ততযন্ত্র: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
'''শুষিরযন্ত্র''' বলতে সঙ্গীতে ব্যবহৃত এমন কিছু বাদ্যযন্ত্রকে বোঝায় যেগুলিতে এক বা একাধিক টানটান করা চিকন তার থাকে, যে তার বা তারগুলিকে আঙুল বা (আঙুলের সাথে লাগানো বা আঙুলে ধরা) অঙ্গুলিত্র (প্লেকট্রাম বা প্লাক বা পিক) দিয়ে টান মেরে, শক্ত কিছু (যেমন কাঠি বা ছোট হাতুড়ি) দিয়ে আঘাত করে বা কিংবা ছড় দিয়ে ঘষে কম্পিত করে সাঙ্গিতিক[[সাঙ্গীতিক স্বর]] (সুরেলা ধ্বনি) উৎপাদন করা হয়। তারগুলি ধাতু, রেশম সুতা, পশুর অন্ত্র, প্লাস্টিক, ইত্যাদি উপাদান দিয়ে তৈরি হতে পারে। তারের [[স্বরতীক্ষ্ণতা]] এর দৈর্ঘ্য, নমনীয়তা ও এর টানের মাত্রার উপর নির্ভর করে।
 
শুষিরযন্ত্রগুলিতে তারের সাথে প্রায়শই একটি অনুনাদক ধ্বনিফলক (soundboard), ধ্বনিপ্রকোষ্ঠ (sound chamber) বা বৈদ্যুতিক ধ্বনিবিবর্ধক (amplifier) ব্যবস্থা নামক একটি অংশ থাকে, যাতে তার থেকে উৎপন্ন ধ্বনিগুলি আরও জোরালোভাবে শোনা যায়।
৬ নং লাইন:
পাশ্চাত্যে শুষিরযন্ত্রগুলিকে মূলত চারটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। এগুলি হল বীণাজাতীয় শুষিরযন্ত্র (লুট), অনুভূমিক বহুতন্ত্রী শুষিরযন্ত্র (জিথার), উল্লম্ব বহুতন্ত্রী শুষিরযন্ত্র (হার্প) এবং জোয়াল-বীণাজাতীয় শুষিরযন্ত্র (লায়ার)। এদের মধ্যে বীণাজাতীয় যন্ত্রগুলি সবচেয়ে বেশী সাধারণ। এগুলির মধ্যে আছে বীণা, বেহালা, সরোদ, সেতার, দোতারা, তানপুরা, এস্রাজ, সারেঙ্গি, সারিন্দা, ভায়োলিন, চেলো, ডাবল বেস, গিটার, ব্যাঞ্জো, ম্যান্ডোলিন, ইউকুলেলে, ইত্যাদি। এগুলির তারগুলিকে হয় ছড়ের মাধ্যমে ঘষা হয় বা আঙুলের দ্বারা টানা হয়। এগুলি বহুতন্ত্রী নয়, অর্থাৎ এগুলিতে বহুসংখ্যক তার থাকে না, বরং সাধারণত চার থেকে ছয়টি তার থাকে। বাদ্যযন্ত্রের দেহ অংশটি ফাঁপা হয়; এর আরেক নাম অনুনাদক ও এর কাজ তারে উৎপন্ন ধ্বনিগুলিকে জোরালো করা। দেহ থেকে একটি গ্রীবা বা গলা বেরিয়ে আসে, যেটির উপরে তারগুলি টানটান করে বসানো থাকে। এক হাতের আঙুল দিয়ে গ্রীবার বিভিন্ন অংশে তারকে চাপ দিয়ে সাময়িকভাবে তারের দৈর্ঘ্য হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয় এবং ঐ সময় তারটিকে ঘষলে বা টান দিলে নির্দিষ্ট সাঙ্গীতিক স্বর উৎপন্ন হয়। উপরের যন্ত্রগুলির (বিশেষ করে গিটারের) বৈদ্যুতিক সংস্করণ আছে, যেটির দেহ ফাঁপা নয়, বরং উৎপাদিত ধ্বনিটিকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে বিবর্ধক (অ্যামপ্লিফায়ার) নামক যন্ত্রের মাধ্যমে ইচ্ছামত জোরে বা আস্তে বাজানো যায়।
 
[[File:Paraguayan harp 1.jpg|thumb|250px|right|প্যারাগুয়েপ্যারাগুয়ের একটি হার্প, একটি উল্লম্ব বহুতন্ত্রী শুষিরযন্ত্র]]
উল্লম্ব বহুতন্ত্রী (হার্প জাতীয়) যন্ত্রগুলিতে একটি ধ্বনিফলকের সাথে উল্লম্বভাবে বা নির্দিষ্ট কোণে বহুসংখ্যক তার (৩০ থেকে ৪০টি) থাকে, যেগুলির প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন তীক্ষ্ণতার স্বর উৎপাদন করে। তারগুলি বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। হ্রস্ব দৈর্ঘ্যের তারগুলি উচ্চতীক্ষ্ণতা তথা উঁচুগ্রামের স্বর উৎপাদন করে। তারগুলি সাধারণত একটি ত্রিভুজাকৃতির কাঠামোয় আবদ্ধ থাকে। ত্রিভুজের উপরের বাহুটি অর্থাৎ যন্ত্রটির গ্রীবাটি ধনুকাকৃতি বা খিলানাকৃতির হয়ে থাকে। এই যন্ত্রগুলির তারগুলিকে আঙুল দিয়ে টেনে টেনে বাজানো হয়। পাশ্চাত্যে [[হার্প]] ও দক্ষিণ এশিয়াতে [[সুরমণ্ডলস্বরমণ্ডল]] এরূপ দুইটি উল্লম্ব বহুতন্ত্রী যন্ত্রের উদাহরণ।
 
[[File:Santoor.jpg|thumb|right|250px|ভারতের [[সন্তুর]], একটি অনুভূমিক বহুতন্ত্রী শুষিরযন্ত্র]]
অনুভূমিক বহুতন্ত্রী যন্ত্রগুলিতে (জিথার জাতীয়) একটি অনুভূমিকভাবে বসানো সমতল ধ্বনিফলকের উপরে বহুসংখ্যক একই দৈর্ঘ্যের তার পাশাপাশি বসানো থাকে। বাদ্যযন্ত্রীর কোলে বা টেবিলে বা মাটিতে এটি বসানো থাকে। তারগুলিকে ছড় দিয়ে ঘষে, আঙুল বা অঙ্গুলিত্র দিয়ে টেনে কিংবা ছোট হাতুড়ি বা কাঠি দিয়ে আঘাত করে স্বর উৎপাদন করা হয়। [[সন্তুর]] এক ধরনের দক্ষিণ এশীয় অনুভূমিক বহুতন্ত্রী যন্ত্র। চাবিফলকের চাবির সাথে সংযুক্ত হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ধ্বনি উৎপাদনকারী বাক্সজাতীয় অনুভূমিক বহুতন্ত্রী যন্ত্রের একটি অতিসাধারণ উদাহরণ হল [[পিয়ানো]] নামক যন্ত্র।