সূরা আনআম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Mazhar Zarif (আলোচনা | অবদান) |
Yahia.barie (আলোচনা | অবদান) তথ্যসূত্র |
||
২৩ নং লাইন:
}}
'''সূরা আল আনআম''' ([[আরবি|আরবি ভাষায়]]: سورة الأنعام, "অর্থ পশু") [[মুসলমান|মুসলমানদের]] ধর্মীয় গ্রন্থ [[কুরআন|কুরআনের]] ৬ নম্বর [[সূরা]], এর আয়াত সংখ্যা ১৬৫টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ২০টি। এই সূরাটি [[মক্কা|মক্কায়]] অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাতে [[আল্লাহ|আল্লাহর]] একত্ববাদ, পূণরুত্থান, জান্নাত এবং জাহান্নাম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
== নামকরণ ==
এ সূরারা ১৬ ও ১৭ রুকূতে কোন কোন আন’আমের (গৃহপালিত পশু) হারাম হওয়া এবং কোন কোনটির হালাল হওয়া সম্পর্কিত আরববাসিদের কাল্পনিক ও কুসংস্কারমূলক ধারণা বিশ্বাসকে খণ্ডন করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে এ সূরাকে আল আন’আম নামকরণ করা হয়েছে।
== নাযিল হওয়ার সময়-কাল ==
ইবনে আব্বাসের বর্ণনা মতে এ সম্পূর্ণ সূরাটি একই সাথে মক্কায় নাযিল হয়েছিল। হযরত মূআয ইবনে জাবালের চাচাত বোন হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ বলেন, [[মুহাম্মাদ|রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]] উটনীর পিঠে সওয়ার থাকা অবস্থায় এ সূরাটি নাযিল হতে থাকে। তখন আমি তাঁর উটনীর লাগাম ধরে ছিলাম। বোঝার ভারে উটনীর অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে ছিল যেন মনে হচ্ছিল এই বুঝি তার হাড়গোড় ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। হাদীসে একথাও সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে, যে রাতে এ সূরাটি নাযিল হয় সে রাতেই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটিকে লিপিবদ্ধ করান।
এর বিষয় বস্তু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে সুস্পষ্টভাবে মনে হয়, এ সূরাটি মক্কী যুগের শেষের দিকে নাযিল হয়ে থাকবে। হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদের রেওয়াতটিও একথার সত্যতা প্রমাণ করে। কারণ তিনি ছিলেন আনসারদের অন্তরভুক্ত। হিজরতের পরে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। যদি ইসলাম গ্রহণ করার আগে তিনি নিছক ভক্তি-শ্রদ্ধার কারণে মক্কায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চিতভাবে হয়ে থাকবেন তাঁর মক্কায় অবস্থানের শেষ বছরে। এর আগে ইয়াসরেববাসীদের সাথে তাঁর সম্পর্ক এত বেশী ঘনিষ্ঠ হয়নি যার ফলে তাদের একটি মহিলা তার খেদমতে হাযির হয়ে যেতে পারে।▼
▲এর বিষয় বস্তু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে সুস্পষ্টভাবে মনে হয়, এ সূরাটি মক্কী যুগের শেষের দিকে নাযিল হয়ে থাকবে। হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদের রেওয়াতটিও একথার সত্যতা প্রমাণ করে। কারণ তিনি ছিলেন আনসারদের অন্তরভুক্ত। হিজরতের পরে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। যদি ইসলাম গ্রহণ করার আগে তিনি নিছক ভক্তি-শ্রদ্ধার কারণে মক্কায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চিতভাবে হয়ে থাকবেন তাঁর মক্কায় অবস্থানের শেষ বছরে। এর আগে ইয়াসরেববাসীদের সাথে তাঁর সম্পর্ক এত বেশী ঘনিষ্ঠ হয়নি যার ফলে তাদের একটি মহিলা তার খেদমতে হাযির হয়ে যেতে পারে।<ref name="englishtafsir"></ref>
== নাযিল হওয়ার উপলক্ষ ==
