হৈসল সাহিত্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৫১ নং লাইন:
 
১২০৯ খ্রিস্টাব্দে জৈন পণ্ডিত, মন্ত্রী, মন্দির-নির্মাতা ও সেনাধ্যক্ষ [[জন্ন]] রচনা করেন ''যশোধর চরিতে''। এটি জন্নের লেখা ধ্রুপদি গ্রন্থগুলির অন্যতম। ''যশোধর চরিতে'' গ্রন্থে তিনি ৩১০টি শ্লোকে মর্ষকাম, [[জন্মান্তর|আত্মার রূপান্তর]], কামনাবাসনার তির্যক গতি ও মানুষের আচরণীয় সাবধানমূলক নীতিকথা লিপিবদ্ধ করেন। গ্রন্থটি বদীরাজের একই নামের ধ্রুপদি সংস্কৃত গ্রন্থ কর্তৃক অনুপ্রাণিত হলেও মৌলিক ব্যাখ্যা, চিত্রকল্প ও শৈলীর জন্য প্রসিদ্ধি অর্জন করে।<ref name="image">সাহিত্য অকাদেমি (১৯৯২), পৃ. ৪৬২৯</ref> একটি কাহিনিতে কবি এক ব্যক্তির তার বন্ধুপত্নীর প্রতি মোহের কথা লিপিবদ্ধ করেন। বন্ধুকে হত্যা করে তার স্ত্রীকে অপহরণ করলে শোকে দুঃখে সেই রমণীর মৃত্যু ঘটে। তখন অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে বন্ধুহন্তা ব্যক্তিটি সেই নারীর চিতায় আত্মবিসর্জন দেন।<ref name="nativemetre2"/><ref name="builder">রাইস ই. পি. (১৯২১), পৃ. ৪৩–৪৪</ref> আসক্তির কাহিনি চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে যখন জন্ন রানি অমৃতমতীর অষ্টাবক্র নামে এক কুদর্শন [[মাহুত|মাহুতের]] প্রতি আকর্ষণের বিবরণ দেন। এই মাহুত রানিকে লাথি ও চাবুক মেরে যৌনসুখ প্রদান করত। আধুনিক গবেষকদের কাছে এই কাহিনিটি অত্যন্ত কৌতুহলোদ্দীপক।<ref name="pique">শিব প্রকাশ (১৯৯৭), পৃ. ২০৪</ref> এই গ্রন্থের জন্যই পৃষ্ঠপোষক রাজা দ্বিতীয় বীর বল্লালের থেকে জন্ন ‘কবিচক্রবর্তী’ (‘কবিদের সম্রাট’) উপাধি অর্জন করেন।<ref name="kavichakra"/> জন্নের অপর এক ধ্রুপদি সাহিত্যকীর্তি ''অনন্তনাথ পুরাণ'' (১২৩০ খ্রিস্টাব্দ) হল চতুর্থ তীর্থংকর অনন্তনাথের জীবনবৃত্তান্ত।<ref name="anantha">সাহিত্য অকাদেমি (১৯৮৭), পৃ. ৬২০</ref><ref name="caution">নাগরাজ (২০০৩), পৃ. ৩৭৭</ref>
 
[[অন্দয়্য]] কন্নড় সাহিত্যে এক অ-গতানুগতিক পন্থা গ্রহণ করেন, পরবর্তীকালে যেটির আর পুনরাবৃত্তি করা হয়নি। এই পন্থায় তিনি রচনা করেন ''মদন বিজয়'' (১২১৭-১২৩৫ খ্রিস্টাব্দ), যে গ্রন্থে তিনি সংস্কৃত তৎসম শব্দের পরিবর্তে শুধুমাত্র শুদ্ধ কন্নড় শব্দ (‘দেশ্য’) ও সংস্কৃতজ তদ্ভব শব্দই ব্যবহার করেন।<ref name="guna"/> ঋণকৃত সংস্কৃত শব্দ ছাড়া কন্নড় সাহিত্য রচনা সম্ভব নয় বলে যে অভিযোগ উত্থাপিত হত, এই প্রচেষ্টাটিকে সেই অভিযোগ খণ্ডনের প্রমাণ হিসেবেই দেখা হয়।<ref name="chaste">সাহিত্য অকাদেমি (১৯৮৭), পৃ. ১৭০</ref> এই কাব্যের আখ্যানভাগে দেখা যায়, [[চন্দ্র (দেবতা)|চন্দ্র]] [[হিমালয়|হিমালয়ে]] [[শিব]] কর্তৃক বন্দী হয়েছেন। এতে ক্রুদ্ধ হয় প্রেমের দেবতা [[কামদেব|কাম]] (অপর নামে মদন বা মন্মথ) নিজের বাণ দ্বারা শিবকে জর্জরিত করছেন। কিন্তু সেই কারণে শিব কর্তৃক অভিশপ্ত হয়ে কামের প্রিয়াবিচ্ছেদ ঘটছে। এরপর কাম কীভাবে শিবের শাপ হতে নিজেকে মুক্ত করেন তা-ই এই কাব্যের মূল উপজীব্য। বইটি ''সোবগিন সুগ্গি'' (‘সৌন্দর্যের আবাদ’), ''কবনে গেল্ল'' (‘কামের বিজয়’) ও ''কব্বিগর-কব'' (‘কবিগণের রক্ষাকর্তা’) নামেও পরিচিত।<ref name="cupid">শাস্ত্রী (১৯৫৫), পৃ. ৩৫৯</ref> অন্দয়্যের পূর্বে জৈন সাহিত্যে কামের একটি বিশিষ্ট স্থান ছিল। তাই ইতিহাসবিদেরা এও অনুমান করেন যে, <ref name="sakkada">নাগরাজ (২০০৩), পৃ. ৩৬৬</ref> এই রচনাটি ছিল তৎকালীন কন্নড় সমাজে কর্তৃত্বকারী জৈন<ref name="dominate">নরসিংহাচার্য (১৯৮৮), পৃ. ৬৫</ref> ও ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকা [[লিঙ্গায়েত ধর্ম|বীরশৈবদের]] মধ্যে সংঘাত ঘনীভূত করার অপর একটি সূক্ষ্ম অস্ত্র।
 
===ব্যাকরণ সংহতকরণ===