ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Luckas-bot (আলোচনা | অবদান)
রোবট যোগ করছে: az:Qrip
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে: কারণ, আচরণ, দক্ষিণ, খ্রিস্টাব্দ, প্রাইমারি, পরিমাণ, আরবি, ফরাসি, ফার্সি, গ্রিক
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Flu und legende color c.jpg|thumb|right|ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস]]
'''ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস''' ([[:en:Influenza Virus|Influenza Virus]]) অর্থোমিক্সোভিরিডি ([[:en:Orthomyxoviridae|Orthomyxoviridae]]) ফ্যামিলির একটি [[ভাইরাস]], যা ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জন্য দায়ী। বিভিন্ন সময়ে এটা লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারনকারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে এসেছে। [[১৯১৮]] থেকে [[১৯১৯]] সাল সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে বিশ্বব্যাপি প্রায় ৫ কোটি মানুষ মারা যায়। ভয়াবহ এই মহামারীকে তখন নাম দেওয়া হয় "স্প্যানিশ ফ্লু" ([[:en:Spanish Flu|Spanish Flu]])। এরপর বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উদ্ভব হয়েছে যা বিশ্বব্যাপি মানব মৃত্যুর কারনকারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। একই ভাইরাসের বিভিন্ন রূপ ([[:en:Strain|Strain]]) মানুষ, পাখি, শূকর প্রভৃতি জীব প্রজাতীকে ([[:en:Species|Species]]) নিজের পোষক ([[:en:Viral Host|Host]]) রূপে ব্যবহার করতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সব চাইতে ভয়াবহ ক্ষমতা হচ্ছে নিজের পোষক পরিবর্তনের ক্ষমতা। নতুন পোষক প্রজাতীতে ইনফ্লুয়েঞ্জার বিরুদ্ধে প্রতিরোধক ব্যবস্থা না থাকায় সেটি দ্রুত শরীরে স্থান করে নেয়, প্রজাতীর অনান্য সদস্যদের আক্রান্ত করে এবং পোষকের মৃত্যুর কারনকারণ হিসেবে নিজেকে প্রতি|ষ্ঠিত করে।
 
== সংক্রমনের ইতিহাস ==
[[গ্রীকগ্রিক]] বিজ্ঞানী [[হিপোক্রেটিস]] ([[:en:Hipocretes|Hipocretes]])প্রথম ২৪,০০ বছর আগে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের লক্ষণ লিপিবদ্ধ করেন। এরপর বিশ্বব্যাপি ইনফ্লুয়েঞ্জা ঘটিত নানা মহামারী ঘটার প্রমান রয়েছে। সবচাইতে ভয়ঙ্কর মহামারী হয়েছিল [[১৯১৮]]-[[১৯১৯]] সালের দিকে। তখন বিশ্বব্যাপি সংঘটিত এই মহামারীর ([[:en:Pendemic|Pendemic]]) নাম দেওয়া হয় "স্প্যানিশ ফ্লু"([[:en:Spanish Flu|Spanish Flu]])। এই একবছরে প্রায় ৫ কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটে। এর জন্য দায়ী ছিল ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের টাইপ এ (Type A, H1N1)। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা (Type A H2N2) [[১৯৫৭]]-[[১৯৫৮]] এর দিকে এশিয়াতে একটি মহামারীতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ মানুষ মারা যায়। এই মহামারীর নাম ছিল "[[এশিয়ান ফ্লু]]"([[:en:Asian flu|Asian Flu]])। [[১৯৬৮]]-[[১৯৬৯]] এ H3N2 ঘটিত মহামারিতে ৭.৫ থেকে ১০ লক্ষের মত মানুষ মারা যায়।
 
নতুন সহস্রাব্দে ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাসের নতুন যে ধরন দেখা যায় তা হল H5N1, যা এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা নামে ব্যাপক পরিচিত পায়। মানুষের তেমন একটা ক্ষতি না করলেও পাখি হতে উদ্ভব হওয়ায় কারনেকারণে ব্যাপক সংখ্যাক মুরগী এই সময় হত্যা করা হয়। এতে ব্যবসা বানিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অতি সম্প্রতি (এপ্রিল ২০০৯) [[মেক্সিকো|মেক্সিকোতে]] শূকর হতে উদ্ভব হওয়া সোয়াইন ফ্লুতে বিশ্বব্যাপি কয়েকটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এটি পুরোনো H1N1 ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস যার বিরুদ্ধে মানুষের কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এই ভাইরাসের উদ্ভব নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তিত।
 
== ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ধরন ==
তিন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হল টাইপ এ, বি ও সি (A, B, C)। টাইপ এ পাওয়া যা পাখি, শূকর, ঘোড়া এবং সীলের। এগুলোর মাঝে ইনফ্লুয়েঞ্জা এ সব চাইতে ভয়ংকর। বিশ্বব্যাপি ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাস কয়েকটি মহামারীর কারনকারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ভাইরাস মাঝে মাঝে কিছু মহামারীর জন্য দায়ী হলেও ইনফ্লুয়েঞ্জা সি ভাইরাস তেমন ক্ষতিকর নয়। <ref>Orthomyxoviruses (Influenza Virus); In: Medical Microbiology (Geo. F. Brooks, Janet S. Butel, Stephen A. Morse); 22th Edition; page:466-467</ref>
== ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের গঠন ==
=== ভাইরাস কনিকার গঠন ===
৩১ নং লাইন:
== সংক্রমন ও ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধি ==
 
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস আক্রান্ত মানুষ অথবা প্রানীর হাচি বা কাশির মাধ্যমে নির্গত কণার (Aerosol) দ্বারা ছড়ায়। এই কণা গুলোকে ড্রপলেটও (Droplet) বলা হয় কারনকারণ এগুলোর ব্যাস প্রায় ১০ মাইক্রোমিটার হয়ে থাকে (10 µm)। ছোট ছোট এই কণা গুলো বাতাসের ভাসতে পারে এবং এভাবেই আশে পাশের মানুষ বা প্রাণীকে আক্রান্ত করে।
 
যখন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস সুস্থ প্রাণীর (মানুষ, শূকর, পাখি প্রভৃতি) শ্বসনযন্ত্রের উপরের অংশে পৌছে ([[:en:Upper respiratory tract|Upper respiratory tract]]) সেখানের এপিথেলিয়াল (Epithelial/আবরনী) কোষের রিসেপ্টর অণুর সাথে ভাইরাস পৃষ্টের হিমাগ্লুটিনিন (Hemagglutinin) প্রোটিনের সংযোগ স্থাপিত হয়। এই হিমাগ্লুটিনিন এখানে লিগান্ড হিসেবে কাজ করে। দেহের কোন কোষ পৃষ্টের যে অণুর সাথে বাহির থেকে আসা অন্য বস্তুর (কোন অনু, ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস প্রভৃতি) সংযোগ হয় তাকে রিসেপ্টর (Receptor) বলা হয়। আর বাহির থেকে আসা বস্তুর যে অংশ রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয় তাকে বলে লিগান্ড (Ligand)। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ক্ষেত্রে এই রিসেপ্টর হচ্ছে আপার রেস্পিরেটরি ট্রাক্টের এপিথেলিয়াল কোষের সায়ালিক এসিড ([[:en:Sialic Acid|Sialic Acid]])।
৩৭ নং লাইন:
রিসেপ্টর-লিগান্ডের সংযোগের পরপরই ভাইরাসের এনভেলপ এবং প্রানীর শ্বাসনালীর এপিথেলিয়াল কোষের কোষ ঝিল্লীর ([[:en:Cell Membrane|Cell Membrane]]) মিলে যায় (Fusion)। ফলে ভাইরাসটি প্রানীকোষের অভ্যন্তরে এন্ডোসাইটোসিসের ([[:en:Endocytosis|Endocytosis]]) মাধ্যমে প্রবেশ করে।
 
প্রানী কোষে প্রবেশের পর পর ভাইরাস কণিকার এক একটি অংশ খুলে আলাদা হয়ে যায় (Uncoating)। ভাইরাসের নিউক্লিক এসিড (Nucleic Acid) বা আরএনএ (RNA) প্রানী কোষের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করে এবং নিজস্ব অনুলিপি তৈরি করতে থাকে (Replication)। কিছু নতুন আরএনএ প্রাণী কোষের নিউক্লিয়াস হতে সাইটোপ্লাজমে ([[:en:Cytoplasm|Cytoplasm]]) প্রবেশ করে এবং ভাইরাস কণিকার অনান্য অংশ গুলো আরো বেশি পরিমানেপরিমাণে তৈরি করতে থাকে। এক পর্যায়ে ভাইরাস দেহের উপাদান গুলো একত্রিত হয়ে (Assembly) নতুন ভাইরাস কনিকার সৃষ্টি করে। পরিশেষে ভাইরাসের নিউরামিনিডেজ (Neuraminidase) [[এনজাইম|এনজাইমের]] ([[:en:Enzyme|Enzyme]]) ক্রিয়ায় প্রানী কোষের কোষ ঝিল্লী ভেদ করে নতুন নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস (Progeny) বেরিয়ে আসে। এইক্ষেত্রে আক্রান্ত প্রাণী কোষটি কিন্তু ফেটে (lysis) যায় না।
 
নতুন ভাইরাসগুলো নির্গত হয়ে আশে পাশে যেই সব কোষের গায়ে সায়ালিক এসিড রিসেপ্টর পায় সেগুলোকে আবার আক্রমন করে এবং একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি হয়।