সূরাটির নাযিল হওয়ার সময়-কাল নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পর আমরা সহজেই এর প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি ফেরাতে পারি। আল্লাহর রসূল যখন মানুষকে ইসলামের দিকে দেওয়াত দেবার কাজ শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে বারোটি বছর অতীত হয়ে গিয়েছিল। কুরাইশদের প্রতিবন্ধকতা, জুলুম ও নির্যাতন চরমে পৌঁছে গিয়েছিল। ইসলাম গ্রহণকারীদের একটি অংশ তাদের অত্যাচার নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে দেশ ত্যাগ করেছিল। তারা হাবশায় ([[ইথিওপিয়া
== আলোচ্য বিষয় ==
এই সূরার আলোচ্য বিষয়গুলোকে প্রধান সাতটি শিরোনামে ভাগ করা যেতে পারেঃ<ref name="englishtafsir">[http://www.englishtafsir.com/Quran/6/index.html www.englishtafsir.com]</ref>
▲দুইঃ আখেরাতে বিশ্বাসের প্রচার ও দুনিয়ার জীবনটাই সবকিছু এ ভুল চিন্তার অপনোদন।
▲তিনঃ জাহেলীয়াতের যে সমস্ত ভ্রান্ত কাল্পনিক বিশ্বাস ও কুসংস্কারে লোকেরা ডুবে ছিল তার প্রতিবাদ করা।
▲চারঃ যেসব বড় বড় নৈতিক বিধানের ভিত্তিতে ইসলাম তার সমাজ কাঠামো গড়ে তুলতে চায় সেগুলো শিক্ষা দেয়া।
▲পাঁচঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর দাওয়াতের বিরুদ্ধে উত্থাপিত লোকদের বিভিন্ন আপত্তি ও প্রশ্নের জবাব ।
▲ছয়ঃ সুদীর্ঘ প্রচেষ্টা ও সাধনা সত্ত্বেও দাওয়াত ফলপ্রসূ না হবার কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম ও সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে যে অস্থিরতা ও হতাশাজনক অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছিল সে জন্য তাদেরকে সান্ত্বনা দেয়া।
▲সাতঃ অস্বীকারকারী ও বিরোধী পক্ষকে তাদের গাফলতি, বিহ্বলতা ও অজ্ঞানতা প্রসূত আত্মহত্যার কারণে উপদেশ দেয়া, ভয় দখানো ও সতর্ক করা।
কিন্তু এখানে যে ভাষণ দেয়া হয়েছিল তাতে এক একটি শিরোনামের আওতায় আলাদা আলাদাভাবে একই জায়গায় পূর্ণাঙ্গরূপে আলোচনা করার রীতি অনুসৃত হয়নি। বরং ভাষণ এগিয়ে চলেছে নদীর স্রোতের মতো মুক্ত অবাধ বেগে আর তার মাঝখানে এ শিরোনামগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ভেসে উঠেছে এবং প্রতিবারেই নতুন নতুন ভংগীতে এর ওপর আলোচনা করা হয়েছে।
== মক্কী জীবনের বিভিন্ন পর্যায় ==
এখানে পাঠকের সামনে সর্বপ্রথম একটি বিস্তারিত মক্কী সূরা আসছে। তাই এ
মাদানী সূরাগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলোর নাযিলের সময়কাল আমাদের জানা আছে অথবা সামান্য চেষ্টা-পরিশ্রম করলে তার সময়-কাল চিহ্নিত করে নেয়া যেতে পারে। এমনকি সেসব সূরার বহু সংখ্যক আয়াতের পর্যন্ত নাযিলের উপলক্ষ ও কারণ নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়াতে পাওয়া যায়। কিন্তু মক্কী সূরাগুলো সম্কর্কে এতটা বিস্তারিত তথ্য–উপকরণ আমাদের কাছে নেই। খুব কম সংখ্যক সূরা এমন রয়েছে যার নাযিলের সময়কাল ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কিত নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়াত পাওয়া যায়। কারণ মাদানী যুগের তুলনায় মক্কী যুগের ইতিহাসে খুটিনাটি বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা কম। তাই মক্কী সূরাগুলোর ব্যাপারে আমাদের ঐতিহাসিক সাক্ষ-প্রমাণের পরিবর্তে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সূরার বিষয়বস্তু, আলোচ্য বিষয় ও বর্ণনা পদ্ধতি এবং প্রত্যেক সূরার নাযিলের পটভূমি সংক্রান্ত সুস্পষ্ট ও অস্পষ্ট ইশারা-
গবেষণা ও অনুসন্ধানের এ পদ্ধতি অনুসরণ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কী জীবনের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে আমরা ইলামী দাওয়াতের দৃষ্টিকোণ থেকে একে চারটি প্রধান প্রধান ও উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে বিভক্ত দেখতে পাইঃ
