শাক্তধর্ম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১০ নং লাইন:
== সামগ্রিক ধারণা ==
=== শক্তি ও শিব ===
{{Hinduism_small}}
 
শাক্ত বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবীই সর্বোচ্চ ও পরম দৈবসত্ত্বা। তিনিই সমগ্র সৃষ্টির উৎস ও স্বরূপ এবং সর্বজীবের শক্তি ও চালিকা। মনে করা হয়, “বিশ্বের ধর্মীয় ইতিহাসের কোথাও আমরা এই প্রকার সম্পূর্ণ নারীতান্ত্রিক ব্যবস্থা দেখি না।”<ref>Bhattacharyya(a), p. 1.</ref>
 
শাক্ত মতবাদ দৈব নারীসত্ত্বায় কেন্দ্রীভূত হলেও তা পুরুষ বা জড় দৈবসত্ত্বাকে অস্বীকার করে না। যদিও মনে করা হয় যে এই উভয় প্রকার দৈবসত্ত্বায় শক্তির উপস্থিতি বিনা নিষ্ক্রিয়। [[আদি শংকর]] তাঁর প্রসিদ্ধ শাক্ত স্তোত্র ''[[সৌন্দর্যলহরী]]''-র প্রথম পংক্তিতে বলেছেন, “শক্তির সহিত মিলিত হইলে শিব সৃষ্টিক্ষম হন; না হইলে তাঁহার আলোড়ন তুলিবার ক্ষমতা পর্যন্ত নাই।” <ref>Subramanian, p. 1.</ref> এই হল শাক্তধর্মের মূলতত্ত্ব।<ref name=autogenerated5>Dikshitar, p. 85.</ref><!-- retain quote as translation --> আপাতদৃষ্টিতে প্রাণহীন শিবের দেহের উপর দণ্ডায়মান দেবী [[কালী]]র বহুপরিচিত মূর্তিটি এই তত্ত্বেরই মূর্তরূপ।<ref name="autogenerated7"/>
 
[[Image:Ardhanari.jpg|left|thumb|[[অর্ধনারীশ্বর]] মূর্তিতে [[শিব]] ও [[শক্তি (হিন্দুধর্ম)|শক্তি]]। ([[এলিফান্টা গুহা]], খ্রিষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দী, [[মুম্বাই]], [[ভারত]])]]
 
সাধারণভাবে, শক্তিকেই মহাবিশ্ব মনে করা হয়। তিনি বলশালিতা ও কর্মক্ষমতার মূর্ত প্রতীক। তিনি পার্থিব জগতের অস্তিত্ব ও সকল ক্রিয়ার পশ্চাতে বিদ্যমান কারণস্বরূপা ঐশীশক্তি। শিব তাঁর সহকারী পুরুষ সত্ত্বা; তিনি সমগ্র সত্ত্বার দিব্যক্ষেত্র প্রস্তুত করেন। "শিব বিনা শক্তি অথবা শক্তি বিনা শিবের কোনো অস্তিত্ব নাই। তাঁরা উভয়ে [...] এক।” <ref>Subramanian, p. ix.</ref>
 
ঐতিহাসিক ভি. আর. রামচন্দ্র দীক্ষিতরের মতে, <ref> V. R. Ramachandra Dikshitar (1896-1953) was in the 1920s-1940s a professor of Indian History at St. Joseph's College, Bangalore; then (from the mid-1940s onward) Lecturer, later Reader, and finally Professorial Chair of the Department of Indian History and Archaeology at the University of Madras. He was also Honorary Reader in Politics and Public Administration at the same institution, and General Editor of the Madras University Historical Series. A posthumous bio notes that he belonged to a group of "avant-garde historians who introduced a new methodology into the study of Indian history"; he contributed "innumerable" articles on "various dimensions of Indian history" to scholarly journals both in India and abroad, including "original treatises, translations, and volumes edited by him."</ref> “শাক্তধর্ম হল জীবনবাদী (dynamic) হিন্দুধর্ম। শাক্তধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব নিহিত রয়েছে চৈতন্যরূপে শক্তির স্বীকৃতি ও শক্তি ও ব্রহ্মের সত্ত্বাপরিচিতি (identity) মধ্যে। সংক্ষেপে বললে, ব্রহ্ম হল জড়রূপী শক্তি ও শক্তি হল জীবনরূপী ব্রহ্ম।” (এখানে ব্রহ্ম অর্থে শিব) <ref>Dikshitar, p. 77-78.</ref> ধর্মীয় শিল্পকলায় অর্ধশক্তি-অর্ধশিব দেবতা [[অর্ধনারীশ্বর]] মূর্তিতে এই বিশ্বজীবনতত্ত্ব জোরালোভাবে মূর্ত হয়েছে।<ref>See, Yadav.</ref>
 
