বেলুচিস্তানে বিদ্রোহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৩ নং লাইন:
==ইতিহাস==
আয়তনের দিক থেকে বালুচিস্তান হচ্ছে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ। বালুচিস্তানের আয়তন ৩ লাখ ৪৭ হাজার ১৯০ কিলোমিটার, যা পাকিস্তানের মোট আয়তনের প্রায় ৪৩ শতাংশ। কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে ছোট। রাজধানী হচ্ছে কোয়েটা। ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের বিবেচনায় পাকিস্তানের জন্য এই প্রদেশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বালুচিস্তানের উত্তর-পূর্ব দিকে আছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়া, পূর্ব আর দক্ষিণ-পূর্বদিকে সিন্ধু, দক্ষিণে আরব সাগর, পশ্চিমদিকে ইরান, আর উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে আছে আফগানিস্তান। প্রদেশের প্রধান জাতিগোষ্ঠী হচ্ছে বালুচ এবং পশতুন। বালুচরাতাছাড়া প্রদেশের মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ। আর পশতুনরা ৩৬ শতাংশ। এর বাইরে আছেরয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যেমন- ব্রাহুইস, হাজারা, সিন্ধী, পাঞ্জাবি, উজবেক।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শেষাংশ1=|প্রথমাংশ1=|শিরোনাম= বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা কতদূর?|ইউআরএল=https://www.banglatribune.com/672355/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A6%A6%E0%A7%82%E0%A6%B0|ওয়েবসাইট=banglatribune|সংগ্রহের-তারিখ=২১ মার্চ ২০২১|ভাষা=bn |তারিখ=২১ মার্চ ২০২১}}</ref>
 
==বৈষম্যের অভিযোগ==
বালুচিস্তানের রয়েছে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ। বিশেষ করে গ্যাস এবং কয়লার বিশাল মওজুদ। আছে তামা এবং সোনা। বালুচ জাতীয়তাবাদীরা বহু বছর ধরে অভিযোগ করে যাচ্ছে যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার তাদের শোষন করছে এবং বালুচিস্তানকে তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে। অর্থনৈতিকভাবে বালুচিস্তান এখনো পাকিস্তানের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। পাকিস্তানের সরকারি চাকুরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বালুচদের বিরুদ্ধে বৈষম্যেরও ব্যাপক অভিযোগ আছে।
 
==স্বাধীন বালুচিস্তানের স্বপ্ন==
পাকিস্তানে বালুচদের স্বাধীনতার লড়াই বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনেরও অনেক আগে শুরু হয়েছিল। এটা সত্যি, যে ধরণের বঞ্চনা-বৈষম্য এবং জাতিগত-সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন গতি পেয়েছিল, পাকিস্তানের বালুচদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার পেছনেও সেরকম অনেক কারণ নিহিত।
পাকিস্তানে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল বালুচিস্তানেই, স্বাধীনতার মাত্র এক বছর পর ১৯৪৮ সালে। বালুচিস্তানে যে চারটি প্রিন্সলি স্টেট ছিল, তার তিনটি ১৯৪৭ সালেই পাকিস্তানে যোগ দেয়- মাকরা, লাস বেলা এবং খারান। কিন্তু চতুর্থ একটি প্রিন্সলি স্টেট, খান অব কালাতের শাসক আহমদ ইয়ার খান প্রথমে পাকিস্তানের যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান। তবে শেষ পর্যন্ত ১৯৪৮ সালে যখন তিনি পাকিস্তানে যোগ দেয়ার জন্য রাজি হন, তখন তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন তার ভাই প্রিন্স আগা আবদুল করিম বালুচ। তারাই বালুচিস্তানে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা করেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শেষাংশ1=|প্রথমাংশ1=|শিরোনাম=বালুচিস্তান: সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশকে কেন অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখে?|ইউআরএল=https://www.bbc.com/bengali/news-53226152|ওয়েবসাইট=bbc|সংগ্রহের-তারিখ=২৯ জুন ২০২০|ভাষা=bn |তারিখ=২৯ জুন ২০২০}}</ref>
 
বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির সংঘাত নিত্যদিনের ঘটনা। কিন্তু সেই সংঘাতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি হলেও বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা সুদূরপরাহত। স্বাধীন বেলুচিস্তানের জন্য প্রতিবেশী ইরান ও আফগানিস্তানের সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু ইরান ও আফগানিস্তানের পক্ষে ওই সমর্থন দেওয়া কখনও সম্ভব নয় কারণ, পাকিস্তানের বেলুচরা স্বাধীনতা অর্জন করলে ইরান ও আফগানিস্তানের বেলুচরা স্বাধীন বেলুচিস্তানে যোগ দিতে চাইবে। ফলে, ইরান ও আফগানিস্তানের মানচিত্রের পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শেষাংশ1=|প্রথমাংশ1=|শিরোনাম= বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা কতদূর?|ইউআরএল=https://www.banglatribune.com/672355/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A6%A6%E0%A7%82%E0%A6%B0|ওয়েবসাইট=banglatribune|সংগ্রহের-তারিখ=২১ মার্চ ২০২১|ভাষা=bn |তারিখ=২১ মার্চ ২০২১}}</ref>
স্বাধীন বালুচিস্তানের স্বপ্ন
 
পাকিস্তানে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল বালুচিস্তানেই, স্বাধীনতার মাত্র এক বছর পর ১৯৪৮ সালে। বালুচিস্তানে যে চারটি প্রিন্সলি স্টেট ছিল, তার তিনটি ১৯৪৭ সালেই পাকিস্তানে যোগ দেয়- মাকরা, লাস বেলা এবং খারান। কিন্তু চতুর্থ একটি প্রিন্সলি স্টেট, খান অব কালাতের শাসক আহমদ ইয়ার খান প্রথমে পাকিস্তানের যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান। তবে শেষ পর্যন্ত ১৯৪৮ সালে যখন তিনি পাকিস্তানে যোগ দেয়ার জন্য রাজি হন, তখন তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন তার ভাই প্রিন্স আগা আবদুল করিম বালুচ। তারাই বালুচিস্তানে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা করেন।
 
এরপর এ পর্যন্ত বালুচিস্তানে অন্তত পাঁচবার স্বাধীনতার প্রশ্নে সশস্ত্র সংঘাত হয়েছে। প্রতিবারই নিষ্ঠুরভাবে এসব বিদ্রোহ দমন করা হয়।
 
বালুচিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন এখন নানা ধারায় বিভক্ত। কোন কোন গোষ্ঠী কেবল অধিকতর স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে আন্দোলন করছে। কোন কোন গোষ্ঠী বালুচিস্তানকে একেবারে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে।
 
বালুচিস্তানে এরকম প্রায় আধা ডজন সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা আছে, যারা পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা বা বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য লড়ছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এরা আগেও পাকিস্তান সরকারকে টার্গেট করে বিভিন্ন হামলা চালিয়েছে।
 
২০১৮ সালে বালুচ লিবারেশন আর্মি করাচির চীনা কনস্যুলেট ভবনে হামলার চেষ্টা চালায়। সেই হামলায় নিহত হয়েছিল ৪ জন। তবে কনস্যুলেটের ভেতরের কেউ এই হামলায় হতাহত হয়নি।
 
গত বছর বালুচিস্তানের বন্দর নগরী গোয়াদারে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি একটি পাঁচ তারকা হোটেলে হামলা চালায়। গোয়াদারে চীন কয়েকশো কোটি ডলারের যে বিশাল প্রকল্পের কাজ করছে, এই পাঁচতারা হোটেলটি তারই অংশ। বিএলএ সেখানে হামলা করেছিল চীনা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আঘাত হানার জন্য।
 
বালুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সেখানে চীনা বিনিয়োগের বিপক্ষে। তারা মনে করে, এতে বালুচিস্তানের স্থানীয় মানুষের কোন উপকার হবে না।
 
প্রথম দিকে বিএলএ বালুচিস্তানের স্বায়ত্বশাসনের দাবি তুলেছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা সহিংস বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ বেছে নেয়। পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র এটিকে একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
 
বালুচ লিবারেশন ফ্রন্ট হচ্ছে আরেকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী দল। ১৯৬৪ সালে দলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটি বেশ জনপ্রিয় বালুচদের মাঝে।
 
বালুচ রিপাবলিকান পার্টি, যেটির নেতৃত্বে আছেন ব্র্রহামদাগ বুগটি, সেটি প্রতিষ্ঠা করেন তার পিতামত নবাব আকবর খান বুগটি। এটিও বৃহত্তর বালুচিস্তানের স্বাধীনতার কথা বলে। তাদের সঙ্গে বালুচ লিবারেশন আর্মির সম্পর্ক আছে বলে দাবি করেন কেউ কেউ।
 
==চীনের ভূমিকা==