেন, তাহাই তাঁহার আশীষ বলিয়া গ্রহণ করিব। তিনি আমাদের অমংগলের জন্য কখনই কিছু করেন না। আপাত দৃষ্টিতে যাহাকে অমংগল বলিয়া বোধ হয়, তাহারো পশ্চাতে কোন মহদুদ্দেশ্য নিহিত থাকে, যাহা ভ্রান্ত আমরা বুঝিতে পারি না। তাঁহার উপরে সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করিয়া প্রাণে বল ধরিয়া সময় প্রতীক্ষা করুন-অবশ্য নির্দোষীকে তিনি বিপন্মুক্ত করিবেন। যথাযোগ্য স্থানে আমার প্রণাম ও আশীষ দিবেন।
 
ইতি-
 
প্রণত সেবক জ্যোতি
}}
 
 
===১৯১৫ সালের মে মাসের পত্র===
 
[১৯১৫ সালের মে মাসে [[বালেশ্বর|বালেশ্বরের]] অজ্ঞাতবাস থেকে এই চিঠিটি দিদি '''বিনোদবালাকে''' লেখা]
 
{{cquote|
 
শ্রীশ্রীচরণকমলেষু-
 
'''দিদি''' আমার অসংখ্য প্রণাম জানিবেন। আমি বেশ ভাল স্থানে সর্বাংগীণ কুশলে আছি। আমার জন্য কোন চিন্তা করিবেন না। কর্মের নিমিত্ত বাহির হইয়াছি, ভবিষ্যতে সাক্ষাতাদি কর্মের উপরই নির্ভর করিতেছে। শীঘ্রও হইতে পারে, কিছু বিলম্বও হইতে পারে। তবে নিরাশ হইবার বা ভয়ের কোন কারণ দেখি না। সর্বদা স্মরণ রাখিবেন "ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুর্গতিং তাত গচ্ছতি"।-মার আশীর্বাদে সমস্ত বিপদ হইতে উদ্ধার হইয়াছি-তিনি সমস্ত কর্মে সর্বদা যেমন সাহায্য করিয়াছেন, এ বর্তমান অবস্থায়ও তেমনি সাহায্য করিবেন সন্দেহ নাই-তাঁহারই প্রেরণায় এ কর্ম-সমুদ্রে ঝাঁপাইয়াছি, তিনি কূলে লইবেন। আপনি যে মার সন্তান তাঁহার হৃদয়ের কথা স্মরণ করিয়া আপন হৃদয়ে বল রাখিয়া যে সকল রত্নগুলি আপনার নিকট আছে তাহাদের যাহাতে উদ্দেশ্যানুযায়ী কর্মের উপযোগী করিয়া ভবিষ্যতে মায়ের পূজায় অর্পণ করিতে পারেন, সেই চেষ্টা করিবেন। আপনি ব্যস্ত হইলে ইন্দুদের নিকট কি আশা করেন? আপনি ব্যস্ত হইবেন না। সমস্তই বুঝেন। সংসারে সমস্তই যে কত অস্থায়ী তাহা আপনি অনেক প্রকারে দেখিয়াছেন এবং বুঝিয়াছেন। এই অস্থায়ী সংসারে অস্থায়ী জীবন যে ধর্মার্থে বিসর্জন করিতে অবকাশ পায় সে ত ভাগ্যবান এবং তাহার সমস্ত শুভাকাংক্ষী আত্মীয়-স্বজন, বিশেষত তাহার মাতৃস্থানীয়া সহোদরা যদি স্থিরভাবে চিন্তা করিয়া দেখেন তাহা হইলে নিজেদের বংশের সৌভাগ্যের কথা বেশ উপলদ্ধি করিতে পারেন এবং ধর্মার্থে বহির্গত ব্যক্তির সাধনায় সিদ্ধির পূর্বে তাহার গৃহে প্রত্যাবর্তন কখনই বাঞ্ছনীয় মনে করেন না, বরং তাহার মন্ত্রের সাধন পথের সহায়তার নিমিত্ত তাহার অবর্তমানে গৃহে বুক বাঁধিয়া ভগবানে নির্ভরতা সহকারে পরস্পরের রক্ষণাবেক্ষণ ও শান্তিদান করাই তাহাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয় এবং এই শ্রেণীর ব্যক্তিরাই জগতে ধন্য এবং সার্থক মাতৃস্তন্য পান করিয়াছেন। হা-হুতাশ ত' সকলেই করিয়া থাকে, আপনি আমিও যদি তাহাই করি তবে আমরা আমাদের স্বর্গীয়া মাতৃদেবী শরৎশশীর গর্ভে জন্মিয়াছিলাম কেন? আমরা ত সাধারণের ন্যায় দুর্বল হৃদয় অবিশ্বাসী সামান্য মায়ের সন্তান নই-আমাদের মা জীবন ভরিয়া কি সকল ব্যাপার হাসিতে হাসিতে সহ্য করিয়া গিয়াছেন একবার ভাবিয়া দেখুন তা আর আজ তিনি জীবিত থাকিলে তিনি স্বয়ং আমাকে আমার কর্মে বরণ করিয়া লইতেন সন্দেহ নাই। তাঁহার অবর্তমানে যাহার হাতে আমাকে তিনি রাখিয়া গিয়াছিলেন, আমার সেই মাতৃস্বরূপিণী সহোদরা ও গুরুভগ্নীর কি করা কর্তব্য একটু ভাবিয়া দেখিবেন। আপনি ইতিপূর্বে একসময়ে কোন বিপদের সময় আমাকে লিখিয়াছেন, "আমাদের অপেক্ষা যিনি তোমাকে বেশি ভালবাসেন তিনিই সর্বদা তোমার কথা ভাবিতেছেন, আমরা তোমার নিমিত্ত চিন্তা করিয়া কি করিব।"-আপনার অবস্থা এতদিনে আরও উন্নত হওয়ার কথা। হৃদয়ের বল এখন আরও অধিক হইয়াছে আশা করা যায়। আপনি অনুগ্রহ করিয়া মন শান্ত করিয়া সসন্তান ইন্দুকে রক্ষা করিবেন। সন্তানগুলি যাহাতে মানুষ হয় তাহার চেষ্টার যেন কোন ত্রুটি না হয়। কখন কোন বিষয়ের প্রয়োজন হইলে ভাইদের কাহাকেও স্মরণ করিবেন এবং আমার মত জ্ঞান করিয়া প্রয়োজন জানাইবেন, অভাব থাকিবে না। কোথায় আছি জানিয়া প্রয়োজন নাই-পত্র পাইলেন তাহাও কাহাকে বলিবার প্রয়োজন নাই। প্রেরিত লোকের নিকট বক্তব্য যদি কিছু থাকে জানাইবেন। সমস্ত গুরুজনদিগকে প্রণাম ও আশীর্বাদভাজনগণকে স্নেহাশীষ দিবেন। স্মরণ রাখিবেন বিপদের সময় স্থৈর্য্য সহকারে বুদ্ধির আশ্রয় গ্রহণ করাই বিধেয়। পরমারাধ্য শ্রীগুরুদেবের চরণে সদা মতি রাখিবেন। তাঁহাকে পত্রাদি লিখিবেন।
 
শ্রীচরণে নিবেদন ইতি
১৬০ ⟶ ১৬৫ নং লাইন:
 
[[(অস্পষ্ট)]]
}}
 
 
===১৯১৫ সালের মে মাসে অজ্ঞাতবাস থেকে লেখা===