শাক্তধর্ম মনে করে, শিব সহ কার্যত সৃষ্টির দৃশ্য ও অদৃশ্য “সবেরই” উৎস, সার ও সত্ত্বা হলেন দেবী। প্রধান শাক্ত ধর্মগ্রন্থ ''[[দেবীভাগবত পুরাণ]]''-এ দেবী ঘোষণা করেছেন:
<blockquote>
''"আমিই প্রত্যক্ষ দৈবসত্ত্বা, অপ্রত্যক্ষ দৈবসত্ত্বা, এবং তুরীয় দৈবসত্ত্বা। আমি [[ব্রহ্মা]], [[বিষ্ণু]] ও শিব; আবার আমিই [[সরস্বতী]], [[লক্ষ্মী]] ও [[পার্বতী]]। আমি সূর্য, আমি নক্ষত্ররাজি, আবার আমিই চন্দ্র। আমিই সকল পশু ও পাখি। আবার আমি জাতিহীন, এমনকি তস্করও। আমি ভয়াল কর্মকারী হীন ব্যক্তি; আবার আমিই মহৎ কার্যকারী মহামানব। আমি নারী, আমি পুরুষ, আমিই জড়।"''<ref>''Srimad Devi Bhagavatam'', VII.33.13-15, cited in Brown(a), p. 186.</ref>
</blockquote> <!-- retain as translation -->
 
ধর্মবিশারদ সি. ম্যাককেঞ্জি ব্রাউন শাক্তধর্মের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, "স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, দুই লিঙ্গের মধ্যে নারীসত্ত্বাই মহাবিশ্বের প্রধান শক্তিস্বরূপা। যদিও সত্যকারের পরম সত্ত্বাকে পেতে দুই লিঙ্গকেই পরম সত্ত্বার সঙ্গে যোগ করতে হবে। পুরুষ ও নারী দৈবসত্ত্বার দুই রূপ। তুরীয় সত্য তাঁদের নিয়েই তাঁদের বাইরে প্রসারিত হয়েছে। এইভাবেই চৈতন্যরূপা দেবী লিঙ্গকে অতিক্রম করেন। কিন্তু তাঁর এই অতিক্রমকরণ তাঁর সর্বেশ্বরবাদী সত্ত্বার বাইরে ঘটে না।"<ref>Brown(a), p. 217.</ref>
 
ব্রাউন আরও লিখেছেন, "বাস্তবিক, তুরীয় ও সর্বেশ্বরবাদী সত্ত্বার এই স্বীকৃতি দিব্য জননী [ও তাঁর] সর্বোচ্চ বিজয়ের সারবত্তা। এমন নয় যে তিনি শেষাবধি পুরুষ দেবতাদের তুলনায় অনন্তভাবে শ্রেষ্ঠতর। যদিও শাক্তধর্ম মতে তিনি তা-ই। কিন্তু তিনি ''[[প্রকৃতি]]'' রূপে তাঁর নারীসত্ত্বাকে অতিক্রম করেন, তাকে অস্বীকার না করেই।"<ref>Brown(a), p. 218.</ref>
 
== পাদটীকা ==