নির্বাচন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Bellayet (আলোচনা | অবদান)
+
Bellayet (আলোচনা | অবদান)
wikify
১ নং লাইন:
[[File:Election MG 3455.JPG|thumb|right|একটি [[ব্যালট বাক্স]]]]
নির্বাচন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগন প্রশাসনিক কাজের জন্য একজন প্রতিনিধিকে বেছে নেয়। [2] সপ্তদশ শতক থেকে আধুনিক প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচন একটি আবশ্যিক প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। [2]নির্বাচনের মাধ্যমে আইনসভার পদগুলি পূরণ করা হতে পারে, কখনও আবার কার্যনির্বাহী এবং বিচারব্যবস্থা ছাড়াও আঞ্চলিক ও স্থানীয় সরকারে প্রতিনিধি বাছাইও নির্বাচনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এই নির্বাচন প্রক্রিয়া আবার প্রয়োগ হয় বহু বেসরকারী সংস্থা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও। ক্লাব বা সমিতি থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও কর্পোরেশন বা নিগমেও এই প্রক্রিয়ার ব্যবহার করা হয়। আধুনিক গণতন্ত্রে প্রতিনিধি বাছাইয়ের উপায় হিসেবে নির্বাচনের সর্বজনীন ব্যবহার করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের আদি চেহারা এথেন্সে নির্বাচনকে যেভাবে ব্যবহার হতো তার তুলনায় এটি অনেকটাই বিপরীত। নির্বাচনকে শাসক গোষ্ঠীর একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হতো এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার বেশিরভাগ দপ্তরই পূরণ করা হতো বাছাইয়ের মাধ্যমে। এই নির্বাচন দায়িত্বভাগ করে দেওয়া বা অ্যালটমেন্ট নামেও পরিচিত ছিল, এর মাধ্যমেই পদাধিকারীদেরও বেছে নেওয়া হতো। যেখানে নির্বাচনের সুস্ঠু ব্যবস্থা নেই সেখানে সুষ্ঠু ব্যবস্থা চালু করা অথবা বর্তমান ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতাকে আরো বাড়ানোর প্রক্রিয়াকেই নির্বাচনী সংস্কার বলে বর্ণনা করা হয়। নির্বাচনের ফলাফল ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষণাকে (বিশেষ করে আগাম ফলাফল আন্দাজ করার বিষয়টি) সেফোলজি বলে। নির্বাচিত করা-র মানে হলো "বাছাই করা অথবা একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া[3] এবং কোনো কোনো সময় অন্য ধরনের ব্যালট ব্যবহার হলেও যেমন গণভোটে হয়ে থাকে, তাকেও নির্বাচন হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই গণভোট ব্যবস্থা রয়েছে। [4] ভাবাদর্শ ‘দ্য স্পিরিট অব লজ’ বইয়ের দ্বিতীয় খন্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ে মন্টেসকিউই বলেছেন যে প্রজাতন্ত্র অথবা গণতন্ত্র যে কোনো ক্ষেত্রের ভোটেই হয় দেশের প্রশাসক হও অথবা প্রশাসনের অধীনে থাকো —এই দুটি অবস্থার মধ্যেই পর্যায়ক্রমে ভোটারদের থাকতে হয়। নিজেদের দেশে কোন সরকার আসবে তা বাছাই করার ‘মালিক’বা ‘মাস্টার’ হিসেবে কাজ করে ভোটাররাই, ভোট দিয়ে একটি সার্বভৌম (অথবা শাসক) ব্যবস্থাকে চালু রাখে জনসাধারণই। ইতিহাস [5]
'''নির্বাচন''' হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগন প্রশাসনিক কাজের জন্য একজন প্রতিনিধিকে বেছে নেয়।<ref name = Brit> [http://www.britannica.com/EBchecked/topic/182308/election "Election (political science),"] Encyclpoedia Britanica Online. Accessed August 18, 2009</ref> সপ্তদশ শতক থেকে আধুনিক প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচন একটি আবশ্যিক প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।<ref name = Brit/> নির্বাচনের মাধ্যমে আইনসভার পদগুলি পূরণ করা হতে পারে, কখনও আবার কার্যনির্বাহী এবং বিচারব্যবস্থা ছাড়াও আঞ্চলিক ও স্থানীয় সরকারে প্রতিনিধি বাছাইও নির্বাচনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এই নির্বাচন প্রক্রিয়া আবার প্রয়োগ হয় বহু বেসরকারী সংস্থা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও। ক্লাব বা সমিতি থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও কর্পোরেশন বা নিগমেও এই প্রক্রিয়ার ব্যবহার করা হয়।
 
আধুনিক গণতন্ত্রে প্রতিনিধি বাছাইয়ের উপায় হিসেবে নির্বাচনের সর্বজনীন ব্যবহার করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের আদি চেহারা এথেন্সে নির্বাচনকে যেভাবে ব্যবহার হতো তার তুলনায় এটি অনেকটাই বিপরীত। নির্বাচনকে শাসক গোষ্ঠীর একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হতো এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার বেশিরভাগ দপ্তরই পূরণ করা হতো বাছাইয়ের মাধ্যমে। এই নির্বাচন দায়িত্বভাগ করে দেওয়া বা অ্যালটমেন্ট নামেও পরিচিত ছিল, এর মাধ্যমেই পদাধিকারীদেরও বেছে নেওয়া হতো। যেখানে নির্বাচনের সুস্ঠু ব্যবস্থা নেই সেখানে সুষ্ঠু ব্যবস্থা চালু করা অথবা বর্তমান ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতাকে আরো বাড়ানোর প্রক্রিয়াকেই নির্বাচনী সংস্কার বলে বর্ণনা করা হয়।
 
