দীপাবলি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
বিষয়বস্তু যোগ, তথ্যসূত্র যোগ/সংশোধন
Aishik Rehman (আলোচনা | অবদান)
2402:3A80:1F0A:3AE5:BDAD:B7DE:8E00:2C3C-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে HirokBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
২৯ নং লাইন:
"দীপাবলি" নামটির অর্থ "প্রদীপের সমষ্টি"।<ref name="Monier">{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=[[Monier Monier-Williams]]|শিরোনাম=Sanskrit-English Dictionary|অবস্থান=Entry for दीप|পাতা=481}}</ref> এই দিন হিন্দুরা ঘরে ঘরে ছোটো মাটির প্রদীপ জ্বালেন। এই প্রদীপ জ্বালানো অমঙ্গল বিতাড়নের প্রতীক।<ref name="Demon">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল = http://books.google.com/?id=8HhVcspIBU4C&pg=PA179&dq=lamps+kept+on+diwali+lakshmi+evil+spirit#v=fjhfgyuiuyuiyuuiyii99wtwtyeryyywruiuhyuiyy&q&f=false|শিরোনাম = Invisible River: Sir Richard's Last Mission|প্রথমাংশ=Zak|শেষাংশ=Vera|উক্তি=First Diwali day called ''Dhanteras'' or wealth worship. We perform Laskshmi-Puja in evening when clay diyas lighted to drive away shadows of evil spirits.|সংগ্রহের-তারিখ = 26 October 2011|আইএসবিএন = 978-1-4389-0020-9|তারিখ = 2010-02}}</ref> বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সারা রাত প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে ঘরে [[লক্ষ্মী]] আসেন বলে উত্তর ভারতীয় হিন্দুরা বিশ্বাস করেন। বাংলার দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়। এই উৎসব সাড়ম্বরে আলোকসজ্জা সহকারে পালিত হয়। তবে এই পূজা প্রাচীন নয়। ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কাশীনাথ রচিত শ্যামাসপর্যাবিধিগ্রন্থে এই পূজার সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। কথিত আছে, নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় অষ্টাদশ শতকে তার সকল প্রজাকে শাস্তির ভীতিপ্রদর্শন করে কালীপূজা করতে বাধ্য করেন। সেই থেকে নদিয়ায় কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কৃষ্ণচন্দ্রের পৌত্র ঈশানচন্দ্রও বহু অর্থব্যয় করে কালীপূজার আয়োজন করতেন। অমঙ্গল বিতাড়নের জন্য আতসবাজিও পোড়ানো হয়।<ref name="Firecracker1">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল = http://books.google.com/?id=ni2z5Z35htkC&pg=PA54&dq=lamps+diwali+evil+spirits#v=onepage&q=lamps%20diwali%20evil%20spirits&f=false|শিরোনাম = Big Book of Canadian Celebrations|প্রথমাংশ=Ruth|শেষাংশ=Solski|প্রকাশক=S&S Learning Materials|উক্তি=Fireworks and firecrackers are set off to chase away evil spirits, so it is a noisy holiday too.|সংগ্রহের-তারিখ = 26 October 2011|বছর = 2008|আইএসবিএন = 978-1-55035-849-0}}</ref><ref name="Firecracker2">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল = http://books.google.com/?id=GErOyV7FBNUC&pg=PA175&dq=lamps+diwali+evil+spirits#v=onepage&q=lamps%20diwali%20evil%20spirits&f=false|শিরোনাম = Asian American History|প্রথমাংশ=Valerie|শেষাংশ=Petrillo|প্রকাশক=Chicago Review Press|উক্তি=There are firecrackers everywhere to scare off evil spirits and contribute to the festive atmosphere.|সংগ্রহের-তারিখ = 26 October 2011|আইএসবিএন = 978-1-55652-634-3|তারিখ = 28 May 2007}}</ref><ref name="Firecracker3">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল = http://books.google.com/?id=TRyb8XqB7dEC&pg=SA9-PA1&dq=lamps+diwali+evil+spirits#v=onepage&q=lamps%20diwali%20evil%20spirits&f=false|শিরোনাম = The International Holiday & Festival Primer|প্রথমাংশ=David|শেষাংশ=DeRocco|প্রথমাংশ২=Joan|শেষাংশ২=Dundas|coauthor=Ian Zimmerman|প্রকাশক=Full Blast Productions|উক্তি=But as well as delighting the spectators, the fireworks are believed to chase away evil spirits.|সংগ্রহের-তারিখ = 26 October 2011|আইএসবিএন = 978-1-895451-24-5|বছর = 1996}}</ref> বিশেষত উত্তর ভারতে দীপাবলির সময় নতুন পোশাক পড়া, পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণের প্রথাও আছে।
 
