মানবতাবাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Prithvi (আলোচনা | অবদান)
ইংরেজি উইকির নিবন্ধটি অর্ধেক অনুবাদ করে দিলাম। বাকি অর্ধেক্র পরে করব~~~~
Prithvi (আলোচনা | অবদান)
নিবন্ধ সম্পূর্ণ করা হল~~~~
৪১ নং লাইন:
রেনেসাঁসের মানবতাবাদ হল মধ্যযুগের শেষ ভাগের এবং প্রাক-আধুনিক যুগের একটি বৌদ্ধিক আন্দোলন। ঊনবিংশ শতকের জার্মান ঐতিহাসিক জর্গ ভয়গত্(১৮২৭-৯১) [[ফ্রাঞ্চেসকো পেত্রারক|পেত্রারককে]] প্রথম রেনেসাঁসের মানবতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেন। [[পল জনসন|পল জনসনও]] স্বীকার করেন যে পেত্রারক ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি বলেছিলেন যে [[রোম|রোমের]] পতন এবং আধুনিক যুগের মধ্যবর্তী শতকগুলো ছিল অন্ধকারের যুগ। পেত্রারকের মতে, বিশিষ্ট ধ্রুপদী লেখকদের কর্মকে অধ্যায়ন ও অনুশীলন করেই কেবল এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। পেত্রার্ক এবং বোক্কাচ্চিওর প্রধান গুরু ছিলেন সিসেরো, যাঁর লেখনশৈলী লাতিন এবং ইতালীয় ভাষার আদর্শ ছিল।
 
<blockquote>
“একটা ভাষার ব্যাকরণকে যখন পুরোপুরি আয়ত্ত করা যাবে, তখন দ্বিতীয় পর্যায়ে গমন করতে হবে- অর্থাৎ, বাগ্মীতা অর্জন করতে হবে। এই বাকপটুতা(যা সিসেরো ধারণ করতেন) এমন একটি শিল্প যা নর ও নারীকে সুন্দর জীবন যাপনে সাহায্য করে। পেত্রার্ক যেমন বলেছেন, সৎ কর্ম সম্পাদনের ইচ্ছা সত্য জানার চেয়ে উত্তম। ভাষাতত্ত্ব এভাবেই দর্শনকে আলিঙ্গন করেছে। লিওনার্দো ব্রুনি(১৩৬৯-১৪৪৪) দাবি করেন যে পেত্রার্কই প্রথম জ্ঞান অর্জনের পথ প্রদর্শনের উপায় বাতলে দিয়েছিলেন, কিন্তু ব্রুনির সময়েই প্রথম ইউম্যানিস্তা শব্দটির প্রচলন হয় এবং এর অধ্যায়নের বিষয় ছিল পাঁচটি- ব্যাকরণ, ভাষাতত্ত্ব, কবিতা, নৈতিক দর্শন এবং ইতিহাস”<ref>{{cite book|last=Johnson|first=Paul|title=The Renaissance|year=2000|publisher=The Modern Library|location=New York|pages=32–34 and 37|isbn=0-679-64086-X}}</ref>
একটা ভাষার ব্যাকরণকে যখন পুরোপুরি আয়ত্ত করা যাবে, তখন দ্বিতীয় পর্যায়ে গমন করতে হবে- অর্থাৎ, বাগ্মীতা অর্জন করতে হবে। এই বাকপটুতা(যা সিসেরো ধারণ করতেন) এমন একটি শিল্প যা নর ও নারীকে সুন্দর জীবন যাপনে সাহায্য করে। পেত্রার্ক যেমন বলেছেন, সৎ কর্ম সম্পাদনের ইচ্ছা সত্য জানার চেয়ে উত্তম। ভাষাতত্ত্ব এভাবেই দর্শনকে আলিঙ্গন করেছে। লিওনার্দো ব্রুনি(১৩৬৯-১৪৪৪) দাবি করেন যে পেত্রার্কই প্রথম জ্ঞান অর্জনের পথ প্রদর্শনের উপায় বাতলে দিয়েছিলেন, কিন্তু ব্রুনির সময়েই প্রথম ইউম্যানিস্তা শব্দটির প্রচলন হয় এবং এর অধ্যায়নের বিষয় ছিল পাঁচটি- ব্যাকরণ, ভাষাতত্ত্ব, কবিতা, নৈতিক দর্শন এবং ইতিহাস
</blockquote><ref>{{cite book|last=Johnson|first=Paul|title=The Renaissance|year=2000|publisher=The Modern Library|location=New York|pages=32–34 and 37|isbn=0-679-64086-X}}</ref>
 