:'''প্রথম পর্যায়ঃ''' নবুওয়াত প্রাপ্তির সূচনা থেকে শুরু করে নবুওয়াতের প্রকাশ্য ঘোষণা পর্যন্ত প্রায় তিন বছর। এ সময় গোপন দাওয়াত দেবার কাজ চলে। বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিদেরকে দাওয়াত দেয়া হয়। মক্কার সাধারণ লোকেরা এ সম্পর্কে তখনো কিছুই জানতো না।
:'''দ্বিতীয় পর্যায়ঃ''' নবুওয়াতের প্রকাশ্য ঘোষণার পর থেকে জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন ও উৎপীড়নের সূচনাকাল পর্যন্ত প্রায় দু-বছর। এ সময় প্রথমে বিরোধিতা শুরু হয়। তারপর তা প্রতিরোধের রূপ নেয়। এরপর ঠাট্টা, বিদ্রুপ, উপহাস, দোষারোপ, গালিগালাজ, মিথ্যা প্রচারণা এবং জোটবদ্ধভাবে বিরোধিতা করার পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এমনকি শেষ পর্যন্ত মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতন শুরু হয়ে যায়। যারা তুলনামূলকভাবে বেশী গরীব, দুর্বল ও আত্মীয় বান্ধবহীন ছিল প্রাথমিক পর্যায়ে তারাই হয় সর্বাধিক নির্যাতনের শিকার।
:'''তৃতীয় পর্যায়ঃ''' চরম উৎপীড়নের সূচনা অর্থাৎ নবুওয়াতের ৫ম বছর থেকে নিয়ে আবু তালিব ও হযরত খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার ইন্তিকাল তথা ১০ম বছর পর্যন্ত পাচঁ বছর সময়-কাল পর্যন্ত এ পর্যায়টি বিস্তৃত। এ সময়ে বিরোধীতা চরম আকার ধারণ করতে থাকে। মক্কার কাফেরদেরকে জুলুম-নির্যাতনে আতিষ্ঠ হয়ে অনেক মুসলমান আবিসিনিয়া হিজরত করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর পরিবারবর্গ ও অবশিষ্ট মুসলমানদেরকে আর্থনৈতিক ও সামাজিক বয়কট করা হয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সমর্থক ও সংগী-সাথীদের নিয়ে আবু তালিব গিরিবর্তে অবরুদ্ধ হন।
চতুর্থ পর্যায়ঃ নবুওয়াতের দশম বছর থেকে ত্রয়োদশ বছর পর্যন্ত প্রায় তিন বছর । এটি ছিল নবী সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাথীদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ও বিপজ্জনক সময়। তাঁর জন্য মক্কায় জীবন যাপন করা কঠিন করে দেয়া হয়েছিল। তায়েফে গেলেন। সেখানেও আশ্রয় পেলেন না। হজ্জের সময়ে আরবের প্রতিটি গোত্রকে তিনি ইসলামের দাওয়াত দিলেন এবং ইসলাম গ্রহণ ও তাঁকে সাহায্য করার আবেদন জানালেন। কিন্তু কোথাও সাড়া পেলেন না। এদিকে মক্কাবাসীরা তাঁকে হত্যা করার , বন্দী করার বা নগর থেকে বিতারিত করার জন্য সলা-পরামর্শ করেই চলছিল। অবশেষে আল্লাহর অপার অনুগ্রহে আনসারদের হৃদয় দুয়ার ইসলামের জন্য খুলে গেলো। তাদের আহবানে তিনি মদীনায় হিজরত করলেন। এ সকল পর্যায়ে বিভিন্ন সময় কুরআন মজীদের যে সমস্ত আয়াত নাযিল হয়। সেগুলোর প্রত্যেকটি তাদের বিষয়বস্তু ও বর্ণনা রীতির দিক দিয়ে পরস্পর থেকে বিভিন্ন। এক পর্যায়ের আয়াতের বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভংগী অন্য পর্যায়েরে আয়াতের থেকে ভিন্নধর্মী। এদের বহু স্থানে এমন সব ইশারা-ইংগিত পাওয়া যায়, যা থেকে তাদের পটভূমির অবস্থা ও ঘটনাবলীর ওপর সুস্পষ্ট আলোকপাত হয়। প্রত্যেক পর্যায়ের বৈশিষ্টের প্রভাব সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে নাযিলকৃত বাণীর মধ্যে বিপুলভাবে লক্ষণীয় । ▼
▲:'''চতুর্থ পর্যায়ঃ''' নবুওয়াতের দশম বছর থেকে ত্রয়োদশ বছর পর্যন্ত প্রায় তিন
==আয়াতসমূহের বাংলা অনুবাদ ==
{{উইকিসংকলন|সূরা আল আনআম}}▼
সম্পূর্ণ সূরাটির বাংলা অনুবাদ [[s:আনআম|উইকিসংকলনে]] দেখুন।
==
{{reflist|2}}
== বহিঃসংযোগ ==
▲{{উইকিসংকলন|সূরা আল আনআম}}
* [http://www.altafsir.com/Quran.asp?SoraNo=6&Ayah=1&NewPage=0&Tajweed=1 Al-An'am] at Altafsir.com
* [http://www.tafsir.com/Default.asp Tafsir Ibn Kathir]
|