উইকিপিডিয়া:খেলাঘর ২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট: স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষ্কার করেছে
ট্যাগ: প্রতিস্থাপিত হাতদ্বারা প্রত্যাবর্তন
Tip-bd (আলোচনা | অবদান)
ছুটিতে কয়েকদিন প্রকৃতির সান্নিধ্যে.., রচনাশৈলী, বিষয়শ্রেণী, বানান সংশোধন, হালনাগাদ করা হল
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত
১ নং লাইন:
{{খেলাঘর}}<!-- অনুগ্রহপূর্বক এই লাইনটি অপসারণ করবেন না -->
এক সপ্তাহে বেশ কয়েকদিন ছুটি.. প্রকৃতি প্রেমিরা কোনো সময় নিঃসঙ্গতায় ভোগে না, বাস-ট্রেনের ভ্রমণ অনেকের কাছেই বিরক্তিকর কিন্তু প্রকৃতির কৃপায় একটুকু জানালা হলেই স্বর্গ রাজ্যের দুয়ার খুলে যায়..হোক না তা জলে, স্থলে বা আকাশে…
 
বৈশাখে আষাঢ় ঘনিয়ে এলো। বর্ষার পরশে এইড কমপ্লেক্সের প্রকৃতির রূপ-রং আরো মনোরম তাই ছুটিতে বাদলভরা দিনগুলি ভালোই কাটলো.. অবসরে দৈনিক পত্রিকার এ টু জেড মনোযোগ দিয়ে দেখি ‘বাদামী কাঠবিড়ালির ঘরবসতি’ পড়ে ভীষণ কৌতুহলে প্রতিবেশী কাঠবিড়ালির পিঁছে পিঁছে ছেলেবেলার ন্যায় ছুটতে যেয়ে প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি নতুন করে দেখার সুযোগ হলো। মেঘলা আকাশ ঝ’ড়ো দমকা বাতাস ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে চিলেকোঠায় টেকা দায়..। ভর দুপুরে চারিদিকে অন্ধকার নেমে এলো, ভুল ভেবে কিছু জোনাকী জ্বলে উঠলো কৃষ্ণচূড়া ফুলের মাঝে প্রচন্ড বজ্রপাতে ম্লান হলো তার আলো। ঘরে এসে আলো জ্বালাতে হলো। শবে-বরাত এর অনেক পদের খাবার থাকলেও আবহাওয়া উপযোগী খাবার খেতে ইচ্ছা হলো, চললো কিছু সময় রন্ধন শিল্প চর্চা; আমার এই বিশেষ রান্নার স্বাদ ইতিপূর্বে যারা গ্রহণ করেছেন তারা নিশ্চয় অনুভব করতে পারছেন এর মজা…
 
ফেসবুকে কিছু সময় দেবার জন্য বসলাম, কম্পিউটার স্ক্রিনে ভেসে উঠলো বজ্রপাতে মরে পড়ে আছে ক্ষেতের মধ্যে হতভাগা কৃষক আর তার সহায়তাকারী নিষ্পাপ শিশু সন্তান ও অবলা হালের গরু ! সড়ক দুর্ঘটনায় একই গ্রামের ৪ জনের মৃত্যু, বিদ্যুৎ এর তার ছিড়ে প্রাণ হানি, জলে ডুবে শিশু মৃত্যু, শহরের প্রাণ কেন্দ্রে হাটু জল সহ নানা ধরনের নেতিবাচক সংবাদে মনটা বিষন্নতায় ভরে উঠলো, হায়রে মানুষ একটু সচেতন হলে ঘটতো না এমন দুর্ঘটনা। তাই মনকষ্টে জাগতিক সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জানালার ধারে বসে নদী আর বর্ষার প্রকৃতিতে হারিয়ে গেলাম..।
 