একজন মানবতাবাদীর মৌলিক প্রশিক্ষণ ছিল স্পষ্ট করে কথা বলায় এবং সুন্দর করে লেখায়। পেত্রারকের অন্যতম শিষ্য ছিলেন কলুচ্চিও স্যালুতাতি যাঁকে ফ্লোরেন্সের মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি তাঁর সাহিত্যিক ক্ষমতা ব্যবহার করে তাঁর স্বার্থ রক্ষা করতেন। মিলানের ভিসকন্ত দাবি করেছিলেন যে সালুতাতির কলম তিরিশ স্কোয়াড্রন অশ্বারোহী বাহিনীর চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছিল।<ref>{{cite book|last=Johnson|first=Paul|title=The Renaissance|year=2000|publisher=The Modern Library|location=New York|page=37}}</ref> সাধারণত রেনেসাঁসের মানবতাবাদকে একটি দার্শনিক আন্দোলন মনে করা হয়, এবং এও মনে করা হয় যে এই আন্দোলনটি খ্রীষ্ট-বিরোধী অথবা যাজকবিরোধী ছিল। পিটার পার্টনারের মত আধুনিক ইতিহাসবেত্তারা এই মনোভাবকে বাতিল করে দিয়ে বলেন যে রেঁনেসা মানবতাবাদ কোন দার্শনিক আন্দোলন না, বরং সাহিত্যিক জ্ঞান ও ভাষাতাত্ত্বিক দক্ষতার কেবল একটি শাখা ছিল।<ref>Peter Partner, Renaissance Rome, Portrait of a Society 1500-1559 (University of California Press 1979) pp. 14-15.</ref>
৪৭ ⟶ ৪৯ নং লাইন:
রেনেসাঁসের সময় মনে করা হত যে প্রাচীন জ্ঞানের অধ্যায়ন(যেমন গীর্জার ফাদারদের লেখা, গ্রীক ভাষার খ্রীষ্টিয় গসপেল, ইহুদিদের কাব্বালা) একটি সাধারণ বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গী গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।<ref>To later generations, the Dutch humanist, [[Desiderius Erasmus]], epitomized this reconciling tendency). According to the ''[[Stanford Encyclopedia of Philosophy]]'', "[[European Enlightenment|Enlightenment]] thinkers remembered Erasmus (not quite accurately) as a precursor of modern intellectual freedom and a foe of both Protestant and Catholic dogmatism."[http://plato.stanford.edu/entries/erasmus/. Erasmus himself was not much interested in the Kabbala, but several other humanists were, notably Pico della Mirandola]. See [[Christian Kabbala]].)</ref> একারণে রেঁনেসার ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ মানবতাবাদীদের, অতীত পর্যালোচনা করলে, বেশ ভালই মতস্বাধীনতা দিয়েছিল।<ref>{{cite book|last1=Bergin|first1=Thomas|last2=Speake|first2=Jennifer|title=The Encyclopedia of the Renaissance|year=1987|publisher=Facts On File Publications|location=Oxford|pages=216–217}}</ref><ref>"Only thirteen of Pico della Mirandola's nine hundred theses were thought theologically objectionable by the papal commission that examined them.... [This] suggests that, in spite of his publicly expressed contempt in his ''Apologia'' for their intellectual inadequacies, the Curial authorities hardly saw these theses as the work of a dangerous theological modernist like Luther or Calvin. Unorthodox though they were, most of the issues raised in them had been the subject of theological dispute for centuries and the commission . . . condemned him not for innovations but for 'reviving several of the errors of gentile philosophers which are already disproved and obsolete.'” Davies (1997), p 103.</ref>
 
