নারীর ভোটাধিকার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
বানান সংশোধন
Shah Emtiaj (আলোচনা | অবদান)
লিঙ্কের পরামর্শ: ৮টি লিঙ্ক যুক্ত করা হয়েছে।
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা নবাগতদের কাজ পরামর্শ: লিঙ্ক যুক্ত করা
৪ নং লাইন:
[[File:Frauentag 1914 Heraus mit dem Frauenwahlrecht.jpg|thumb|267px|১৯১৪ সালে জার্মান নারী আন্দোলনের পোস্টার:<br />„Heraus mit dem Frauenwahlrecht“ (= "এক্ষুনি নারীদের ভোটাধিকার দাও!")]]
 
'''নারীর ভোটাধিকার''' বলতে নির্বাচনে নারীর ভোটপ্রদানের অধিকার বোঝায়। ১৯শ শতকের শেষ দিকে এসে ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, সুইডেন, কিছু অস্ট্রেলীয় উপনিবেশ এবং পশ্চিম [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের]] কিছু অঙ্গরাজ্যের নারীরা সীমিত আকারে ভোটের অধিকার অর্জন করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Ellen Carol DuBois|শিরোনাম=Woman Suffrage and Women's Rights|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=YVfiWHH6kbkC&pg=PT174|বছর=1998|প্রকাশক=NYU Press|পাতাসমূহ=174–6|আইএসবিএন=9780814719015}}</ref> এর কিছু পরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংগঠন গঠনের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধন করা হয়। এদের মধ্যে ১৯০৪ সালে জার্মানির বার্লিনে প্রতিষ্ঠিত [[আন্তর্জাতিক নারী ভোটাধিকার মৈত্রী]] উল্লেখযোগ্য, যারা নাগরিক হিসেবে নারীর সমান অধিকারের জন্যও কাজ করতেন।<ref>Allison Sneider, "The New Suffrage History: Voting Rights in International Perspective", ''History Compass,'' (July 2010) 8#7 pp 692–703,</ref>
 
১৮৮১ সালে [[আইল অফ ম্যান]] যেসব নারী সম্পত্তির অধিকারী, তাদেরকে ভোটাধিকার প্রদান করে। ১৮৯৩ সালে [[যুক্তরাজ্য|যুক্তরাজ্যের]] তৎকালীন [[নিউজিল্যান্ড উপনিবেশ]] তাদের নারীদেরকে ভোটের অধিকার দেয়। ১৮৯৪ সালে [[দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া]] উপনিবেশও একই কাজ করে এবং সেখানে ১৮৯৫ সালের নির্বাচনে নারীরা ভোট দিতে যান। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়াতে নারীরা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান।<ref name=SA1895>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.parliament.sa.gov.au/education/teachers/Documents/Women's%20Petition%20Photograph.pdf|বিন্যাস=PDF|শিরোনাম=Women's Suffrage Petition 1894|প্রকাশক=parliament.sa.gov.au|সংগ্রহের-তারিখ=১৮ এপ্রিল ২০১৭|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20110329160732/http://www.parliament.sa.gov.au/education/teachers/Documents/Women%27s%20Petition%20Photograph.pdf|আর্কাইভের-তারিখ=২৯ মার্চ ২০১১|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ১৮৮৯ সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়াও নারীদের পূর্ণ ভোটাধিকার দেওয়া হয়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Legislative Assembly|ইউআরএল=http://trove.nla.gov.au/newspaper/article/3240557|সংগ্রহের-তারিখ=23 January 2017|কর্ম=The West Australian|তারিখ=15 December 1899|অবস্থান=Perth, WA|পাতা=7}}</ref> ১৯০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার ছয়টি উপনিবেশ একত্রিত হবে অস্ট্রেলীয় কমনওয়েলথ গঠন করলে বাকী উপনিবেশগুলিতেও নারীরা নির্বাচনে প্রার্থিতা এবং ভোটপ্রদানের অধিকার অর্জন করে।
 
ইউরোপে ফিনল্যান্ডে (সেসময় [[রুশ সাম্রাজ্য|রুশ সাম্রাজ্যের]] অংশ) সর্বপ্রথম নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করেন এবং ১৯০৭ সালে ফিনীয় নির্বাচনে নারীরা প্রথমবারের মত সংসদে নির্বাচিত হন। ১৯১৩ সালে নরওয়ে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে নারীদের পূর্ণ ভোটাধিকার প্রদান করে।
 
দুই বিশ্বযুদ্ধ-মধ্যপর্তী পর্বে বেশির ভাগ স্বাধীন রাষ্ট্র নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করেন। কানাডা ১৯১৭ সালে, যুক্তরাজ্য ১৯১৮ সালে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯২০ সালে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে [[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধের]] সময় নারীদের ব্যাপক অবদানের পরে পশ্চিমে নারীদের সম্বন্ধে জনমত পরিবর্তিত হয়।<ref>The women's contribution to the war effort challenged the notion of women's physical and mental inferiority and made it more difficult to maintain that women were, both by constitution and temperament, unfit to vote. If women could work in munitions factories, it seemed both ungrateful and illogical to deny them a place in the polling booth. But the vote was much more than simply a reward for war work; the point was that women's participation in the war helped to dispel the fears that surrounded women's entry into the public arena.{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Leslie Hume|শিরোনাম=The National Union of Women's Suffrage Societies 1897-1914 |ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=K1TlCwAAQBAJ&pg=PT281|বছর=2016|প্রকাশক=Routledge|পাতা=281}}</ref>
 
