মিশরীয় চিত্রলিপি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→পাঠোদ্ধার: তথ্য |
|||
৩৪ নং লাইন:
গ্রিকরা যখন মিশর দখল করে নেয়, তখন তাদের বিশ্বাস ছিলো হায়ারোগ্লিফিক পবিত্র লিপি। আর এই 'পবিত্রতা' কথাটা যতদিন কাজ করছিলো গবেষকদের মাথায়, ততদিন কোনো না কোনোভাবে ভুল পাঠোদ্ধার হচ্ছিলো এই লিপির। এতে আরো রহস্যমন্ডিত হচ্ছিলো মিশরীয় ইতিহাস। গ্রিক ঐতিহাসিক প্লুতার্ক ([[খ্রিষ্টপূর্ব ১২০]]-[[খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬]]) মিশরীয় লিপিকে ধর্মীয় পবিত্র বিষয়াদি লেখার লিপি হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যদিও প্রায় তাঁর সমসাময়িক ইহুদি ঐতিহাসিক যোসেফাস মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে লিখিত বিষয়াদি ধর্মীয় ব্যাপার নয় এবং মূলত এর মধ্যে ছোটবড় যুদ্ধ, অবরোধ ইত্যাদি ঐতিহাসিক বিবরণ রয়েছে বলে মনে করতেন। সেকালের আরেক ঐতিহাসিক হোরোপোল্লো তাঁর ''"হায়ারোগ্লিফিক"'' বইতে মিশরীয় লিপির পাঠোদ্ধার সম্পর্কে প্রলুব্ধকর, অথচ ভ্রান্ত সমাধান তৈরি করে যান। সে সময়কার ইউরোপীয় গবেষকগণ অনেকটা অন্ধের মতোই হোরোপোল্লো'র ঐতিহাসিক বিবরণ আর হায়ারোগ্লিফিকের ব্যাখ্যার উপর নির্ভর করেছিলেন, কেননা হোরোপোল্লো জাতিতে মিশরীয় ছিলেন। তিনি তাঁর বইতে অনেকগুলো হায়ারোগ্লিফের গ্রিক অনুবাদ দিয়েছিলেন, কিন্তু সেগুলোর অধিকাংশই ছিলো আসলে ভুল, যা আঠারশ বছর পর ধরা পড়ে সত্যিকার পাঠোদ্ধারের পর। তাঁর এই গবেষণা-দুর্ঘটের মূল কারণ ছিলো তিনি তথ্যের সাথে বিপুল কল্পনা মিশিয়ে ছিলেন।<ref name="HHK"/>
তারপর এই লিপির পাঠোদ্ধারে এগিয়ে আসেন গণিত ও প্রাচ্যভাষার অধ্যাপক আথানিয়াস কির্শার। তিনি [[কপ্টিক ভাষা]] ও [[গ্রিক ভাষা]] বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছিলেন যে, কপ্টিক ভাষা আসলে হায়ারোগ্লিফিকেরই বিবর্তিত রূপ। তাই তিনি কপ্টিক ভাষার মাধ্যমে হায়ারোগ্লিফিকের অনুবাদ করতে গেলেন। কিন্তু তিনিও বিশ্বাস করতেন এই ভাষা পবিত্র, আর তাতেই তিনি তাঁর অনুবাদকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলেন। তিনি শব্দলিপিকে ভাবলিপি ধরে নিয়ে ধর্মসংশ্লিষ্ট অনুবাদ দাঁড় করালেন একটি স্মৃতিস্তম্ভের গায়ের সাতটি হায়ারোগ্লিফিক চিহ্নকে।<ref name="HHK"/>
হায়ারোগ্লিফিকসহ অন্যান্য প্রাচীন মিশরীয় লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে আগের ভুল ধারণাগুলো ভাঙার শুরু অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে। তখনই অনেক গবেষক হায়ারোগ্লিফিককে শব্দলিপি বলে সন্দেহ করতে থাকলেন। তখন গবেষকদের হাতে এলো উপবৃত্তাকার এক প্রকারের ফ্রেম, যার [[ফরাসি]] নাম কার্তুশ। তাঁরা ধারণা করলেন এগুলোতে হয়তো ফারাও অথবা তাঁদের পত্নিদের নাম লেখা থাকতে পারে। যোহান গেয়র্গ [[১৭৯৭]] খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর একটি বইয়ে এরকম অনেকগুলো কার্তুশের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য তুলে ধরে জানান, সদৃশ কার্তুশগুলো একই ব্যক্তির নাম আর বৈসদৃশ কার্তুশগুলো ভিন্ন ভিন্ন নাম।<ref name="HHK"/>
এরপর [[১৭৯৮]] খ্রিষ্টাব্দে [[নেপোলিয়ন]] [[প্রাচীন মিশর|মিশর]] আক্রমণ করেন এবং [[১৭৯৯]] খ্রিষ্টাব্দে তাঁর সৈন্যরা বিখ্যাত [[রোসেটা কৃষ্ণশিলাপট]] উদ্ধার করেন।<ref name="HHK"/>
পরবর্তিতে হায়ারোগ্লিফিক লিপির পাঠোদ্ধার করেন [[ফরাসি]] জাঁ ফ্রাঁসোয়া শাঁপোলিয়ঁ এবং [[ব্রিটিশ]] [[পদার্থবিজ্ঞান|পদার্থবিদ]] টমাস ইয়ং।<ref name="HHK"/>
|