====রেনেসাঁস মানবতাবাদের পরিণতি====
 
প্রাচীন পান্ডুলিপিগুলোর পুনঃআবিস্কার অতীতের দার্শনিক মতবাদ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানকে দৃঢ় করেছিল। এপিকুরোসবাদ এবং নব্য-প্লাতোবাদের পৌত্তলিক জ্ঞান এই মানবতাবাদীদের কাছে ঐশী মনে হয়েছিল এবং একারণে তাঁদের কাছে খ্রীষ্টীয় মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়েছিল।<ref>{{cite encyclopedia|title=Humanism|encyclopedia=Encyclopedic Dictionary of Religion|volume=F-N|pages=1733|publisher=Corpus Publications|year=1979|isbn=0-9602572-1-7}} "Renaissance humanists rejoiced in the mutual compatibility of much ancient philosophy and Christian truths", M. A. Screech, ''Laughter at the Foot of the Cross'' (1997), p. 13.</ref> প্রাচীন গ্রীক ও রোমান সাহিত্য ইউরোপে বিজ্ঞানের উন্নয়ন সাধনে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু রেনেসাঁসের মানবতাবাদীরা, যাঁরা প্রাচীন জ্ঞানে মুগ্ধ ছিলেন, বৈজ্ঞানিক আবিস্কারে মোটেই আগ্রহী ছিলেন না। ষোড়শ শতাব্দীর মধ্য ও শেষ ভাগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যদিও তারা স্কল্যাসটিসিজমের বিশ্বাস করত, আরিস্ততলের লেখাগুলোকে রেনেসাঁসের শব্দতত্ত্ব অনুযায়ী সম্পাদনা করে অধ্যায়ন করা শুরু করেছিল। এখানেই স্কল্যাসটিসিজমের সাথে গ্যালিলিওর ভবিষ্যত দ্বন্দ্বের মঞ্চ স্থাপিত হয়েছিল।<!-- scholasticism এর বাংলা অনুবাদ করে দিন -->
 
[[লিওনার্দো দা ভিঞ্চি]] যেমন মানবতাবাদী না হয়েও মানবদেহ, প্রকৃতি এবং আবহাওয়া নিয়ে গবেষণা কে উৎসাহিত করে রেনেসাঁসের শিল্প-সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে চাইতেন, স্প্যানিশ মানবতাবাদী জোয়ান লুই ভিভও পর্যবেক্ষণ, শিল্প-কৌশল ইত্যাদিকে উৎসাহিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরিস্ততোলিয় দর্শনের শিক্ষণ-পদ্ধতিকে উন্নত করার প্রয়াস নিয়েছিলেন। এভাবে তাঁরা মধ্যযুগীয় স্কল্যাসটিসিজমকে উৎখাত করতে চেয়েছিলেন।<ref>{{cite book|last=Gottlieb|first=Anthony|title=The Dream of Reason: a history of western philosophy from the Greeks to the Renaissance|publisher=W. W. Norton & Company|location=New York|year=2000|pages=410–411}}</ref> এভাবেই প্রকৃতির দর্শনে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ জায়গা করে নিয়েছিল এবং রেঁনেসা পরবর্তীয় বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের যুগের অবতারণা ঘটাতে সাহায্য করেছিল।<ref>{{cite encyclopedia|last=Alleby|first=Brad|title=Humanism|encyclopedia=Encyclopedia of Science & Religion|volume=1|edition=2nd|publisher=Macmillan Reference USA|year=2003|pages=426–428|isbn=0-02-865705-5}}</ref>
 
===রেনেসাঁস থেকে আধুনিক মানবতাবাদ===
 
রেনেসাঁস থেকে ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর মানবতাবাদে বিবর্তনের পেছনে দু’জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন- [[গ্যালিলিও গ্যালিলি|গ্যালিলিও]] এবং [[ইরাসমুস]]। রেনেসাঁসের সময়ে মানবতাবাদ বলতে মানবতা নিয়ে চিন্তাভাবনাকেই বুঝাত, অনেক সমসাময়ীক মানবতাবাদী এর সাথে তাঁদের ধর্মের কোন বিভেদ পরিলক্ষণ করতেন না।
 