তবে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে নারীদের ভোটাধিকার দেরিতে গ্রহণ করা হয়। স্পেনে ১৯৩১ সালে, ফ্রান্সে ১৯৪৪ সালে, ইতালিতে ১৯৪৬ সালে, গ্রিসে ১৯৫২ সালে, সুইজারল্যান্ডে ১৯৭১ সালে নারীরা ভোট দেবার অধিকার পান। [[লাতিন আমেরিকা|লাতিন আমেরিকার]] সিংহভাগ দেশ ১৯৪০-এর দশকে নারীদের ভোট প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে। ১৯৬১ সালে প্যারাগুয়ে সর্বশেষ দেশ হিসেবে এই অধিকার প্রদান করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.ipsnews.net/2009/04/paraguay-women-growing-in-politics-at-pace-set-by-men/|শিরোনাম=PARAGUAY: Women Growing in Politics – at Pace Set by Men|কর্ম=ipsnews.net}}</ref><ref name=Timeline />
 
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম [[মধ্য এশিয়া]]র নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করেন। [[মার্ক্সবাদী]]রা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করতেন, তাই ১৯১৭ সালে [[রুশ বিপ্লবের]] শেষ দিকে [[রাশিয়া]]র নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করা হয় এবং এসময় রাশিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট সমস্ত মধ্য এশীয় দেশগুলিতেও নারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়। এর পরবর্তী ২০ বছরে যেসব মধ্য এশিয়ার দেশের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক ছিল না, সেগুলিতেও নারীদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্ব ও [[দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া]]তে সর্বপ্রথম নারীদের ভোটাধিকার দেওয়া রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র [[মঙ্গোলিয়া]]তে, ১৯২৪ সালে। এরপর ১৯৩২ সালে [[থাইল্যান্ডে]] পুরুষ-নারী নির্বিশেষে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়, যদিও থাই নারীরা ১৮৯৭ সাল থেকেই স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারতেন। ২০শ শতকে এশিয়ার বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র [[চীনে]] নারীদের ভোটাধিকার অর্জনের আন্দোলন বিদ্যমান সরকারী কাঠামো পরিবর্তনের আগে শুরু হয়নি। ১৯৩৬ সালে নতুন [[গণচীন|চীন]] প্রজাতন্ত্রের সংবিধানে নারীদের ভোটাধিকার থাকলেও ১৯৩৭ সালে [[জাপানের]] চীন আক্রমণ, [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ]], সাম্যবাদী বিপ্লব, ইত্যাদি কারণে চীনা নারীদেরকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ভোটাধিকারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। জাপানেও ১৯৪৫ সালে গিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে নারীদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়। যদিও ১৯২৮ সালে যুক্তরাজ্যে নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করেন, এশিয়াতে যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম উপনিবেশ [[ভারতীয় উপমহাদেশে]] খুবই সীমিত সংখ্যায় পুরুষ ও নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করা হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৫০ সালে [[ভারতে]] সার্বজনিক ভোটাধিকারের অংশ হিসেবে নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করা হয়। এর বিপরীতে [[পশ্চিম এশিয়া]] তথা [[মধ্যপ্রাচ্যে নারীরা]] তাদের ভোটাধিকার অর্জনের জন্য সবচেয়ে বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেন। কিছু মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ যেমন [[আফগানিস্তান]], [[পাকিস্তান]], [[লেবানন]], [[সিরিয়া]], [[ইরান]], [[ইরাক]] ও [[ইয়েমেন]] ১৯৫০-এর দশক থেকে ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নারীদেরকে ভোটাধিকার প্রদান করলেও অনেক আরব দেশে নারীদের ভোটাধিকার পেতে ২০শ শতক পার হয়ে যায়। আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতায় এলে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নারীদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়। এর বিপরীতে ওমানে ১৯৯৭ সালে, কাতারে ১৯৯৯ সালে, বাহরাইনে ২০০২ সালে নারীদের ভোটাধিকার দান করা হয়। সবশেষে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এসে নারীরা প্রথমবারের মত [[সৌদি আরব|সৌদি আরবে]] পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দেবার সুযোগ পান।<ref name="photographtasneemalsultan,nationalgeographic">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://news.nationalgeographic.com/2015/12/151212-saudi-arabia-election-women-vote/|শিরোনাম=In a Historic Election, Saudi Women Cast First-Ever Ballots|লেখক=Photograph Tasneem Alsultan, National Geographic|প্রকাশক=}}</ref>
 
নারীদের ভোটাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে আইনি ও সাংবিধানিক সংশোধন আদায়ের জন্য নারীদেরকে এবং তাঁদের সমর্থকদেরকে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রচারণা চালাতে হয়েছে। বেশির ভাগ দেশে সম্পদশালী নারীরা অনেক আগেই ভোটের অধিকান পান, এমনকি সার্বজনীন পুরুষ ভোটাধিকারেরও আগে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে [[জাতিসংঘ]] নারীদের ভোটাধিকারকে উৎসাহিত করতে থাকে এবং ১৯৮১ সালে [[নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ]] নামক সনদটিতে জাতিসংঘের ১৮৯টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে নারীর ভোটাধিকারকে একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
 
==তথ্যসূত্র==