নির্বাচনের ফলাফল ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষণাকে (বিশেষ করে আগাম ফলাফল আন্দাজ করার বিষয়টি) ''সেফোলজি'' বলে। নির্বাচিত করা-র মানে হলো "বাছাই করা অথবা একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া"<ref>[http://en.wiktionary.org/wiki/elect Wiktionary - Elect]</ref> এবং কোনো কোনো সময় অন্য ধরনের ব্যালট ব্যবহার হলেও যেমন গণভোটে হয়ে থাকে, তাকেও নির্বাচন হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই গণভোট ব্যবস্থা রয়েছে।
 
== ভাবাদর্শ ==
 
‘''দ্য স্পিরিট অব লজ''’ বইয়ের দ্বিতীয় খন্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ে মন্টেসকিউই বলেছেন যে প্রজাতন্ত্র অথবা গণতন্ত্র যে কোনো ক্ষেত্রের ভোটেই হয় দেশের প্রশাসক হও অথবা প্রশাসনের অধীনে থাকো —এই দুটি অবস্থার মধ্যেই পর্যায়ক্রমে ভোটারদের থাকতে হয়। নিজেদের দেশে কোন সরকার আসবে তা বাছাই করার ‘মালিক’বা ‘মাস্টার’ হিসেবে কাজ করে ভোটাররাই, ভোট দিয়ে একটি সার্বভৌম (অথবা শাসক) ব্যবস্থাকে চালু রাখে জনসাধারণই।
 
== ইতিহাস ==
 
সভ্যতার ইতিহাসের প্রাচীন কাল থেকেই প্রাচীন গ্রীস ও প্রাচীন রোমে নির্বাচনের ব্যবহার হয়ে আসছে এবং গোটা মধ্যযুগে পবিত্র রোমান সম্রাট ও পোপের মত শাসক বাছাই করতেও নির্বাচনের ব্যবহার হতো।[6] প্রাচীন ভারতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজারা বাছাই করতেন রাজাদের। প্রাচীন ভারতের খালিফ, উঠমান এবং আলি, মধ্যযুগের গোড়ার দিকে রশিদুন খলিফৎ[7] এবং বাংলার মধ্যযুগের গোড়ার দিকে পাল রাজাদের মধ্যে গোপালকে বাছাই করতে এই নির্বাচন করা হয়েছিল।[8] তবে আধুনিক ‘নির্বাচন’ হলো জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচন। সপ্তদশ শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে যখন প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের ধারণা এলো তার আগে পর্যন্ত অবশ্য জনসাধারণকে দিয়ে সরকারী পদাধিকারী বাছাইয়ের এই আধুনিক ‘নির্বাচন’ বিষয়টির আবির্ভাবই হয়নি।[9] [10] নির্বাচনের ইতিহাসের অনেকটা জুড়েই রয়েছে ভোটাধিকারের প্রশ্নগুলি, বিশেষ করে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির ভোটাধিকার। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের সংস্কৃতিতে প্রভাবশালী গোষ্ঠী ছিল পুরুষরাই, নির্বাচকমণ্ডলীতেও তাই এদেরই প্রাধান্য থাকতো, অন্যান্য বহু দেশেও এই একই ধারা চলে আসছিল।[11] গ্রেট ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলিতে শুরুর দিকের নির্বাচনগুলিতে জমিদার অথবা শাসক শ্রেণীর পুরুষদের প্রাধান্য ছিল।[12] ১৯২০ সাল পর্যন্ত অবশ্য পশ্চিম ইউরোপের সমস্ত দেশ এবং উত্তর আমেরিকার গণতন্ত্রে সর্বজনীনভাবেই পুরুষ ভোটাধিকার চালু ছিল এবং তার পর থেকেই বহু দেশ মহিলাদের ভোটাধিকার দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল। [13]পুরুষদের সর্বজনীন ভোটাধিকারের কথা আইনগতভাবে সিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময়েই অবাধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বাধা অন্তরায় সৃষ্টি করত (নাগরিক অধিকার আন্দোলন দেখুন)। [14] কার্যকারিতাসমূহ কে নির্বাচিত যে সকল সরকারি পদের জন্য নির্বাচন হচ্ছে স্থানীয় ভিত্তিতে তা বিভিন্নরকমের হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রেও কিছু পদ নির্বাচনের মাধ্যমে পূরণ করা হয় না। বিশেষতঃ যেগুলির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা অথবা ঔত্কর্ষের প্রয়োজন আছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা রক্ষার স্বার্থে নির্বাচনের পরিবর্তে সচরাচর সরাসরি তাদের নিয়োগ করা হয়। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিছু বিচারপতি নির্বাচিতই হন, আবার প্রাচীন এথেন্সে সামরিক প্রধান (মিলিটারি জেনারেল)কে নির্বাচনে মাধ্যমেই বেছে নেওয়া হতো। উদাহরণ হিসেবে সোভিয়েত গণতন্ত্রের কিছু ক্ষেত্রে নির্বাচকমণ্ডলী এবং নির্বাচিতদের মাঝামাঝি অবস্থানে ভোটারদের একটি স্তর থাকত। যাইহোক, অধিকাংশ প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে এই অপ্রত্যক্ষ্যতার স্তরটি আনুষ্ঠানিকতার থেকে বেশি কিছু নয়। উদাহরণ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে নির্বাচিত হন এবং ওয়েস্টমিনস্টার ব্যবস্থায়, রাষ্ট্রপ্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নেন (এবং বাস্তবে আইনসভা অথবা তাদের দলই এটা করে থাকে)। নির্বাচনের ধরনসমূহ