ধনতেরাসের দিন অনেক ভারতীয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের অর্থবর্ষের সূচনা হয়; লোকজন নতুন বর্তন, বাসন, গয়না প্রভৃতিও কিনে থাকেন এই দিনে। তবে বেশির ভাগ বাঙালি ব্যবসায়ীদের অর্থবর্ষের সূচনা হয় [[পহেলা বৈশাখ|পয়লা বৈশাখে]]। দ্বিতীয় দিনটিকে বলে [[ভূত চতুর্দশী]]। এই দিনে বাঙালিরা বাড়ির চোদ্দোটা এঁদো কোণায় চোদ্দোটা প্রদীপ জ্বালিয়ে কালো মুছিয়ে আলোকিত করে তোলেন বাড়িটাকে। কথায় আছে যে এমনটা করলে ভূতপ্রেত পরিবার আর স্বজনদের ঘাড়ের কাছে নড়তে পারে না; এমনটাও লোককথায় শোনা যায় যে এই প্রদীপসজ্জার মাধ্যমে পরিবারের পিতৃপুরুষদের অনুষ্ঠানে পদার্পণ করার জন্য নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়, যাতে তারা মায়ের বাৎসরিক আগমনে উপস্থিত হয়ে সবাইকে শুভাশীষ দিয়ে নিজেরা মায়ের আশীর্ব্বাদে মোক্ষ লাভ করবেন। তৃতীয় দিন কার্তিক অমাবস্যায় যেখানে [[উত্তর ভারত|উত্তর ভারতে]] লক্ষ্মীর পূজা চলছে, [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গে]] দারুণ জাঁকজমকে ঘটা করে পালন করা হয় [[কালীপূজা]]। অবশ্য সেদিন আদি পশ্চিমবঙ্গ বাসিন্দারা, ঘটিরা, বাড়িতে লক্ষ্মীর পূজাও করে থাকেন। তবে আদি বাংলাদেশি হিন্দুদের, বাঙালদের, এই নিয়ম নেই; তা অনেকে বাড়িতেও কালী পুজো করেন, যদিও এই পুজোর বারোয়ারি ভাবে পালন হওয়ার প্রচলন বেশি। কদাচিৎ কালীপুজোর দিন আর দেওয়ালির দিন পৃথকও হতে পারে; দেওয়ালির তারিখটা একদিন পরে কিংবা আগেও পড়া সম্ভব। কেননা কালীপূজার লগ্ন অমাবস্যার মাঝরাত্রিতে ঠিক হয়, আবার দীপাবলির লক্ষ্মী পূজার লগ্ন নিশ্চিত করা হয় অমাবস্যার সন্ধ্যেতে, তাই পুজোর লগ্ন অনুযায়ী দুই পুজোর তারিখে মাঝে মাঝে অন্তর ঘটে থাকে। দেওয়ালির দিনে প্রদীপের আলোয় বাড়ি-বাড়ি ঝকমক করে ওঠে। নানান রঙের বাজিতে আকাশটাও রীতিমত চকচক করে থাকে। দীপাবলি সারি-সারি প্রদীপের আলোকে স্বর্গের দেবতাকে মর্তের কুটিরে বরণ করে নেবার উৎসব। চতুর্থ দিন কার্তিক শুক্লা প্রতিপদ। এই দিন [[বৈষ্ণবধর্ম|বৈষ্ণবেরা]] [[গোবর্ধন পূজা]] করেন। পঞ্চম দিন যমদ্বিতীয়া বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা [[ভাইফোঁটা]]। এই দিন বোনেরা তাদের ভাইদের জন্যে উপোস করে তাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে।‘[https://festivalsguide.online/what-is-diwali-2021-दिवाली-पर-निबंध/ দীপাবলি’] নামের অর্থ ‘প্রদীপের সমষ্টি’ এবং ‘আলোর উৎসব’। একে দেওয়ালী, দীপান্বিতা, দীপালিকা, সুখরাত্রি, সুখসুপ্তিকা এবং যক্ষরাত্রিও বলা হয়। এই দিনে হিন্দুরা তাদের বাড়িতে ছোট ছোট মাটির প্রদীপ জ্বালায়। এই বাতি জ্বালানো মন্দ থেকে বিতাড়নের প্রতীক। এর সময়কাল কার্তিক মাসের অমাবস্যার সন্ধ্যা। এই উৎসব শুধু ভারতেই নয়, সারা বিশ্বে পালিত হয়। যাইহোক, আলো আহ্বান করার আচার পৃথিবীতে খুব সর্বব্যাপী। বৌদ্ধ, জৈন এবং খ্রিস্টানরাও আলোর উৎসব উদযাপন করে ভিন্নভাবে। বাঙালি হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা আমাদের দীপাবলি এবং কালীপূজা এক হয়ে গেছে। কিন্তু ভারতের অন্যান্য স্থানে কালীপূজা ছাড়া আলোর উৎসব হয়। বাংলাদেশে তন্ত্রের প্রাধান্য তাই এখানে কালীর পূজা করা হয়। অযোধ্যায় ভগবান শ্রী রামচন্দ্র রাবণকে হত্যার পর, মানুষ আসলে তাকে স্বাগত জানাতে সারা রাত অযোধ্যা জ্বালিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী হিন্দুরা এখনও পৈশাচিক শক্তির পরাজয় এবং অশুভ শক্তির পতনের স্মরণে দীপাবলি উদযাপন করে, যেহেতু অযোধ্যার লোকেরা আলোর উৎসব এবং উৎসবের আয়োজন