পশ্চিম হরিণা জুনিয়র হাইস্কুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
→‎মিড-ডে -মিল: কপিরাইট সমস্যা
ট্যাগ: ২০১৭ উৎস সম্পাদনা
৪ নং লাইন:
{{তথ্যছক দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা|country name=|image=|primary languages=|established dates=|agency=|image size=|literacy women=৮৯|literacy men=৮১|funding per student=[[বই]] , [[বৃত্তি]] , মিড-ডে-মিল, জামা-পেন্ট, সাইকেল ইত্যাদি ।( প্রায় £৩৫,০০০ হাজার )|literacy total=১৭০|imagesize=|agency image=|system type=|leader titles=|leader names=}}
 
= মিড-ডে -মিল =
[[চিত্র:Midday Meal child's.jpg|থাম্ব|'''বিদ্যালয়ের মিড-ডে-মিল''']]
২০০১ সালের ২৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে সরকার পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে রান্না করা খাবার দেওয়ার প্রকল্প চালু হয়। পাশাপাশি চলতে থাকে অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের বিস্তার। স্কুলে রান্না করা খাবার দেওয়ার প্রকল্পটি মিড-ডে মিল নামেই চালু হয়, ১৯৯৫ সালে, কিন্তু নামে মিড-ডে মিল হলেও বাচ্চাদের দেওয়া হত মাসে মাথাপিছু তিন কেজি করে চাল বা গম। প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ু সেই ১৯৮০-র দশক থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল চালু করেছিল; এবং অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পটা সর্বজনীন করে তুলেছিল। কেরলেও এ-ব্যাপারে বেশ জোর পড়েছিল। কিন্তু দেশের অন্যত্র কোথাও বাচ্চাদের বিকাশের প্রতি এ-ভাবে নজর দেওয়া হয়নি। এক কথায় বলতে গেলে দেশ গঠনের জন্য যত বড় বড় কথাই বলা হোক না কেন, তার ভিত্তিস্থাপনের কাজটাতেই ছিল প্রচণ্ড অবহেলা। পরিণামে, [[ভারত|ভারতে]] শিশুদের [[অপুষ্টি|অপুষ্টির]] মাত্রা [[আফ্রিকা|আফ্রিকার]] দুর্ভিক্ষতাড়িত সাহারার দক্ষিণবর্তী অঞ্চলের চেয়ে বেশি!
 
শেষ পর্যন্ত আশার আলো দেখা দিল। এবং গোড়ার দিকে প্রচণ্ড বিরোধিতা সত্ত্বেও স্কুলে-স্কুলে মিড-ডে মিল চালু হয়ে গেল। প্রথম দিকে এ-প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ ছিল যারপরনাই কম, শিশু-পিছু রান্নার জন্য তরিতরকারি, তেলমশলা, [[জ্বালানী|জ্বালানি]], রাঁধুনির মজুরি খরচ বাবদ মাত্র এক টাকা। তা সত্ত্বেও এর সুফল হিসাবে শিশুদের উপস্থিতি বাড়ল, যে শিশুর পূর্বজরা স্বপ্নেও স্কুলে যাওয়ার কথা ভাবেননি তারা স্কুলের আঙ্গিনায় আসতে পারল। স্কুলগুলো প্রাণবন্ত হতে লাগল, যার কিছু প্রভাব পঠনপাঠনেও পড়তে লাগল।
 