<blockquote>
অথচ এই রেনেসাঁস মানবতাবাদ থেকেই আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদের জন্ম হয়েছিল এবং যুক্তি ও ধর্মের মাঝে একতি গুরত্বপূর্ণ ফাটল সৃষ্টি হয়েছিল। গির্জা দু’টো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গনে স্বেচ্ছাচারিতা করায় এটি ঘটেছিল। বিজ্ঞানের অঙ্গনে গ্যালিলিও কোপারনিকাসের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করে আঁরিস্ততলের তত্ত্বের প্রতি গীর্জার সমর্থনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল। ধর্মতত্ত্বে ডাচ পন্ডিত ইরাসমুস তাঁর গ্রীক পান্ডুলিপির সাহায্যে দেখিয়েছিলেন যে জেরোমের ভুলগাটের প্রতি রোমান ক্যাথলিক গীর্জার সমর্থন অনেকাংশেই ক্রুটিযুক্ত। যুক্তি ও কর্তৃত্বের মাঝে তখন এভাবেই একটি বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল
</blockquote><ref>Os Guinness - The Dust of Death (Intervarsity Press 1973) p. 5</ref>
 
===ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দী===
 
“মানবতার ধর্ম” কথাটির সাথে মাঝে মাঝে আমেরিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা [[টমাস পেইন|টমাস পেইনকে]] সম্পর্কায়িত করা হয়, যদিও এখন পর্যন্ত্য তাঁর কোন লেখায় এ সম্পর্কে কিছু পাওয়া যায়নি। টনি ডেভিসের মতে,
 
<blockquote>
পেইন নিজেকে ''থিওফিলান্থ্রোপিস্ট'', গ্রীক “ঈশ্বর”, “ভালবাসা” এবং “মানুষ” শব্দগুলো দিয়ে গঠিত একটি শব্দ, হিসেবে অভিহিত করতেন। এর দ্বারা বোঝা যায় যে তিনি স্রষ্টায় বিশ্বাসী হলেও বিরাজমান ধর্মগুলোর অলৌকিকতাকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করতেন। তিনি যে “সোসাইটি অব থিওফিলান্থ্রোপি” প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তার সম্পর্কে তাঁর জীবনীকার বলেন, “এটি পরবর্তীকালের মানবতাবাদী সংগঠণগুলোর পথপ্রদর্শক ছিল”। পেইনের বই “এইজ অব রীজন” ভলতেয়ারের ব্যঙ্গরীতি এবং পেইনের নিজস্ব লেখনশৈলীকে একীভূত করে লোককথার উপর ভিত্তি করে গঠিত ধর্মগুলোর অলৌকিক দাবিগুলোর তীব্র সমালোচনা করেছিল
</blockquote><ref>Tony Davies,'' Humanism'' (Routledge, 1997) p. 26-27.</ref>
 
ভিক্টোরীয় ঔপন্যাসিক ম্যারি এন ইভান্স, সারা বিশ্বে যিনি [[জর্জ এলিয়ট]] হিসেবে পরিচিত, স্ট্রসের Das Leben Jesu(যীশুর জীবন, ১৮৪৬) এবং [[লুটভিগ ফয়েরবাখ|লুটভিগ ফয়েরবাখের]] Das Wesen Christianismus(খ্রীষ্টধর্মের মর্মবাণী) অনুবাদ করেছিলেন। এক বন্ধুর কাছে তিনি পত্র লিখেন,
 
<blockquote>
মানুষের ভেতরের সম্পর্ক, যা সামাজিক ও নৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি, মোটেই এমন কিছুর উপর নির্ভরশীল না যা মানবিক নয়…… ঈশ্বরের ধারণা আসলে মানুষের উৎকৃষ্ট দিকেরই আরেক রুপ
</blockquote><ref>উদ্ধৃত করা হয়েছে Davies (1997), পৃ ২৭ এ</ref>
 
এলিয়ট এবং তাঁর বৃত্তের জর্জ হেনরী লিউয়ী, সমাজতাত্ত্বিক হ্যারিয়ট মারটিনিউ সহ আরও অনেকেই [[ওগুস্ত কোঁত|ওগুস্ত কোঁতের]] [[প্রত্যক্ষবাদ]] দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। কোঁত একটি নাস্তিক্য দল শুরু করেছিলেন- একটি ধর্মনিরপেক্ষ মানবধর্ম(মৃতরা এই ধর্মের উপাস্য ছিল, কারণ বেশিরভাগ মানুষ যারা একসময় বেঁচে ছিলেন, পরে মারা গিয়েছেন), যার একটা নিজস্ব বর্ষপুঞ্জ ছিল। কোঁতের এই ধর্ম অনেকটা ক্যাথলিক ধর্মেরই একটি মলিন রুপ ছিল।৩৮ এলিয়ট এবং মারটিনিউর মত কোঁতের ইংরেজ অনুসারীরা যদিও তাঁর দর্শন পুরোপুরি গ্রহণ করেননি, তাঁরা মানবধর্মের ধারণাটিকে ঠিকই পছন্দ করেছিলেন। কোঁতের নির্মোহ বিশ্বদর্শন, তাঁর আদর্শবাণী "vivre pour altrui"(“অন্যের জন্য বেঁচে থাকো”, এখান থেকেই altruism শব্দটি এসেছে) এবং নারীর প্রতি তাঁর ইতিবাচক চিন্তাভাবনা জর্জ এলিয়ট, [[ম্যাথিউ আর্নল্ড]] এবং [[থমাস হার্ডি|থমাস হার্ডির]] মত অনেক ভিক্টোরীয় সাহিত্যিকের কর্মে প্রতিফলিত হয়েছে।
 
