বরাহমিহির: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Xqbot (আলোচনা | অবদান)
রোবট পরিবর্তন সাধন করছে: hu:Varáhamihira; cosmetic changes
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
+
১ নং লাইন:
'''বরাহমিহির''' [[প্রাচীন ভারত|প্রাচীন ভারতের]] গুপ্ত সাম্রাজ্যের সমসাময়িক (আনুমানিক [[৫০৫]] - [[৫৮৭]]) একজন বিখ্যাত দার্শনিক, [[জ্যোতির্বিজ্ঞান|জ্যোতির্বিজ্ঞানী]], এবংগণিতবিদ ও [[কবিতা|কবি]]। তিনি ''পঞ্চসিদ্ধান্তিকা'' নামের একটি মহাসংকলনগ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তার জীবদ্দশার সময়কার গ্রিক, মিশরীয়, রোমান ও ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের সার লিপিবদ্ধ হয়েছে। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বিজ্ঞানীদের অন্যতম। জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও [[গণিতশাস্ত্র]], [[পূর্তবিদ্যা]], [[আবহবিদ্যা]], এবং [[স্থাপত্যবিদ্যা|স্থাপত্যবিদ্যায়]] পণ্ডিত ছিলেন। তিনি কলা ও বিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত শাখায় ব্যাপক অবদান রাখেন। উদ্ভিদবিদ্যা থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান থেকে পুরাকৌশল --- জ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রেই ছিল তাঁর স্বচ্ছন্দ পদচারণা।
 
ভারতের নয়াদিল্লীতে অবস্থিত সংসদ ভবনে বরাহমিহিরের সম্মানে একটি দেয়ালচিত্র অংকিত হয়েছে।
 
== জীবন ও কর্ম ==
এই মনীষীর জন্ম [[ভারত|ভারতের]] [[অবন্তিনগর|অবন্তিনগরে]]। রাজা [[বিক্রমাদিত্য|বিক্রমাদিত্যের]] সভার নবরত্নের অন্যতম হিসেবে তিনি স্বীকৃত। [[ভারতীয় পঞ্জিকা|ভারতীয় পঞ্জিকার]] অন্যতম সংস্কারক ছিলেন তিনি। তিনিই বছর গণনার সময় [[বৈশাখ|বেশাখকে]] প্রথম মাস হিসেবে ধরার প্রচলন করেন। আগে [[চৈত্র]] এবং [[বৈশাখ|বৈশাখকে]] [[বসন্ত ঋতু|বসন্ত ঋতুর]] অন্তর্গত ধরা হতো। পৃথিবীর আকার এবং আকৃতি সম্বন্ধে তার সঠিক ধারণা ছিল। তার জন্ম [[৫৮৭]] ধরা হলেও কারও কারও মতে তা [[৫৭৮]]।
 
বরাহমিহির ছিলেন শক জাতিভুক্ত। সেসময় আফগানিস্তান, পাঞ্জাব, সিন্ধু ও রাজপুতানা (বর্তমান রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ) নিয়ে গঠিত এক বিরাট এলাকা জুড়ে শকস্তান নামের এক রাজ্য অবস্থিত ছিল। শকরা ছিল মূলত পূর্ব [[ইরান]] থেকে আগত একটি গোত্র। মিহির নামটি ফার্সি "মিথ্‌রা" শব্দ থেকে এসেছে। ভারতের প্রাচীন মথুরা রাজ্যের নামও এই ফার্সি শব্দটি থেকে এসেছে।
== গ্রন্থাবলী ==
 
তার রচিত বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে:
== গ্রন্থাবলি ==
বরাহমিহির তিনটি প্রধান গ্রন্থ রচনা করেন: ''পঞ্চসিদ্ধান্তিকা'', ''বৃহৎসংহিতা'' ও ''বৃহজ্জাতক''।
* ''[[পঞ্চসিদ্ধান্তিকা]];'': [[৫৫০]] খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়। পাঁচটাপাঁচটি খন্ডখণ্ড নিয়ে গঠিত এই বইটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং [[জ্যোতিষশাস্ত্র|জ্যোতিষশাস্ত্রের]] সংক্ষিপ্তসার বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে। পাঁচটি খন্ডখণ্ড হচ্ছ: সূর্যসিদ্ধান্ত, রোমকসিদ্ধান্ত, পৌলিশসিদ্ধান্ত, পৈতামহসিদ্ধান্ত এবং বাশিষ্ঠসিদ্ধান্ত। আরব দার্শনিক [[আল খোয়ারিজমি]] সূর্যসিদ্ধান্ত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ''আল জিবরজাবর ওয় আল মুকাবলা'' রচনা করেন বলে মনে করা হয়।
* ''[[বৃহৎসংহিতা]];'': একটি প্রসিদ্ধ জ্যোতিষ গ্রন্থ যা পদ্য আকারে লিখা। এতে তিনি জ্যোতিষী দৃষ্টিকোণ থেকে বহু পাথরের বিবরণ এবং পাক-ভারতের ভৌগলিক তথ্য সন্নিবেশিত করেন। এছাড়াও এতে [[সূর্য]] ও [[চন্দ্র|চন্দ্রের]] গতি ও প্রভাব, আবহবিদ্যা, [[স্থাপত্য]] এবং পূর্তবিদ্যার নানা বিষয় প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচিত হয়েছে। এই বইয়েই তিনি [[ব্রজলেপ]] নামে একটি বস্তুর প্রস্তুতপ্রণালী ব্যাখ্যা করেছেন যা আধুনিককালের [[সিমেন্ট|সিমেন্টের]] সমগোত্রীয় ছিল। সে সময় ভারতে বরাহমিহির উদ্ভাবিত এই ব্রজলেপ দিয়েই বড় বড় দালান কোঠার ইটের গাঁথুনি তৈরীতে ব্যবহৃত হতো।
* ''বৃহজ্জাতক'': জ্যোতিষবিদ্যার উপর একটি গ্রন্থ।
 
==জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষবিদ্যায় বরাহমিহিরের অবদান==
বরাহমিহিরকে আধুনিক ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তাঁর আগে ভারতবর্ষের জ্যোতিবির্জ্ঞানের মূল গ্রন্থ ছিল ''বেদাঙ্গ জ্যোতিষ'', যা খ্রিস্টপূর্ব ১৪শ শতকে রচিত হয়েছিল। এটি অনুসারে ৬৭টি চান্দ্র মাস নিয়ে গঠিত পাঁচ বছরে একটি যুগ হয় এবং এটিতে রাহু ও কেতু নামের দুইটি ধারণা দিয়ে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। ''বেদাঙ্গ জ্যোতিষ'' প্রায় ১৫০০ বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রধান আকরগ্রন্থ (reference) ছিল। কিন্তু বরাহমিহির তাঁর সূর্যসিদ্ধান্ত নামক রচনাতে যে সূর্যকেন্দ্রিক ব্যবস্থার কথা বর্ণনা করেন, তা ছিল অনেক বেশি সঠিক। ফলে এর পর থেকে ভারতে তাঁর বর্ণিত ব্যবস্থাটিই প্রচলিত হয়ে যায়।
 
পশ্চিমা জ্যোতির্বিজ্ঞানে বরাহমিহিরের জ্ঞান ছিল অনুপুঙ্খ। তার মহাগ্রন্থ ''পঞ্চসিদ্ধান্তিকা''য় তিনি প্রথমে ভারতীয় স্থানীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ধারাগুলির বর্ণনা দেন এবং শেষের দুইটি খণ্ডে পশ্চিমা জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করেন। এগুলিতে গ্রিক ও আলেকজান্দ্রীয় ঘরানার গণনা, এমনকি টলেমীয় গাণিতিক সারণি ও ছকের পূর্ণাঙ্গ রূপ স্থান পেয়েছে।
 
বরাহমিহিরের রচনাবলিতে খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকের ভারতবর্ষের একটি বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে তাঁর মূল আকর্ষণ ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষবিদ্যার প্রতি। তিনি বারংবার জ্যোতিষীবিদ্যার গুরুত্বের উপর লেখেন এবং এই বিষয়ে বহু নিবন্ধ রচনা করেন, যেমন শকুন-বিষয়ক রচনাবলি এবং রাশিগণনার উপর দুইটি বিখ্যাত গ্রন্থ ''বৃহজ্জাতক'' ও ''লঘুজাতক''।
* [[পঞ্চসিদ্ধান্তিকা]]; [[৫৫০]] খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়। পাঁচটা খন্ড নিয়ে গঠিত এই বইটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং [[জ্যোতিষশাস্ত্র|জ্যোতিষশাস্ত্রের]] সংক্ষিপ্তসার বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে। পাঁচটি খন্ড হচ্ছ: সূর্যসিদ্ধান্ত, রোমকসিদ্ধান্ত, পৌলিশসিদ্ধান্ত, পৈতামহসিদ্ধান্ত এবং বাশিষ্ঠসিদ্ধান্ত। আরব দার্শনিক [[আল খোয়ারিজমি]] সূর্যসিদ্ধান্ত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আল জিবর ব আল মুকাবলা রচনা করেন বলে মনে করা হয়।
* [[বৃহৎসংহিতা]]; একটি প্রসিদ্ধ জ্যোতিষ গ্রন্থ যা পদ্য আকারে লিখা। এতে তিনি জ্যোতিষী দৃষ্টিকোণ থেকে বহু পাথরের বিবরণ এবং পাক-ভারতের ভৌগলিক তথ্য সন্নিবেশিত করেন। এছাড়াও এতে [[সূর্য]] ও [[চন্দ্র|চন্দ্রের]] গতি ও প্রভাব, আবহবিদ্যা, [[স্থাপত্য]] এবং পূর্তবিদ্যার নানা বিষয় প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচিত হয়েছে। এই বইয়েই তিনি [[ব্রজলেপ]] নামে একটি বস্তুর প্রস্তুতপ্রণালী ব্যাখ্যা করেছেন যা আধুনিককালের [[সিমেন্ট|সিমেন্টের]] সমগোত্রীয় ছিল। সে সময় ভারতে বরাহমিহির উদ্ভাবিত এই ব্রজলেপ দিয়েই বড় বড় দালান কোঠার ইটের গাঁথুনি তৈরীতে ব্যবহৃত হতো।
 
== তথ্যসূত্র ==
* বাংলাপিডিয়া নিবন্ধ
{{অসম্পূর্ণ}}
 
[[বিষয়শ্রেণী:৫০৫-এ জন্ম]]