একই ভাবে, যে অঙ্গনওয়াড়িগুলোকে ‘[[খিচুড়ি]] সেন্টার’ বলে নাক সিটকানো হত, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেগুলোরও আকর্ষণ বাড়তে লাগল। তুলনায় কম হওয়া সত্ত্বেও, এ-বাবদ অর্থবরাদ্দও বাড়তে লাগল। সরকারি নীতিতে যা হয়ে থাকে, [[স্কুল]] এবং অঙ্গনওয়াড়ি, উভয় ক্ষেত্রেই বাচ্চাদের দেওয়ার জন্য খাবারের যে পরিমাণ নির্ধারিত হল, এবং তার জন্য যে টাকা বরাদ্দ করা হল, তার মধ্যে মস্ত ফারাক। পাশাপাশি, যাঁরা মিড-ডে মিল রান্না করেন তাঁদের মজুরি সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরির কাছেও নস্যি। কিন্তু সরকার অবিচল। ‘অচ্ছে দিন’-এর সরকার আসার পর থেকে মিড-ডে মিল-এ প্রকৃত খরচ আগের জমানার তুলনায় কমে গেছে: ২০১৫-১৬’তে ৯,১৫২ কোটি, ২০১৬-১৭’তে ৯,৪৮৩ কোটি। এ-বারের বাজেটে যে যৎসামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধি দেখানো হয়েছে (১০,০০০ কোটি টাকা থেকে ১০,৫০০ কোটি টাকা), প্রকৃত খরচ যে তার ধারেকাছে যাবে না, সেটা বুঝতে অসুবিধা নেই। সুতরাং স্কুলে-স্কুলে মিড-ডে মিল চালাতে গিয়ে শিক্ষকদের নাকানিচোবানি। যে স্কুলগুলোতে ছাত্রসংখ্যা কম সেগুলোতে তো রান্না করে ওঠাই দুরূহ। সরকারি নিয়মে, একটা স্কুলে মোট যত ছাত্রছাত্রীর নাম নথিভুক্ত, মিড-ডে মিলের টাকা বরাদ্দ করা হয় তার ৮৫ শতাংশের হিসাবে। ধরে নেওয়া হয় তার বেশি শিশু স্কুলে আসবে না। অথচ সর্বশিক্ষা অভিযান থেকে কত তোড়জোড় শিশুদের উপস্থিতি ১০০ শতাংশ করবার জন্য। এবং, বহু স্কুলে আমরা দেখেছি উপস্থিতির হার ৯০-৯৫ শতাংশ পর্যন্ত গিয়েছে। ফলে খাবারের যে মান হওয়ার কথা সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু স্কুলে পাড়াপড়শি, বন্ধুবান্ধবদের সাহায্যে অন্য রকম ব্যবস্থা যে হচ্ছে না তা নয়, কিন্তু সেগুলো ব্যতিক্রম। এখন তো আরও মুশকিল, ‘চোর ধরা’র জন্য আধারের বন্দোবস্ত। আশঙ্কা, আধারের সাহায্য নিয়ে এ-খাতে খরচ আরও কমানো হবে। একই কাহিনি অঙ্গনওয়াড়িতেও।
 
এক কথায়, শিশুবিকাশের বিষয়টাই সরকারের অগ্রাধিকারের সূচিতে নেই। তার কারণ সংসাধনের অভাব নয়, আকাল সংবেদনশীলতা ও বোধের। প্রভুরা মিড-ডে মিল ও অঙ্গনওয়াড়িকে মনে করেন গরিবদের জন্য দাতব্য। উন্নত বিশ্বে কিন্তু মিড-ডে মিলকে স্কুলব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসাবে দেখা হয়— শিশু যতক্ষণ স্কুলে থাকছে ততক্ষণ সেটা তার বাড়ি, বাড়িতে থাকলে সে দুপুরের খাবার খেত, অতএব স্কুলেও খাবে। অঙ্গনওয়াড়িতে খাবার সরবরাহ করার পিছনে, [[পুষ্টি]] ছাড়াও, নৈতিক ও ব্যবহারিক অন্যান্য ধারণার যোগ আছে, যার অন্যতম হল সামূহিকতার বোধ গড়ে তোলা। ‘হাভাতে বাচ্চাদের খাবারের ব্যবস্থা করছি’, এমন অশ্লীল ধারণা নিয়ে কোনও কার্যকর উদ্যোগ গড়ে উঠতে পারে না, কেননা ‘হাভাতে’দের জন্য প্রকল্প সার্থক করার দায় কারও থাকে না। বিপরীতে, সীমিত রূপায়ণেও, মিড-ডে মিল ইতিমধ্যে কিছুটা হলেও স্কুলের অঙ্গ হয়ে উঠেছে, এবং ক্ষুন্নিবারণ ছাড়াও স্কুলশিক্ষায় নানা ভাবে অবদান রেখে চলেছে। অঙ্গনওয়াড়িগুলোর সচলতা বৃদ্ধি, পুষ্টি ছাড়াও, স্বাস্থ্য ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় প্রভাব ফেলছে। কিন্তু [[সংবিধান]], [[আইন]], [[সংসদ (ভারত)|সংসদ]], সব কিছুর অঙ্গহানিতে মত্ত বর্তমান সরকার শিশুবিকাশের ক্ষেত্রে অগ্রগতির সূচনাটাকেও যে উপড়ে ফেলতে চাইবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
 
<br />