''দ্যা ব্রিটিশ হিউম্যানিস্টিক রিলিজিয়াস এসোসিয়েশন'' ১৮৫৩ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যা ছিল সমকালীন মানবতাবাদী সংগঠণগুলোর অগ্রপথিক। এই সংগঠণটি গণতান্ত্রিক কাঠামো মেনে চলত। নারী ও পুরুষ সদস্যরা ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতৃবর্গ নির্বাচন করত। সংগঠণটি বিজ্ঞান, দর্শন ও শিল্পকলাকে উৎসাহিত করত।<ref>{{cite book
| last = Morain
| first = Lloyd and Mary
| title = Humanism as the Next Step
| publisher = Humanist Press
| year = 2007
| location = Washington, D.C.
| pages = 109
| url = http://www.americanhumanist.org/publications/Hum_as_the_Next_Step.pdf
| isbn = 978-0-931779-16-2}}</ref>
 
১৮৭৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে শব্দটি প্রথমবারের মত নেতিবাচক অর্থে আমেরিকায় ব্যবহার করা হয়েছিল, মূলত ফেলিক্স এডলারের প্রতি ইঙ্গিত করার জন্যই। এডলার এই শব্দটি পছন্দ করেননি, তিনি তাঁর আন্দোলনের জন্য “নৈতিক সংস্কৃতি” শব্দটি নির্বাচন করেছিলেন- এই আন্দোলনটি এখনও ''নিউ ইয়র্ক সোসাইটি ফর এথিক্যাল কালচার'' এ বিদ্যমান।<ref>[http://www.nysec.org New York Society for Ethical Culture]</ref><ref>{{cite web |url=http://www.nysec.org/sitemap/about-ethical-culture/history/ |title=History: New York Society for Ethical Culture |accessdate=2009-03-06 |year=2008 |publisher=New York Society for Ethical Culture }}</ref>
 
১৯২৯ সালে [[চার্লস ফ্রান্সিস পটার]] [[নিউ ইয়র্ক]] শহরের প্রথম মানবতাবাদী সংগঠণটি প্রতিষ্ঠা করেন, যার উপদেষ্ঠা পরিষদে জুলিয়ান হাক্সলি, জন দিউয়ি, আলবার্ট আইন্সটাইন এবং থমাস ম্যানের মত ব্যক্তিরা ছিলেন। পটার একজন একত্ববাদী যাজক ছিলেন এবং ১৯৩০ এর দশকে তিনি তাঁর পত্নী ক্লারা কুক পটারের সাথে মিলে হিউম্যানিজম: এ নিউ রিলিজিয়ন গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। এই সময়টায় পটার নারী অধিকার, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও তালাক বিধানের পক্ষে এবং মৃত্যুদন্ডের বিপক্ষে জোড় প্রচারনা চালান।<ref>{{cite web |last=Stringer-Hye |first=Richard |title=Charles Francis Potter |work=Dictionary of Unitarian and Universalist Biography |publisher=Unitarian Universalist Historical Society |url=http://wWorldWarII5.uua.org/uuhs/duub/articles/charlesfrancispotter.html |accessdate=2008-05-01}}</ref>
 
