সত্যানন্দ স্টোকস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
১টি উৎস উদ্ধার করা হল ও ০টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল।) #IABot (v2.0.8
৩৩ নং লাইন:
সেই সময় দেশে প্লেগের মহামারী চলছিল । প্লেগ মহামারী এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে এই রোগে আক্রান্ত হলে নিজের পরিবারও ছেড়ে চলে যেত । কিছু কিছু গ্রামে তো অবস্থা এমন শোচনীয় ছিল যে সেই গ্রামে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে সুস্থ গ্রামবাসীরা রোগী সমেত গোটা গ্রামে আগুন লাগিয়ে অন্যত্র চলে যেত । সেই সময় এই প্লেগ রোগীদের সেবা শুশ্রুসার কাজে সর্বতোভাবে লিপ্ত ছিল আর্য সমাজ । আর্য সমাজের একজন সন্যাসী পন্ডিত রুলিয়া রাম প্লেগ রোগীর সেবা করতেন । সারিয়ে তুলতেন । আর্য সমাজ ও পন্ডিত রুলিয়া রামের এই সেবাকর্ম মিশনারীদের ভীত নড়িয়ে দিয়েছিল । আপেল চাষী পাদ্রী স্যামুয়েল ইভান স্টোকস এই পন্ডিত রুলিয়া রামের সংস্পর্শে আসেন সেই সময় । পন্ডিত রুলিয়া রামের সেবা নিষ্ঠা দেখে তাঁর সত্যের উপলব্ধি হয় । তিনি সেবার আসল রূপ দেখেন আর আসল মানব কল্যানের স্বরূপ আর ধর্ম কি হয় তা বুঝতে পারেন । সেবা মানে যে কুসংস্কার আর স্বার্থের কারণে সিধেসাধা মানুষের ধর্ম পরিবর্তন করা কখনই নয় সেটা তিনি বুঝতে পারেন । তিনি পন্ডিত রুলিয়া রামের কাছে যাতায়াত শুরু করেন । তাঁর সাথে সেবার কাজ করা শুরু করেন । পন্ডিত রুলিয়া রামের থেকে তিনি সত্য সনাতন হিন্দু ধর্মের বিষয়ে জানেন। ত্যাগ আর সেবার মর্ম বোঝেন, সনাতন ধর্মের বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন ।আর্য সমাজের মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত করতে করতে কখন যে তিনি তৎকালীন ভারতের বিপ্লবীদের সাথে নিজেকে এক করে ফেলেন তা তিনি নিজেও বুঝতে পারেন নি ।
 
তার সর্বদা সামাজিক ন্যায়বিচারের দৃঢ় ধারণা ছিল ।তিনি [[গ্রেট ব্রিটেন|পরবর্তীতে গ্রেট ব্রিটেনের]] কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। <ref>Fit to Post:Satyananda Stokes http://in.yfittopostblog.com/tag/satyananda-stokes/ {{ওয়েব আর্কাইভ|url=https://web.archive.org/web/20100819063115/http://in.yfittopostblog.com/tag/satyananda-stokes/ |date=১৯ আগস্ট ২০১০ }}</ref> তিনি [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|একমাত্র আমেরিকান হিসাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের]] সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) সদস্য হওয়ার বিরল সম্মান পান। [[লালা লাজপত রায়|লালা লাজপত রায়ের]] পাশাপাশি [[পাঞ্জাব, ভারত|তিনিও পাঞ্জাবের]] প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তিনিই একমাত্র অ-ভারতীয় যিনি ১৯১২ সালে কংগ্রেস ইশতেহারে স্বাক্ষর করে ভারতীয়দের সরকারী চাকরি ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। [[রাষ্ট্রদ্রোহিতায় প্ররোচণা|১৯১২ সালে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা]] ও বিদ্বেষ প্রচারের অভিযোগ করে তাকে কারাগারে বন্দী করা হয়েছিল। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে [[গ্রেট ব্রিটেন|গ্রেট ব্রিটেনের]] রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে একমাত্র আমেরিকান ছিলেন। তার গ্রেপ্তারের বিষয়ে [[মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী|মহাত্মা গান্ধী]] লিখেছিলেন: "তাঁর (স্টোকস) একজন ভারতীয়ের সাথে থাকা এবং তাদের মতো অনুভব করেন। তিনি তাদের দুঃখ নিজের সাথে ভাগ করেন এবং নিজেকে সংগ্রামের সাথে জড়িত করেন । যা সরকারের জন্য ভালো ছিল না। সরকারের সমালোচনা করায় তাকে ছেড়ে দেওয়া অসহনীয় ছিল। তাই তার সাদা ত্বক তাকে কোনও সুরক্ষা দেয় না… "
 
জেলে গিয়ে তাঁর পরিচয় হয় সেই সময়ে ওই জেলেরই আর এক বন্দী লালা লাজপত রায়ের সাথে । লালা লাজপত রায় তাঁকে "সত্যার্থ প্রকাশ" পড়তে দেন । "সত্যার্থ প্রকাশ" পড়তে পড়তে আর লালা লাজপত রায়ের মধ্যে দেশকে স্বাধীন করার অদম্য ইচ্ছা দেখতে দেখতে তাঁর মধ্যে এক অদ্ভুত পরিবর্তন আসে । জেল থেকে বেরিয়ে তিনি পুরোপুরিভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে লেগে পড়েন । বেদ, উপনিষদ আর মনুস্মৃতির অধ্যয়ন করেন । শ্রীমদ্ভগবত গীতার ইংরেজি অনুবাদ পড়ে তার সঠিক মর্ম না বুঝতে পেরে সংস্কৃত শেখেন । তারপর সংস্কৃত শ্রীমদ্ভগবত গীতার অধ্যয়ন করেন । ১৯৩২ সালে তিনি চার্চ, খ্রিস্টধর্ম, মিশনারী থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিজের নাম রাখেন সত্যানন্দ স্টোকস । তাঁর স্ত্রী অ্যাগনেসের নাম হয় প্রিয়া দেবী স্টোকস । <ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=An American in Khadi: The Definitive Biography of Satyanand Stokes|শেষাংশ=Sharma|প্রথমাংশ=Asha|বছর=1999|প্রকাশক=Penguin Books India|পাতাসমূহ=293|আইএসবিএন=0-14-028509-1}}</ref> <ref>The Pacific Historical review https://www.jstor.org/stable/3640095?seq=20</ref> হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্তটি তার জন্য কঠিন ছিল কারণ এতে তিনি তার প্রিয়জনদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তেন। কিন্তু তিনি তার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=An American in Khadi: The Definitive Biography of Satyanand Stokes|শেষাংশ=Sharma|প্রথমাংশ=Asha|বছর=1999|প্রকাশক=Penguin Books India|পাতাসমূহ=279, 287|আইএসবিএন=0-14-028509-1}}</ref>তাঁদের সন্তানদের নাম হয় প্রীতম স্টোকস , লালচন্দ স্টোকস , প্রেম স্টোকস , সত্যবতী স্টোকস , তারা স্টোকস ও সাবিত্রী স্টোকস প্রভৃতি ।সনাতন ধর্মে দীক্ষিত হয়ে তিনি স্বামী সত্যানন্দ নামে পরিচিত হন । নিজের বাড়িতেই আর্য সমাজের মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন ।সেই মন্দিরের কাঠের স্তম্ভের ওপর বেদ, উপনিষদ আর শ্রীমদ্ভগবত গীতার বহু শ্লোক খোদাই করেন । আজও সেই খোদাই করা শ্লোক দেখতে পাওয়া যায় হিমাচলের ঐ মন্দিরে । সেই সময়ে ওই মন্দির নির্মাণ আর তাঁর কাজের সুবিধার্থে তৎকালীন ভারতের প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী যুগলপ্রকাশ বিড়লা ২৫০০০ টাকা দান করেন । আজ সেই মন্দির পরমজ্যোতি মন্দির বা অনন্তপ্রকাশ মন্দির নামে পরিচিত । তার ছেলে তারা পেটে ক্ষয়ে মারা যায়।এতে তিনি ভেঙে পড়েন।