শ্রীকৃষ্ণকীর্তন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
১০ নং লাইন:
 
==পুথি-পরিচয়==
বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ আবিষ্কৃত পুথিটি ছাড়া শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের আর কোনও পুথি পাওয়া যায়নি। তুলোট কাগজে লেখা এই পুথিটির প্রারম্ভে আখ্যাপত্র, শেষের পুষ্পিকা এবং মাঝের কতকগুলি পৃষ্ঠা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।<ref> অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ''বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস'', প্রথম খণ্ড, পৃ. ২২৭</ref> পুথির মধ্যে একটি "পাত্ড়া" (টুকরো তুলোট কাগজ) পাওয়া গিয়েছে। তাতে পুরনো ছাঁদের অক্ষরে লেখা রয়েছে, "শ্রীকৃষ্ণ সন্দর্ব্বের ৯৫ পচানই পত্র একশত দশ পত্র পর্যন্ত একুনে ১৬ শোল পত্র শ্রীকৃষ্ণপঞ্চানন শ্রীশ্রী মহারাজার হুজুরকে লইয়া গেলেন পুনশ্চ আনিয়া দিবেন"। চিরকুটটিতে তারিখ হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে "সন ১০৮৯/ তাং ২১ অগ্রহায়ণ" (১৬৮২ খ্রিস্টাব্দ)। অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমান, সেই সময় বনবিষ্ণুপুরের "গাঁথাঘর" বা রাজ-গ্রন্থাগারে পুথিটি অক্ষত অবস্থাতেই ছিল। পুথিটিতে তিনি পুরনো ধাঁচের বলে মনে করেছেন। তাঁর মতে, এটি নকল করা হয়েছিল সপ্তদশ শতাব্দীতে অথবা তারও আগে।<ref> অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ''বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস'', প্রথম খণ্ড, পৃ. ২২৯</ref> [[যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি]] ''সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা''-র ১৩২৬ বঙ্গাব্দ প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত তাঁর "শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে সংশয়" প্রবন্ধে কাব্যটির প্রাচীনতা ও প্রামাণিকতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুথির কাগজ পরীক্ষা করে দেখেছিলেন যে পুথিটিকে যতটা প্রাচীন মনে হরা হয় আসলে তা তত প্রাচীন নয়। অবশ্য অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, চিরকুটটিই প্রমাণ করে যে পুথিটি সপ্তদশ শতাব্দীর পরে নকল করা হয়নি।<ref> অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ''বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস'', প্রথম খণ্ড, পৃ. ২২৯-২৩০</ref> [[সুকুমার সেন]] এই পুথিটি সম্পর্কে লিখেছেন, "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন পুথি এক হাতের লেখা নয়, দুইটি ভিন্ন হাতের (আসলে ভিন্ন ঢঙের) লেখা আছে। একটি পুরানো গোটা গোটা অনুশাসন খোদাইয়ের রীতিতে সযত্নে লেখা। আর একটি জড়ানো জড়ানো টানা অর্বাচীন হাতের পত্র-দলিলের ছাঁদে লেখা। অর্বাচীন ছাঁদে পাতাগুলিকে পরবর্তী কালের যোজনা বলিবার উপায় নাই কেননা কালি এক কাগজও এক, এবং একই অচ্ছিন্ন ভাঁজ-করা পাতায় প্রাচীন-অর্বাচীন দুই ছাঁদের লেখাই পাওয়া গিয়াছে। …কাগজ পাতলা, মাড়ের তৈয়ারি, ঠিক যেন মিলের কাগজ। এরকম কাগজে লেখা পুথি বা দলিল অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধের আগে দেখি নাই, ঊনবিংশ শতাব্দীতে যথেষ্ট দেখিয়াছি। পুথিটিকে ভালো করিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি। কালি হালকা, তাহাতে প্রাচীন পুথির কালির গাঢ়তা ও উজ্জ্বলতার আভাসমাত্র নাই। আমার অভিমত শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের [আবিষ্কৃত পুথিটির] লিপিকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধের আগে হইতে পারে না, সম্ভবত ঊনবিংশ শতাব্দীর। অক্ষরের দিক দিয়াও কোন বাধা নাই। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পুরানো ছাঁদের মতো অক্ষর অষ্টাদশ শতাব্দীর পুথিতে অনেক দেখিয়াছি।"<ref> সুকুমার সেন, ''বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস'', প্রথম খণ্ড, পৃ. ১২২</ref>
 
==বৈশিষ্ট্য==