রেমন্ড বি. ব্র্যাগ, ''দি নিউ হিউম্যানিস্ট'' এর সহযোগী সম্পাদক, লিওন মিলটন বার্কহেড, চার্লস ফ্রান্সিস পটার সহ পশ্চিম একত্ববাদী সমাবেশের বিভিন্ন সদস্যদের লেখা ছাপানো শুরু করেন। এসব লেখাগুলই পরে ১৯৩৩ সালে ''হিউম্যানিস্ট মেনিফেস্টো'' এর প্রকাশনার পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। পটারের বই এবং এই মেনিফেস্টোই আধুনিক মানবতাবাদের ভিত্তিপ্রস্তরে রুপান্তরিত হয়; আধুনিক মানবতাবাদ বলে, “কোন ধর্ম যদি মানুষের উন্নতি সাধন করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই যুগের সাথে তাল মেলাতে হবে। এরকম একটি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করাই বর্তমানের দাবি”। মেনিফেস্টোটি তারপর এই নতুন ধর্মের মূলনীতি হিসেবে ১৫টি প্রতিপাদ্য প্রকাশ করে।
 
১৯৪১ সালে ''আমেরিকান হিউম্যানিস্ট এসোসিয়েশন'' প্রতিষ্ঠা করা হয়। [[আইজাক আসিমভ]] ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯২ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত্য এই সংগঠণটির সভাপতি ছিলেন। [[গোর ভিদাল]] ২০০৯ সালে সম্মানসূচক সভাপতির আসন গ্রহণ করেন।
 
[[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের]] পর তিনজন বিখ্যাত মানবতাবাদী জাতিসংঘের তিনটি বিভাগের প্রথম পরিচালকের পদ গ্রহণ করেন: [[ইউনেস্কো|ইউনেস্কোতে]] ছিলেন [[জুলিয়ান হাক্সলি]], [[বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা|বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতে]] ছিলেন ব্রক খ্রিসহোম এবং খাদ্য ও কৃষী সংস্থায় ছিলেন জন বয়ড-অর।<ref>[http://www.americanhumanist.org/publications/morain/chapter-8.html American Humanist Association]</ref>
 
২০০৪ সালে ''আমেরিকান হিউম্যানিস্ট এসোসিয়েশন'' অন্য সব নাস্তিক্যবাদী, মুক্তচিন্তক এবং সংশয়বাদী সংগঠণের সাথে সম্মিলিত হয়ে ''সেকুলার কোয়ালিশন ফর আমেরিকা'' গঠণ করে, যা ওয়াশিংটন ডিসিতে রাষ্ট্র ও উপাসনালয়ের পৃথকীকরণের পাশাপাশি আমেরিকাতে নির্ধার্মিকদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রচারনা চালায়। সংগঠণটির কার্যকরী পরিচালক হলেন শন ফেয়ারক্লথ, আমেরিকার মাইন প্রদেশের বিধানসভার একজন দীর্ঘ দিনের সভ্য।
 