অনেক সাধাসাধির পর সকালে দেখা মিললো বন্ধু রেজার, একসাথে পান্তা খেয়ে চিলেকোঠার অনেক জীবন্ত ছবি তোলা হলো। নানা রকম ফুলে ফড়িং-মৌমাছি-প্রজাপতি, ওয়াটার লিলি, বৃষ্টিস্নাত বেলী, থানকুনি ও পুদিনার বাগান, বেতের ফল, ধরন্ত লেবুগাছ, কদম গাছের মগডালের পাতায় বাসা বাঁধা হলুদিয়া পাখি (বউ কথা কও) সহ নানা কিছু..। রেজা চলে যেতেই, চারিদিকে আবার ঘন অন্ধকার জমাট বাঁধতে শুরু করলো। ঝড়ো হাওয়া, মেঘমালায় (স্ফুরাল লাইন) মনে হলো সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো..। দূর হতে ঝড়-হাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে এলো হলুদিয়া পাখি তার ছানাদের রক্ষার জন্য, নীচে ডগ শেডে অবুঝ সারমেয় ছানাগুলি ডাকাডাকি করছে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য, মিললো নিরাপদ আশ্রয় কিন্তু..
 
ধান কাটা মৌসুমে কৃষক ধূ-ধূ মাঠের মধ্যে কোথায় আশ্রয় নেবে? ম্যাগনেটের বিনিময়ে কোটিপতি হবার মেকি আশায় বজ্র রোধক সব সীমানা পিলার চুরি হয়েছে রাতের আধারে; দিনে দুপুরে ইট ভাটাতে পুড়ছে নানা ধরনের কাঠসহ খেজুর ও তাল গাছ, আমার দাদা বলতেন একটি তাল বৃক্ষে পরিণত হতে এক পুরুষ সময় লাগে..। বৃক্ষ ভক্ষণকারীদের হাত হতে রক্ষা পায়নি রাস্তার পাশের প্রাচীন বটবৃক্ষসহ গাছগুলিও…
 
মাঘের শীত কোথা হতে প্রকৃতিতে এসে ভর করলো, পরিবেশ এর হচ্ছেটা কি? কাঁথা নিয়ে গুটিসুটি মেরে বিছানায় গেলাম; চারিদিকে নিস্তব্ধতা টিনের সানসেট ও গাছের পাতায় বৃষ্টির রিমিঝিমি শব্দের মাঝে কখন যে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেছি..নানা স্বপ্নের মাঝে মাগরীবের আজানে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
 
নদীটি কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে কি আশ্চর্য! পশ্চিমের অস্তমিত সূর্যের আলোতে গোধূলি লগ্ন, মেঘের মাঝে ক্ষণিকের জন্য রংধনু ছড়িয়ে মিলিয়ে গেল। গঙ্গাতলার গাঙের ঘাটে বড়শি দিয়ে মাছ শিকারী কিছু শিশু সমস্বরে চিৎকার করছে, ‘রোদ এলো বৃষ্টি হলো খ্যাক শিয়ালের বিয়ে হলো', কেউ বলে উঠলো ‘পানকৌড়ি পানকৌড়ি আমার জন্য একটা ডুব দে না'। জোর কদমে টুপি পরে ছুটে চলছে মসজিদের পাণে মুসল্লিগণ, ফেরার পথে কৌতুহলী জটলা করছে নির্মাধীন সেতুর কাছে। নানা ধরণ ও বর্ণের পাখিরা অভয়াশ্রমে ফিরে আসছে কিচিরমিচির শব্দে ক্যাম্পাস মুখরিত হলো।
 
ব্যাঙ ও ঝিঁ-ঝিঁ পোকা মনের আনন্দে ডেকে চলছে চারিদিকে অবিরাম। এর মাঝেও নদীর বুক চিরে বাঁধ দিয়ে চলছে মাটি ভরাট এর কাজ, নির্মিত হবে সেতু ! এভাবে প্রতিনিয়ত উন্নয়নের নামে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে প্রকৃতি। সেতু নির্মাণের ওখান থেকে কিসের যেন বিকট শব্দে বেতবাগানে আশ্রয় নেওয়া ডাহুক ও তার ছানারা বিরক্তি নিয়ে ডেকে উঠলো.. ভোর হতে না হতেই হয়তো নিরাপদ আবাসন এর খোঁজে ছুটে যেতে ধরা খাবে কোনো শিকারীর ফাঁদে। তেমনিভাবে উন্নয়নের ফাঁদে পড়ে হয়তো হারিয়ে যাবে নদীটি, কোনো এক বাদল দিনে উদাস নয়নে তাকিয়ে থাকবে কেউ সেতুটির দিকে; আকাশ হতে স্নিগ্ধ বৃষ্টি অবিরাম ধারায় ঝড়ে পড়বে উন্নয়নের কান্না হয়ে..