ভাষা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
২ নং লাইন:
 
'''[[ভাষা পরিবারসমূহের তালিকা|ভাষা]]''' ধারণাটির কোন সুনির্দিষ্ট, যৌক্তিক ও অবিতর্কিত সংজ্ঞা দেয়া কঠিন, কেননা যেকোন কিছুর সংজ্ঞা ভাষার মাধ্যমেই দিতে হয়। তাই ভাষার আত্মসংজ্ঞা প্রদান দুরূহ। তবে ভাষার একটি কার্যনির্বাহী সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায় যে ভাষা মানুষের [[মস্তিষ্ক|মস্তিষ্কজাত]] একটি [[মন|মানসিক]] ক্ষমতা যা অর্থবাহী বাকসংকেতে রূপায়িত ([[বাগযন্ত্র|বাগযন্ত্রের]] মাধ্যমে [[ধ্বনি|ধ্বনিভিত্তিক]] রূপে বা রূপে) হয়ে মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করতে এবং একই [[সমাজ|সমাজের]] মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করে।
মানুষ তার মনের ভাব অন্যের কাছে প্রকাশ করার জন্য কণ্ঠধ্বনি এবং হাত, পা, চোখ ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাহায্যে ইঙ্গিত করে থাকে। কণ্ঠধ্বনির সাহায্যে মানুষ যত বেশি পরিমাণ মনোভাব প্রকাশ করতে পারে ইঙ্গিতের সাহায্যে ততটা পারে না। আর কণ্ঠধ্বনির সহায়তায় মানুষ মনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভাবও প্রকাশ করতে সমর্থ হয়। কণ্ঠধ্বনি বলতে মুখগহ্বর, কণ্ঠ, নাসিকা ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত বোধগম্য ধ্বনি বা ধ্বনি সৃষ্টি হয় বাগ্যন্ত্রের দ্বারা। গলনালি, মুখবিবর, কণ্ঠ, জিহ্বা, তালু, দন্ত, নাসিকা ইত্যাদি বাক্প্রত্যঙ্গকে এক কথায় বলে বাগযন্ত্র। এই বাগযন্ত্রের দ্বারা উচ্চারিত অর্থবোধক ধ্বনির সাহায্যে মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যমকে ভাষা বলে। সকল মানুষের ভাষাই বাগযন্ত্রের দ্বারা সৃষ্ট। তবুও একই ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির অর্থ বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। এ কারণে বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর জন্য আলাদা আলাদা ভাষার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের কণ্ঠনিঃসৃত বাক্ সংকেতের সংগঠনকে ভাষা বলা হয়। অর্থাৎ বাগযন্ত্রের দ্বারা সৃষ্ট অর্থবোধক ধ্বনির সংকেতের সাহায্যে মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যমই হলো ভাষা। দেশ, কাল ও পরিবেশভেদে ভাষার পার্থক্য ও পরিবর্তন ঘটে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থান করে মানুষ আপন মনোভাব প্রকাশের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বস্তু ও ভাবের জন্য বিভিন্ন ধ্বনির সাহায্যে শব্দের সৃষ্টি করেছে। সেসব শব্দ মূলত নির্দিষ্ট পরিবেশে মানুষের বস্তু ও ভাবের প্রতীক (Symbol) মাত্র। এ জন্যই আমরা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষার ব্যবহার দেখতে পাই। সে ভাষাও আবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে উচ্চারিত হয়ে এসেছে। ফলে এ শতকে মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনে যে ভাষা ব্যবহার করে, হাজার বছর আগেকার মানুষের ভাষা ঠিক এমনটি ছিল না। বর্তমানে পৃথিবীতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভাষা প্রচলিত আছে। তার মধ্যে বাংলা একটি ভাষা। ভাষাভাষী জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলা পৃথিবীর চতুর্থ বৃহৎ মাতৃভাষা। বাংলাদেশের অধিবাসীদের মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণ এবং ত্রিপুরা, বিহার, উড়িষ্যা ও আসামের কয়েকটি অঞ্চলের মানুষের ভাষা বাংলা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে বাংলা ভাষাভাষী জনগণ রয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ত্রিশ কোটি লোকের মুখের ভাষা বাংলা।
 
ভাষা মানুষে-মানুষে যোগাযোগের প্রধানতম বাহন। ভাষার কতটুকু মানুষের কোন জন্মগত বৈশিষ্ট্য আর কতটুকু পরিবেশনির্ভর সে ব্যাপারে আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীদের মতভেদ আছে। তবে সবাই একমত যে স্বাভাবিক মানুষমাত্রেই ভাষা অর্জনের মানসিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়, এবং একবার ভাষার মূলসূত্রগুলি আয়ত্ত করে ফেলার পর বাকী জীবন ধরে মানুষ তার ভাষায় অসংখ্য নতুন নতুন [[বাক্য]] সৃষ্টি করতে পারে। এরকম অসীম প্রকাশক্ষমতাসম্পন্ন ভাষা একান্তই একটি মানবিক বৈশিষ্ট্য; মানুষ ছাড়া আর কোন প্রাণী এই ক্ষমতার অধিকারী নয়। প্রতিটি মানুষ ভাষা আয়ত্ত করার সহজাত বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম নেয় এবং ঐ মানুষটি যে নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক পর্যায়ের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পরিবেশ-বেষ্টিত ভাষিক সমাজের অন্তর্গত, সেই সমাজে সে দৈনন্দিন ভাষাপ্রয়োগের মাধ্যমে তার নিজস্ব ভাষাজ্ঞান বিকশিত করে।
 
'https://bn.wikipedia.org/wiki/ভাষা' থেকে আনীত