====ধর্মের প্রতি মনোভাব====
 
১৯৩৩ সালের প্রথম মানবতাবাদী মেনিফেস্টোতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তিরা নিজেদেরকে ধার্মিক মানবতাবাদী হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তাঁরা যেহেতু মনে করেছিলেন যে প্রচলিত ধর্মগুলো মানুষের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছিল, তাই তাঁরা একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন। এর পর প্রথমটি আরও দু’টি মেনিফেস্টো দিয়ে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।
দ্বিতীয় মেনিফেস্টোটির মুখবন্ধে পল কুর্টজ এবং এডউইন এইচ. উইলসন(১৯৭৩) ঘোষণা করেন যে বিশ্বাস ও জ্ঞান একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয়। দ্বিতীয় মেনিফেস্টোটিতে ধর্ম সম্পর্কে আলাদা একটি অনুচ্ছেদ রয়েছে যেখানে দাবি করে হয়েছে প্রচলিত ধর্ম মানবসমাজের জন্য ক্ষতিকর। এই মেনিফেস্টোটি অনুগামী লেবেলগুলোকে নিজেদের প্রকৃতিবাদী দর্শনকে ব্যাখ্যা করার জন্য ব্যবহার করেছে: “বৈজ্ঞানিক”, “নৈতিক”, “মার্ক্সবাদী”, “গণতান্ত্রিক” এবং “ধর্মীয়”।
বিংশ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসে মানবতাবাদীরা মানবতাবাদ ধর্ম কিনা এ নিয়ে ধন্ধে পড়ে গিয়েছিল। ধর্মীয় মানবতাবাদীরা যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাচীন মানবতাবাদী সংগঠণগুলোর মতই মানবতাবাদকে ধর্মের সম্পূরক মনে করতেন। ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদীরা সর্বপ্রকার ধর্মকে(যার মধ্যে ধর্মীয় মানবতাবাদও অন্তর্ভুক্ত) অপসারিত মনে করেন। এই দু’টো দলের মধ্যে আদর্শিক সংঘাত নিরসনে সাম্প্রতিককালে মানবতাবাদকে একটি জীবনদর্শন ঘোষণা করা হচ্ছে। আমেরিকান সুপ্রীম কোর্ট এই মতবাদকে একটি ধর্ম ঘোষণা করলেও এটি ঈশ্বরকে স্বীকৃতি দেয় না, তাই মানবতাবাদ সেই অর্থে ধর্ম না। প্রায়োগিক দৃষ্টি থেকে এই মতবাদগুলো ভিন্ন হলেও এগুলো কোনটাই অলৌকিকতার বন্দনাকে সমর্থন করে না এবং ঈশ্বরের প্রতি কোন প্রকার ইঙ্গিত ছাড়াই নৈতিকতার চর্চা করে। এই মতবাদ নাস্তিকতা<ref>. The world coordinating body, the International Humanist and Ethical Union, London, recommends use of "Humanism," with no qualifying adjective at all, and with the capital "H" befitting a well-defined worldview clearly established after three quarters of a century of scholarly study and exposition.
{{cite book
| last=Baggini
| first=Julian
| authorlink=Julian Baggini
| title=Atheism: A Very Short Introduction
| pages=3–4
| quote=The atheist's rejection of belief in God is usually accompanied by a broader rejection of any [[supernatural]] or [[transcendence (religion)|transcendental]] reality. For example, an atheist does not usually believe in the existence of immortal [[soul]]s, [[afterlife|life after death]], [[ghost]]s, or supernatural powers. Although strictly speaking an atheist could believe in any of these things and still remain an atheist... the arguments and ideas that sustain atheism tend naturally to rule out other beliefs in the supernatural or transcendental.
| publisher=Oxford: Oxford University Press
| year=2003
| isbn=0-19-280424-3}}</ref>
and [[agnosticism]]<ref>
{{cite book
| last=Winston
| first=Robert (Ed.)
| title=Human
| quote=Neither atheism nor agnosticism is a full belief system, because they have no fundamental philosophy or lifestyle requirements. These forms of thought are simply the absence of belief in, or denial of, the existence of deities.
| publisher=New York: DK Publishing, Inc
| year=2004
| isbn=0-7566-1901-7
| page=299}}</ref> এবং সংশয়বাদের<ref>Winston, Robert (Ed.) (2004). Human. New York: DK Publishing, Inc. p. 299. ISBN 0-7566-1901-7. "Neither atheism nor agnosticism is a full belief system, because they have no fundamental philosophy or lifestyle requirements. These forms of thought are simply the absence of belief in, or denial of, the existence of deities."</ref> সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিন্তু নাস্তিক বা সংশয়বাদী হলেই কেউ মানবতাবাদী হতে পারবে না।<ref>Note: The topic of this article has a small initial character as Wikipedia guidelines prescribe for the name of a philosophy. The ''life stance'' named Humanism is capitalized as prescribed for the name of a religion in [[Humanism (life stance)|its dedicated article]], but left lower-case elsewhere to encompass life-stance, religious, and secular "humanism."</ref>
 
====জ্ঞান====
 
করলিস ল্যামন্ট এবং [[কার্ল সেগান|কার্ল সেগানের]] মত আধুনিক মানবতাবাদীরা মনে করেন যে যুক্তি এবং পর্যবেক্ষণই জ্ঞানের একমাত্র উৎস। তাঁরা [[বৈজ্ঞানিক সংশয়বাদ]] এবং [[বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি|বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির]] জোড় সমর্থক। তাঁরা আরও বলেন যে ভাল-মন্দ সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলো ব্যক্তি ও সমাজের উপকারের আলোকে নিতে হবে। একটি নৈতিক দর্শন হিসেবে মানবতাবাদ অমর সত্ত্বার মত কোন [[অধিবিদ্যা|অধিবৈদিক]] অবভাসের অস্তিত্ব নিয়ে মাথা ঘামায় না, এটি শুধুই মানুষের সাথে সম্পর্কিত।<ref>
{{cite book
| last=Lamont
| first=Corliss
| authorlink=Corliss Lamont
| title=The Philosophy of Humanism, Eighth Edition
| pages=252–253
| quote=Conscience, the sense of right and wrong and the insistent call of one's better, more idealistic, more social-minded self, is a social product. Feelings of right and wrong that at first have their locus within the family gradually develop into a pattern for the tribe or city, then spread to the larger unit of the nation, and finally from the nation to humanity as a whole. Humanism sees no need for resorting to supernatural explanations, or sanctions at any point in the ethical process.
| publisher=Humanist Press: Amherst, New York
| year=1997
| isbn=0-931779-07-3}}</ref>
 
