সতীশচন্দ্র দাশগুপ্ত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
AishikBot (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন (ARR)
AishikBot (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন (কিভাবে ⇢ কীভাবে)
 
২৯ নং লাইন:
আচার্য তার প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যাল ওয়ার্কসের (বর্তমানে [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস ]]এর) দ্বার গবেষণার কাজে উন্মুক্ত করে দেন এই সত্য-সন্ধানী কৌতূহলী গবেষকের প্রতিভা বিকাশের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করার সাথে সাথেই। সেখানে তিনি সঙ্গী পেলেন আচার্যের অপর এক ছাত্র [[রাজশেখর বসু |রাজশেখর বসুকে]]( পরশুরামকে)। আচার্যের প্রেরণায় আর এই দুই ছাত্র-কর্মীর অনলস চেষ্টায় বাঙালির গৌরব বেঙ্গল কেমিক্যাল অল্পদিনেই ভারতবর্ষের অগ্রগণ্য রসায়নশিল্প প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ছিল। এখানে কাজ করার সময় সতীশচন্দ্রের ছোটো-বড়ো নানা আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের মধ্যে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ফায়ার- কিং নামের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রটি বাজারে বহু সমাদৃত হয়েছিল এবং বেঙ্গল কেমিক্যাল প্রথম ভারতে তৈরি যন্ত্রটি বিক্রি করে প্রভূত অর্থ লাভ করে।
 
'''গান্ধীদর্শন'''- বেঙ্গল কেমিক্যালে সতীশচন্দ্রের ব্যস্ততার মাঝে তখন একদিকে নতুন নতুন উদ্ভাবনা তথা সন্ধানের চিন্তা আর অন্যদিকে অন্তহীন জিজ্ঞাসা - দরিদ্র দেশবাসীর সমস্যার সমাধান কিভাবেকীভাবে? অশান্ত মনের এমন মানসিক অবস্থায় ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কোকনদ অধিবেশনের শিল্পপ্রদর্শনীতে যোগ দিতে গিয়ে প্রথম গান্ধী দর্শন হল তার। বেঙ্গল কেমিক্যালে গবেষণা ছেড়ে গান্ধীজির নির্দেশিত স্বরাজের পথে সর্বক্ষণের কর্মী হওয়ার আন্তরিক বাসনা ব্যক্ত করেন। কিন্তু গান্ধীজির উপদেশ মত বেঙ্গল কেমিক্যালে থেকে গবেষণা ও উদ্ভাবনের কাজ চালিয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও তার ফসল গরীব দেশবাসীর পর্ণকুটিরে পৌঁছেছেন দিতে লিপ্ত হলেন। সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করে কর্মীদের দিয়ে চরকায় সুতা কাটানো, তাঁত চালানো ও কাপড় বোনার কাজ শুরু করলেন। আচার্য আর দুই শিষ্য মিলে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালালেন খদ্দরের উপর রং প্রণালী নিয়ে। বিজ্ঞানের গবেষণাগার তখন চরকা ও কুটির শিল্পের গবেষণাগারে ও কর্মশালায় পরিণত হল।
 
'''খাদি প্রতিষ্ঠান''' - কিন্তু তাতেও তার মনের তৃপ্তি মিলছে না যখন, গান্ধীজির কাজে তিনি সপরিবারে রাতের অন্ধকারে বেঙ্গল কেমিক্যালের বাসভবন ছেড়ে চলে গেলেন সোদপুরে। 'ফায়ারকিং' আবিষ্কারক-বিজ্ঞানীর প্রাপ্য দু'লক্ষ টাকা দিয়ে ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে গড়ে তুললেন 'খাদি প্রতিষ্ঠান'। ঘরে ঘরে চরকা পৌঁছে দিতে স্বল্প মূল্যের বাঁশের চরকা তৈরি করেন। বাংলার বিভিন্ন স্থানে কর্মকেন্দ্র স্থাপন করে বহুমুখী কর্মযজ্ঞের সূচনা করলেন। কুটির শিল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষণা করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানে কটেজ ট্যানিং ইন্ডাস্ট্রি এক সময় বড়ো বড়ো ট্যানারির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছে। নিরক্ষর ও অল্পশিক্ষিত মানুষকে লেখাপড়া শিখিয়ে হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে দক্ষকর্মীরূপে গড়ে তোলার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তার। প্রধান কর্মকেন্দ্র কলকাতার নিকটবর্তী সোদপুরের আশ্রমটি '''গান্ধী আশ্রম''' নামে পরিচিত হল। এর উদ্বোধনে [[মহাত্মা গান্ধী]],[[মতিলাল নেহেরু]] ছাড়া সেকালের জাতীয় স্তরের বিখ্যাত ব্যক্তি হাজির ছিলেন। গান্ধীজী এই আশ্রমকে তার 'দ্বিতীয় বাড়ি' তথা 'বাংলার বাসগৃহ' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। সোদপুরের গান্ধী আশ্রম সেই সময় দেশের রাজনীতিকদের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র ছিল। সতীশচন্দ্র গান্ধীজির অনুগামী হয়ে কারাবাসও করেছেন। আলিপুর জেলে অবস্থানকালে স্বেচ্ছায় সেখানে গোশালা রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব পালন করেন। তবে স্বাধীনতা উত্তরকালে আমৃত্যু রাজনীতি থেকে দূরে থেকে সংগঠনমূলক কাজ করে গেছেন ।