করেছিল। দীপাবলির আরেকটি তাৎপর্য হল শ্রী শ্রী কালী পূজা এবং দীপাবলি কার্তিক মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কার্তিক মাসকে মৃতের মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই মাসে মৃত পূর্বপুরুষদের পথ আলোকিত করার জন্য ফানুস জ্বালানো হয়। এই আলোর প্রদীপ জ্বলছে মৃত পুরুষদের মুক্তি কামনা করার জন্য। মাকালী যেহেতু কালভায়ারিনী, ত্রিনায়নে তার চন্দ্র-সূর্য-অগ্নি অসীম লক্ষ লক্ষ উজ্জ্বল নক্ষত্র, তাই তিনি পূর্বপুরুষদের পথপ্রদর্শক। কালী পূজা দিওয়ালির সাথে যুক্ত কারণ এই বিশ্বাসের কারণে যে মানুষ অন্ধকার থেকে অনন্ত আলোর পথে তার আলোর আলোতে জ্ঞানের পথে হাঁটতে পারে। পূর্ণিমাতে হিন্দুদের কালীপূজা ও দীপাবলির মতো পূজার অন্য কোনো উৎসব নেই। সন্ধ্যায় আলোর উৎসব দীপাবলি এবং মধ্যরাতে করাল-বদানি কালীর পূজা। সনাতন হিন্দুরা যুগ যুগ ধরে শক্তির দেবী হিসেবে কালী পূজা বা শ্যামাপূজা পরিচালনা করে আসছে। এই উপলক্ষে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল। সেই রাতে দেবীর গায়ের রঙ ছিল কালো রঙের মতো কালো। মূলত [[ঋগ্বেদ]] এর 'রাত্রি সূক্ত' -এ পাওয়া দেবীকে কালীর আদি উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রাচীন রীতি অনুযায়ী, দীপাবলির সন্ধ্যায় হাজার হাজার মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয় তেল দিয়ে। একটি কলা গাছে মাটির প্রদীপের পরিবর্তে প্রদীপ জ্বালানোও লক্ষণীয়। এই সমস্ত চর্চা এখনও অনেক জায়গায় চলছে। যাইহোক, শহরাঞ্চলের অনেকেই এখন তেলের প্রদীপের পরিবর্তে মোমবাতি ব্যবহার করে। হিন্দুদের কাছে দীপাবলি একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই সমস্ত হিন্দুরা বাড়িতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জৈনদের মতে, মহাবীর খ্রিস্টপূর্ব 528 সালে দীপাবলির দিনে মোক্ষ বা নির্বাণ লাভ করেছিলেন। শিখরা 1819 সালে শিখদের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ এবং 52 রাজকুমারদের দীপাবলিতে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আর্য সমাজ এই দিনে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে। তারা এই দিনটিকে 'শারদীয়া নব-শাস্তি' হিসেবেও পালন করে। বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী, বিষ্ণুর বামন অবতার অসুরকে যজ্ঞ পাঠিয়েছিলেন পাতালে; দিওয়ালির দিন, আসুর বালিকে পৃথিবীতে আসার অনুমতি দেওয়া হয় প্রেম এবং জ্ঞানের শিখা জ্বালানোর জন্য, অন্ধকার এবং অজ্ঞতা দূর করার জন্য, এবং আয়ুদ আয়ুদের প্রদীপ জ্বালানোর জন্য। দীপাবলির তৃতীয় দিন- কার্তিক শুদ্ধ; এই দিনে, অসুর বালি নরক থেকে বেরিয়ে আসে, নিজেকে শুদ্ধ করে এবং বিষ্ণুর সাথে সংসার পরিচালনা করে। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, মরিশাস, গায়ানা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, সুরিনাম, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ফিজিতে দীপাবলি সরকারি ছুটি। হিন্দুরা বিশ্বাস করে শুভ দেওয়ালি বা দীপাবলি অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক। এই উৎসব পালিত হয় অন্ধকার দূর করার জন্য, মন্দ ও অশুভের প্রতীক এবং ভাল ও ভালো প্রতিষ্ঠার জন্য। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা এই উৎসবের মাধ্যমে সুখ, শান্তি, জ্ঞান এবং সম্পদ প্রদানের জন্য প্রকাশ করা হয়। আনন্দের প্রতিটি পাবলিক উৎসব মন্দের উপর ভালোর বিজয় উদযাপন করে। আলোকসজ্জার এই দিনটি অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর দিন। আপনার সমস্ত অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অজ্ঞতা এবং তমো প্রদীপের শিখায় নির্বাসিত হোক। ভালোবাসার চিরন্তন শিখা জ্বালানোর দিন। এই দিনটির মাহাত্ম্য দেশ থেকে দেশে, অঞ্চলভেদে পরিবর্তিত হয়; তবুও সারাংশ এক। এবং আধ্যাত্মিকতার গভীর দর্শনে, এই দিনটি আত্মার জ্ঞান ও বিশুদ্ধির দিন এবং সেই পরমব্রহ্মে নিমজ্জিত হওয়ার দিন।
 
== পাদটীকা ==