====আশাবাদ====
 
সমসাময়ীক মানবতাবাদ মানুষের ক্ষমতা সম্পর্কে আশাবাদী, কিন্তু মানবতাবাদ বলে না মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই নীতিবান অথবা কোন প্রকার সাহায্য ছাড়াই মানুষের পক্ষে নৈতিক উৎকর্ষতা লাভ করা সম্ভব। মানবতাবাদের প্রধান লক্ষ্য হল মানুষের উন্নতি সাধন করা(যেখানে ধর্মের লক্ষ্য হল ঈশ্বরের বন্দনা করা) এবং জীবজগতে সবচেয়ে সচেতন প্রাণী হিসেবে সব অনুভবক্ষম প্রাণী, এবং অবশেষে পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য কাজ করা। অর্থাৎ, মানবতাবাদী কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হল এই জীবনটি সুন্দরভাবে যাপন করা এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য, মনোরম পরিবেশ রেখে যাওয়া।
 
====সাম্প্রতিক মানবতাবাদী মেনিফেস্টো এবং বিবৃতি====
 
* [http://www.americanhumanist.org/who_we_are/about_humanism/Humanist_Manifesto_I Humanist Manifesto I] (১৯৩৩)
* [http://www.americanhumanist.org/who_we_are/about_humanism/Humanist_Manifesto_II Humanist Manifesto II] (১৯৭৩)
* [http://www.secularhumanism.org/index.php?section=main&page=declaration A Secular Humanist Declaration] (১৯৮০)
* [http://www.iheu.org/amsterdamdeclaration Amsterdam Declaration] (২০০২)
* [http://www.americanhumanist.org/who_we_are/about_humanism/Humanist_Manifesto_III Humanist Manifesto III] (২০০৩)
 
==ভিন্ন তরিকার মানবতাবাদ==
 
===শিক্ষাবৃত্তিক মানবতাবাদ===
 
শিক্ষার ধারা হিসেবে মানবতাবাদ সপ্তদশ শতকে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা-ব্যবস্থাকে শাসন করেছিল। এই মতাদর্শ দাবি করত যে যেসব বিষয় মানুষের মেধা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, সেসব বিষয়ই মানুষকে “সত্যিকারের মানুষ” এ রুপান্তরিত করে। এর ব্যবহারিক ভিত্তি ছিল বিভাগীয় মনোবিজ্ঞান- গাণিতিক, বিশ্লেষণী, ভাষাবিদ্যা সংক্রান্ত বিভাগের মত বৌদ্ধিক বিভাগে বিশ্বাস। বলা হত যে একটি বিভাগকে উন্নত করলে অন্য বিভাগগুলোও উন্নত হবে। ঊনবিংশ শতকের এই আন্দোলনের একজন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হলেন উইলিয়াম টোরি হ্যারিস, যাঁর “আত্মার পাঁচ জানালা”(গণিত, ভূগোল, ইতিহাস, ব্যাকরণ এবং সাহিত্য/শিল্পকলা) এই বৌদ্ধিক বিভাগগুলোর উন্নয়নের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে বিশ্বাস করা হত। কিছু নাৎসী নির্যাতন শিবিরের প্রহরীদের মার্জিত রুচির সংস্কৃতবোধের দিকে ইঙ্গিত করে টেরী ঈগলটনের মত [[মার্ক্সবাদ|মার্ক্সবাদীরা]] এরুপ দাবির সমালোচনা করেছেন।
 
==আরও দেখুন==
 
* [[যুক্তিবাদ]]
* [[ধর্মনিরপেক্ষতা]]
* [[সংশয়বাদ]]