দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
চিত্র পরিবর্তন |
রচনা সংশোধন |
||
১ নং লাইন:
[[File:Human visual pathway.svg|thumb|right|300px|মানুষের দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণের গতিপথ]]
'''দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণ''' বলতে কোনও প্রাণীর দেহে সংঘটিত সেই প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যার মাধ্যমে পরিবেশের বস্তু দ্বারা নিঃসৃত বা প্রতিফলিত ও প্রাণীটির দৃশ্যমান
প্রাণীদেহে যে ক্ষমতাবলে এই দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়, তাকে ঐ প্রাণীর '''দর্শনশক্তি''' বা '''দৃষ্টিশক্তি''' বলে। একে দেখার ক্ষমতা, দৃক্শক্তি, দর্শনেন্দ্রিয়, ইত্যাদি নামেও ডাকা হতে পারে। দর্শনশক্তির মধ্যে [[উজ্জ্বল আলোয় দর্শনশক্তি]] (বা দিনের আলোয় দেখার ক্ষমতা), [[তিমির দর্শনশক্তি]] (রাত্রিবেলায় বা অন্ধকারে দেখার ক্ষমতা), [[মৃদু আলোয় দর্শনশক্তি]] (যেমন প্রত্যুষ বা গোধূলির আলোতে দেখার ক্ষমতা), [[বর্ণ দর্শনশক্তি]] (রঙ দেখার ক্ষমতা), ইত্যাদি ক্ষমতাগুলি অন্তর্ভুক্ত।
দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণ একটিমাত্র সরল প্রক্রিয়া নয়, বরং বহুসংখ্যক ভৌত, শারীরতাত্ত্বিক ও মনস্তাত্ত্বিক
দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণ প্রক্রিয়াটি অনেকগুলি ধাপে ঘটে। প্রথম ধাপে পরিবেশ থেকে আলোকরশ্মির আকারে অশোধিত দৃষ্টিগত উপাত্তগুলি চোখ দ্বারা গৃহীত হয়। দ্বিতীয় ধাপে চোখের অক্ষিপটে আলোকরশ্মির ভৌত তড়িৎচৌম্বকীয় শক্তি স্নায়ুকোষে পরিবহনযোগ্য তড়িৎ-রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়, যাতে দৃষ্টিগত উপাত্তগুলি মস্তিষ্ক প্রক্রিয়াজাত করতে পারে। তৃতীয় ধাপে চোখ থেকে দৃষ্টিগত উপাত্তগুলি তড়িৎ-রাসায়নিক সংকেতরূপে মস্তিষ্কে প্রেরণ করা হয়। মানুষের ক্ষেত্রে সংকেতগুলি দৃষ্টিস্নায়ু ও মস্তিষ্কের পার্শ্বিক জানুবৎ স্নায়ুকেন্দ্র হয়ে মানবমস্তিষ্কের পশ্চাৎকরোটি খণ্ডকে অবস্থিত মুখ্য দৃষ্টি-বহিঃস্তরে বাহিত ও প্রক্রিয়াজাত হয় এবং সবশেষে দৃষ্টি-বহিঃস্তর থেকে অগ্রললাটীয় খণ্ডকে সংকেত প্রেরিত হয়ে সম্পূর্ণ দৃষ্টিগত প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পন্ন হয়। মস্তিষ্কের দৃষ্টি-সংশ্লিষ্ট অংশগুলিতে দৃষ্টিগত উপাত্তগুলির বৈশিষ্ট্যগুলি প্রথমে যাচাই-বাছাই করা হয়, সেগুলিকে দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণের কিছু মূলনীতি অনুসরণ করে পুনর্বিন্যস্ত করা হয় এবং সবশেষে সেগুলির একটি অর্থবহ ব্যাখা প্রদান করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে (১ সেকেন্ডের এক দশমাংশ সময়ে বা ক্ষেত্রবিশেষে তার চেয়েও কম সময়ে) সম্পাদিত হয়।
দর্শনশক্তির সাথে জড়িত বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় উপাদানকে সম্মিলিতভাবে দৃষ্টিতন্ত্র (Visual system) হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যে অঙ্গটি পরিবেশ থেকে আগত দৃষ্টিগত তথা আলোকীয় উপাত্তগুলি আহরণ করে ও মস্তিষ্কে প্রেরণ করে, তাকে দর্শনেন্দ্রিয়স্থান বলে। যেমন চোখ মানুষের দর্শনেন্দ্রিয় সংশ্লিষ্ট অঙ্গ। [[ভাষাবিজ্ঞান]], [[মনোবিজ্ঞান]] , [[সংজ্ঞানাত্মক বিজ্ঞান]], [[স্নায়ুবিজ্ঞান]] ও [[আণবিক জীববিজ্ঞান|আণবিক জীববিজ্ঞানের]] এগুলির উপরে বহু বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চালানো হয়। এগুলিকে কখনও কখনও সম্মিলিতভাবে [[দৃষ্টি বিজ্ঞান]] হিসাবে উল্লেখ করা হয়।▼
তবে দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণকে কেবলমাত্র দর্শনেন্দ্রিয় দ্বারা প্রাপ্ত তথ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে মানসিক চিত্র উৎপাদনের একটি বিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। বরং এটি প্রাণীর "কার্যসাধন-প্রত্যক্ষণ চক্রের" একটি অংশবিশেষ, যেখানে দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণ প্রাণীর কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করে এবং সেই কর্মকাণ্ডগুলি আবার দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণকে প্রভাবিত করে এবং এভাবে অবিরত একটি চক্র চলমান থাকে, যেখানে প্রাণীর কর্মকাণ্ড ও দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণের মধ্যে কোনও সুস্পষ্ট সীমানা টানা সম্ভব নয়। দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণ তাই সদাসক্রিয় ও চলমান একটি প্রক্রিয়া।
দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণের সাথে [[দৃষ্টিতীক্ষ্মতা]] বা দৃষ্টিসূক্ষ্মতা নামক ধারণাটির পার্থক্য আছে। দৃষ্টিতীক্ষ্মতা বলতে কোনও ব্যক্তি কতটুকু পরিস্কার দেখতে পারেন, সে ব্যাপারটিকে নির্দেশ করা হয়। কোনও ব্যক্তির দৃষ্টিতীক্ষ্মতা নিখুঁত হলেও (যাকে ২০/২০ দৃষ্টিশক্তি হিসেবে ডাকা হয়) তার দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণে অন্যান্য সমস্যা থাকতে পারে। ▼
▲দর্শনশক্তির সাথে জড়িত বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় উপাদানকে সম্মিলিতভাবে দৃষ্টিতন্ত্র (Visual system) হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যে অঙ্গটি পরিবেশ থেকে আগত দৃষ্টিগত তথা আলোকীয় উপাত্তগুলি আহরণ করে ও মস্তিষ্কে প্রেরণ করে, তাকে দর্শনেন্দ্রিয়স্থান বলে। যেমন
▲দৃষ্টিগত প্রত্যক্ষণের সাথে [[দৃষ্টিতীক্ষ্মতা]] বা দৃষ্টিসূক্ষ্মতা নামক ধারণাটির পার্থক্য আছে। দৃষ্টিতীক্ষ্মতা বলতে কোনও ব্যক্তি কতটুকু পরিস্কার দেখতে পারেন, সে ব্যাপারটিকে নির্দেশ করা
<!--
==দৃষ্টিতন্ত্র==
|