গোরা সর্বাধিকারী

গোরা সর্বাধিকারী (২৯ জুলাই ১৯৪১ – ১৯ জানুয়ারি ২০২২) ছিলেন প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী। গোরা সর্বাধিকারীর জন্ম কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণের বৎসরে অর্থাৎ ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে জুলাই। তিনি বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ধবধবে ফর্সা গায়ের রঙের জন্য তার নাম রাখা হয়েছিল গোরা। ছোটবেলা থেকেই তার রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রতি আকর্ষণ ছিল আর মনেপ্রাণে ছিলেন রবীন্দ্র-সাধক। শান্তিনিকেতনে ঘুরতে এসে যখন জানলেন বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভরতি পরীক্ষা চলছে, তিনি ইন্টারভিউতে উপস্থিত হন এবং সুযোগও পেয়ে যান। তার কিন্তু ডাক্তারী পড়তে জার্মানি যাওয়ার কথা ছিল। রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসার টানে তার জার্মানি যাওয়া হল না। ২০ বৎসর বয়স থেকেই রয়ে যান শান্তিনিকেতনে। তিনি সঙ্গীতভবনে শান্তিদেব ঘোষের অধীনে ভরতি হন। আশ্রমকন্যা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহধন্যা মোহর তথা কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আসেন। তার তালিমে অচিরে রবীন্দ্র সঙ্গীত জগতে স্বনামধন্য শিল্পী হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। মোহরদির সঙ্গে তার নিবিড় সখ্যতা ও পারিবারিক বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে তিনি কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মরণে 'কণিকা ধারা' নামে একটি সাংস্কৃতিক সংস্থা স্থাপন করেন ,যার ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে। কিংবদন্তি সুরকার সলিল চৌধুরীর সঙ্গীত পরিচালনায় তিনি প্রথম এবং মাত্র একবারই রবীন্দ্র সঙ্গীতের রেকর্ড করেন। মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট করেন সলিল চৌধুরীই। তার কণ্ঠে প্রথম গানটি ছিল – হাসি কেন নাই ও নয়নে। তার কণ্ঠে গীত রবীন্দ্রসঙ্গীতের কয়েকটি হল-

• জাগো অলস
• দুয়ারে দাও মোরে রাখিয়া নিত্য কল্যাণ কাজে
• তোমার এই মাধুরী ছাপিয়ে আকাশ
• নাই যদি বা এলে
• চোখ যে ওদের ছুটে চলে গো

গোরা সর্বাধিকারী
জন্ম	(১৯৪১-০৭-২৯)২৯ জুলাই ১৯৪১ ঝাডগ্রাম বৃটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ)
মৃত্যু	১৯ জানুয়ারি ২০২২(2022-01-19) (বয়স ৮০) শান্তিনিকেতন পশ্চিমবঙ্গ , ভারত
ধরন	রবীন্দ্রসঙ্গীত
পেশা	সঙ্গীতশিল্পী

শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীতে নয়, অভিনয়েও বেশ দক্ষ ছিলেন তিনি। বিভিন্ন নাটকে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন।

পরবর্তীতে গোরা সর্বাধিকারী বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবনের অধ্যক্ষ হন৷ এমনকি, বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কর্মসমিতির সদস্যও হয়েছিলেন ৷

জীবনাবসান

প্রবাদপ্রতিম রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী পাঁচ বছর ধরে আলঝাইমার্স রোগে ভুগছিলেন। ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে জানুয়ারি, বুধবার শান্তিনিকেতনের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ৮০ বৎসর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।